খিলখিল হাসি
আজকাল যা ঘটছে সবটাই অপ্রত্যাশিত। স্কুল-কলেজ সবমিলিয়ে বলতে গেলে দীর্ঘ বারো বছর সময় একসঙ্গে কাটিয়েছি হিল্লালের সঙ্গে। যখন থেকে সোজাসাপ্টা একেকজনের মুখের উপর কথা বলতে শিখেছি, তখন থেকেই বন্ধু তালিকা ক্রমশ ছোট হয়ে গিয়েছে।
এজন্য খুব একটা দুঃখ পাই না বরং মেনে নেওয়ার চেষ্টা করি সত্যটাকে। দূরত্বই যদি সবাই বাড়াতে চায়, তাহলে সেখানে অহেতুক পিছুটান থাকার কোন মানেই হয় না।
আমি মনেকরি হিল্লোল দূরত্ব বাড়ায়নি বরং সময়ের কারণে ওর জীবনে অনেক নতুন বন্ধু জুটেছে, তাই হয়তো সেই তালিকায় আমার নামটা না থাকা, নিতান্তই অস্বাভাবিক কিছু নয়। বারো বছরের বন্ধুত্ব, কত দীর্ঘ সময় তাই না ! তারপরেও একটা বারের জন্য, ওর বিয়েতে দাওয়াত দেওয়ার আমাকে প্রয়োজন মনে করল না !
ভাগ্যিস ওর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতে যুক্ত ছিলাম, তাই শুভেচ্ছা বার্তা ওখানেই লিখে দিয়েছিলাম। সবাই যে আমাকে দাওয়াত করবে, ব্যাপারটা আসলে তেমন না। আমি হয়তো অহেতুক প্রত্যাশা করেছিলাম।
আমার এই অহেতুক প্রত্যাশা করার ব্যাধিটা এখনো যায়নি, তাই বিষয়টা ভেবে নিজের ভিতরে বড্ড খচখচ লাগছিল । দেখুন না, যেখানে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে একত্রে থাকার পরেও একেকজনের হৃদয় অন্যত্র পালিয়ে বেড়ায়, সেখানে ফেলে আসা জীবনের বন্ধুর কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করাও তো বোকামি ! যা হয়তো বুঝতে আমার অনেকটা দেরি হয়েছে।
অতঃপর সবই বোঝার চেষ্টা করে,নিজের থেকে খিলখিল করে হেসে উঠলাম। আজ কেন জানি অপ্রত্যাশিত সব ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটছে। হিল্লোলের কথা ভাবতে না ভাবতেই, মুহূর্তেই মেসেঞ্জারে এই মাঝরাতে খুদেবার্তা চলে এসেছে।
বার্তা এসেছে সুদূর কানাডা থেকে, তাতে স্পষ্ট করে লেখা, শুভ তুই অবশ্যই আসবি আমার বিয়েতে। এ মাসের মধ্যেই আমি দেশে ফিরব, হাতে খুব একটা সময় নেই, তাই সবাইকে মেসেঞ্জারে জানিয়ে দিলাম। তারিখ একত্রিশ আগস্ট, স্থান রংপুর জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার।
মিমির সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল ক্লাস এইটে, তারপর তো আর দেখাই হয়নি। সেই যে আমি অন্যত্র স্কুলে চলে গেলাম আর সঙ্গে সঙ্গেই অনেকটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছিল। তবে মেসেঞ্জারে তাও টুকটাক কথা হতো । ও অবশ্য পরবর্তীতে স্কুল-কলেজের গন্ডি পেরিয়ে রংপুর মেডিকেলে, তারপরে আবার সেখান থেকে সুদূর কানাডাতে।
দীর্ঘদিন বাদে ও দেশে ফিরছে, শুধুমাত্র বিয়ের জন্য। কেননা বিবাহ পরবর্তী সময়ে, ও ওর স্বামীকে নিয়ে কানাডাতে সেটেল হবে। যেহেতু খুবই সাম্প্রতিক সময়ে, ও ওখানকার সিটিজেনশিপ পেয়েছে তাই এতো ওর তাড়াহুড়ো।
এই মাঝরাত গুলো বড্ড অদ্ভুত, খুব কাছের বন্ধুর কাছ থেকে প্রত্যাশা করেও যেমন দাওয়াত পাইনি, তেমনটা আবার অপ্রত্যাশিত ভাবে ছেলেবেলার বান্ধবী তার নিজের বিয়ের দাওয়াত দিয়ে বসলো।
এখন এসব ভাবছি আর খিলখিল করে হাসছি। কি একটা অবস্থা...!!
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
ভাই মুখের উপর কথা বললে আসলেই কেউ পছন্দ করে না। তাই বলে উচিত কথা না বলে তো আর থাকা যায় না। যাইহোক আপনার ছোটবেলার বন্ধু হিল্লোল ভাইয়ের এমনটা করা মোটেই উচিত হয়নি। কারণ বড় হওয়ার পর যতই বন্ধু বান্ধব জীবনে আসুক না কেনো,ছোটবেলার বন্ধু বান্ধবের স্থান সবসময়ই অনেক উপরে থাকে। এটা আমি অনেকের মুখ থেকেই শুনেছি। যাইহোক আপনার বান্ধবী মিমি আপু কানাডা থেকে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করবে এবং সেই বিয়েতে আপনাকে দাওয়াত দিয়েছে, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। বর্তমান যুগে মানুষ চেনা বড় দায়। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
মানুষ, কখন কিভাবে বদলে যাবে তা বলা বড্ড মুশকিল। বেশ ভালো লাগলো আপনার মন্তব্যটি।
জীবন আসলে নানা ভাবেই আনপ্রেডিক্টেবল ভাই! আমিও আপনার মতোই আর অন্য কারোর কাছে কোন কিছুর প্রত্যাশা রাখি না। এমন কিছু দেখলে শুভকামনা জানাই, সেটাও অবশ্য মনে মনে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি বেশি কথা বাড়াই না। আর কারোর কাছে প্রত্যাশা না রাখলে জীবন এভাবেই অপ্রত্যাশিত ভাবেই সারপ্রাইজ দিয়ে দেয়। তবে যারা এভাবে মনে রাখে, তাদের সেই মনে রাখার মূল্য টা দেয়ার চেষ্টা করি। আপনার বান্ধবীর নতুন জীবনের জন্য অগ্রীম শুভকামনা রইলো।
আমিও ভাবছি, যারা আমাকে মনে রেখেছে তাদেরকে অন্তত গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
একটা জিনিস কী জানেন ভাই আমাদের জীবনটাই কিন্তু অপ্রত্যাশিত। কখন কীভাবে কে আমাদের গুরুত্ব দেয় কে দেয় না এটা সঠিক সময়ের আগে কোনভাবেই বোঝা যায় না কিন্তু। আপনার পোস্ট টা বেশ ভালো লাগল পড়ে। যার থেকে আশা করেছিলেন সে আপনার কথা মনে রাখেনি কিন্তু অন্য একজন ঠিকই মনে রেখেছে।
আমার কাছেও ব্যাপারটা, তেমনটাই মনে হয়েছে ভাই ।