তথাকথিত বড় ভাই
গত কয়েকদিন থেকে এলাকার ভিতরে বেশ কয়েকবার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। যেহেতু সন্ধ্যা বেলার দিকে করে একটু হাঁটাহাঁটি করি, তাই সেই সুবাদেই যাওয়া আরকি।
পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রচুর পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে, আগে সন্ধ্যেবেলার পর থেকে এলাকায় তেমন কোন উঠতি বয়সী তরুণ ছেলেদের দেখাই যেত না, হয়তো সবাই ব্যস্ত থাকতো আপন গৃহে পড়াশোনায়। তাছাড়াও পারিবারিক অনুশাসন তো ছিলই।
তবে দিন যত গড়িয়ে গিয়েছে, সবকিছু যেন হাওয়ায় মিলে গিয়েছে। সমসাময়িক সময়ে পারিবারিক অনুশাসন কতটুকু কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে এই তরুণ প্রজন্মের সামনে, তা আমার জানা নেই। একটা নির্দিষ্ট বয়স অবধি, পারিবারিক অনুশাসন মেনে চলা খুবই দরকার। কয়েকদিন এলাকার ভিতরে যাতায়াত করাতে, যে বিষয়গুলো নজরে এসেছে, তার মধ্যে সবথেকে বড় যে ব্যাপার, সেটা হচ্ছে জটলা পেকে মাধ্যমিক পড়ুয়া ছেলেরা সন্ধ্যাবেলা পুকুরপাড়ের আশেপাশে বসে থেকে স্মার্টফোনে গেম খেলে সময় অপচয় করছে।
এবং গেম খেলাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই চিৎকার চেঁচামেচি শোনা যায়। কি যে গেম খেলে তারা, তা বোঝা মুশকিল। তাছাড়া এই সন্ধ্যাবেলার পরে এইট-নাইনে পড়ুয়া ছেলেরা কিভাবে বাসার বাহিরে থেকে এত দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করে, সেটাও বুঝে উঠতে পারিনা। অথচ সবার কাঁধে স্কুল ব্যাগ আর হাতে স্মার্ট ফোন নিয়ে বসে গিয়েছে পুকুর পাড়ে নতুবা এ শহরের বিভিন্ন অলি-গলি চিপা-চাপাতে।
একটা ব্যাপার আরো বেশ ভালোভাবে লক্ষ্য করেছি, এই ছেলেদেরকে সাহস জুগিয়ে যাচ্ছে কিছু তথাকথিত বড় ভাই। মানে এই বড় ভাই গুলো, এই ছেলেদের সামনে এতটাই মুখ্য ভূমিকা পালন করে যে, বাসার গার্ডিয়ানের থেকেও এদের গুরুত্ব তাদের কাছে অপরিসীম। এই তথাকথিত বড় ভাই গুলোর আদৌ, তেমন কোন পরিচয় নেই। বলতে গেলে এরা ভাসমান, এদের কাজই হচ্ছে এই উঠতি বয়সী তরুণদেরকে টার্গেট করা এবং তাদেরকে তার মত করে চালানো।
হয়তো বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে ঐ তথাকথিত বড় ভাইয়েরা, এই তরুণদেরকে প্রোডাক্ট হিসেবে ব্যবহার করে। হয়তো একটু চামচামি করে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় নতুবা মুঠোফোনে ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করে দেয়, না হলে বলে এলাকায় কোন সমস্যা হলে আমাদেরকে জানাবা, এলাকায় রাজার মতো করে ঘুরবা, কোন সমস্যা নেই, আমরা তোমাদের নিরাপত্তার জন্য আছি।
আশাকরি, আপনারা ব্যাপারটা খুব পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পেরেছেন। মানে তরুণ প্রজন্মকে মেধাশূন্য করে, তাদের মস্তিষ্ক গুলোকে চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়ার জন্য এসকল তথাকথিত বড় ভাইয়েরাই যথেষ্ট। এদের দ্বারা ভবিষ্যতে তরুণগুলো আরও বিপথে চলে যাবে এবং ওদের দল ভারী করবে,এই তথাকথিত ভাই গুলোর কার্যক্রম ঠিক এতটুকুই।
তাছাড়া আজকাল তো ক্রমাগত সংবাদে শোনাই যায়, প্রতিনিয়তই যেন কিশোর গ্যাং এর নানা অপকর্ম। এসব যে কবে বন্ধ হবে, তা বলা বড্ড মুশকিল।
এমতাবস্থায় সুশীল সমাজে, সুবোধ ও সুচিন্তা জাগ্রত হওয়া বড্ড জরুরি।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1744932558461395048?t=0-KkFRrUB4sNnNFw47slvw&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
একদম ঠিক ভাইয়া,এই তথাকথিত বড় ভাইদের কারণেই সমাজের ছেলেরা বিপথে যাচ্ছে।আমাদের নিজেদের এলাকায়ই দেখি,উঠতি বয়সী ছেলেরা মোবাইল নিয়ে সন্ধ্যার পর থেকেই বাইরে বাইরে থাকে। যেখানে তাদের পড়াশোনা করার কথা তারা এখন এসব নিয়ে ব্যস্ত।তবে যারা পারিবারিক অনুশাসন মেনে চলে না তারাই এমন সাহস পায়। তবে এই নিয়মে চললে সমাজের প্রতিটি ছেলে একদিন বড় হয়ে সেই তথাকথিত বড় ভাই হিসেবে খ্যাতি পাবে।
সব চলে যাচ্ছে নষ্টের দখলে, এই ব্যাধি দূর করা বড্ড জরুরি আপু।
বাহ্! এককথায় দুর্দান্ত লিখেছেন ভাই। প্রতিটি কথা একেবারে যুক্তিযুক্ত। কমবেশি প্রতিটি এলাকার রাজনৈতিক ক্লাবগুলোতে ওয়াইফাই এর ব্যবস্থা রয়েছে। উঠতি বয়সের পোলাপানেরা স্মার্টফোন নিয়ে পড়াশোনা বাদ দিয়ে, ক্লাবে বসে গেমস খেলে,ফেসবুকিং করে। এতে করে তাদের পড়াশোনা একেবারে গোল্লায় যায়। কিন্তু বড় ভাইয়েরা উঠতি বয়সের পোলাপানদের ব্যবহার করে,নিজেদের স্বার্থ ঠিকই হাসিল করে নিচ্ছে। আমাদের নারায়ণগঞ্জের কিশোর গ্যাং খুবই ডেঞ্জারাস। তারা দিনদুপুরে যেকোনো ধরনের অপকর্ম করতে দ্বিধাবোধ করে না। যাইহোক একেবারে সময়োপযোগী একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
এটা শুধুমাত্র আপনার এলাকার চিত্র না ভাই, পুরো দেশের চিত্র একই রকম। এই ব্যাধি দূর হওয়া বড্ড জরুরি।
বর্তমানে চলছে স্মার্টফোনের অপব্যবহার এবং সেই বিষয়টি কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন ধরনের গেম খেলছে। সেই বিষয়বস্তুগুলোই আপনি অনেক চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন ভাই। আসলে বাস্তব জীবনের এই বিষয়গুলো অনেকেই আমরা দেখেও না দেখার ভান করি।, সেই বিষয়টি আপনি অনেক গুরুত্ব সহকারে আমাদের মাঝে ফুটে তুলেছেন ভাই অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ক্লাস নবম দশম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় স্মার্টফোনের সংস্পর্শে আসার সৌভাগ্য হয়নি। যাও একটা বাটন ফোন ছিল সেটাও আবার লুকিয়ে টুকটাক ফেইসবুক চালানোর জন্য। আর বর্তমানের চিত্র পুরো উল্টো! বর্তমানের তরুণ সমাজ ফ্রি ফায়ার আর পাবজি নামক গেমে আসক্ত বেশি। আর সমাজের তথাকথিত বড় ভাইয়েরাও সুযোগ নিচ্ছে। মিটিং মিছিলে তাদেরকেও জয়েন করাচ্ছে। যে বয়সে পড়ালেখা করার কথা সে বয়সে তারা অযথা সময় নষ্ট করছে। বাবা মায়ের সতর্ক থাকাটাও জরুরি তাদেরকে নিয়ে
বাবা মায়ের শাসন কে হয়তো তারা বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে, তথাকথিত বড় ভাই গুলোর কথাতে, তরুণ প্রজন্ম বেশি মনোযোগী হয়ে উঠেছে।
জি ভাইয়া, তাইতো সমাজের আজ এই দূরাবস্থা!