অবশেষে নানু ভাই হলাম
ঘটনাটি কিছুদিন আগের, তবে আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে একটু দেরিই হয়ে গেল। এখন থেকে সপ্তাহ দুই আগে কোন এক বিকেল বেলায় হীরার মুঠো ফোনে অজানা নাম্বার থেকে বারবার ফোন আসছিল।
যদিও শুরুর দিকে অজানা নাম্বার দেখে হীরা ফোন রিসিভ করেনি। তবে একটা সময়ের পরে গিয়ে, ও ফোন রিসিভ করতে বাধ্য হয়েছে। ফোন রিসিভ করা মাত্রই, ফোনের অপর প্রান্ত থেকে হীরার বড় চাচার মেয়ে একপ্রকার রেগেই গিয়েছিল হীরার উপরে। বারবার বলছিল আমার ফোনে টাকা ছিল না, তাই বাধ্য হয়ে ক্লিনিকের নাম্বার থেকে তোকে ফোন দিয়েছি, তুই কেন ফোন ধরছিলি না।
এরপর হীরা তার বোন কে কিছুটা মানসিকভাবে আশ্বস্ত করে, জিজ্ঞেস করল তুমি কেনো ক্লিনিকে এসেছো। অতঃপর বিস্তারিত ঘটনা জানা গেল। মূলত হীরার বড় বোনের মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিল বহুদিন আগে থেকেই, সেই হিসাব অনুযায়ী ডেলিভারির সময় একদম সন্নিকটে এসেছে। তাই তারা ক্লিনিকে অবস্থান করছে, এজন্যই মূলত বিষয়টা হীরা কে জানানোর জন্যই তার বোন বারবার ফোন দিচ্ছিল।
অতঃপর খবরটা যখন আমি শুনলাম, তখন নিজের থেকেই আমরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলাম ক্লিনিকের দিকে। এই সময়টাতে আসলেই নিজেদের পরিচিত লোক পাশে থাকা খুবই দরকার। যেহেতু তারা গ্রাম থেকে এসেছে, তাই তারা এই সময়ে আমাদের কে পাশে চাচ্ছে।
অতঃপর তাদের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী, চলে গেলাম সেই ক্লিনিকে। এ শহরে দিন দিন প্রচুর পরিমাণে ক্লিনিক অলিতে গলিতে গড়ে উঠেছে। আমি যে সময় প্র্যাকটিস করতাম, তখন এত ক্লিনিক ছিল না। খুব বেশি প্রয়োজন না পড়লে, নিজের বিগত সময়ের পেশার পরিচয় সব জায়গায় দিতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না । এবারও দিতে হয়নি, কেননা যে ডাক্তাররা অপারেশনের জন্য নিযুক্ত ছিল, তারা আমার পূর্ব পরিচিত। তাদের সঙ্গেও একপ্রকার খোশগল্প হয়েই গেল দীর্ঘ বহুদিন পরে।
সিজার করতে এখন আর খুব বেশি সময় লাগে না। তাছাড়া যে দুজন ডাক্তার অপারেশন করেছে, তারা বেশ অভিজ্ঞ। যাইহোক, খানিক বাদেই নতুন অতিথির কান্নার আওয়াজ কানে আসলো। বাচ্চা ও বাচ্চার মা দুজনই ঠিকঠাক আছে। এরপর শুরু হলো মিষ্টিমুখ করার পর্ব।
আমরা কেবিনেই ছিলাম, নতুন অতিথিকে দেখার জন্য সবার ভিতরে আনন্দ কাজ করছিল। কি দারুন হয়েছে আমার নাতি, ওকে আমি একটু কোলে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম।
দিন যায় বয়স বাড়ে, সঙ্গে সৃষ্টি হয় নতুন নতুন সম্পর্ক। অল্প বয়সে আমি নানু ভাই হয়েই গেলাম। ও বেড়ে উঠুক, এই সুন্দর পৃথিবীতে। বাধাহীন হোক ওর বেড়ে ওঠা, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি, নিজের অবস্থান থেকে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন নানু ভাই হওয়ার অনুভূতি। আসলে ভাইয়া যদিও আমি এখন অনেক ছোট তবে জানি যে নানু ভাইয়েরা তাদের নাতি ছেলেদের কতটুকু ভালবাসে। আপনার পোস্ট দেখে বুঝতে পারলাম এতে আপনি অনেক খুশি হয়েছেন নানু ভাই হতে পেরে। আর নানু ভাই তো হয়ে গেলেন তাই মিষ্টি খাওয়াতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।
প্রথমেই আপনাকে কংগ্রাচুলেশনস ভাইয়া নানু ভাই হয়ে যাওয়ার জন্য। আপনার নানু ভাইয়ের চেহারা মাশাআল্লাহ। আসলে সিজারে এখন কম সময় লাগে। আমার ফুফুরও সিজারে বাচ্চা হয়েছিল। যাইহোক, আপনার নানু ভাইয়ের জন্য দোয়া রইল। আল্লাহ তায়ালা তাকে নেক হায়াত দান করুক। 🌸
আপনার সাবলীল মন্তব্যের কাছে, আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ভাই।
এটা একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া দিন যায় আর আমাদের বয়স বেড়ে যায়। সেই সাথে নতুন সম্পর্কে আমরা জড়িয়ে পড়ি। যাই হোক আপনি নানু হয়েছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। মা এবং বেবি দুজনে সুস্থ আছে জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া।
আমার কাছে তো তেমনটাই মনে হয়, দিন যত যায় নতুন নতুন সম্পর্ক ততই সৃষ্টি হয়।
আপনাকে অনেক অভিনন্দন নানু ভাই হবার জন্য। সত্যি ভাইয়া এই সময়টা সকলে চায় আপনজনদের কাছে পেতে।আর এখন সিজার করতে বেশি সময় লাগে না। যাইহোক মা ও বাচ্চা সুস্থ আছে জেনে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
এটা ঠিক যে, এই কঠিন সময় গুলোতেই মানুষ মানুষকে পাশে চায়।
আসলেই ভাই অল্প বয়সেই নানু ভাই হয়ে গিয়েছেন দেখছি। এই মুহুর্তটা আসলেই বেশ আনন্দের। আমরা অনেক সময় অচেনা নম্বর দেখলে কল রিসিভ করতে চাই না ঠিকই, কিন্তু অনেক সময় রিসিভ না করেও পারা যায় না। যাইহোক আপনার নাতির জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল। সে যেনো বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হয়,সেই কামনা করছি। এমন খুশির সংবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এমনটা আমিও প্রত্যাশা করি ভাই, সে সুস্থ ভাবে বেড়ে উঠুক এই পৃথিবীতে।
অবশেষে আপনি তাহলে নানু ভাই হয়েই গেলেন দাদা! আসলে এই সকল খুশির মুহূর্তগুলো আমাদের অনেক বেশি সতেজ করে তোলে। সত্যি বলতে এরকম অনেকের ক্ষেত্রেই হয়, যারা গ্রামে থাকে তারা যদি হঠাৎ করে শহরে আসে তাহলে তারা আমাদের ফোন করে টুকটাক সাহায্যের জন্য। তবে এই সাহায্য গুলো করা কিন্তু আসলেই বেশ বড় একটা মহৎ গুণ। আপনারা যেহেতু তাদের এই বিপদের সময় পাশে ছিলেন, সেই জন্য এই কথাগুলো তারা সবসময় মনে রাখবে।