সিদ্ধান্ত গ্রহণ

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব প্যারেন্টিং নিয়ে আমার কিছু উপলব্ধি।

সোর্স

প্রথমেই বলে নেই আমি এখনো প্যারেন্ট নই।তাই প্যারেন্টিং বিষয়ে আমার জ্ঞান দেওয়ার অধিকার নেই। যেহেতু আমি পেশায় হোম টিউটর, বাচ্চাদের সাথেই আমার কারবার তাই আমার পর্যবেক্ষণ থেকে কিছু কথা আমার মনে হয়েছে, সেটাই শেয়ার করব আপনাদের সাথে। আমার সাথে আপনার অমিল হতেই পারে৷ আপনি সেটি মন্তব্যে লিখতে পারেন।

আপনারা জানেন আমার মা অসুস্থ। আমার মা ও টিউশন করায়। যেহেতু মা টিউশন এ যেতে পারছে না,তাই মায়ের টিউশন গুলো আমাকেই করাতে হচ্ছে। প্রথমেই এমন একটি টিউশন এর গল্প বলি। মনে করি ছাত্রের নাম তাসকিন।তাসকিন পড়ে ক্লাস থ্রি তে। তো তাসকিন কে প্রথম দিন পড়াতে গিয়েছি দেখলাম ওর মা কোনটা কি পড়াতে হবে বলে দিয়ে গেল। সাধারণত স্টুডেন্টরাই বলে দেয়। ভাবলাম প্রথম দিন তাই হয়ত তাই এমন।

কিন্তু পর পর বেশ কয়েকদিন গেলাম,আমি সাধারণত অংক টা আগে করাই। কিন্তু স্টুডেন্ট বলল তার আম্মু বলেছে আগে ইংরেজি করাতে।আমি বুঝিয়ে বললাম এখন তোমার মনযোগ আছে তাই আগে অংকটাই করে নেওয়া ভাল। কিন্তু ছাত্র নাছোড় বান্দা।তার মা বলেছে যখন তখন ইংরেজীই করাতে হবে।আমি আর উচ্চবাচ্য করলাম না।যেহেতু মায়ের স্টুডেন্ট তাই আমি কিছু বললাম না। এক ঘটনার কয়েকদিন পার হয়েছে,এই কয়দিন খেয়াল করেছি স্টুডেন্ট নিজে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

ছোট খাট সব সিদ্ধান্তই তার মায়ের থেকে শুনে নিতে হয়।এখন আপনারা ভাবতে পারেন এতে সমস্যা কোথায়। ছোট বাচ্চা তো মায়ের থেকেই শুনে নিবে। এতে ক্ষতি কি? বাবা মা তো সন্তানের ভালই চায়,তাই বাবা মায়ের থেকে শুনে নিলে ক্ষতি কি?

ক্ষতি আছে। তবে ক্ষতি টা এখনই সরাসরি বোঝা যাবে না৷ বোঝার জন্য অপেক্ষা করতে হবে যতদিন না পর্যন্ত তাসকিন বড় হয়।নিজের সিদ্ধান্ত যখন নিজে নিতে হবে তখন সে বুঝতে পারবে তার সমস্যা। তখন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগবে।তখন সে বাবা মা কে গালি দেওয়া শুরু করবে মনে মনে।

আমি বলছি না সন্তানের জন্য বাবা মায়ের সিদ্ধান্ত দেওয়া ভুল,বা ছেলে মেয়ের কোনটা তে ভাল কোনটা তে খারাপ তা ঠিক করে দেওয়া উচিৎ নয়। আমি বলছি আপনার কোমলমতি শিশুদের ছোট খাটো সিদ্ধান্ত গুলো নিজে নিতে দিন। সে কোন মতামত দিলে সেটা নিয়ে তাচ্ছিল্য করবে না,বা তাকে চুপ করিয়ে দেবেন না। এমনটা করলে তার কনফিডেন্স নষ্ট হয়ে যাবে,ভবিষ্যতে কোন সিদ্ধান্ত বা মতামত দিতে সে ভয় পাবে।

তাই তার কথা শুনুন,তার মতামত শুনুন।যদি ভুল হয় তবে তাকে পরে বুঝিয়ে দিন। এতে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা হবে,চিন্তার জগৎ বাড়বে। কনফিডেন্ট বৃদ্ধি পাবে। ভবিষ্যতে কোন সিদ্ধান্ত নিতে তাকে দশবার ভাবতে হবে না,হীনমন্যতায় ভুগতে হবে না। তাই বলে আবার মেজর সিদ্ধান্ত গুলো তার উপর দিয়ে বসে থাকবেন না। সেগুলোতে অবশ্যই আপনি তার সাথে কথা বলবেন,তাকে ভাল মন্দ বুঝিয়ে দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবেন। এতে আখেরে ক্ষতি হবে না,উলটো আপনার সন্তান স্বনির্ভর, কনফিডেন্ট মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে।

আজকের পোস্ট এপর্যন্তই। কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন। আমার সাথে আপনার মত না মিললে সেটাও জানাবেন। ধন্যবাদ সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য।

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

banner-NEW.png
break2.jpg
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
break2.jpg

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

প্রথমে সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার প্রার্থনা যে আপনার মা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক। আর বর্তমান সময়ের সন্তানেরা সত্যিই তাদের নিজেদের তেমন কোন ডিসিশন নিতে পারেনা। এছাড়াও বড় হয়ে তারা কোন দিকে যাবে তাও তারা ডিসিশন নিতে পারে না। আর এর ফলে এমন মনে হয় এখনকার সন্তানেরা পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। আসলে আপনার প্রতিটা কথাই সঠিক। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

প্যারেন্টিং আসলে অনেন বিশাল একটা বিষয়। তবে আমাদের দেশে এটা নিয়ে কারোর কোন মাথাব্যথা নেই। একারণেই আমাদের বর্তমান সময়ের এমন দুরাবস্থা। আমাদের অনেকেরই বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে অনেক অনেক অভিযোগ থাকে। এমনকি অনেকের তো অভিযোগ টা ঘৃণাতেও পরিণত হয়ে যায়। অথচ বাবা মা ভাবে তার সন্তান এমন কেন হলো, ওমন কেন হলো, বা তাদের ভুল কোথায়। আসলে প্যারেন্টিং এ ভাবার আছে অনেক কিছু, জানার আছে অনেক কিছুই। বেশ সুন্দর লিখেছো। তবে এই কথাই যদি ওই ভদ্রমহিলা কে গুছিয়ে বলতে যাও, উনি ভালোভাবে না-ও নিতে পারেন বিষয়টা।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

উনাকে আমি বলি নাই কিছু,তবে যেহেতু পড়ানোর দায়িত্ব তাই বলেছি ওর পড়ার ধরন পাল্টাতে হবে।ধন্যবাদ মাসি উৎসাহ পেলাম অনেক।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

সব সময় বাচ্চাদের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দিতে হবে তাহলে ভবিষ্যতের ডিসিশন গুলো খুব সহজেই সে নিতে পারবে। তবে হ্যাঁ যদি সে ভুল সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে গার্জিয়ান হিসেবে সেই ভুলটা তাকে ধরিয়ে দিতে হবে তাহলেই জীবনের কঠিন সময় গুলোতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবন পার করতে পারবে।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 5 months ago 

ভাইয়া আপনার আম্মা খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন এমনটাই আশাকরি। একটা খুব সুন্দর টপিক নিয়ে পোস্ট শেয়ার করেছেন। এটা একদম সত্যি স্বাধীনতা না দিলে বাচ্চারা আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারেনা।সন্তানের উপর অল্প অল্প করে অনেক কিছুই ছেড়ে দিয়ে দেখতে হয়।এতে সন্তানের মধ্যে দায়িত্ববোধের ও জন্ম নেয়।

 5 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন।ধন্যবাদ আপু।

 5 months ago 

আমাদের দেশের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ বাবা মা তার ছেলে মেয়েদের এমনভাবে গড়ে তোলে না বাইরে যেতে দেয় না নিজের কোন স্বাধীনতা থাকে না। শেষে গিয়ে ছেলেটা অনেক টা বোকা এবং নির্বোধ টাইপের হয়। যেমনটা বললেন একটা সিদ্ধান্তও নিজে নিতে পারে না। এগুলোর জন্য ঐরকম বাবা মা দায়ী। আপনার কথাগুলো বেশ সুন্দর লাগছে আমার কাছে।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ঠিক বলেছেন, ছেলেমেয়েদের ঘরে আটকে রেখে মানসিক ভাবে পঙ্গু বানিয়ে ফেলে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 5 months ago 

আপনার মায়ের অসুস্থতা সম্পর্কে আপনি আপনার একটি পূর্ববর্তী পোস্টের মধ্যে শেয়ার করেছিলেন৷ দোয়া করি যেন সৃষ্টিকর্তা ওনাকে অতি তাড়াতাড়ি সুস্থ করে তোলেন৷ আর বাচ্চাদেরকে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য স্বাধীনতা দেওয়া উচিত৷ তাদেরকে স্বাধীনতা দিয়ে দেখা উচিত যে তারা আসলে কি করতে চায়৷ এই থেকে আমরা তাদের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করব এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাব। তাই আমরা যেন তাদেরকে কোন কিছু জোর করে ধরিয়ে না দেই৷ হয়তো সে এই বিষয়টির জন্য প্রস্তুত নয়৷ সে তার নিজস্ব যে বিষয়টি রয়েছে সেটি নিয়ে পরিকল্পনা করেছে৷ সে বিষয়টি সে একটু বেশি গুরুত্ব দিতে পারবে এবং এগিয়ে যেতে পারবে৷

 5 months ago 

অনেক সুন্দর বলেছেন।সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 5 months ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ এরকম ইউনিক একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ছোট থেকে যে ছেলে মেয়েগুলো সব সময় বাবা-মায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলে, নিজেদের কোন সিদ্ধান্ত তারা নিজেরা নিতে পারে না বা তাদের নিতে দেয়া হয় না, তারা কিন্তু বড় হয়ে বেশ অসুবিধায় ভোগে, একথা একেবারেই সত্যি। আমিও মনে করি যে প্রত্যেকটা সিদ্ধান্ত তার নিজেরই নেয়া উচিত। এরপর যদি ভুল হয় তাহলে সেটা সংশোধন করে দেয়া উচিত। তাহলে হয়তো আর কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমার মনে হয় তাসকিন এর মা যেটা করছে, সেটা নিঃসন্দেহে ভুল কাজ। যাইহোক, আপনার মায়ের সুস্থতা কামনা করছি ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59325.16
ETH 2609.11
USDT 1.00
SBD 2.41