ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা
বছর কয়েক আগেও যখন বাসা থেকে অভিমানে বের হয়েছিলাম, সেই সময়েও এ শহরে আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। পকেটে হাজার খানেক টাকা আর সঙ্গে গর্ভবতী স্ত্রী। যে শহরটাতে ছোটবেলা থেকেই বড় হয়ে উঠেছিলাম, মুহূর্তের মধ্যে সেদিন মনে হয়েছিল, এ শহরের কেউ আমার আপন না।
ভিডিও লিংক
সত্যিই দুনিয়াতে কেউ কারো আপন না, বিশেষ করে কাছের আত্মীয়-স্বজন, ভাই-বোন এরা আসলে অনেকটা আপন হওয়ার মতো ছদ্দবেশী মুখোশ পরে থাকে। তাছাড়া হুটহাট অনাকাঙ্ক্ষিত কষ্টগুলো এদের কাছ থেকেই পাওয়া যায়।
তারপরে তো দীর্ঘ অনেকটা সময় বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করেছি। সেকি পরিশ্রম, এখনো সেই কথাগুলো মনে হলে চোখে এমনিতেই পানি চলে আসে। নিজের বাস্তব জীবনের পেশার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ছোটাছুটি, তাছাড়া নিজের চেম্বার সামলানো এবং কমিউনিটির কাজগুলো প্রতিনিয়ত করা। সব মিলিয়ে জীবন যেন আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে সেসময় বুঝিয়ে দিয়েছিল, জীবনে কিছু করতে হলে কাজের কোন বিকল্প নেই। ভাগ্যিস, শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে কোনরকমে উঠেছিলাম নইলে গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে আরো বিপদে পড়তে হতো।
তারপরে অবশ্য খুব একটা বেশি দিন আর ঝামেলায় থাকতে হয়নি, অবশেষে শহরে একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলাম, সেখানে ছিলাম দীর্ঘদিন। ধীরে ধীরে সময়ের পরিবর্তনে বাস্তব জীবনের কর্মগুলো নিজের থেকেই ইস্তফা দিয়েছিলাম এবং লেখালেখির সঙ্গে পাকাপোক্ত ভাবে যুক্ত হয়ে গিয়েছিলাম।
এ শহুরে জীবনটা আমার খুব একটা ভালো লাগে না। বড্ড ব্যয়বহুল জীবন, তাছাড়া বিষিয়ে ওঠা পরিবেশ ও যান্ত্রিকতা আমার একদম অসহ্য । অনেকদিন থেকেই ভাবছিলাম গ্রামে একটা ছোট্ট বাড়ি করব। যেখানে যান্ত্রিকতার কোন ছাপ থাকবে না, প্রকৃতির খুব কাছাকাছি থাকা যাবে এবং বিশুদ্ধ অক্সিজেনে প্রতিনিয়ত ফুসফুসটা ভরে উঠবে।
তেমনটা লক্ষ্য নিয়েই এবার আমার এগিয়ে চলা, মোটামুটি গতকাল গিয়েছিলাম ইট কেনার জন্য, সেই কাজটাও বেশ ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। কত স্বপ্ন আছে, গ্রামে বাড়িটা হয়ে গেলে সেখানে ছোট্ট একটা পাঠাগার করব, প্রতিনিয়ত বই পড়বো, নিজের মতো করে লেখালেখি করব, আর কমিউনিটির সঙ্গে সক্রিয় থেকেই জীবনের বাকি সময় গুলো কাটিয়ে দিব।
ভাগ্যিস আমার কঠিন সময়ে কমিউনিটি পাশে ছিল কিংবা এখনো আছে। আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আমাদের কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা ও সহকারী প্রতিষ্ঠার কাছে। আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নে , তাদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এখন ভালোভাবে সবগুলো কাজ ঠিকঠাক মত করতে পারলেই যেন মানসিকভাবে চাপমুক্ত হয়ে যাবো। বড্ড তাড়াতাড়ি ইস্তফা দিতে চাই শহুরে জীবনকে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে শূন্য পকেটে বোঝা যায় কে আপন এবং মানুষের আসল রূপ। অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন দুজনে মিলে তখন বুঝেছিলেন শহর টা কত অচেনা। আসলে ঠিক বলেছেন ভাই কিছু আত্মীয়-স্বজন বা ভাই-বোন আছে যারা খুব আপন সাজবে কিন্তু তাদের ভেতরটা একদম নোংরা। সব কষ্টের শেষ এ আজ একটা নিজের বাড়ি করতে পারছেন এর চেয়ে আনন্দের কোন কিছু নেই। শুভকামনা আপনার জন্য আরো এগিয়ে যান।
বাড়ি এখনো হয়নি, তবে কাজ চলমান রয়েছে আপু। আশা করা যায়, দ্রুতই সব শেষ হয়ে যাবে।
আপনার ইচ্ছাটা তো দেখছি সবার চেয়ে আলাদা গ্রামের মধ্যে একটি পাঠাগার করবেন সেখানে ভিন্ন রকমের বই থাকবে আসলে এমন উদ্যোগ সবাই তো নেয় না। আর আপনার জীবনের গল্পটা বেশ কঠিন কমিউনিটি প্রতিনিয়ত পাশে ছিল যাই হোক বিষয়টা জেনে ভালো লাগলো।
এটা সত্য যে, আমার কঠিন সময়ে কমিউনিটি আমার পাশে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
স্বপ্নটা বাস্তব হোক- ভালোবাসার ঘর আরো রঙিন হোক, এই দোয়া এবং প্রত্যাশা করছি ভাই।
আমি চিরকৃতজ্ঞ ভাই, আপনাদের মত সহকর্মী পেয়ে। না হলে, আসলে কোন কিছু সম্ভব হতো না।
বিপদের সময় যদি পুরুষের পকেট খালি হয় তাহলে অদ্ভুত রকমের শূন্যতা জীবন এলোমেলো করে দেয়। গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে যখন বেরিয়ে পড়েছিলেন তখন কেউ আপনার খবর রাখেনি। কিন্তু এখন যখন নিজে ভালো কিছু করছেন তখন অনেকেই আপনার খবর রাখার চেষ্টা করবে। এই পৃথিবীতে সবাই স্বার্থপর। গ্রামে পার্মানেন্ট ভাবে সেটেল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভালোই করেছেন ভাইয়া।
এমনটাই তো হয়েছে আমার সঙ্গে, এখন আমার অনেকেই খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করে, তবে সেদিকে আর কোন কর্ণপাত করি না।
আসলেই ভাই আমাদের পরিবার কিংবা কাছের আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকেই আমরা বেশি আঘাত পেয়ে থাকি। যাইহোক ধীরে ধীরে নিজের স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা করছেন,যা দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগে। আশা করি খুব শীঘ্রই গ্রামে ছোট্ট একটি বাড়ি তৈরি করার পাশাপাশি, একটি উন্মুক্ত পাঠাগার তৈরি করতে সক্ষম হবেন। আপনার জন্য মন থেকে অনেক অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল ভাই।
আমি কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করছি ভাই, আপনার মন্তব্যের কাছে।
মানুষের জীবনের খারাপ সময় গুলো একটা সময় চলে যায় ভালো সময় আসে। কিন্তু ঐ খারাপ সময়ের কথা ঐ খারাপ সময়ের অনূভুতি মানুষ কখনোই কোনভাবে ভুলতে পারে না। আপনার বাড়িটা যেন ভালোভাবে কোন ঝামেলা ছাড়া করা হয় সেই প্রার্থনা করি। আর আপনার পাঠাগার দেওয়ার পরিকল্পনা টাও সফল হোক।
ধন্যবাদ ভাই তোমার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
আপনার সিদ্ধান্তের কথা শুনে অনেক বেশি ভালো লাগলো দাদা। আমরা তো এখন পুরোটাই শহর মুখী হয়ে গেছি, এজন্য গ্রামে বসবাস করতে চাই না। কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একেবারেই উল্টো। আপনি শহর ছেড়ে গ্রামে ছোট্ট একটা বাড়ি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তার পাশাপাশি একটা পাঠাগারও খুলবেন, এটা অবশ্য একটা ভালো উদ্যোগ। আসলে সত্যি কথা বলতে কি জানেন তো দাদা, বিপদের সময় আসলে কেউ পাশে থাকে না, নিজেকেই সব সামলে নিতে হয়। তবে "আমার বাংলা ব্লগ" যেভাবে আমাদের পাশে রয়েছে সব সময়, সেটা ভাষায় প্রকাশ করে বোঝানো যাবে না।