মামার বাড়ির মেলা দেখা-বর্তমান ও অতীত স্মৃতিচারণ

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী। আশা করি সবাই ভাল আছেন।।আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব মামা বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কিছু মুহুর্ত।

মামা বাড়ি ভারি মজা, কিল চড় নাই কথাটা কিন্তু ভুল নয়৷ মামা বাড়ি গেলে ধোলাই দেওয়ার কেউ নাই। যদিও মা মাঝে মাঝে শাসন করতে চায় তখন দীদা(নানি) উলটা মা কেই শাসন করে। বেশ আরামে থাকা যায় কয়দিন। তবে এই সুযোগের অনেকেই অপব্যবহার করে ইচ্ছামত দুষ্টুমি করে। মনে করে এটাই শেষ,তবে সারাজীবন যে মামাবাড়ি থাকা হবে না এটা ভুলে যায়। ফলে বাড়িতে এসে রামধোলাই খেতে হয়।হাহাহা।

ধান ভানতে শিবের গীত অনেক গাইলাম, এখন আসল ঘটনায় আসি।আমার মামার বাড়ির জায়গাটার নাম গাংনগর। তবে এখানে একটা মজার ঘটনা আছে। গাং অর্থ নদী,নগর অর্থ শহর।গাং নগর অর্থাৎ নদীর শহর। কিন্তু আমার মামার বাড়ির এলাকার আশে পাশে কস্মিনকালেও কোন নদী ছিল না।নদী তো দুরস্ত কোন খাল,বিল পর্যন্ত নেই।

প্রতি বৈশাখ মাসে আমার মামা বাড়িতে জমজমাট মেলা বসে। এই মেলা অনেক দিনের পুরোনো। শিব পুজার মধ্যদিয়ে এই মেলা শুরু হয় জন্য অনেকে এই মেলা কে বুড়োশিব এর মেলাও বলে থাকে।মেলা অনেক পুরোনো। আমার বাবা-কাকারাও নাকি দাদুর হাত ধরে এই মেলায় ঘুরতে যেতেন।একবার নাকি আমার বাবা এই মেলায় গিয়ে নিজের সব টাকা হারিয়ে ফেলে।এমনকি গাড়িভাড়া পর্যন্ত।পরে নাকি সে কি কান্নাকাটি।

আগে পুরো এলাকাজুড়ে মেলা বসত। প্রত্যেকটি জিনিস এর জন্য আলাদা আলাদা জায়গা বরাদ্দ ছিল,যেমন: কাঠের জিনিসপত্র বসত গার্লস স্কুলে, কামার এর জিনিসপত্র পুকুর পাড়ে।কসমেটিক আলাদা জায়গায়। শুধু এগুলোই নয় সেই সাথে লোকজনের চিত্তবিনোদন এর জন্য আসত সার্কাস, যাত্রাপালা,জাদুরখেলা সহ আরো নানা রকম মজাদার খেলাধুলা আসত।

যদিও প্রধান আকর্ষণ ছিল সার্কাস।দূর দুরান্ত থেকে লোক আসত এই সার্কাস দেখতে। এটাই যেন মেলার প্রধান আকর্ষণ। এযুগের অনেকেই মনে করতে পারেন,আরে সার্কাস খেলা কিছু একটা হল নাকি।তাদের জন্য ভাই,মোবাইল ফোন আসার পর বিনোদন এর সংগাটাই বদলে গেছে।কিন্তু যখন মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট মানুষের হাতে ছিল না তখন এগুলোই ছিল মানুষের বিনোদন এর অন্যতম হাতিয়ার।

যাই হোক বর্তমানে মেলার জৌলুশ অনেক কমে গেছে।একটি মেলা ভাগ হয়ে আরো তিনজায়গায় চলে গেছে।ফলে মেলার পরিসর ও আগের থেকে ছোট হয়ে এসেছে।তবে মেলার উদ্দীপনা কিন্তু কমে নি।এখনো প্রত্যেক বৈশাখেই সবার মাঝেই আগের মত উদ্দীপনা কাজ করে।এলাকার প্রত্যেক মেয়ের শ্বশুড় বাড়িতে নিমন্ত্রণ চলে যায়।তেমনি আমাদের ও নিমন্ত্রণ ছিল মামা বাড়িতে।

প্রথমে পুরো পরিবার একসাথে যাবার কথা থাকলেও, পরে একটা কাজ পড়ে যাওয়ায় বাবা মায়ের আর যাওয়া হল না। মেলার প্রথম দিন আমি আর বিন্দু রওনা হলাম মামা বাড়ির দিকে।.........

আজকের পর্ব এপর্যন্তই।বাকি অংশ আগামী পর্বে।ভুল ত্রুটি মার্জনীয়। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

অনেক সুন্দর একটি পোস্ট নিয়ে আপনি আলোচনা করেছেন ভাইয়া। যেখানে মেলা বসলে বিভিন্ন কিছুর আয়োজন হতো। একদিকে সার্কাস পার্টি আরেক দিকে কাঠের তৈরি জিনিস আবার কসমেটিক সামগ্রী আলাদা আলাদা ভাবে প্রত্যেকটা বিষয়ের দোকান থাকতো। আসলে এমন সুন্দর মেলার আয়োজনগুলো আমার খুবই প্রিয় আমিও ছোটবেলায় বেশ অনেক মেলা দেখেছি কিন্তু এখন আর সেভাবে দেখা হয় না। যাই হোক আপনি স্মৃতিচারণ করেছেন এগুলা যেন অনেক ভালো লাগলো আমার।

 2 months ago 

আসলে মামার বাড়িতে গেলে যে আনন্দটা পাওয়া যায়, এটা মনে হয় আর কোন আত্মীয়ের বাড়িতে গেলেই পাওয়া যায় না। যখন সবাই একসাথে মামার বাড়িতে যাওয়া হতো, সেই দিনগুলো ছিল আলাদা রকম আনন্দের। এখন কিন্তু সেই সময়টা আমরা চাইলেও আর ফিরে পাবো না। ছোটবেলায় মামার বাড়িতে কাটানো সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে এখনো অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনার মামার বাড়িতে মেলা হয় বিষয়টা অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে। এরকম মেলায় যাওয়ার অনেক ইচ্ছা আছে আমার। আপনি এবং আপনার বোন নিশ্চয়ই ভালো সময় কাটিয়েছিলেন। আপনাদের মেলায় যাওয়ার পরবর্তী পোস্ট পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 months ago 

আপনার মামা বাড়ির এলাকার নাম যদি গাংনগর হয়, তাহলে তো নদী থাকার দরকার ছিল। যদি সেটা না থাকে, তাহলে তো নামের সাথে গ্রামের কোন মিল পাওয়া গেল না। আসলে কি জানেন তো ভাই, মামার বাড়ির এলাকার যে মেলা বা অনুষ্ঠানগুলো, এগুলো সব সময় খুব মজার হয়। আমিও ছোটবেলায় মামা বাড়ির মেলায় গিয়ে সার্কাস দেখতাম। যদিও এখন সেগুলো আর হয় না। তবে এটা ঠিক, অতীতে এই গ্রামীন মেলাগুলোতে যে আনন্দ হতো, এখন সেটা অনেকটাই কমে গেছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 66976.31
ETH 3509.07
USDT 1.00
SBD 2.70