মধ্যরাতের বৃষ্টি
তখনো বই পড়ছিলাম, আজকাল বই পড়া বড্ড নেশা হয়ে গিয়েছে। যদিও প্রতিনিয়ত সময় স্বল্পতা থাকে, তবে তারপরেও একবার বই হাতে উঠে গেলে, কোনভাবেই তা রাখতে চাই না। মনে হয়, সেসময় নিজেকে ডুবিয়ে ফেলি বইয়ের মাঝে !
কত প্রগতিশীল চিন্তাধারার স্বচ্ছ লেখা বইয়ের পৃষ্ঠাগুলোতে, শুধু পড়েই যাই আর নিজের ভিতরে ভাবনা-চিন্তার উদয় হয়। আহা, কত যুক্তি কত চিন্তা, তা কি সহজে ভাঙানো যায় !
হুহু করে দমকা ঠান্ডা বাতাস বারবার কাঠের জানালায় ধাক্কা দিচ্ছিল, মাঝরাতে কিছুটা উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম বাহিরের পরিবেশটা। ঘন অন্ধকারে প্রচন্ড বাতাসে, মেঘের গর্জনে বোঝাই যাচ্ছিল, এ হয়তো ঝড়-বৃষ্টির লক্ষণ।
বিচলিত না হয়ে বরং এমন মুহূর্তকে উপভোগ করার জন্য বড্ড ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলাম। ঠিক জানালার কাছেই বসে পড়লাম বই হাতে। ভাগ্যিস, চার্জার বাতি ছিল, তাই হয়তো খুব একটা অসুবিধা হয়নি বই পড়তে।
সময় গড়িয়ে যায়, বাতাস ও বৃষ্টির বেগ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। দমকা হাওয়া, ঝড়-বৃষ্টি আর তার মাঝে ছোট্ট চার্জার বাতির আলোতে নিজেকে ডুবিয়ে ফেলেছিলাম বইয়ের মাঝে। এযেন অন্যরকম এক অনুভূতি। টানা দু'ঘণ্টা অবিরত বর্ষণের পর, আবহাওয়া কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। ততক্ষণে বইয়ের অনেকগুলো পৃষ্ঠা পড়া শেষ।
বৃষ্টি আজ বন্ধ না হলেই পারতো, বড্ড জমিয়ে উঠেছিল মুহূর্তটা। এমন সময় কি আর রোজ রোজ পাওয়া যায়,মোটেও না। জীবনের দারুণ একটা অভিজ্ঞতা হয়ে গেল আজ এই মধ্যরাতে। বৃষ্টি যেন বুঝিয়ে দিল, তাকে চাইলেই আপন করে নেওয়া যায়, সেটা যেকোনো অবস্থায় যেকোনো সময়ে যেকোন ভাবে।
নিজেকে নিজের মতো করে সময় দিলাম বহুদিন পরে, জীবনে শখ আহ্লাদ বলে যে কিছু বিষয় থাকে , তা যেন ভুলতেই বসে ছিলাম ! এই যে মাঝরাতে প্রচন্ড বৃষ্টির মাঝে অনেকটা নিজের মতো করে বই পড়ে সময় কাটালাম, তাতে আর যাইহোক, অন্তত মনের খোরাকটা মিটেছে বলা যায়। ভুল ভবিষ্যতে যদি, এমন সময়ের আবারো পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে সেটা হবে বিশেষ পাওয়া।
আপাতত বিদায়....!!
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া অপনার লাইফটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। লেখা লেখি করে জীবনটা খুব সুন্দর ভাবেই চলছে। মুহর্ত গুলো খুব সুন্দর ভাবে উপভোগ করতে পারেন,অনুভূতি গুলো প্রকাশ করতে পারেন। স্বাধীন জীবন যাপন করছেন। লাইফে কোন প্যারা নাই। হয়তো আপনার পাঁচ দশ তলা বাড়ি নেই,নিজের গাড়ি নেই তবে লাইফটা খুব সুন্দর ভাবেই এনজয় করছেন। যখন যেটা খুশি সেটাই করছেন। এটা সবাই পারে না। জীবন আর কয়দিনের। যায়হোক মধ্যে রাতের বৃষ্টি উপভোগ করার অনুভূতি দারুন ছিল। আপনার লেখায় মজা আছে। আপনার লেখায় অনেক কিছু শেখা যায়। এত সুন্দর করে আবেগ অনুভূতি প্রকাশ করতে কাউকে দেখি না। ধন্যবাদ।
পাঠকের সন্তুষ্টি, লেখক এর আত্মতৃপ্তির বহিঃপ্রকাশ।
ভালোবাসা নিরন্তর।
বই পড়া এক প্রকারের নেশার মতো। জীবনে একটা সময় ছিল তখন লুকিয়ে লুকিয়ে বইয়ের ভাজে গল্পের বই পড়তাম। রাত জেগে গল্পের বই পড়তাম। কখন যে তিনটা চারটা বেজে যেত বুঝতেই পারতাম না। আসলে সময়গুলো হারিয়ে গেছে। এখন আর নিজের শখের কাজগুলো করা হয় না। যাই হোক ভাইয়া বৃষ্টিটা বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করেছেন তাহলে। বৃষ্টি আর বই পড়ার আনন্দ দুটো মিলে মিশে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন।
কেন হবেনা শখের কাজ, নিজেকে থামিয়ে রেখে কি লাভ বরং জীবনটাকে উপভোগ করুন।
আপনার এই কথাগুলো শুনে আমারও একটা কথা মনে পড়লো। এটা ২৭ মার্চের কথা তখন রোজা চলছিল। মনটা খারাপ ছিল হঠাৎ দেখি বাইরে বৃষ্টি। বই হাতে নিয়ে বসে গেলাম। টানা সাড়ে তিনঘন্টা পড়লাম। মনের মধ্যে যত বিষাদ যত দুঃখ ছিল সব চলে গিয়েছিল। আপনার আর আমার অনূভুতি টা প্রায় একই।
একদম ঠিক বলেছেন ভাই, আমার যখনই সময় সুযোগ হয়, তখনই নিজেকে ডুবিয়ে ফেলি বইয়ের ভিতরে, সবকিছু ভুলে যাই মুহূর্তেই।
শত ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের উচিত নিজেকে একটু সময় দেওয়া। আর নিজের মতো করে সময় কাটাতে পারলে আসলেই বেশ শান্তি লাগে। যাইহোক মধ্যরাতে বৃষ্টির তালে তালে বেশ ভালোই বই পড়েছেন ভাই। আর রাতের বেলা বৃষ্টি হলে তো পরিবেশটা একেবারে শীতল হয়ে যায়। যাইহোক এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
টানা ২ ঘন্টা বৃষ্টি, আর তার সাথে বই পড়া, এর থেকে ভালো কম্বিনেশন কি হতে পারে দাদা! এরকম সময় আসলেই রোজ রোজ পাওয়া যায় না। যাইহোক, সর্বোপরি বলতে হয় মধ্যরাতে বৃষ্টি হওয়াতে আপনার মনের খোরাক কিছুটা হলেও পূরণ হয়েছে। অনেক আগে, আমিও এরকম সুযোগ পেলে বই পড়তাম। খুব ভালো লাগে এরকম সময় বই পড়তে।