বিশ্বাসে মিলায় বস্তু
শীত কাল মানেই পিঠাপুলির মাস। আর পিঠাপুলি মানেই খেজুর গুড়। খেজুর গুড়ের পিঠা পায়েস ছাড়া শীতকাল টাই বৃথা। আমি ভোজনরসিক মানুষ,পিঠা পায়েস এগুলা আমার ভীষণ প্রিয়। কিন্তু বর্তমানে দেশের খাবার দাবার এ এত ভেজাল যে কিছু খাওয়ার আগে ১০০বার ভাবা লাগে। এই যে কিছুদিন আগে একটা নিউজে দেখলাম যে খেজুরের গুড় বানানো হচ্ছে এমন একটি জায়গায় ভোক্তা অধিদপ্তর থেকে রেইড দেওয়া হয়।
সেখানে দেখা যায়,খেজুরের গুড়ে খেজুর রসের নাম পর্যন্ত নেই।সেখানে চিনির সাথে নানা রাসায়নিক মিশিয়ে তা খেজুরের গুড় নামে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেদিন থেকে গুড়ের প্রতি আকর্ষণ টা উঠে গেছে। কিন্তু তারপরেও শীতকাল কি পিঠা ছাড়া থাকা যায়? যাই হোক কথায় আছে না,যে খায় চিনি তাকে যোগায় চিন্তা মনি। আমার ক্ষেত্রে ঠিক তাই হয়েছে।
কিছুদিন আগে ফেসবুকের গ্রুপ থেকে এক ছোট ভাইয়ের সাথে পরিচয়।নাম বিপ্লব।ছোট ভাইয়ের বাড়ি রাজশাহী।কেমেস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট এ পড়ে। তবে আমার অনেক জুনিয়র। এজন্য আমাকে সে মেন্টর বানিয়েছে। আমি নানা টপিক বুঝিয়ে দেই বা টিপস শেয়ার করি। এভাবে বেশ ভালই গুরু শিষ্যর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। যাই হোক একদিন কথায় কথায় বিপ্লব বলল ভাই থাকেন, গুড় বানাচ্ছে সেখানে পাহাড়া দিতে হবে।
আমি একটু কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলাম কি গুড়? তখন বলল ভাই খেজুরের গুড়৷ সাথে সাথে কিছু বললাম না।কিন্তু মনে মনে ভেবে নিলাম গুড় নিতে হবে। তারপর দিন আস্তে আস্তে খোজ নিতে থাকলাম। একপর্যায়ে জানলাম ওদের গুড়ের ব্যবসা। গুড়ের দরদাম শোনার পর ওকে বললাম ভাই গুড় নিতে হবে,ও তো অনেক খুশি। বলল ভাই আপনি ঠিকানা দেন।আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি,কোন টাকা পয়সা লাগবে না। কিন্তু আমিও অনড়, ফ্রি কিছু নিতে চাইনা। তাও ওর এক কথা। শেষ পর্যন্ত ওকে বুঝালাম যে আমি অনেকগুলো গুড় নেব। অত গুলা ফ্রিতে দিতে গেলে তোমার ব্যবসায় লালবাতি জ্বলবে।
তারপর রাজি হল,এরপর আমি বাসায় জানালাম। মা বলল আমাদের ৫কেজি লাগবে,আশেপাশের প্রতিবেশীরাও অর্ডার দিল। এভাবে মোট ১৮কেজির অর্ডার দিলাম। কোন অ্যাডভান্স দিতে হয়নি। দুইদিন পরেই গুড় রেডি। আমার একটু ট্রাস্ট ইস্যু আছে। তাই আমি পুরো টাকা না পাঠিয়ে অর্ধেক পাঠালাম। টাকা পাঠানোর পর থেকে চিন্তায় ছিলাম গুড় যে কেমন হবে? এত আশা করে কিনলাম টাকা গুলো আবার জলে যাবে না তো? খাকি আমার টাকা হলে হত,সাথে প্রতিবেশীদের টাকাও আছে।
যাই হোক পরের দিনেই গুড় চলে আসল। পরীক্ষা করার জন্য তর সইছিল না৷ প্যাকেট খুলেই মনটা ভাল হয়ে গেল। গুড় গুলো দারুন ছিল,অনেকদিন পর এমন সুস্বাদু ও খাটি গুড় খাওয়ার সৌভাগ্য হল।বলে রাখা ভাল,এই গুড় গুলো বিষাক্ত হাইড্রোজ মুক্ত। এই হাইড্রোজ আমাদের শরীর বিশেষ করে যকৃত ও কিডনীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। গুড় হাতে পাওয়ার পর ছোট ভাইকে বাকি টাকা পাঠিয়ে দিলাম আর সেই সাথে অনেক ধন্যবাদ দিলাম কথা রাখার জন্য।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সত্যি এখন ভালো জিনিস পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।কাউকে যেনো আজকাল আর বিশ্বাস করাই যায়না।ফেসবুক পেইজের এই গুড়ের পেইজের নামটা দিলে আমিও আনতে পারতাম।আমার ও কিন্তু পিঠা খেতে ভীষণ ভালো লাগে। আপনি তো দেখছি সব মিলিয়ে অনেকটাই গুড় আনলেন।যাক শেষ পর্যন্ত গুড় ভালো হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে অনুভুতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
আপু ফেসবুকে ওর কোন পেজ নাই। ওরা সরাসরি দোকানে সাপ্লাই দেয়।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাই আমাদের দেশের বেশিরভাগ খাবারের মধ্যেই ভেজাল। যাইহোক আপনি আপনার এক ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে খেজুরের গুড় আনিয়েছেন ১৮ কেজি আপনাদের জন্য এবং প্রতিবেশীদের জন্য ,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। গুড় গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে একেবারে নির্ভেজাল। এই গুড় গুলো দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে খেতে পারবেন। যাইহোক এতো চমৎকার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাই এখন তো সব জিনিসের মধ্যেই ভেজাল আপনি যেটা কিনতে যাবেন সেখানেই ভেজালের সংমিশ্রণ। তবে খেজুরের গুড়ের ক্ষেত্রে রাজশাহী অঞ্চলে মোটামুটি খাঁটি খেজুরের গুড় পাওয়া যায়। যেহেতু আপনার পরিচিত লোক ছিল এজন্যই রাজশাহী থেকে খাঁটি খেজুরের গুড় আনতে পেরেছেন। ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে সেটা অরিজিনাল খাঁটি খেজুরের গুড়।
অনলাইন থেকে ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে হাইড্রোজ মুক্ত গুড় পেলেন এটা অনেকটাই সৌভাগ্যের বিষয়।এখন গুড় কিনে খাওয়া আর টাকা দিয়ে বিষ কিনে খাওয়া একই ব্যাপার।খেজুরের রস তো থাকবেই না গুড়ে চিনির সাথে বিভিন্ন ক্ষতিকর জিনিস দিয়ে গুড় তৈরি করে।আমাদের এদিকেও গুড়ের অবস্থা খুবই খারাপ অর্ডার দিয়ে নিলেও ভেজাল দেয়।তবে হাইড্রোজ নেই এটা কিভাবে বুঝলেন?ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
এখন সব জিনিসের ভেজাল আসলে খাঁটি জিনিস পাওয়া খুবই মুশকিল। নিজের জন্য এবং পাড়া-প্রতিবেশীর জন্য মোট ১৮ কেজি গুড় নিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। এবং গুড় গুলো ভালো হয়েছে জেনে খুবই খুশি হলাম। অনেক সময় অনলাইনে কিছু কিনলে মন মত হয় না। আপনার পরিচিত লোক থাকাতে ভালো গুড় পেয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া আজকাল খাঁটি জিনিস পাওয়া বেশ কঠিন। কোন কিছুই যেনো ভেজাল মুক্ত নেই আমাদের দেশে। আর ভেজাল খেয়েই আমরা বেঁচে আছি। শীতকালে পিঠা খাওয়ার জন্য অনেকটাই গুড় কিনলেন। তবে ভালো কথা হলো ভেজাল মুক্ত গুড় পেয়েছেন।ভালো জিনিসে কদর আছেই। তাইতো আপনি কিনে বেশ শান্তি পেলেন।বেশ মজা করে বিভিন্ন পিঠা খেতে পারবেন এই গুড় দিয়ে। আর স্বস্তিও পাবেন। ভালো লাগার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
তোমার গুড়ের ফটোগ্রাফি দেখে তো লোভ লেগে গেলো।আসলে বর্তমানে গুড়ে প্রচুর ক্ষতিকর কেমিক্যালযুক্ত হয়ে থাকে।তুমি নিজের ও সাথে প্রতিবেশীদের গুড় কিনতে দেয়াতে বেশ বিপাকে পড়েছিলে যে কেমন হবে গুড় গুলো।খুব ভালো গুড় পাঠিয়েছে জেনে ভালো লাগলো।