ভাতৃদ্বিতীয়া পর্ব-২
গতপর্বে:
তবে কালীপুজার দিন বিন্দু জানালো ও আগের দিন চলে আসবে।ফলে মন খুশিতে ভরে গেল।আমার আবার একা একা এমন আনন্দ করতে ভাল লাগে না৷ আমাদের পাশের বাসায় উৎস আর দিবা আছে। ভাবলাম ওদের সাথে মিলে ভাল করে, বেশ বড় করে পালন করা যাক। কাকি কে সেকথা বললাম।কাকিও রাজি হয়ে গেল।
ভাইফোটার দিন সকাল থেকেই তোড়জোড় শুরু।মা আর কাকি মিলে অনেক সকাল বেলা থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করছিলেন।উৎসর কয়েকজন ফ্রেন্ড এর নিমন্ত্রণ ছিল তাই আয়োজন একটু বেশিই।
বর্তমান পর্বে:
যেহেতু উৎসর ফ্রেন্ডরা আসবে তাই সিদ্ধান্ত হল অনুষ্ঠান উৎসর বাড়িতেই নেওয়া হবে। মা-কাকি মিলে এদিকে আয়োজন করতে থাকল আর আমরা গিয়ে বাজার করে নিয়ে আসলাম।তবে যেহেতু রান্নাবান্না করতে দেরি হবে তাই আমি পড়াতে চলে গেলাম।পড়ানো শেষ হতে হতেই মা কল দিল যে রান্না মোটামুটি শেষের দিকে।এর মানে হলো এখন স্নান করে রেডি হয়ে নে।
কিন্তু আমিও জানি রান্না মাত্র অর্ধেক হয়েছে,এটা হচ্ছে সকালের প্রথম অ্যালার্মের মত,সবাই জানে প্রথম অ্যালার্মে কারো ঘুম ভাঙবে না,তাই যে সময়ে দরকার তার আগে আরেকটা অ্যালার্ম দেওয়াই লাগে।মা জানে আমি প্রথমবারে স্নান করব না, তাই আগেই একবার জানিয়ে দিল।যাই হোক এরকিছুক্ষণ পর আবার বলল রান্না শেষ তখন স্নান করতে গেলাম।স্নান শেষ করে উৎসদের বাসায় চলে গেলাম।
কিন্তু গিয়ে দেখি রান্না এখনো শেষ হয়নি।যোগাড়যন্ত্রও হয়নি।দেখে একটু রাগই লাগল,কারন সকাল থেকে না খেয়ে আছি,ক্ষুধা লেগে গেছে। বিন্দু আর দিবা কে বারবার তাড়া দিয়ে সব কিছু গুছিয়ে নিলাম।কিন্তু আবার বিপত্তি বাধল।উৎসর তিন বান্ধবী আসবে,তার মাঝে একজন নাকি আবার ভাইফোটা দিবে। তাই সব প্রস্তুতি শেষ হবার পরেও ওদের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।কিন্তু বিপত্তি হল,উৎসর ফ্রেন্ডরা আসবে ট্রেনে আর সেই ট্রেন রাস্তায় হয়েছে নষ্ট তাই আসতে দেরি হচ্ছে।
অপেক্ষা করতে করতে অবশেষে বেলা একটার সময় তারা আসল। তখন ওদের বসিয়ে আমি, উৎস আর উৎসর দাদা বসলাম ফোটা দিতে। বোনেদের মাঝে বিন্দু সব থেকে বড় তাই বিন্দুই প্রথমে ফোটা দেওয়া শুরু করল।এখানে একটি মজার ঘটনা ঘটল।ভাই ফোটা দেওয়ার আগে শিশির দিয়ে ভাইয়ের কপাল মুছিয়ে দিতে হয়। এরপর মধু,ঘি,কাজল,দই একসাথে করে ফোটা দিতে হয়।কিন্তু বিন্দু বুঝতে না পেরে শিশিরের পরিবর্তে মধু দিয়ে সবার কপাল মুছিয়ে দিয়েছে।
সবাই তো হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ।এক এক করে বিন্দু, দিবা আর উৎসর বান্ধবী ফোটা দিল।এরপর গিফট দিলাম।কিন্তু তৃতীয় জন অর্থাৎ উৎসর বান্ধবী আমাদের নতুন বোনের জন্য কোন গিফট কেনা ছিল না।কারন ও যে ফোটা দিবে এটা জানতাম না আগে।তাই তৎক্ষণাৎ বাইরে থেকে ওর জন্য গিফট আনলাম।এরপর সবাই মিলে খাওয়াদাওয়া করে আমি আর বিন্দু বাসায় চলে আসলাম।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.