বৃষ্টিময় ঈদ

in আমার বাংলা ব্লগlast month

1000022656.jpg
source

শৈশবের কথা মাঝে মধ্যেই মনে পড়ে যায়, বিশেষ করে শৈশবে ঘটে যাওয়া মুহূর্ত গুলোর যখন হঠাৎই পুনরাবৃত্তি হয়, তখন যেন শৈশব হাতছানি দিয়ে ডেকে যায়।

এখন থেকে বছর পনেরো আগে, কোন এক ঈদের সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই দেখছিলাম ক্রমাগত বৃষ্টি ঝরে যাচ্ছিল। বড্ড মুখটা গোমড়া হয়ে গিয়েছিল সেদিন প্রকৃতির ঐ অবস্থা দেখে। সেকি বৃষ্টি, কোনভাবেই যেন থামছিল না।

ঈদের মাঠের নামাজটাও পড়া হয়েছিল, মসজিদের ভিতরে। মূলত সেবার ঈদ হয়েছিল বর্ষাকালে,সেজন্যই প্রকৃতির ঐ অবস্থা ছিল। টানা কয়েকদিন যাবৎ থেকে অনবরত বৃষ্টি বেশ ভালোই ভুগিয়েছিল সেসময় ।

বয়সে তরুণ ছেলেগুলোর ভিতরে যেন, কোনভাবেই উৎসব আনন্দকে দমিয়ে রাখা যায় না। বয়সটা তখন এমন ছিল যে, যেকোনো অবস্থায় কিংবা পরিস্থিতিতে সদা প্রস্তুত থাকতাম নিজেরা, যেকোনো কাজ করার জন্য। কাজ বলতে তো আর তেমন কিছু ছিল না, ঐ ঘুরেফিরে খাওয়া-দাওয়া কিংবা খেলাধুলা।

যেহেতু মাঠের নামাজটা মসজিদেই হয়েছিল, আর আবহাওয়ার অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছিল, এ বৃষ্টি থামবার নয়, তাই একপ্রকার মসজিদে বসেই সমবয়সী ছেলেরা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম, এবারের ঈদ আনন্দ হোক একটু ভিন্ন ভাবে।

তবে একটা কথা বলে রাখি, সেসময় যুগ কিন্তু এতো উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন ছিল না। হয়তো বর্তমান অবস্থার মতো হলে, তখন ঐ আনন্দটা করাই যেত না।

অতঃপর পরিকল্পনামাফিক, মসজিদ থেকে সবাই বেরিয়ে বাড়িতে গিয়ে কোন রকমে খাওয়া-দাওয়া শেষ করেই আবারো আমরা একত্রিত হয়েছিলাম এলাকার খেলার মাঠে । ঐ বৃষ্টির মাঝেই আমরা, টানা তিন ঘন্টার মত ফুটবল খেলেছিলাম।

এখনো বেশ ভালোভাবেই মনে আছে, মাঠে মোটামুটি ভালোই বৃষ্টির পানি জমে ছিল, তার ভিতরেই ছোট বড় দু-দলে বিভক্ত হয়ে সবাই একত্রে নেমে পড়েছিলাম খেলতে । সেকি খেলা, এখনো মনে পড়লে বেশ হাসি পায়। একদিকে বৃষ্টি আর অন্যদিকে আমরা সবাই ফুটবল খেলায় মেতে ছিলাম। কোন ক্লান্তিই যেন নিজেদের ভিতরে কাজ করছিল না। ঐ জমাট বাধা পানির ভিতরেই যে যেভাবে পেরেছিলাম ক্রমাগত খেলে গিয়েছিলাম।

কাদা পানিতে একদম যেন পুরো শরীর মেখে শেষ হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর দীর্ঘ সময় ফুটবল খেলার পরে, এলাকার ভিতরে যে পুকুর ছিল সেখানে আবার দীর্ঘ সময় ধরে লাফালাফি করে গোসল করা হয়েছিল। আহা সেকি মজা।

এখন সময় বহু গড়িয়ে গিয়েছে, আয়নার সামনে দাঁড়ালে একটু হলেও বোঝা যায় বয়সের ছাপ পড়েছে চেহারাতে। তবে সেদিনের সেই বৃষ্টিময় ঈদের দিনের ঘটনা কোনভাবেই যেন ভোলার নয়। আজ যখন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেছিলাম, তখনও ঠিক দেখছিলাম হালকা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছিল, মুহূর্তেই যেন পুরনো সেই স্মৃতি হালকা কিছুটা হৃদয়ে নাড়া দিয়ে গিয়েছিল। তবে আজ ভাগ্য ভালো, বৃষ্টি খুবই অল্প সময়ের জন্য হয়েছিল।

1000020537.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

এটা ঠিক বলেছেন মাঝে মাঝে হঠাৎ করেই অতীতের কথা গুলো মনে পড়ে যায় আর ইচ্ছে করে আবারো সেই অতীতে ফিরে যেতে। যাইহোক আপনার অতীতের কোনো এক ঈদের দিন বৃষ্টি হওয়াতে আপনারা ফুটবল খেলার মাধ্যমে আনন্দ করেছিলেন জানতে পারলাম আপনার লেখার মাধ্যমে । আসলে আনন্দ তো আনন্দই সেটা যেভাবে হোক উপভোগ করলেই হবে। তবে বর্তমান সময় হলে হয়তো বা ওরকম ভাবে আর আনন্দ করা হতো না। আসলে অতীতের দিনগুলো এবং বর্তমানের দিনগুলোর মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখা যায়। যাইহোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last month 

ধন্যবাদ ভাই, আপনার মন্তব্য পড়ে বেশ ভালো লাগলো।

 last month 

কথাটা ঠিক ভাই তখন যদি এখনকার মতো মোবাইল ইন্টারনেট সহজলভ্য হতো তাহলে হয়তো আপনারা মাঠে খেলতে না গিয়ে ঘরে এগুলো নিয়েই পড়ে থাকতেন। ঐসময় এসব প্রযুক্তি না থাকাই দিনগুলো অনেক রঙিন ছিল। ঈদের দিনে ঐ বৃষ্টিময় ফুটবল ম‍্যাচ কী আর ভোলা যায় ভাই। আমার তো শুনেই অনেক ভালো লাগল। কী চমৎকার একটা স্মৃতি।

Posted using SteemPro Mobile

 last month 

বর্তমান সময়ে হলে কোন অবস্থাতেই এমন মুহূর্ত কাটানো সম্ভব হতো না।

 last month 

ছোটবেলার ঈদের কথা মনে করিয়ে দিলেন ভাইয়া। ছোটবেলায় ঈদের দিন বৃষ্টি হলে কি যে মন খারাপ হত কোথাও যাওয়া যাবে না জন্য। বারবার শুধু দোয়া করতাম বৃষ্টি যেন থেমে যায়। আর এখনকার ঝড় বৃষ্টি কোন কিছুতেই খুব একটা এসে যায় না। ছোটবেলার সেই আনন্দটা এখন আর ঈদে তেমন পাইনা। যাই হোক সেবারের ঈদটি কিন্তু ফুটবল খেলে ভালোই উদযাপন করেছিলেন মনে হচ্ছে।

 last month 

কিছু কিছু স্মৃতি সারাজীবন মনে থাকে। বিশেষ করে শৈশবের মধুর স্মৃতি গুলো ভোলার মতো নয়। ঈদের দিন বৃষ্টি হলে মনটা খারাপ লাগে। বৃষ্টির মধ্যে টানা তিন ঘন্টা ফুটবল খেলেছেন ভাবতেই অন্য রকমের অনুভূতি হচ্ছে। এবার আমাদের এদিকে বৃষ্টি হয়নি। তবে আকাশ মেঘলা ছিল। সময়ের সাথে সবকিছুই বদলে গেছে। সেই সাথে বদলে গেছি আমরা।

 last month 

সময়, বড্ড পরিবর্তন করে দিয়েছে জীবনকে। আজ হয়তো, সেই সব দিন শুধুই মাত্র স্মৃতি।

 last month 

ছোট বেলার ভাবনাচিন্তা গুলো একটু অন্যরকম হয় ৷ ছোটবেলায় অল্পতেই যেমন খুশি লাগে, তেমনই অল্পতেই মন খারাপ হয়ে যায় ৷ বিশেষ করে এই আনন্দ গুলো যখন উপভোগ করা হয় না বিভিন্ন কারণে ৷ যাই হোক , বৃষ্টিময় দিনে ভেজা মাঠে ফুলবল খেলার মজাই কিন্তু আলাদা ৷ সবাই মিলে দারুণ একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং সময়টা উপভোগ করেছেন ৷ আপনার স্মৃতিচারণ পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ দাদা

Posted using SteemPro Mobile

 last month 

এটা সত্য সেই সময়টা আমার কাছে বেশ আনন্দঘন ছিল , আজও তা মনে পড়ে।

 last month 

ঈদের দিন বৃষ্টি হলে খুবই বিরক্ত লাগে। তবে শৈশবের কিছু কিছু স্মৃতি মনে পরলে আসলেই খুব ভালো লাগে। ছোটবেলায় আমরাও বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল খেলতাম। তবে ঈদের দিন বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলা হয়নি কখনো। আপনাদের এই ব্যাপারটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। সেই দিনগুলো আসলেই খুব ভালো ছিলো। হাতে হাতে মোবাইল ছিলো না বলে,সবাই একসাথে দারুণ সময় কাটাতে পারতাম। কিন্তু এখন তো সবাই একসাথে বসে থাকলেও, মোবাইল নিয়ে যার যার মতো ব্যস্ত থাকে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 last month 

ঈদের দিন, তারপর আবার বৃষ্টি বাদলের সময় এবং ওই সময় আপনারা সবাই মিলে তিন ঘন্টা টানা ফুটবল খেলেছিলেন, এটাও কিন্তু কম আনন্দের বিষয় নয় দাদা। আসলে অতীতের এই মধুময় দিনগুলো আমাদের অনেক বেশি আনন্দ দেয়। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেই ঈদ আনন্দটাও আর থাকে না। যাইহোক, তারপরও আশা করি বর্তমানে আপনার ঈদের দিনগুলো যেন আরো অনেক বেশি সুন্দর কাটে।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 66266.06
ETH 3031.03
USDT 1.00
SBD 3.67