জন্ম অষ্টমি পালন
এখন চলছে কলিযুগ।আজ থেকে প্রায় ৫২৪৯বছর আগে দ্বাপর যুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অবতার রূপে পৃথিবীতে আসেন। এখন অনেকে হয়ত অবতার বুঝবেন না। তাদের বলি,কোন কারনে ঈশ্বর যদি পৃথিবীতে আবির্ভূত হন তখন তাকে বলা হয় অবতার। পৃথিবীতে যখন অধর্ম বেড়ে যায়,ধার্মিকদের উপর অত্যাচার হয় তখন ঈশ্বর পৃথিবীতে আসেন ধার্মিকদের রক্ষা করতে,পুনরায় পৃথিবীতে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে।
দ্বাপর যুগে কংস নামের একজন শক্তিশালী রাজা ছিল।কংস তার বাবাকে বন্দী করে ক্ষমতায় বসেছিল। কিন্তু শক্তিশালী হলেও সে ছিল ভীষণ অত্যাচারী। তার অত্যাচারে সকল প্রজা অতিষ্ট ছিল।সে কোথাও কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে পারত না। তার অত্যাচার দিন দিন বাড়তেই থাকল। একদিন আকাশ থেকে দৈববাণী হল, কংসের বোন দেবকীর গর্ভের অষ্টম সন্তান কংস কে হত্যা করবে। এই দৈব বাণী হয় দেবকীর বিয়ের দিন৷ ফলে কংস দেবকী ও তার স্বামী বসুদেব কারাবন্দী করে। এবং একে একে তাদের সাত জন সন্তানকে হত্যা করে।
সেই দেবকীর অষ্টম সন্তান হিসেবে জন্ম নেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ।তার জন্মের সাথে সাথে দৈব বাণী হয় এবং বসুদেব কে নির্দেশ দেয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে নন্দ এর বাড়িতে রেখে আসতে। বসুদেব সেই দৈবনির্দেশ পালন করেন।যদিও কংস এটি জানতে পারে এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে হত্যা করার অনেক চেষ্টা করে। কিন্তু যে ভগবান তাকে হত্যা করে সাধ্যকার।উপযুক্ত সময়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কংস কে বধ করেন এবং পৃথিবীকে কংসের অত্যাচার এর হাত থেকে রক্ষা করেন।
সেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম উপলক্ষে প্রতিবছরই আয়োজন করা হয় জন্মঅষ্টমি।সারাদিন নির্জলা উপবাস ও ঈশ্বরের নাম কীর্তন এর মাধ্যমে পালন করা হয় এই পবিত্র তিথি।সারাদিন উপবাস শেষে সন্ধ্যায় প্রসাদ ভোজনের মাধ্যমে উপবাস ভঙ্গ করা হয়।জন্মঅষ্টমী একটি আনন্দ উৎসব।আমি আবার একা একা আনন্দ করতে পারি না।আপনারা তো জানেনই আনন্দ ভাগ করে নিলেও বাড়ে। তাই আমাদের প্রতিবেশী সবাইকে নিমন্ত্রণ করি।এর মাঝে আমাদের কমিউনিটির দুইজন সদস্য বৃষ্টি চাকী কাকিমা ও আমাদের নতুন সদস্য উৎস দের পরিবার ও আছে।
সকাল থেকেই সবার মাঝেই ব্যস্ততা। মা পুজা শেষেই বাজারে চলে গেলেন,আমিও স্নান সেরে পুজা করে মায়ের কাজে হেল্প করতে লাগলাম।একটু পরের উৎসর মা কাকিমা ও আমার মামি চলে আসল। উনারাও মায়ের কাজে সাহায্য করতে লাগল। তারপর মোটামুটি কোটা-বাটা শেষে সবাই যার যার বাড়ি চলে গেল।কেননা রান্না হবে বিকেল থেকে।
এরপর দুপুরে সবাই একটু বিশ্রাম নেওয়ার পর আবার বিকেল থেকে কর্মব্যস্ততা শুরু হয়। সবাই মিলে রান্না ও অন্যান্য কাজ করায় সব কাজ খুব তারাতারি শেষ হয়ে যায়। এরপর সবাই নিজেদের বাড়ি চলে যায় পুজা অর্চনার জন্য।পুজা শেষে সবাই চলে আসে। তখন আবার সবাই একসাথে খাওয়াদাওয়া করা হল।অল্প আয়োজন,কিন্তু সবাই মিলে হওয়ায় বেশ মজা করে সবাই খাওয়াদাওয়া করা হয়। খাওয়াদাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে আবার সবাই সবার বাড়ি তে রওনা হয়।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
হয়তো আপনাদের একটি উৎসব পালন করেছেন এবং সেই সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পারলাম। আপনাদের এই উৎসব সম্পর্কে আমাদের তেমন কোন জ্ঞান ছিল না। তবে আজকে আপনাদের এই উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে ধারণা অর্জন করতে পারলাম যদি ভালো লাগলো আমার।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
জন্মাষ্টমী উদযাপনের ইতিহাস জানা ছিলো না আমার। আপনি দারুণ ভাবে আলোচনা করেছেন ভাই। আসলেই একা একা আনন্দ করা যায় না। সবাই একসাথে আনন্দ করতে এবং খাওয়া দাওয়া করতে সত্যিই খুব ভালো লাগে। সবাইকে একসাথে দেখে খুব ভালো লাগলো। সবাই একসাথে চমৎকার সময় কাটিয়েছেন। যাইহোক এতো সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক চমৎকার ছিল ভাই আপনার বর্ণনা গুলো। আসলে অনেক কিছু অজানার ছিল জন্মাষ্টমী সম্পর্কে। আপনার বিস্তারিত বর্ণনার মাধ্যমে খুবই ভালো লাগলো জানতে পেরে। তবে খাওয়া দাওয়ার পর্ব খুবই ভালো লেগেছে। সবাই মিলে তো চমৎকার খাওয়া-দাওয়া করলেন। অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটালেন সবাই মিলে। আসলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো খুবই ভালো লাগে। সেখানে অনেক আত্মীয়-স্বজনের আগমন ঘটে। সবাই মিলে অনেক আনন্দঘন কিছু মুহূর্ত কাটানো সম্ভব হয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য।
আনন্দ ভাগ করে নিলে তা বহুগুণ বেড়ে যায়। সব্বাইকে একসাথে দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। আর এটা মোটেও অল্প আয়োজন না। লুচি, সুজি, তালের বড়া, বিভিন্ন রকমের ফল প্রসাদ দেখে তো প্রসাদ পেতে ইচ্ছে করছে আমারো। কিন্তু আমার তো আর সেই সুযোগ নেই।
আপনাদের এই উৎসব সম্পর্কে খুব একটা ধারনা নেই ভাইয়া আমার৷ আপনার পোস্টের মাধ্যমে কিছু ধারণা পেলাম। সবাই মিলে নিশ্চয়ই অনেক মজা করেছেন এবং খাওয়া দাওয়া করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। সুন্দর এই মুহূর্তটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
জন্ম অষ্টমি পালনের ইতিহাসটা জানতাম না আজকে জানলাম। আপনাকের আর বৃষ্টিচাকী আপুকে প্রায় সময় এক ফ্রেমে দেখি। এমন দৃশ্য দেখলে খুবই ভালো লাগে। খাবারের তালিকায় অনেক আইটেমই ছিল। ধন্যবাদ।
ভাইয়া আমরা প্রতিবেশী,উনি আমার কাকিমা তাই সব অনুষ্ঠান বা আনন্দ সবই ভাগাভাগি করে নেই একসাথে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।