রবিবারের আড্ডা - পর্ব ৭০ | জীবনের গল্প - পর্ব ৫
ব্যানার ক্রেডিট @hafizullah
সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের নতুন আয়োজন জীবনের গল্পের শো-তে । মূলত আমরা যেহেতু প্রথম থেকেই বলেছিলাম, রবিবারের আড্ডার কিছুটা ভিন্নতা হবে, ঠিক সেই ভিন্নতার জায়গা থেকেই, এই সংযোজন। মানুষের জীবনে কত গল্পই তো থাকে, কত সুখস্মৃতি থাকে, থাকে পাওয়া না পাওয়ার অভিজ্ঞতা কিংবা হারিয়ে ফেলার তিক্ততা , কিংবা থাকে সফলতার হাজারো গল্প, যা হয়তো অনায়াসেই, অন্য কাউকে অনুপ্রাণিত করে ফেলে মুহূর্তেই। এই গল্পগুলো হয়তো অজানাই থেকে যায়, আমরা আসলে কান পেতে থাকি, এই গল্পগুলো শোনার জন্য। এইজন্য বাংলা ব্লগ আয়োজন করেছে, জীবনের গল্প। যেখানে অতিথি তার নিজের জীবনের গল্প অন্যদের সামনে অনায়াসেই বলে ফেলবে এবং অতিথি নিজের থেকেও বেশ হালকা হবে, সেটা হয়তো মনের দিক থেকে।
আজকের অতিথিঃ @razuan12
ভেরিফাইড সদস্যঃ আমার বাংলা ব্লগ
ফেলে আসা জীবন থেকে যদি কিছু কথা স্মৃতিচারণ করতেন।
আমি মূলত আমার জীবনের এক ভয়ঙ্কর রাতের অভিজ্ঞতার কথা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব । আজ থেকে এক বছর আগে যখন আমি উচ্চ মাধ্যমিক এক্সাম শেষ করেছিলাম, তখন আমার হাতে মোটামুটি তিন মাসের মত সময় ছিল, ভাবলাম যেহেতু রেজাল্ট হতে তিন মাস সময় লাগবে, তাই এই সময়টা ঢাকায় গিয়ে কোচিং করে আসি বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তুতির। আমি মূলত ঢাকায় গিয়ে যে মেসে উঠেছিলাম, সেখানে উচ্ছৃঙ্খল ছেলেপেলে থাকতো। তারা মূলত মেসে ভাড়া দিত না, বিভিন্ন পলিটিক্যাল পরিচয়ে থাকতো এবং নানারকম অপকর্মের সঙ্গে লিপ্ত ছিল। যদিও প্রথম দিকে মেস মালিক কিছু বলেনি, তবে ধীরে ধীরে মেস মালিক তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছিল, সেই বাসার ড্রাইভার কিছু স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিল এবং সেই স্থানীয় লোকজন কিছুটা সন্ত্রাসী টাইপের ছিল, তারাও সেই মেসে উঠেছিল এবং আগের যে উচ্ছৃঙ্খল ছেলেগুলো ছিল, তাদের সঙ্গে সহজেই মিশে গিয়েছিল। মূলত তাদের কাজই ছিল তাদের সঙ্গে মিশে যাওয়া। এরপর আগের মেসে ফ্রী থাকা উচ্ছৃঙ্খল ছেলেপেলে মেসে একদিন অসামাজিক কাজের জন্য মেসে মেয়ে নিয়ে এসেছিল, ঠিক তখনই স্থানীয় যে উচ্ছৃঙ্খল লোকজন গুলো ছিল, তাদের চেহারায় পরিবর্তন এসেছিল। তারা ভিকটিমকে ধরে ফেলে, প্রচুর ভাবে শারীরিক নির্যাতন করে এবং তাদের বাড়িতে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে, সেকি ভয়াবহ অবস্থা। যদিও তাদের বাড়ি থেকে মুক্তিপণ দিতে অনেকটাই সময় লেগেছিল, কেননা যে পরিমাণ চেয়েছিল, তার তুলনায় স্বল্প কিছু টাকা পেয়েছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মুক্তিপণের টাকা পাওয়ার পরে আবার তাদেরকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েই, তারা হোটেলে নিয়ে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করেছিল। এই অবস্থা দেখার পরে, আমি সেদিন রাতটা কোন মত ওখানে ছিলাম, তারপরের দিন ভোরবেলা আমার মালপত্র নিয়ে আমি বাড়ি চলে আসি। ঐ রাতের কথা এখনো মনে হলে কিছুটা ভয় কাজ করে নিজের মাঝে। তারপরে তো বাড়ি ফিরে আসলাম, পরীক্ষা দেওয়া আর হলো না। মাঝখান থেকে একটা বছর লস, বিয়েটাও হয়ে গেল। এইতো এভাবেই জীবন চলছে। তবে আমাকে ছোটবেলা থেকে বেশ কষ্ট করতে হয়েছিল, কেননা আমার জন্মগতভাবে শারীরিক ত্রুটি ছিল, যার কারণে পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকে বেশ সমালোচনার শিকার হতে হয়েছিল আমাকে। আমাকে মানসিকভাবে অনেক আঘাত করেছিল। আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি, সেই সময় আমার অপারেশন করা হয়েছিল, যখন আমাকে ড্রেসিং করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হতো, সেই সময় প্রচুর ব্যথা পাইতাম। এখন আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ আমি, তবে ভারী কাজ করতে পারিনা, ঠিকঠাক মতো হাঁটাচলা করতে পারি না, উঁচু-নিচু স্থানে সাবধানে পা ফেলতে হয়। তারপরেও আমি বেশ খুশি। অল্প বয়সে বিয়ে করেছি এটা ঠিক, আমি মনে করি বেশ সুখে আছি আমি, প্রিয় মানুষকে নিয়ে ঘুরছি এবং নিজের মত করে সময় কাটাচ্ছি, আমার ভালোলাগা গুলো তার সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছি, এভাবেই জীবন চলছে। এখন মানুষের কথায় অভিমান হয় না , এইতো সব মিলিয়ে জীবন এভাবেই চলছে।
অতিথি ও উপস্থিত দর্শকদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ।
পুরস্কার বিতরণের সম্পূর্ণ অবদান @rme দাদার
উপস্থিত দর্শক শ্রোতারা বেশ ভালই উপভোগ করেছিল অতিথির জীবনের গল্প। তারা বেশ ভালই প্রশ্ন রেখেছিল এবং উত্তরগুলো খুঁজেও পেয়েছিল, অতিথির গল্পের মাঝে।
সব মিলিয়ে জীবনের গল্প চলছে, একদম দুর্বার গতিতে । পরবর্তীতে আমরা আসছি কিন্তু আপনার দরজায়, আপনি প্রস্তুত তো।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
রবিবারের আড্ডা জীবনের গল্পে অতিথি হিসেবে রেজওয়ানুল ভাই তার জীবনের গল্প গুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। তার কষ্টের গল্প গুলো শুনে সত্যিই অনেক খারাপ লাগছিল। তবে এখন যে ভাই অনেক ভালো আছে এটা জেনে অনেক ভালো লেগেছে। আসলে এই গল্পগুলো শুনলে জীবনের অনেক কিছু শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব। অনেক ধন্যবাদ ভাই সুন্দরভাবে পোস্ট টি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1789935013728788511?t=NU0tLDXzVOm9yJgoCFS9KA&s=19
দেখতে দেখতে জীবনের গল্প - পর্ব ৫ চলে গেলো। গতকাল সময়টা ভীষণ ইনজয় করেছি। সত্যি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চমৎকার সব উদ্যোগ। এসব উদ্যোগ গুলো কে সব সময়ই সাধুবাদ জানাই। রেজোওয়ান ভাই তার জীবনের সাথে ঘটে যাওয়া গল্প গুলো শেয়ার করার চেষ্টা করেছেন। এভাবে অন্যদের জীবনের গল্প গুলো শুনলে আমাদের বিভিন্ন ধরণের অভিঙ্গতা হবে। চমৎকার ভাবে পোস্ট টি উপস্থাপন করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
কালকের দিনটা আমার জন্য বেশ স্মরণীয় একটা দিন ছিল। কালকে আমি মন খুলে নিজের অনুভূতিগুলো বলতে পেরেছি। অনেকটাই নিজেকে হালকা মনে হচ্ছিল। আপনারা শুরু থেকেই আমাকে সাপোর্ট করে আসছেন ও আমাকে সমর্থন করতেছেন। আপনাদের আমি কখনোই ভুলবো না। আপনার প্রতি ও আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের প্রতি ভালোবাসা অফুরন্ত রয়ে যাবে।ভালবাসি আমার বাংলা ব্লগ ও দাদা কে ❤️🫰
ধন্যবাদ ভাই, আমরাও আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ, আপনাকে অতিথি হিসেবে পেয়ে। ভালোবাসা নিরন্তর।
এই উদ্যেগটা সত্যি অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এটার মাধ্যমে আস্তে আস্তে সবার জীবনের গল্পটা আমরা জানতে পারতেছি। তেমনিভাবে রেজুওয়ান ভাইয়াও নিজের জীবনের একটা অংশ আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন। গতকালকে উপস্থিত থাকতে না পারলেও এই পোষ্টের মাধ্যমে পুরোটা পড়ে নিতে পেরে অনেক ভালো লাগলো। অনেক খারাপ লেগেছে গল্পগুলো পড়ে। তবে দিনশেষে তিনি এখন ভালো রয়েছেন কথাটা অনেক আনন্দিত করলো।
গতকালকে রবিবারের আড্ডার পর্বটি দারুন ছিল। রেজওয়ানুল ভাই তার জীবনের অভিজ্ঞতা গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যি উনার জীবনের গল্পগুলো পড়ে আমার খুবই খারাপ লাগছিল। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে উনি এখন অনেক ভালো আছেন। এমন সুন্দর আড্ডায় থাকতে পেরে অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনি আবারো লিখে বিস্তারিত শেয়ার করলেন ধন্যবাদ আপনাকে।
এটা সত্য কথা, একটা মানুষ সুস্থ থাকলে, সবদিক থেকে সে ফুরফুরে মেজাজে থাকতে পারে এবং মানসিক প্রশান্তি খুঁজে পায়।
গতকাল রবিবার আড্ডায় আমি যুক্ত হতে পারিনি। কেননা গতকাল আমি নেটওয়ার্কবিহীন একটি এলাকায় দুলাভাইয়ের ভোটের কাজ নিয়ে গিয়েছিলাম। যার কারনে মোবাইলে একদম নেটওয়ার্ক ছিল না। তাই খুব মিস করে গেছি রবিবারের আড্ডা। যদিও বা কখনো এমন হয় না, তবুও কাজের চাপে পড়ে রবিবারের আড্ডা মিস করে গেলাম। যাইহোক ভাইয়া, আজ আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জীবনের গল্প পর্ব ৫ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি, রবিবারের আড্ডায়, জীবনের গল্প পর্ব ৫ শেয়ার করার জন্য।
সমস্যা নেই ভাই, পরবর্তী সময়ে নিজের ব্যস্ততা কমলে, অবশ্যই আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন আড্ডায়, এমনটাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। শুভেচ্ছা রইল।
রবিবারের আড্ডা জীবনের গল্পে রেজওয়ান ভাইয়াকে পেয়ে সত্যি অনেক ভালো লেগেছে। উনার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। আসলে মানুষের জীবনের গল্প গুলো না জানলে কখনো বোঝা যায় না। নিজের কথাগুলো অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছিলেন। বেশ ভালো লেগেছে ভাইয়া।
প্রত্যেক সপ্তাহের ন্যায় এই সপ্তাহেও রবিবারের আড্ডায় আমার উপস্থিত হয়েছিলাম। রবিবারের আড্ডায় জীবনের গল্পে আমাদের সাথে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেজোয়ান ভাই। আসলে রেজোয়ান ভাইয়ের সুখ-দুঃখের গল্প শুনে সত্যিই আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল। সবার শেষে গিভওয়েতে গিয়ে বেশ মজা হয়েছিল। পুরস্কার না জিততে পেরে সত্যিই বেশ খারাপ লেগেছিল তবে বেশ দারুন সময় অতিবাহিত করেছিলাম কালকে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
সমস্যা নেই ভাই, পরেরবার গিভওয়েতে দ্রুত অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করবেন, আশা করা যায় কোন একটা অবস্থানে থাকবেন।