পড়ন্ত বেলায় গ্রামের ভিতরে ঘোরাঘুরি
বেশ কয়েকটা দিন হলো গ্রামে এসেছি, হয়তো আর দু-একদিন থাকবো, তারপরেই হয়তো ফিরে যাবো আবারও সেই যান্ত্রিক জীবনে।
আমার শৈশবের অনেকটা সময় কেটেছে গ্রামীণ পরিবেশে, গ্রামের ধুলোবালি মেখে আমি বড় হয়েছি। হয়তো সময়ের পরিবর্তনে পরবর্তীতে গন্তব্য হয়েছে শহুরে জীবনে। তারপরেও গ্রামের প্রতি আমার প্রচুর দুর্বলতা কাজ করে।
এদিক থেকে আমি হয়তো অনেকটাই ব্যর্থ হয়ে গিয়েছি, কেননা আমার বাচ্চার শৈশবটাকে আমি অনেকটাই শহুরে জীবনের জেলখানায় আবদ্ধ করে ফেলেছি। তাই সময় সুযোগ পেলেই, ছুটে আসি একদম মাটির কাছাকাছি।
ছেড়ে দেই ওকে নিজের মতো করে, আমি চাই ওর শৈশবের সঙ্গে গ্রামের ধুলোবালির একটা নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়ে উঠুক এবং বাস্তবিকভাবে ওর পরিচিতি গড়ে উঠুক গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে।
গতদিন বিকেলে আমি আর বাজারে যাইনি। পুরো পরিবারকে সঙ্গে করে নিয়ে, বিচরণ করে বেরিয়েছি চারিপাশটা। চেষ্টা করেছিলাম একদম প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার। সেই পুকুরপাড় থেকে শুরু করে সদ্য রোপণ করা ফসলের জমিতে কিংবা গ্রামের ভিতরে টং এর উপরে বসে অনেকটা সময় কাটিয়ে দিয়েছিলাম।
আমার ভাতিজারা আমাদের সঙ্গে ছিল। ওরা মূলত বাবুর খেলার সঙ্গী। বাবু একদম খালি পায়ে হেঁটে ধুলোবালি লাগিয়ে পুরো শরীর মেখে ফেলেছিল। ইচ্ছে করেই আমি বাধা দেইনি, ও ভীষণ খুশি হয়ে গিয়েছিল।
এই খোলামেলা পরিবেশে পড়ন্ত বেলায়, গ্রামের ভিতরে হাঁটাহাঁটি করে যেন অন্যরকম প্রশান্তি কাজ করছিল। অনেকের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, কুশল বিনিময় হয়েছে। তারা তো আমাদের কার্যকলাপ দেখে কিছুটা অবাকই হয়ে হয়েছিল । তবে সেদিকে কর্ণপাত করার সময় আমার মোটেও নেই। আমি ব্যস্ত বাবুকে নিয়ে নিজের মতো করে।
সবচেয়ে বেশি মজা হয়েছিল, গ্রামের ফসলের জমি গুলোতে পানি দেওয়ার জন্য যে সেচ প্রকল্পের পানির ড্রেন গুলো ছিল, সেখানে যখন বাবুকে নামিয়ে দিয়েছিলাম, তখন বাবুর সেকি খুশি। ও কিছুতেই পানি থেকে উঠতে চাচ্ছিল না। একপ্রকার জোর করেই ওকে ওখান থেকে তুলে নিয়ে এসেছিলাম।
সব মিলিয়ে যদি বলতে চাই, তাহলে হয়তো এক কথাতেই বলবো, এইতো মাঝে মাঝে গ্রামে যে আসি, তা হয়তো শুধুমাত্র ওকে শহুরে জীবনের জেলখানা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গ্রামীন পরিবেশে থাকতে ভীষণ ভালোই লাগে কিন্তু দুঃখের বিষয় আর কতদিন পরে আবার সেই যান্ত্রিক শহরে চলে যাবেন। ঊর্ধ্বগতির বাজারে যান্ত্রিক শহরে টিকে থাকায় মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য বেশ কষ্টকর। আপনি গ্রামীণ পরিবেশের ফটোগ্রাফি গুলো বেশ দারুন ভাবে তুলে ধরেছেন। বাবা ছেলের ফটোগ্রাফি গুলো বেশ চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। এটা খুব ভালো লাগলো যে, পরিবারকে সময় দিয়েছেন এবং তাদের সব সময় দেখভাল করছেন। অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।
গ্রামে সময় কাটাতে আসলেই খুব ভালো লাগে। ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে শায়ান কতোটা খুশি হয়েছে। আসলে বাচ্চারা একেবারেই ঘরবন্দী থাকতে চায় না। তারা চায় খোলামেলা পরিবেশে ছোটাছুটি করতে,মাটির মধ্যে খালি পায়ে হাঁটতে, শরীরে কাঁদা মাখতে। আসলে আমরা তো মাটির তৈরি মানুষ, তাই মাটির প্রতি আমাদের ভালোবাসাটা থাকেই। যদিও কিছু কিছু মানুষ শহুরে জীবনযাপন করে মাটির সাথে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়। তারা শুধু বছর না, বরং এক যুগেও গ্রামে যায় না। কিন্তু দিনশেষে মৃত্যুর পর ঠিকই মাটির নিচে যেতে হয়। যাইহোক আপনার চিন্তা ভাবনা সবসময়ই খুব ভালো লাগে। মাঝেমধ্যে শায়ানকে নিয়ে অবশ্যই গ্রামে যাবেন ভাই। এতে করে শেকড়ের প্রতি টান থাকবে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
শেকড়ের প্রতি টান কথাটা বেশ দারুন লাগলো ভাই। শুভেচ্ছা রইল।
গ্রামের প্রতি দুর্বলতা কম বেশি মনে হয় সবারই আছে। আর যারা গ্রামে বড় হয়েছে তাদের দুর্বলতা আরো অনেক বেশি।ছবিগুলো দেখে আমারও গ্রামের কথা মনে পরে গিয়েছে। ছোট বেলায় এমন সেচ দেওয়া পানিতে আমিও কত খেলেছি।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
সময় সুযোগ পেলে চেষ্টা করিয়েন আপু, নিজের গ্রাম থেকে ঘুরে আসার জন্য, বেশ ভালো লাগবে।
ভাইয়া গ্রামের সবুজ প্রকৃতি আমাকেও খুব টানে। আগে একটা সময় নানার বাড়ি কিংবা দাদার বাড়িতে যখন বেড়াতে যেতাম তখন আর সেখান থেকে ফিরে আসতে মন চাইতো না। তবে এখন আর সেই সময় নেই, গ্রামীন পরিবেশে গিয়ে সময় কাটানোর। তবে আমিও চেষ্টা করি আমার ছেলে ও মেয়েকে তার নানার বাড়িতে বেড়াতে যেতে, যেন তারা গ্রামের সৌন্দর্যময় পরিবেশ উপভোগ করতে পারে। আর আমাদের শায়ান বাবু যেভাবে ধুলোবালিতে মেখে খেলা করছে, তাতে করে দেখে বোঝা যাচ্ছে তার আনন্দের সীমা ছিল না। পড়ন্ত বেলায় গ্রামের সৌন্দর্য অবলোকন করেছেন, সেই সাথে অনেক ঘোরাফেরাও করেছেন দেখে বোঝা যাচ্ছে আপনাদের সময়টা খুবই উপভোগ্য ছিল। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার সুন্দর সময় টুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
এটা সত্য, ও আসলেই বেশ খুশি হয়েছিল এবং এখানে বেশ আনন্দে আছে ও।
ভাই আমিও আপনার কথার সাথে একমত পোষন করছি ৷ শৈশব জীবন যদি গ্রামে না হয় ৷ ওই শহরের জীবনে কে বন্দি জীবনই বলি ৷ যা হোক শায়ন বাবু দেখতে দেখতে বেশ বড় হয়ে গেলো ৷ খুব ভালো করছেন যে বাবু কে গ্রামের শৈশবের মূহুর্ত টা দিয়েছেন ৷ আসলে ছোট বেলায় ধুলো মাখা আর ড্রেনে গোসল দেওয়া এসব এখন মিস ৷ তবে কথা একটাই জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় শৈশব জীবন ৷
অনেক ভালো বাব বেটার এমন দারুন মুহুর্ত টা ৷ সেই সাথে শায়ন বাবুর জন্য অনেক শুভকামনা ৷
আমিও সেটাই মনে করি ভাই, জীবনের একমাত্র শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছে শৈশবের মুহূর্ত। তাই বাবুর শৈশবটাকে আমি একটু রঙিন করতে চাচ্ছি।
বিকেলবেলা গ্রামের এই অপরূপ সৌন্দর্যময় সবুজ প্রকৃতির মধ্যে ভ্রমণ করতে খুবই ভালো লাগে। আসলে সবুজ প্রকৃতির এই গ্রামের দৃশ্যগুলোর মধ্যে পড়ন্ত বিকেলে আপনি খুবই সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। আর সেই মুহূর্তের ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করলেন,দেখে খুবি ভাল লেগেছে আমার।
শহরের জীবনের জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মাঝে মাঝে গ্রামে সময় কাটানো জরুরি। বিশেষ করে শায়ানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামে কাদাঁ মাটি গায়ে মেখে বড় হলে ভালোই হবে। অন্তত মোবাইল আসক্তি টা কমে যাবে আমি মনে করি। যেহেতু খেলার সাথীও রয়েছে।
এক ঠিক বলেছেন ভাই, এজন্যই গ্রামে আসা মাঝে মাঝে।
আপনার মতো করে এখন কোন বাবা মা চিন্তা করে না ভাই। তারা তো পারলে তাদের সন্তান কে মাটি পানি থেকে দূরেই রাখে। কিন্তু আপনার ব্যাপার টা আমার কাছে ভালো লেগেছে। আপনি আপনার ছেলেকে ছেড়ে দিয়েছেন। এতে করে অন্তত গ্রামের পরিবেশ মাটি পানির সঙ্গে ওর একটা নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হবে।
পড়ন্ত বেলায় গ্রামে ঘোরাঘুরি করতে বেশ ভালো লাগে আবার সঙ্গে যদি থাকে এরকম ভাতিজারা। বাবুর খেলার সঙ্গী হলেও নিজেকে অনেকটা ভালো লাগে তাদের সঙ্গে থাকতে পেরে। চমৎকার একটি পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। অনেক অনেক শুভকামনা শুভর জন্য।