কদিন আগের ঘটনা
মানুষের কিছু স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য আছে, হয়তো তা ছোটবেলা থেকে বলে বলে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে বিধায়, তাই হুটহাট করে কেউ জিজ্ঞাসা করলেই তাৎক্ষণিক বলে দেয় ব্যাপারটা।
ধরুন, কেউ একজন পরীক্ষার হল থেকে পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে আসলো, এখন আপনি যদি তাকে সঙ্গে জিজ্ঞাসা করেন আপনার পরীক্ষা কেমন হলো, সেই পরীক্ষার্থী তাৎক্ষণিক কিছু বুঝে ওঠার আগেই স্বাভাবিকভাবে বলে দেয়, পরীক্ষা ভালো হয়েছে নতুবা খুবই ভালো হয়েছে কিংবা আরো অন্য সব কথা।
তারমানে দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষা রিলেটেড কিছু কথা যদি তাৎক্ষণিকভাবে কেউ জিজ্ঞাসা করে, তার উত্তর হচ্ছে গতানুগতিক। মানে সে যা পূর্ব থেকে শিখে এসেছে, তাই সে গড়গড় করে বলে দিচ্ছে। কোন ভাবনা চিন্তা ছাড়াই।
কদিন আগে, আমার পার্শ্ববর্তী বাসার এক ছোট ভাইকে বলেছিলাম, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা কেমন হলো। সে এক কথায় উত্তর দিল , তার পরীক্ষা খুবই ভালো হয়েছে এবং সে যে কোন একটা সরকারি মেডিকেল কলেজে টিকে যাবে।
তার আত্মবিশ্বাস ছিল একদম উচ্চমাত্রার। ব্যাপারটা আমি ভীষণ পজেটিভ ভাবে নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, সবেমাত্র পরীক্ষা নামক প্রতিযোগিতায় পা দিয়েছে, তাই হয়তো এমনটা বলছে। তারথেকেও বড় বিষয় হচ্ছে তার বাবা-মা, তার সন্তানের আত্মবিশ্বাসমূলক কথা শুনে, সঙ্গে দুটো একটা কথা বাড়তি বলেছে আশেপাশের লোকজনকে।
মানে ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে, তার ছেলে বা মেয়ের রেজাল্ট হওয়ার আগেই একদম মেডিকেলে চান্স পেয়েছে, এখন শুধু ভর্তি করে দিয়ে আসবে। ব্যাপারটা মিশ্র রকম একটা প্রতিক্রিয়া।
যাইহোক অতঃপর দুদিন পরেই রেজাল্ট প্রকাশিত হলো, আমার পার্শ্ববর্তী বাসার ঐ ছোট ভাইয়ের নাম রোল রেজাল্ট শীটের কোন জায়গাতেই ছিল না। সে আসলে পাস ই করতে পারেনি, তার যে ফলাফল, তাতে আর যাইহোক সরকারি মেডিকেলে তো হবেই না বরং কোন বেসরকারি মেডিকেলেও এপ্লাই করতে পারবেনা। কেননা এখন মেডিকেল কলেজ গুলো নতুন নিয়ম করেছে, বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তি হতে গেলেও, ভর্তি পরীক্ষার নূন্যতম পাস মার্কটুকু লাগে।
কয়েকদিন ধরে, সেই ছোট ভাই আর তার বাবা-মাকে এলাকার ভিতরে দেখা যাচ্ছে না। তারা কোথায় গিয়েছে কেউ জানে না। আমি বুঝতে পারছি, তাদের মনের অবস্থা খুব একটা ভালো না। তারা আসলে অগ্রীম যে কথাগুলো বলেছে, সেটা আসলে খুব একটা কার্যকর হয়নি।
আসলে এখানে কারোই দোষ নেই, মূলত সেই ছোট ভাই তার বাবা-মার অতিরিক্ত প্রত্যাশা জনিত কারণে, পরীক্ষা দিয়ে এসে হঠাৎই তার বাবা-মা জিজ্ঞাসা করা মাত্রই কথাটা বলে ফেলেছিল আর তার বাবা-মা, তার সন্তানের মনের অবস্থা বাস্তবিকভাবে না বুঝেই, আশেপাশের লোকজন কে একটু বাড়তি কথা বলেছিল।
আত্মবিশ্বাস সবার থাকা ভালো, তবে তো কোন অবস্থাতেই অতিরিক্ত নয়।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
একেবারে যথার্থ বলেছেন ভাই, কনফিডেন্স থাকা ভালো, তবে ওভার কনফিডেন্স থাকা মোটেই ভালো নয়। আমি কোনো কিছু অগ্রিম বলা পছন্দ করি না। কারণ যেটা নিয়ে অগ্রিম বলবো, সেটার ফলাফল যদি খারাপ হয়,তাহলে লজ্জা পেতে হয় মানুষের কাছে। এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়,মনে হয় যে মাটি গর্ত করে মাটির নিচে ঢুকে পড়ি। যাইহোক এখানে ছেলেটার কোনো দোষ নেই। ছেলের মা বাবা ফলাফলের আগেই, সবাইকে অগ্রিম বলেছে বলেই মূলত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যাইহোক হয়তোবা কিছুদিনের মধ্যেই তারা এলাকায় ফেরত চলে আসবে। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আমিও ছেলেটার কোন দোষ খুঁজে পাইনি, আসলে পরিবেশ পরিস্থিতি তাকে এমনটা করতে বাধ্য করেছে।
এটা একদম ঠিক, আত্মবিশ্বাস থাকা ভালো তবে অতিরিক্ত একদমই না। আমিও একজন ইঞ্জিনিয়ারিং এডমিশন ক্যান্ডিডেট। সে হিসেবে আমিও দেখেছি। অনেকেই খুব আত্মবিশ্বাস দেখিয়েও পরে চান্স হয় না। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় এখন নতুন সংযোজন। পাস মার্ক না তুলতে পারলে বেসরকারিতেও হবে না। এটা অবশ্য জানা ছিল না।
বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির নিয়ম সংযোজন, কয়েক বছর আগেই হয়েছে ভাই।