নিষ্ঠুর সকাল
অন্যান্য দিনের থেকে আজকের সকাল অনেকটাই নিষ্ঠুর ছিল । মারাত্মকভাবে ব্যথিত হয়েছিলাম ঘুম থেকে ওঠার পরে। সেদিনই নোমান ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল আর আজকেই শুনে উনি নেই। এমন আকস্মিক খবরগুলো বড্ড আঘাত করে নিজের ভিতরে ।
ছোটবেলা থেকেই নোমান ভাইয়ের সঙ্গে একত্রে বহু ক্রিকেট ও ফুটবল খেলেছি । বলতে গেলে বেশ ভালই দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছি তার সঙ্গে, বিশেষ করে মাধ্যমিকের শেষের দিকে ও কলেজ জীবনে।
একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন, প্রতিটি এলাকায় এমন কিছু বড় ভাই থাকে, যাদের আসলে তেমন কোন কাজকর্ম থাকে না বাস্তব জীবনে, বলতে গেলে এলাকার ভিতরেই ঘুরেফিরে জীবনের সময়টা অনায়াসেই কাটিয়ে দেয়। আর তার সঙ্গে সখ্যতা হয় কমবেশি প্রতিটা প্রজন্মের।
নোমান ভাই আমার থেকে গুনে গুনে চার থেকে পাঁচ বছরের বড় হবে, এর বেশি মোটেও না। প্রতিনিয়তই দেখা-সাক্ষাৎ টুকটাক হয়েই থাকতো, তবে কর্ম কিংবা সংসার জীবনে পদার্পণ করার পরে, তেমন একটা দেখা হয়নি। দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছিল বড্ড, তবে মাঝেমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাবের আদান-প্রদান হতো।
খুবই সাম্প্রতিক সময়ে শুনেছিলাম, সে নাকি মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিল এবং এতটাই আসক্তিতে ডুবে ছিল যে, হাজারো চেষ্টা করেও সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। ক্রমেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, লিভার সিরোসিস ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ভুগছিল সে।
কিভাবে একটা তরুণ প্রাণকে মুহূর্তেই মাদক শেষ করে দিতে পারে, তারই যেন উদাহরণ হয়ে থাকলো নোমান ভাই। সারাটা জীবন মাদকের বিপক্ষে কথা বলে এসে, শেষ সময়ে সে নিজেই ডুবে গিয়েছিল এই মরণব্যাধি আসক্তিতে।
একবার বৃষ্টির মাঝে বেশ দীর্ঘ সময় ধরে ফুটবল খেলে ছিলাম, সেসময় এলাকার মাঠে প্রতিনিয়ত এতটাই ব্যস্ততা থাকতো যেন কোনভাবেই দ্রুত মাঠে না গেলে, মাঠ পাওয়া যেত না। কেননা অন্যরা খেলার জন্য মাঠ দখল করত। ক্রমেই এলাকায় জনবসতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, খেলার মাঠটাও আগের থেকে ছোট হয়ে গিয়েছে।
এখন আর আগের মত মাঠে ব্যস্ততা নেই, সবাই যেন অনেকটা যান্ত্রিক জীবনে অভ্যস্ত। তার মাঝেই যখন আজ হঠাৎ করেই নোমান ভাইয়ের প্রস্থান হয়ে গেল, তখন হয়তো এই মাঠটা ফাঁকাই পড়ে থাকবে। আর আমার মত অনেকেই সময় সুযোগ পেলে অতীত স্মৃতিগুলোকে একটু নেড়েচেড়ে দেখবে।
মাঠ যতদিন ঠিকঠাক ছিল, নোমান ভাইয়ের আগমন ছিল বেশ সচল। তবে মাঠ যখন ছোট হতে শুরু করলো তখন নোমান ভাইয়ের জীবনের যাত্রা পথটাও পরিবর্তন হয়েছিল। মাদক তো আর এমনি এমনি নোমান ভাইয়ের জীবনে আসেনি বরং পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো থেকেই সে মাদকে জড়িয়ে গিয়েছিল। যার শেষ হলো, আকস্মিক মৃত্যু দিয়ে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
নোমান ভাইয়ের জীবনের এই করুন পরিনতির কথা শুনে সত্যিই খারাপ লাগছে ভাইয়া। আসলে সময়ের সাথে সাথে মানুষের মধ্যে অনেক পরিবর্তন চলে এসেছে। এখন আর কেউ আড্ডা দেয় না। এখন আর কেউ মাঠে বসে গল্প করে না। কিংবা বিভিন্ন রকমের খেলাধুলা করে না। তাই তো তরুণ প্রজন্ম ধীরে ধীরে মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
নোমানের মত আরো অনেককেই শেষ করে দিচ্ছে মরণব্যাধি মাদক।
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।আসলে সত্যি বলতে মানুষ মরণশীল এইটা চিরন্তন সত্যি।আর এইটাি আমাদের কে মানতে হবে। সেইদিন দেখা করেছেন আর আজকে এই মানুষ টা নেই। কখন কোথায় মৃত্যু আমাদের জন্য অপেক্ষা করে বলা যায় না। যেই মানুষের সাথে আপনার ছোট বেলায় অনেক টা সময় কেটেছে সেই মানুষ টা এখন নেই। দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা জান্নাতুল ফেরদৌসে দান করুক।
পৃথিবীটা বড্ড অনিশ্চিত একটা জায়গা, কখন কার কি হবে তা বলা মুশকিল।
খেলাধুলা করলে শরীর যেমন ভালো থাকে,তেমনি মন-মানসিকতাও খুব ভালো থাকে। এটা আমি আমার নিজেকে দিয়েই বুঝি। ছোটবেলা থেকেই সারাদিন ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। এমনকি রাতের বেলা ঘুমালেও অনেক সময় স্বপ্ন দেখতাম মাঠে ক্রিকেট খেলছি। কতোটা নেশা থাকলে এমনটা হতো। আলহামদুলিল্লাহ খেলাধুলার মধ্যে ছিলাম বলে,এই পর্যন্ত আমি ১ টা সিগারেট ঠোঁটে স্পর্শ করিনি। কিন্তু বর্তমানে মাঠ নেই বললেই চলে। তাই এখন অনেক কিশোর এবং যুবকরা মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে। চোখের সামনে এমনটা অহরহ দেখছি। আমাদের নারায়ণগঞ্জের মতো এতো মাদকাসক্ত কিশোর এবং যুবক মনে হয় না বাংলাদেশের অন্য কোথাও আছে। এটা আমাদের থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের মুখের কথা। যাইহোক নোমান ভাইয়ের জন্য খুব খারাপ লাগলো। আল্লাহ তায়ালা উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক,সেই কামনা করছি।
আপনার এলাকার ব্যাপারটা জেনে বেশ ব্যথিত হলাম ভাই , তবে পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তন বড্ড জরুরী।
নোমান ভাইয়ের কথাগুলো শুনে অনেক খারাপ লাগলো। আসলে একটি সময় খেলার জন্য ছিল মাঠ বন্ধুবান্ধব নিয়ে কত মজা করা হতো। কিন্তু এখনকার সময়ে সবকিছুই পরিবর্তন হচ্ছে। এখন খেলাধুলার মাঠ নেই বললেই চলে। অনেক তরুণ প্রজন্ম মাদকে আসক্ত হচ্ছে সত্যিই এটি আমাদের জন্য অনেক ভয়াবহ। মৃত্যু কখন কোথায় কার জন্য অপেক্ষা করে সেটা আমরা কেউ বলতে পারবোনা। যে ছিল অতি নিকটে আজ সে হারিয়ে গেল। সত্যিই অনেক কষ্টদায়ক এটা। দোয়া করি সৃষ্টিকর্তা তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক।
মানুষের জীবন কতটাই না আজব ভাই। সত্যি হঠাৎ করে এইরকম খবর আমাদের মূহুর্ত্তের জন্য যেন থমকে দেয় সবকিছু স্থবির করে দেয়। নোমান ভাইয়ের জন্য খারাপ লাগছে। আর মাদক সে তো সমাজের ধ্বংসের কারিগর হয়ে দাঁড়িয়েছে।।
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই যদি খুব কাছের মানুষের মৃত্যুর সংবাদ শোনা হয়, তার থেকে খারাপ কিছু আর হতে পারে না। তবে যে লোকটা মারা গেছেন উনি তো আপনার থেকে খুব বেশি একটা বড় নয় দাদা। যেহেতু মাদকে আসক্ত ছিলেন, এই কারণেই হয়তো অনেক রোগব্যাধি হয়েছিল শরীরে। আর অকালে তাজা প্রাণটা চলে গেল😔। আসলে পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক না কেন, তার জন্য মাদক গ্রহণ করা আমি একেবারেই যৌক্তিক বলে মনে করি না ।