এই গরমে শ্রমজীবী মানুষের অবস্থা

in আমার বাংলা ব্লগ14 hours ago

1000030485.jpg
source

এমনিতেই যে গরম পড়েছে , তার ভিতরে দুপুরবেলা বাহিরে বের হওয়া মানে একদম তপ্ত মরুভূমির বুকে হাঁটার স্বাদ গ্রহণ করা। এ শহরটাকে মরুভূমি বললে ভুল হবেনা, মরুভূমিতেও যেমন গাছপালা নেই তেমনটা এখানেই তো কোন গাছপালা চোখেই পড়ে না। এটা অনেকটা কংক্রিটের জঙ্গল, এর বেশি আর কিছুই না।

চার রাস্তার মোড়ে যখনই কোন বাস থামে, তখনই দৌড়ে যায় ফজলু ভাই। বাসের জানালা দিয়ে যে সকল যাত্রী একটু মাথা বের করে এদিক সেদিক তাকায়, তাদের কাছেই সে প্রস্তাব দিয়ে ফেলে, ডাব খাবেন নাকি একদম কচি ডাব। এ ডাবের পানি খেলেই, গরম এমনিতেই দূর হয়ে যাবে।

অনেকেই তার প্রস্তাবে সাড়া দেয়, আবার অনেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। জীবিকার জন্য সেকি ছোটাছুটি, দুপুরবেলাই যেন তার মোক্ষম সময়। কতজন কত দিক থেকে এই চার রাস্তার মোড়ে আসে আবার কে কোথায় চলে যায়, তা বলা কঠিন। তবে গন্তব্য যার যেখানেই হোক না কেন, পথিমধ্যে অনেকেই ফজলু ভাইয়ের ডাবের পানি খেয়ে তৃষ্ণা মিটিয়ে নেয়।

যেদিন তাপমাত্রা বেশি বাড়ে, সেদিন মনে হয় ফজলু ভাইয়ের আনন্দের সীমা থাকে না। বিক্রি বেড়ে যায় প্রচুর ভাবে। আজও নাকি তেমনটাই হয়েছিল, দুপুরবেলা প্রচুর কাস্টমারের চাপ ছিল। একা কোনোভাবেই কুলিয়ে উঠতে পারছিল না। এমনিতেই এখন যে পরিমাণ ডাবের দাম, তাই শখ করে সে যে নিজের জন্য ডাব খাবে, সেই সুযোগ নেই। নিজের খাওয়া মুখ্য বিষয় না, তার মুখ্য বিষয় বিক্রি করতে পারা।

আজ প্রচন্ড ভাবে ঘামছিল সে, যেহেতু প্রচুর তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছিল, তাই কোন রকমে কাজগুলো তার ছেলের কাছে বুঝে দিয়ে সে পাশেই বসে ছিল। তবে শরীরের ভিতরে কোনভাবেই যেন শান্তি পাচ্ছিল না। এমনিতেই বয়স হয়ে গিয়েছে, তার উপরে প্রচুর পরিশ্রমের কাজ আর আজ যেভাবে সূর্য তাপ ছড়াচ্ছে, তা যেন একদম অসহনীয়।

অনেক ক্রেতার মাঝে সে যখন বেঞ্চে বসেছিল, কখন যে চোখ মুখ অন্ধকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল, তা যেন সে বুঝে উঠতেই পারেনি। তাড়াহুড়ো করে তার ছেলে তাকে নিয়ে বড্ড অস্থির হয়ে পড়েছিল, কেননা তার মুখ থেকে ফেনা আসছিল আর ঘাম ঝরছিল প্রচুর।

দ্রুত তার ছেলে তাকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা দিয়েছিল। এ লক্ষণ সত্যিই খুব একটা ভালো না, মাঝে মাঝে অনেকের অতিরিক্ত গরমের কারণে এমন লক্ষণের জন্য মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। ফজলু ভাইয়ের মতো যারা ভাসমান শ্রমজীবী মানুষ আছেন, তাদের কথা এ গরমের সময়ে ভাবলেই বড্ড খারাপ লাগে, তখন যেন নিজের ভিতরটাই অনেকটা শুকিয়ে আসে।

1000020537.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 10 hours ago 

ভাই আপনার পোস্টটা পড়ে সত্যিই ভীষণ খারাপ লাগলো । এই গরমের ভেতর এই খেটে খাওয়া মানুষগুলোর যে কি অবস্থা তা আসলেই বাইরে থেকে বোঝা মুশকিল । প্রচণ্ড তাপমাত্রায় যেখানে ঘরের মধ্যেই টিকে থাকা যায় না ,আর সারাদিন রোদের মধ্যে এই লোকগুলো কিভাবে বেঁচে থাকে? সত্যি ভীষণ কষ্টকর ।তবে ফজলু ভাইয়ের হসপিটালে নেবার পর কি অবস্থা হয়েছিল সেটি জানতে পারলে ভালো হতো । তিনি কি বেঁচে আছেন ? না মৃত্যুবরণ করেছেন দয়া করে জানাবেন ।ধন্যবাদ আপনাকে।

 7 hours ago 

এটা কিছুদিন আগের ঘটনা আপু, লিখতে অনেকটা দেরি হয়ে গেল। তবে ফজলু ভাই এখন আগের থেকে বেশ সুস্থ আছে কিন্তু একপাশ পুরোটাই প্যারালাইজড হয়ে গিয়েছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57839.82
ETH 3132.70
USDT 1.00
SBD 2.43