শেষ বেলায়
শেষ গ্রামে এসেছিলাম রোজার পূর্বে। রোজার ভিতরে আর কোনোভাবেই গ্রামে আসার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। তবে সেবার বাসায় ফিরে যাওয়ার আগে, কয়েকজন কাছের লোককে কথা দিয়েছিলাম। যদি সময় হয়, তাহলে অবশ্যই পরবর্তীতে রোজার শেষের দিকে এসে, কোন একদিন সবাই একত্রে ইফতার করব।
আজকে সকাল অবধি আমি জানতাম না যে, গ্রামের বাড়িতে আসার সুযোগ হবে। যেহেতু সুযোগ হয়েই গিয়েছে, তাই নিজের জায়গা থেকে কথা রাখার চেষ্টা করেছিলাম।
আমি মানুষটা খুব একটা সুবিধার না, অকপটে সাবলীল কথাবার্তা বলার স্বভাব আমার পূর্ব থেকেই। এজন্য হয়তো অনেকে আমাকে পছন্দ করে আবার অনেকেই আমাকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নেয়। পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে মানুষের মন পাওয়া। যেখানে এই কাজে স্রষ্টাই ব্যর্থ হয়ে গিয়েছে, সেখানে তো আমি অতি নগন্য ।
যাদের কে রোজার আগে কথা দিয়ে গিয়েছিলাম, আজ গ্রামের বাড়িতে এসেই, বিকেল বেলা তাদের সঙ্গে নিজের থেকে দেখা করার চেষ্টা করেছিলাম। যেহেতু শেষ ইফতারের দিন, তাই মানুষের ভিতরে এখন থেকেই যেন ঈদ আনন্দ শুরু হয়ে গিয়েছে।
সেই জলিল কাকু থেকে শুরু করে, শাহজাহান কাকু, মজনু কাকু, রহিম চাচা কিংবা ছোট ভাই রানা ও রাজ্জাক ভাইকে খুঁজে বের করেছিলাম গ্রামের বাজারে। আমাকে দেখেই তারা যেন একপ্রকার অপ্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল। তারা জানত, আমার তো এবার এখানে ঈদ করতে আসার কথা না।
নিজের থেকেই কুশল বিনিময় করার চেষ্টা করলাম। বলেই ফেললাম, তোমাদের তো পূর্বেই কথা দিয়ে গিয়েছিলাম, হয়তো সেই টানেই চলে এসেছি। যদিও তারা প্রতিনিয়ত ইফতার তাদের নিজ বাড়িতে করে,তবে আজ আমি নাছোড়বান্দা। তাদের কোনোভাবেই ছাড়তে রাজি নই।
আমার সামর্থ্য অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব হয়েছে, সেটা দিয়েই চেষ্টা করলাম, গ্রামের বাজারের হোটেলের ভিতরে ইফতারের আয়োজন করার। যদিও এক্ষেত্রে আমাকে টুকটাক কাজে অনেকেই সহযোগিতা করেছিল, তবে পয়সা আমি কাউকেই দিতে দেইনি।
এই মানুষগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আমার অনেকটাই আত্মিক। বলতে গেলে গ্রামে আসলে তাদের সঙ্গে বেশিরভাগ সময়ই আমার কেটে যায়। সবাই বয়সে প্রবীণ, হাতে গোনা কোন দু-একজন ছাড়া। তবে তারপরেও, আমাদের এই সম্পর্ক গুলোর মাঝে কোন প্রকার অতিরিক্ত প্রত্যাশা নেই, যার কারণেই হয়তো, গ্রামে আসলে তাদের সঙ্গে গল্প গুজব করে বেশ ভালো সময় কাটে।
আজ শেষ ইফতারের দিনেও, ঠিক তেমনটাই সময় কাটালাম সবাই মিলে। বড্ড পরম প্রশান্তি পেয়েছি নিজের ভিতরে। এমন সময় আপাতত আর চাইলেও পাওয়া যাবে না। তবে যাইহোক, ঈদ আনন্দের আসল পরিপূর্ণতা যেন আজকে ইফতারের মাধ্যমেই, আমি পেয়ে গিয়েছি।
সবাই নিজ নিজ অবস্থানে ভালো থাকুন, সবার জন্য ঈদ উৎসবের শুভেচ্ছা রইল।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
কথাটা তো ভাই ঠিক বলেছেন। সবার মন পাওয়া সম্ভব না। যেখানে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাই ব্যর্থ। কথা দিয়ে আপনি কথা রেখেছেন গ্রামের প্রিয় মানুষ গুলোর সঙ্গে ইফতার করেছেন উনারা অনেক খুশি হয়েছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে নাহ। খুব ভালো লাগল ভাই মূহুর্ত টা দেখে। আপনার মতো স্টেটকার্ট সত্য কথা বলা মানুষ আমার পছন্দ।
তোমার কথাতে ভাই অনুপ্রেরণা পেলাম। শুভেচ্ছা রইল তোমার জন্য।
কিছু কিছু সম্পর্ক বয়সের কাছেও হার মেনে যায়। আর কাউকে কথা দিয়ে সে কথা রাখতে পারলে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। যাক শেষ রোজায় হলেও তাদের সঙ্গে ইফতার করতে পেরেছেন দেখে ভালো লাগলো। আশা করি আজকের ঈদ ভালো কেটেছে।
ঈদ কেটেছে অনেকটা শুয়ে বসেই আপু, গ্রামে আসছি তাই একটু আরাম করছি।
মানুষের মন পাওয়া খুব সহজ আবার খুব কঠিন! কাউকে পাচঁ টাকা দিলেই খুশি করানো যায় আবার কাউকে ছোট্র একটা কথার মাধ্যমেও খুশি করানো যায়। যাইহোক, আপনার এই কাজগুলো আমার সবসময় ভালো লাগে। শ্রমজীবী মানুষদের নিয়েই আপনি বেশি ভাবেন। আপনার মতো আমাদের সকলেরই ভাবা উচিত! তাদেরকে নিয়ে ইফতারের আয়োজনটা করে ভালোই করেছেন। ঈদের আগে শেষ ইফতারটা ভালোভাবেই করতে পেরেছেন। দেখে মনে হচ্ছে তারাও বেশ খুশি হয়েছিল। 🌼
মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছি রে ভাই, তবে মানুষ হওয়া বড্ড কঠিন।
যেকোনো বয়সের মানুষের সাথে আপনি খুব ভালোভাবে মিশতে পারেন এবং এই ব্যাপারটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। সত্যি বলতে এটা কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই সম্ভব নয়। যাইহোক কাউকে ইফতার করাতে পারলে নিজের কাছেই অনেক ভালো লাগে। বাজারের হোটেলের মধ্যে দারুণভাবে ইফতারের আয়োজন করেছেন ভাই। দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। যাইহোক এতো চমৎকার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি যে কথা দিয়ে কথা রাখতে পেরেছেন, এটাই সবথেকে বেশি ইম্পরট্যান্ট দাদা। তাছাড়া আপনি যে মানুষগুলোকে কথা দিয়েছিলেন তাদেরকে বাজার থেকে খুঁজে বের করে, সবাইকে ইফতারি করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, এটা অবশ্যই একটা মহৎ কাজ। হয়তো মানুষগুলো এটা এক্সপেক্ট করেনি কিন্তু তারা এই কাজে যথেষ্ট সারপ্রাইজ হয়েছে বলে আমি মনে করছি।