সেদিন গিয়েছিলাম বৃষ্টি বৌদির বাসায়
এমনিতেই ঝড়ের কারণে একটানা ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ ছিল না, যার কারণে নিজের কর্ম থেকে প্রায় অনেকটা সময় বিচ্ছিন্ন ছিলাম, তবে এভাবে চলতে থাকলে আমার শুধু কাজই জমতে থাকতো , যেহেতু আমি প্রতিদিনের কাজ প্রতিনিয়ত করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি, তাই আর দেরি না করে সেদিন ঝড়ের মধ্যেই গ্রাম থেকে চলে গিয়েছিলাম শহরের উদ্দেশ্যে।
ঝড়ের ভিতরে গ্রামে নেটওয়ার্ক অবস্থা এতটাই নাজুক হয়ে পড়েছিল যে, মোবাইলে নেটওয়ার্ক পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছিল না। অতঃপর এত কষ্ট করে ঝড়ের মধ্যে ভিজে শহরে এসেও দেখলাম, এখানেই বিদ্যুৎ নেই, তবে শহরে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া গিয়েছিল।
আমি মূলত তাতেই খুশি হয়েছিলাম, কেননা আর যাইহোক নিজের কর্মক্ষেত্রের কাজ গুলো মোবাইল নেটওয়ার্ক দিয়ে সার্ভারে যুক্ত হয়ে ধীরে হলেও করা যাবে। প্রথমে যখন সার্ভারে ঢুকলাম এবং সবার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম, তখন যেন মনে হলো, নতুন করে প্রাণ ফিরে পেলাম । শহরের বাসায় এসেছি মূলত একদিনের জন্য, বাবু ও হীরা কে গ্রামেই রেখে এসেছিলাম।
কেননা আমি, পুনরায় বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ গ্রামে স্বাভাবিক হলে তখন আবার গ্রামেই ফিরে যাবো। যেহেতু একদিনের জন্য শহরের বাসায় এসেছি, তাই মোটামুটি বাসায় এসে কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম । দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই শহরের বাসায় কেউ নেই,সব কিছু অগোছালো হয়েছিল,এতসবের মাঝেও নিজের কর্মের পরিবেশটা তৈরি করে নিলাম এবং ধীরে ধীরে সার্ভারে ঢুকে সবগুলো কাজ করে ফেললাম।
কাজ করতে গিয়ে কখন যে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত গিয়েছিল, তা যেন খেয়াল করে উঠতে পারিনি। মূলত পেটে টান পড়েছিল বিধায় বুঝতে পেরেছিলাম কিছুটা বিরতি দরকার। তবে এখানে আমাকে রান্না করে দেওয়ার কেউ নেই, তাই হোটেলে গিয়ে খেয়ে আসতে হবে নতুবা অন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মুঠোফোন মারফতে শ্যামসুন্দরের সঙ্গে কথা বলে নিলাম, কেননা ওর কাছে আমার নতুন বই গুলো আছে, সেগুলো এখনো হাতে নিয়ে দেখা হয়নি,তাই ওকে বইগুলো নিয়ে আসতে বললাম। তাছাড়াও পরিচিত লোকজনের বাসায়, আমি মাঝে মাঝে বিনা দাওয়াতেই চলে যাই, এই যেমনটা সেদিন বৌদির বাসায় গিয়েছিলাম।
কোন রকমে বৌদির বাসায় গিয়ে বৌদিকে বললাম, বড্ড ক্ষুধার্ত আমি। দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেছি, এখন পেটে টান পড়েছে, তাই ছুটে আসলাম। বৌদি বরাবরের মতো, এবারও সাবলীলভাবে উত্তর দিল, কোন সমস্যা নেই আপনি আরামে বসে যান, দেখি আপনার জন্য কি করা যায়।
নিজের লোকজনই আমাকে ঠিকমতো বুঝতে পারে না, তবে এক্ষেত্রে মাঝে মাঝে বৌদি আমাকে ঠিকই কিছুটা বুঝতে পারে। এই যে যেমন আসা মাত্রই চা দিয়ে দিয়েছিল, টুকটাক সবার খোঁজখবর নিল, তারপর তো বলেই বসলো, আমার যা প্রস্তুত আছে তাই খেয়ে যাবেন, আপনাকে দেখে আসলেই বেশ ক্ষুধার্ত মনে হচ্ছে।
বেশ অনেকটা দিন পরে বৌদির সঙ্গে দেখা হলো, তবে সেভাবে খুব বেশি কথা হলো না, কেননা তার জীবনেও ব্যস্ততা লেগেই আছে। জীবন গুলো এমনই, এতসবের মাঝেও যখন টুকটাক দেখা হয়, হালকা আলাপচারিতা হয়, এটাই তো অনেকটা বেশি। হয়তো কিছুদিন পরে আরো পথের দূরত্ব বেড়ে যেতে পারে, তখন না হয় এই মুহূর্তগুলোই স্মৃতি হিসেবে থাকবে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আসলে ভাইয়া এই ঝড়ে আপনার এখানে 24 ঘন্টা কারেন্ট ছিল না বিষয়টা জানতে পারলাম কিন্তু আমার এখানে ৪৮ ঘন্টা ছিল না ভাই খুবই দুঃখজনক একটা ব্যাপার। আমিও ঠিক মতো কাজগুলো করতে পারছিলাম না তার পরে সব কিছু মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছি। যাই হোক এই নেটওয়ার্ক এর সমস্যা তাই আপনি শহরে চলে গেলেন । সাথে বৃষ্টি চাকি বৌদির সাথে দেখা করলেন এবং বৌদি আপনাকে প্রথমে চা দিল এবং পরিবারের সবাই কেমন আছে সে বিষয়ে আলাপ আলোচনা করলো এবং সেখানে আপনি বৌদির সাথে খুবই সুন্দর একটা মুহূর্ত উপভোগ করেছেন বিষয়টা বুঝতে পারলাম। আর বৌদিকে ক্ষুধার্ত কথা বলতে না বলতেই আপনার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করল বিষয়টা খুবই ভালো লাগলো । অসংখ্য ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই, বিষয়টি বুঝতে পেরে মতামত দেওয়ার জন্য।
যদিও আমাদের এদিকে কারেন্ট কিংবা নেটওয়ার্ক এর সমস্যা নেই। তবে আমাদের গ্রামের বাসায় তিনদিন থেকে কারেন্ট নেই। অবস্থা খুবই খারাপ। আমার বোন বললো পানি শেষ হয়ে গেছে দুই দিন আগে। নেটওয়ার্ক একদমই নেই। এরকম পরিস্থিতি সত্যি অনেক খারাপ লাগে। ভাইয়া আপনি শহরে এসেছেন আর এসেই নিজের কাজগুলো করেছেন জেনে ভালো লাগলো। সত্যি ভাইয়া দায়িত্ব কোন বাঁধা মানে না। আর আপনি নিজের দায়িত্বের প্রতি সবসময় অটল। বৃষ্টি আপু সত্যি অনেক ভালো মনের একজন মানুষ। দূরত্ব বাড়লেও স্মৃতিগুলো কিন্তু রয়েই যাবে ভাইয়া।
এটা সত্য বৃষ্টি বৌদি বেশ ভালোই ব্যক্তিত্বের মানুষ , তার প্রতি আমি একপ্রকার কৃতজ্ঞ।
বাহ্ বৃষ্টি বৌদির সাথে আপনার এরকম সম্পর্ক দেখে খুবই ভালো লাগলো। আসলে যদি সম্পর্ক এমন হয় তাহলে দাওয়াতের কোন প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া আমার কাছে কিন্তু এরকমটা ভীষণ ভালো লাগে। কাছের মানুষগুলোর সাথে এরকম ভাবে চলতে আমার ভীষণ ভালোই লাগে। আপনাদের কাটানো মুহূর্তটা ভীষণ ভালো লেগেছে।
বৌদির সঙ্গে তো আমার এমন সম্পর্ক অনেক পুরনো, এটা সত্য তার আতিথেয়তা আমাকে বেশ মুগ্ধ করে।
যেদিনের কাজ সেদিন শেষ করতে না পারলে,পরবর্তীতে বিরাট চাপ হয়ে যায়। তাই আমিও কখনো কাজ জমিয়ে রাখি না। যাইহোক গ্রামে নেটওয়ার্ক ছিলো না বলে,শহরে যাওয়ার আইডিয়াটা খুব ভালো ছিলো। আমাদের এখানেও বিদ্যুৎ ছিলো না টানা ২৯ ঘন্টা। তবে দুটি পাওয়ার ব্যাংকে চার্জ ছিলো বলে, মোবাইল ডাটা দিয়ে কমিউনিটির কাজ গুলো করতে পেরেছি। যাইহোক আপনার হাতের কাজ শেষ করে, বৃষ্টি চাকী আপুর বাসায় গিয়ে খাওয়া দাওয়া এবং গল্প গুজব করেছেন, দেখে খুব ভালো লাগলো ভাই। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
একদম সহমত পোষণ করছি ভাই।
নিজের লোকেদের ব্যাপার টা এমনই হয় ভাই। তারা যেন আমাদের অভিব্যক্তি দেখলেই বুঝে যায় আমরা ঠিক কী বলতে চাইছি বা আমাদের কী চাই। যেমন টা আপনার এবং বৃষ্টি চাকী আপুর মধ্যে হয়েছে। এমন প্রতিবেশি সবার ভাগ্যে থাকে না। কাজে যেন কোন টান না পড়ে এইজন্য শহরে চলে আসা আপনার কর্তব্যবোধ টা প্রকাশ করে।
আসলেই ভাই, জীবনটা এমনই।জীবনের নিজস্ব ব্যাস্ততা তো সকলেরই আছে, এরই মাঝেই যতটুকু পারা যায় স্মৃতি ধরে রাখা যায়, ততটুকুই ভালো। কে জানে সামনে কি অপেক্ষা করছে! দিদিভাই এর হাতের চা এর ছবি দেখিয়ে লোভ ধরিয়ে দিলেন, ও জিনিস আমার ভীষণ পছন্দের। আর সাথে খিচুড়ি!! ইশ!! ওটাও.....
দুটোই বেশ ভালো বানায়, আপনার দিদি।
বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হলে যে কি ধরনের অসুবিধা হয়, সেটা আমিও খুব হাড়ে হাড়ে জানি দাদা। তবে আপনার বিনা দাওয়াতে খাওয়ার ব্যাপারটা আমার কাছে বেশি ইন্টারেস্টিং লাগলো। হা হা হা... 🤭🤭 তবে আমি মনে করি, এক্ষেত্রে আপনি ঠিক কাজই করেছিলেন আপনার বৃষ্টি বৌদির বাসায় গিয়ে। পেটে খিদে লাগলে এতকিছু মাথায় আসেনা। যাইহোক, সবার লাইফেই ব্যস্ততা আছে, এর ভিতরেও কাজ করে যেতে হবে, এই আর কি।