কবে সভ্য হব?
প্রথমেই বলে রাখি আমি খুব লজ্জিত।এরপর এ বলতে পারি আমি খুব হতাশ।একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে কখনো এমন দিন দেখতে হবে বলে ভাবি নি। আর একারণেই লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে।
একটি স্বাধীন দেশকে যে কয়টি জিনিস রিপ্রেজেন্ট করে তার মাঝে উল্লেখযোগ্য হল জনগণ,খেলোয়াড়,বিজ্ঞানী,নেতৃবৃন্দ,পতাকা,জাতীয় প্রতীক,জাতীয় সংগীত অন্যতম।এর মাঝে যেটি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ তা হল পতাকা।
শুধু দেশের না,যে কোন প্রতিষ্ঠানের পতাকা সেই প্রতিষ্ঠানের সরাসরি সেই প্রতিষ্ঠান কে রিপ্রেজেন্ট করে।এই নিয়ে আপনাদের একটি গল্প শুনাই। টিনেজ বয়সে সেনাবাহিনীর প্রতি অনেক আকর্ষণ ছিল। একমাত্র ইচ্ছা ছিল কোনভাবে সেনা তে যোগ দেওয়া।
তাই চেষ্টা করতাম ওদের লাইফস্টাইল ফলো করার। এজন্য কলেজে যোগ দিয়েছিলাম বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) তে। ওপার বাংলায় যেটা এনসিসি নামে পরিচিত। ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরে সপ্তাহে দুইদিন একজন আর্মি স্টাফ এসে প্রশিক্ষণ দিতেন। এমনি এক প্রশিক্ষণের সময় দিন আমাদের প্যারেড প্রশিক্ষণ চলছিল।
প্যারেডের সামনে কয়েকজন পতাকা নিয়ে থাকে।এদেরকে বলা হত ফ্ল্যাগপার্টি। এই ফ্ল্যাগপার্টির একজন পতাকা ফেলে দেয়। সাথে সাথে স্টাফ সেই রেগে যায় এবং সেই ক্যাডেট কে ৫০টি পুশআপের শাস্তি। আর বলল এই পতাকার জন্যই এত কিছু। সেই পতাকাকেই যদি সম্মান করতে না পার তাইলে এগুলার দরকার নাই। এরপর যদি কেউ এমন করো তাইলে তার শাস্তি আরো ভয়ংকর।
এবার হয়ত বুঝতে পেরেছেন পতাকার সম্মান কতটা। একটা দেশের পতাকা রক্ষার জন্য সেই দেশের জনগণ প্রাণ পর্যন্ত দিতে পারে করতে পারে সর্বোচ্চ ত্যাগ। যেমন বাংলাদেশের পতাকার জন্য ত্রিশলক্ষ শহীদের রক্ত আর দুইলক্ষ মা বোনের ইজ্জত দিতে হয়েছে।
তাই পতাকা শুধুমাত্র একটি বস্ত্রখন্ড নয়,পতাকা একটি সম্পূর্ণদেশ,দেশের মানুষ ও তাদের সম্মান।তাই কোন পতাকাকে অসম্মান করা মানে সেই দেশ,দেশের মানুষ ও সেই পতাকা রক্ষার জন্য জীবনদান করা প্রত্যেকটি মানুষকে অসম্মান করা। সম্প্রতিক কালে বাংলাদেশের উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ভারত ও আরো কয়েকটিদেশের পতাকার প্রতি অসম্মান করা হয়েছে।
বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এই ঘটনা আমাকে ভীষণ লজ্জিত করেছে। একটি দেশের সাথে মতামত ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা থাকতেই পারে,এগুলা সমাধান করতে হবে কূটনৈতিক ভাবে আলোচনার মাধ্যমে।কিন্তু কোনভাবেই সেই দেশের পতাকাকে অসম্মান করা জাস্টিফাইড না।
তাই দুই দেশের উন্মত্ত জনতার মাঝে যা হচ্ছে এটা মোটেই কাম্য নয়। যদিও আমাদের বাংলাদেশীরাই এটা শুরু করেছি,কিন্তু এই কাদাছোড়াছুড়ি দুই দেশের মাঝেই বিভেদ সৃষ্টি করছে। নষ্ট করছে দুই দেশের মাঝে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক।আমরা প্রতিবেশি।আমাদের সব সময় পাশাপাশি থাকতে হবে। আমাদের মাঝে সম্পর্ক খারাপ হলে তৃতীয় পক্ষতার সুযোগ নিবে।তাই আমাদের উচিৎ খুব দ্রুত নিজেদের বিভেদ ভুলে যাওয়া এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নেওয়া।আর বাংলাদেশের অতি উৎসাহী মানুষের পক্ষথেকে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 4/7) Get profit votes with @tipU :)
Twitter link
সভ্যতা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আসলে সময়ের সাথে সাথে কেন জানি মানুষ বিবেক হারিয়ে ফেলছে। অনেক ক্ষেত্রেই এসব দেখা যাচ্ছে। কোন কিছু বলার মত ভাষা থাকে না। নিরবে সবকিছুই মেনে নিতে হয় ভাইয়া।
মাঝে মাঝে প্রতিবাদ ও করতে হবে আপু৷ ভাল মানুষের সংখ্যা বেশি,কিন্তু তারা নীরব থাকাতেই এই অবস্থা। প্রার্থনা করি দ্রুতই সব ঠিক হয়ে যাক।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
পতাকাকে অবমাননাকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে বলে আপনি যেভাবে সুন্দর একটি পোস্ট দিলেন তা থেকে অনেক ধনাত্মক চেতনার স্রোত বয়ে গেল। সব দেশের উচিত অন্য দেশের পতাকাকে সম্মান জানানো। আমি কোনদিনই পারিনা অন্য কোন পতাকাকে পদদলিত করতে। এ আমাদের অধিকারের মধ্যেই পড়ে না।। বরং অন্য দেশের পতাকাকে সম্মান জানানোই আমাদের কাজ। তবে আপনি অনেক কিছু জানেন ভাই। এই দেশে যে এনসিসি চলে সেটা আপনি জানেন দেখেও ভাল লাগল।
সাময়িক ক্রোধ অন্ধ করে দিয়েছে দাদা সবাইকে। মানুষ ভাল মন্দ বুঝতেই পারছে না। আশা করি খুব দ্রুত সবার মাঝে শুভ বুদ্ধির উদয় হবে৷ ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।