ছোট বোনের জন্মদিন
জন্মদিন সবার কাছেই অনেক স্পেশাল।মানুষের জীবনে অনেক স্পেশাল দিন আসে,তবে তার কোনটাই জন্মদিনের মত স্পেশাল হতে পারে না।এই দিনটা তার একান্ত নিজের।এই একটা দিনের জন্য সে নিজের কাছে অনেক বড় কেউ।বিশেষ করে ছোট দের মাঝে এই দিনটা একটু বেশিই গুরুত্ব পায়। অনেকদিন আগে থেকেই দিন গোনা শুরু হয়ে যায়। আর দিন চলে আসলেই সকাল থেকে ব্যস্ততা।
যাই হোক আমার পরিবার টা নেহাৎ ছোট নয়। তাই কাকাতো ভাইবোন এর ও সংখ্যা নেহাৎ মন্দ নয়। তো গতকাল ছিল আমার কাকাতো বোন সিমন্তিনীর জন্মদিন।কাকাতো ভাইবোন দের মধ্যে সিমন্তীনী লাস্ট এর দিক থেকে তিন নাম্বারে, অর্থাৎ বেশ ছোট। তাই আদরও বেশ বেশি।আমাদের পরিবারের একটি বিশেষত্ব হল, আমরা সবাই এক বাড়িতে না থাকলেও আমাদের ছোট বড় যেটাই হোক সেটা সবাই একসাথে পালন না করলে হয়না।
তাই কয়েকদিন আগে থেকেই প্রতিদিন ফোন করে একবার করে মনে করিয়ে দিচ্ছিল। এত কিছুর পরেও আমি গত বছর মিস করেছিলাম তাই আমার প্রতি এবার বিশেষ তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। আমিও এবার চেষ্টা করছিলাম সন্ধ্যার সময় টা যে কোন ভাবে ফাকা রাখার। এবার না গেলে ভীষণ কেলেঙ্কারী হয়ে যাবে। মা আগেই চলে গিয়েছিল। কারন রান্না করতে হবে। আমাদের পরিবারের লোকজনই এত যে তা রান্না করা কাকির একার পক্ষে সম্ভব না।
আমিও সব টিউশন জলদি জলদি ছুটি দিয়ে পৌছে গেলাম সন্ধ্যায়। গিয়ে দেখি ছোটরা সবাই সাজগোজ নিয়ে ব্যস্ত। বড়রা এতক্ষণ গল্প করে মাত্র রান্না শুরু করল। আমার আর কি আমি ঠিক বড়দের দলেও পড়ি না আবার একদম ছোট দের দলেও না।তাই একাই চুপ করে বসে গান শুনতে লাগলাম। মাঝে মাঝে ছোটদের ঘর সাজানোর কাজে হেল্প করলাম।এভাবে আস্তে আস্তে রান্না শেষ হল।আর কেক কাটার সময় চলে আসল।
কেকের উপর মোম জ্বালানোর পর সবাই খেয়াল করল,আরে কেক কাটার চাকুটাই তো নেই।এ যেন বর ছেড়ে বিয়েতে যাওয়ার অবস্থা।আসলে হয়েছে কি,সীমন্তিনীর যে ছোট ভাই আছে সীমান্ত সে বেচারা চাকুটা নিয়ে খেলতে গিয়ে বাইরে ফেলে এসেছে।এখন উপায় কি,দোকানে যাওয়া সম্ভব না। কেকের উপরের মোমবাতিও আস্তে আস্তে ছোট হয়ে আসছে। সীমান্ত বেচারা অপেক্ষা করছে কখন ওর পিঠে তাল পড়বে,বার্থডে গার্লের অবস্থা কাদো কাদো।তখন আমি উপায় দিলাম,চামচ দিয়ে কেক কাটার।কারন পরিস্থিতি তো ম্যানেজ করতে হবে।
শেষ পর্যন্ত চামচ দিয়েই কেক কাটা হল।তারপর সবাই একে একে আশীর্বাদ করল ধান দূর্বা দিয়ে ও কেক খাইয়ে দিল।তারপর সবাই মিলে খাওয়াদাওয়া করে আরো খানিক আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।সবাই আমার ছোট বোনের জন্য আশীর্বাদ করবেন।ও যেন একজন সৎ,ভাল মানুষ হয়ে গড়ে ওঠে।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার কাকাতো বোনের জন্মদিনের শুভেচ্ছা। আসলে পরিবার নিয়ে কোন আয়োজন করতে বেশ ভালোই লাগে। তবে মজা পেলার ছুরি হারানো ঘটনা শুনে,ভালো বুদ্ধি চামচ দিয়ে কেক কাটা তবে যে ছেলেটার পিঠের উপর তাল পরেনি তাতেই অনেক😜😜।
ছোট বোনটির জন্য রইলো অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ভাইয়া আপনার কাকাতো বোন সিমন্তিনির জন্মদিনের পোস্টটি পড়ে ভীষণ হাসি পেলো। ছোট ভাইটি চাকু বাইরে ফেলে এসেছে।আহারে বেচারা পিঠে তাল পরেনি তো। 😃 সবাই খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। আসলে পরিবারের সবাই মিলে এমন আয়োজন করলে একসাথে হয়ে আনন্দ করা যায়। অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
না আপু তাল পড়ে নি। লাস্ট মোমেন্টে চামুচ দিয়ে কেক কাটার বুদ্ধি দিয়ে বেচারাকে বাচিয়েছি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
অনেক বড় পরিবার হলে একসাথে না থাকলেও কোনো উৎসব কিন্তু সকলে একসাথে না হলে জমে না ,এটা কিন্তু আপনি ঠিকই বলেছেন। সীমন্তিনীর ভাই সীমান্ত চাকুটা নিয়ে বাইরে ফেলে আসলো বলে শেষ পর্যন্ত আপনি চামচ দিয়ে কেক কাটার বুদ্ধিটা দিয়ে ভালোই করেছেন। না হলে বেচারার পিঠে সত্যিই তাল পড়ত, হি হি হি।
ছোট বাচ্চারা অনেক বেশি উত্তেজিত থাকেন এই দিনটির জন্য। আমার মেয়েরা তো বছরের শুরু হতে না হতে দিনটি গুনতে থাকে। তারা চাই একটু হইহুল্লোড় করে দিনটি পালন করার। বেশ ভালোই করলেন যেহেতু জলদি জলদি টিউশন শেষ করে চলে গেলেন। বেচারির চেহারা একদম কালো করে ফেলল। শেষমেষ আপনি চামচ দিয়ে কেক কাটলেন। যাক কাটতে পারলে হয়ছে। কি দিয়ে কাটা হয়েছে সেটা দরকার নেই। অনেক সুন্দর একটি দিন কাটালেন অনেক ধন্যবাদ।
প্রথমেই আমি জানাই আপনার ছোট বোনের জন্মদিনের শুভেচ্ছা শুভ জন্মদিন। পরিস্থিতি টাকে দেখছি আপনি দারুন ভাবে ম্যানেজ করেছেন। কেক কাটার জন্য চাকু না পাওয়ার কারণে তার বিপরীতে চামচ ব্যবহার করেছেন। আপনার উপস্থিত বুদ্ধি দেখে খুবই ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য