রবিবারের আড্ডা ৫৬ | উন্মুক্ত আড্ডা - ১ পর্ব
ব্যানার ক্রেডিটঃ @hafizullah
আমার বাংলা ব্লগের আয়োজন রবিবারের আড্ডার নতুন সংযোজন হচ্ছে এবিবি উন্মুক্ত আড্ডা । মূলত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকে তাদের সামনে একটা বিষয় তুলে ধরা হয়। যে সকল সদস্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী হয়, তাদের নিয়েই মূলত এই অনুষ্ঠানটা পরিচালিত করা হয়।
তাছাড়া এই অনুষ্ঠানটি তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেহেতু চার-পাঁচজন অতিথি থাকে প্রথমত দুইবারে সকল অতিথির মতামত শোনা হয়, দ্বিতীয়তঃ কিছুটা বিরতি দিয়ে উপস্থিত দর্শকদের মতামত গ্রহণ করা হয় এবং নিজেদের পছন্দের গান শোনা হয়। সর্বশেষে উপস্থিত সকল দর্শক ও শ্রোতাদের জন্য থাকে শুভেচ্ছা পুরস্কার ।
আজকের আড্ডার আলোচ্য বিষয়ঃ
"Valentines Day Theme"
যে কথা হয়নি বলা,
অন্তরেই রইলো অপ্রকাশিত যত কাব্য ।
প্রথম অতিথিঃ @ah-agim
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
আলোচ্য বিষয়ঃ অতিথি মূলত তার বাল্যকালের বন্ধুর জীবনের ঘটনা তুলে ধরেছিল। সে যখন মাধ্যমিকে পড়াশোনা করত, তখন তার বন্ধু তার সহপাঠীর প্রেমে পড়ে গিয়েছিল। যেহেতু সেই মেয়েটা তাদের এলাকায় চাকরির তার বাবার চাকরির সুবাদে এসেছিল এবং তাদের স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। বলা যায়, মেয়েটা স্বল্প দিনের জন্য সেই এলাকায় ছিল। অবশেষে কিছুদিন পরেই মেয়েটা সেই এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়। তখন অতিথির বন্ধু, মানসিকভাবে হতাশায় ভোগে এবং বিষয়টি সকলের সামনে বলে। অবশেষে অতিথি তার বন্ধুকে কথা দেয়, আমরা যেভাবেই হোক মেয়েটার সঙ্গে তোর সাক্ষাত করে দেবো। প্রায় দেড় বছর পরে, যখন তারা মাধ্যমিক পাস করে। তারপরেও তারা মেয়েটার খোঁজ করার চেষ্টা করছিল, কিন্তু কোনভাবেই খুঁজে পাচ্ছিল না। অবশেষে যে অফিসে মেয়েটার বাবা চাকরি করতো, সেখান থেকে তথ্য নিয়ে তারা জানতে পারে, মেয়েটা এখন ঢাকায় আছে। অবশেষে তারা সেই সূদুর ঢাকাতে চলে যায় এবং মেয়েটার বাড়ি খুঁজে বের করে। কয়েকদিন তার বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি করার পরে, অবশেষে মেয়েটার সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ হয়। যদিও বিষয়টা অনেক দীর্ঘ ছিল, তারপরেও তারা পুরো ব্যাপারটাতে শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছিল।
দ্বিতীয় অতিথিঃ @mohinahmed
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
আলোচ্য বিষয়ঃঅতিথি তার বন্ধুর ঘটনা আমাদের সকলের সঙ্গে শেয়ার করে। মূলত যখন তারা, মাধ্যমিকে পড়তো তখনই তাদের থেকে ছোট ক্লাসের একটা মেয়েকে তার বন্ধু পছন্দ করত। তবে কোনোভাবেই মেয়েটার মনোরঞ্জন করতে পারছিল না। মজার ব্যাপার হচ্ছে, অতিথির বন্ধু যেহেতু মেয়েটার জন্য প্রচুর দুর্বল হয়ে গিয়েছিল, তাই মেয়েটার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। বিশেষ করে বিভিন্ন ফকির ও কবিরাজের কাছে গিয়েছিল তাবিজ সংগ্রহ করার জন্য এবং ফকির বলেছিল এই তাবিজ কোন শুকনা গাছের ডালে ঝুলিয়ে দিলে, বাতাসে তাবিজ যতবার নড়বে ততবার মেয়ের মন দুলবে। এক্ষেত্রে ব্যাপারটা কার্যকর হয়নি। তারপরে কবিরাজের পরামর্শ শুনে বিকেল পাঁচটার আগে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী মেখে ছেলেটা মেয়েটাকে মুখ দেখাতে গিয়েছিল, মুখ অবশ্য দেখাতে পেরেছিল, তবে সে যাত্রাতেও কোন কাজ হয়নি। এরকম বহু ঘটনার সাক্ষী ছিল অতিথি। সে বেশ ভালই উপভোগ করেছিল ব্যাপার গুলো।
তৃতীয় অতিথিঃ @biplob89
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
আলোচ্য বিষয়ঃ অতিথি যখন, মাধ্যমিকে পড়াশোনা করতো, তখন তার বন্ধু প্রতিনিয়ত তাকে বলতো, এটা প্রেম করিয়ে দে। বন্ধু চেষ্টা করত, তবে কাজ হতো না। অবশেষে তারা যখন মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে, সেই সময়েই একটা অচেনা মেয়ের কাছ থেকে প্রেমের প্রস্তাব পায় তার বন্ধু। তার সঙ্গে আলোচনা করে, যেহেতু একই পরীক্ষার হলে তাদের সিট পড়েছে, তাই সেই সুবাদে মেয়েটা একদিন ছেলেটাকে প্রস্তাব দিল। অবশেষে অতিথির বন্ধু, তার সঙ্গে ব্যাপারটা শেয়ার করল এবং অতিথি চেষ্টা করেছিল তার বন্ধুর সহযোগিতা করার জন্য। যদিও পরীক্ষার পরে সে ঢাকা চলে গিয়েছিল, তবে ফিরে এসে জানতে পারে, তার বন্ধুর প্রেম আরও গভীরে চলে গিয়েছে। সে বিয়ে করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। যদিও মেয়ের বাড়ি থেকে কিছুটা অসম্মতি ছিল, তারপরেও তার বন্ধুর বিয়ে হয়ে যায় সেই মেয়েটার সঙ্গে। এক্ষেত্রে বন্ধুর ভালবাসা পূর্ণতা পেয়েছিল এবং অতিথি বড্ড কৃতজ্ঞ নিজের কাছে, কেননা তার সহযোগিতায় তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছিল।
চতুর্থ অতিথিঃ @maksudakawsar
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
আলোচ্য বিষয়ঃ অতিথি যেহেতু মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক দায়িত্বে চাকরি করে, ঠিক সেই মেডিকেল কলেজের একজন বিসিএস ক্যাডার ডাক্তার, তাদের অফিস সহকারীর প্রেমে পড়ে যায়। যদিও ডাক্তার অবিবাহিতা ছিলেন, তবে অফিস সহকারী বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক ছিলেন। তবে এটা ডাক্তার জানতেন না, অবশেষে যখন জানতে পেরেছেন তখন সেই সম্পর্ক থেকে কোনভাবেই তিনি বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না এবং ক্রমাগত অতিথির কাছে ফোন দিচ্ছিল এবং পরামর্শ চাচ্ছিল। অতিথি এই ঘটনার মধ্য দিয়ে বুঝাতে চেয়েছেন, ভালোবাসা মানে অনেকটা আগুন। জেনে বুঝে না গেলে, সে আগুনে পুড়তে হবে।
পঞ্চম অতিথিঃ @nusuranur
এডমিন, আমার বাংলা ব্লগ
আলোচ্য বিষয়ঃ এক্ষেত্রে অতিথি তার নিজের জীবনের ঘটনা শেয়ার করেন। মূলত তিনি যখন মাধ্যমিকে পড়াশোনা করতেন, তখন যে কোচিংয়ে পড়াশোনা করতেন ঠিক সেই কোচিংয়ের ফিজিক্সের টিচার তাকে একটু অতিরিক্ত কেয়ার করার চেষ্টা করত। যদিও শুরুতে তিনি বিষয়টা বুঝতে পারেননি, তবে একটা সময়ের পড়ে গিয়ে ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন। কেননা যেদিন তাকে এক্সট্রা ক্লাসের কথা বলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেদিনই তিনি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিলেন। তারপর থেকে ব্যাপারটা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। অবশেষে সেই টিচার তার বাড়িতে ফোন দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন আপনার মেয়েকে তো অন্য একটা ছেলের সঙ্গে দেখলাম, যদিও এই কথাগুলো শুরুতে কেউই বাসায় বিশ্বাস করেনি, কেননা অতিথি তার বাসায় পূর্বের ঘটনাগুলো সব বলে দিয়েছিল। অতঃপর সেই টিচার শুধু সুযোগ খুঁজছিল, একদিন সে কোচিংয়ের পরীক্ষায় যখন একটু খারাপ করেছিল তখন তাকে স্কেল দিয়ে খুব জোরে বেত্রাঘাত করেছিল।
অতিথি ও শ্রোতাদের শুভেচ্ছা পুরস্কার তাৎক্ষণিক পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুরস্কারের স্পন্সর কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা @rme দাদা
মূলত এভাবেই আয়োজন করা হয়েছিল এবিবি উন্মুক্ত আড্ডা। আমাদের চিন্তাধারা প্রতিনিয়তই ব্যতিক্রম, তাই সব ব্যতিক্রম চিন্তা-ভাবনা নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই প্রতিনিয়ত সামনের দিকে। আশাকরি আমাদের সঙ্গে সকলেই থাকবেন, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1754451235401560107?t=-g1b-LARn-EciHjn10RAcA&s=19
ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের শেয়ার করা কথাগুলো খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করে শেয়ার করার জন্য। আপনার এই পোস্ট দেখে আরো ভালো লাগলো আমাদের পুরস্কৃত করে উৎসাহিত করার জন্য। ধন্যবাদ ভাইয়া ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
সত্যি বলতে গতকালকের আড্ডার থিমটা দারুণ ছিলো। অতিথিদের শেয়ার করা ঘটনা গুলো শুনতে খুবই ভালো লেগেছিল। আসলে প্রেম ভালোবাসা কখন কার সাথে কিভাবে হয়ে যায়, সেটা বলা মুশকিল। আমিও চেষ্টা করেছি আমার ফ্রেন্ডের একতরফা ভালোবাসার কিছু ঘটনা সবার সাথে শেয়ার করতে। যাইহোক আমাকে অতিথি নির্বাচিত করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমরা বেশ খুশি হয়েছি যে, আপনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে চেষ্টা করেছেন, পূর্বের কথা তুলে ধরার জন্য। বলতে গেলে, ভালই বিনোদন পেয়েছি। শুভেচ্ছা রইল।
রবিবারের আড্ডা সত্যি দারুন একটি আয়োজন। আর কালকের আড্ডায় অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি। আর ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযোগ হয়েছিল। ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর করে প্রতিটি বিষয়ে তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
উন্মুক্ত আড্ডা - ১ পর্ব আমরা অনেকের কাছ থেকে অনেকের বন্ধুর ভালবাসার গল্প এবং নিজের ভালোবাসার গল্প জানতে পেরেছিলাম। আমার বন্ধু বিপ্লবের কাছ থেকে আমার বন্ধু সোহাগের প্রেমের গল্প এই উন্মুক্ত আড্ডার মাধ্যমে আবারো শুনতে পেয়েছিলাম। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
বিপ্লব ভাই যে আপনার বন্ধু, এটা কিন্তু আমাদের জানা ছিল না।
বলতে গেলে স্পেশাল একটা হ্যাংআউট ছিল। একেক জনের প্রেক্ষাপট একেকভাবে তুলে ধরেছে। নুসুরা ম্যামেরা ব্যাপারটা শুনে খারাপ লাগলো। টিচার হয়ে এমন করেছিল। যায়হোক সবাই মিলে আড্ডাটা জমেছিল পুরো যদিও আমি উপস্থিত থাকতে পারেনি 🙆♂️
কারে বিশ্বাস করবেন ভাই, কার ভিতরে কি প্যাচ লুকানো আছে, তা বলা মুশকিল।
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির নতুন একটি আয়োজনের (উন্মুক্ত আড্ডা) ১ম পর্ব ছিলো কাল। প্রথম পর্ব হিসেবে বেশ এক্সাইটিং লেগেছে আমার কাছে। আশা করবো পরের বার সতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করারও। একটি টপিক্স নিয়ে এভাবে মেম্বারদের মতামত/অভিজ্ঞতা আগে তো জানার সুযোগ হয় নি, তবে নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে এখন থেকে সেই সুযোগ হবে। গতকাল নুসুরা আপুর অভিজ্ঞতা টিই আমার কাছে বেশ সচেতনতামূলক লেগেছে।
এটা সত্য নুসুরা ম্যাম, বেশ ভালো সচেতনতার বার্তা দিয়েছে। কেননা এমন ঘটনা ক্রমাগত ঘটেই যাচ্ছে।