শৈশব স্মৃতি-ছোটবেলায় মাছ ধরতে যাওয়ার একটি স্মৃতি||
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। শৈশবের স্মৃতি নিয়ে লিখতে আমার ভালো লাগে। শৈশবের স্মৃতিগুলো অনেক মধুর এবং আনন্দের ছিল। এরই মাঝে কিছু কিছু স্মৃতি আছে যেগুলো স্মরণীয় হয়ে আছে। এর আগেও আমার শৈশবের কিছু স্মৃতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম। আজকে আমি ছোটবেলায় মাছ ধরতে যাওয়ার একটি স্মৃতি সবার মাঝে উপস্থাপন করবো। তো বন্ধুরা চলুন আমার এই পোস্ট পড়ে নেয়া যাক।
ছোটবেলায় মাছ ধরতে যাওয়ার একটি স্মৃতি:
ছোটবেলায় যেহেতু গ্রামে বড় হয়েছি তাই ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরার নেশা ছিল আমার। স্কুল ছুটি হলেই বাসায় ফিরে বরশি নিয়ে পুকুরে চলে যেতাম। আমাদের অনেক বড় একটি পুকুর আছে। সেই পুকুর থেকে মাছ ধরতাম। বরশি দিয়ে মাছ ধরতে আমার খুবই ভালো লাগতো। ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের মাছ বড়শিতে উঠতো। আর সেই মাছগুলো ধরতে আমার খুবই ভালো লাগতো। সেই সময় গুলো এখন আর নেই। এখন আর বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সুযোগ হয় না কিংবা সময় হয়না। তবে স্মৃতিগুলো এখনো মনে পড়ে। ছোটবেলায় যেহেতু মাছ ধরা আমার নেশা ছিল তাই কাউকে মাছ ধরতে দেখলেই আমিও তার পিছে পিছে চলে যেতাম। আমার বাড়ি থেকে একটু দূরে একটি নদী ছিল সেখানেও মাছ ধরতে যেতাম।
একদিন হঠাৎ করে দেখলাম কিছু লোক মাছ শিকার করার জন্য যাচ্ছে। তাদের সাথে ছিল বিভিন্ন রকমের সরঞ্জাম। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো সেই লোকগুলো যখন মাছ শিকার করতে যেত তখন সিঙ্গা ফুঁ দিয়ে জোরে জোরে ডাক দিতো। আর যারা মাছ শিকার করতে চায় তারা বাড়ি থেকে প্রস্তুতি নিয়ে বেরিয়ে পড়তো। এই দৃশ্য গুলো দেখে বেশ ভালো লেগেছিল। অনেক মানুষ দূর থেকে মাছ ধরতে এসেছে। আপনাদের অঞ্চলে এরকম দৃশ্য দেখা যায় কিনা জানিনা তবে আমাদের অঞ্চলে মাঝে মাঝেই এই লোকগুলোকে দেখা যেতো। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে আসে আর দল বেঁধে মাছ শিকার করে। বিশেষ করে নদীগুলোতে তারা মাছ শিকার করে। অনেকের বাড়ি অনেক দূরে ছিল। তারা একসাথে দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে মাছ শিকার করে। তাদের কাছে মাছ শিকার করার জন্য বিভিন্ন রকমের জাল ছিল। তারা প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিল। আমি এবং আমার চাচাতো ভাই যখন এই দৃশ্যগুলো দেখেছিলাম তখন তাদের পিছে পিছে চলে গিয়েছিল। যখন তারা আমাদের বাড়ির পাশের নদীতে মাছ শিকার করা প্রায় শেষ করে ফেলেছে এখন তারা সামনের দিকে এগোতে শুরু করেছে।
আমরা যেহেতু অনেকটাই ছোট ছিলাম তাই আমরাও ওদের পিছে পিছে চলে গিয়েছিলাম। দেখতে দেখতে আমাদের বাসা থেকে অনেকটা দূরে চলে গিয়েছিলাম। এরপর যখন প্রায় বিকেল হয়ে আসলো তখন দুজনের ভয় লাগতে শুরু করলো। পরে যখন আশেপাশের লোকের কাছে জানতে পারলাম আমাদের গ্রাম থেকে এই জায়গাটির দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার তখন তো চোখে পানি চলে এসেছিল। মাছ ধরার সেই দলের সাথে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ লোক ছিল। এত লোকের ভিড়ে আমি আর আমার চাচাতো ভাই কিভাবে যে চলে গেলাম বুঝতেই পারিনি। সেই দলের মধ্যে আমাদের বয়সী কিছু ছেলেও ছিল। ওদেরকে দেখেই আমরা পিছে পিছে চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু এতটা দূরে চলে যাবো বুঝতে পারিনি। যখন বিকেল হয়ে গেছে তখন খুবই ভয় লাগছিল। ফিরবো কিভাবে সেটাও বুঝতে পারছিলামনা। একেক জন মানুষ একেক অঞ্চলের ছিল। হয়তো সন্ধ্যার দিকে সবাই যে যার বাড়িতে ফিরবে।
আমরা যেহেতু অনেক ছোট ছিলাম তাই ভয় পেয়েছিলাম। এরপর ওই দলের কিছু লোক আমাদেরকে দেখে চিনে ফেলে। আর তারা দায়িত্ব নিয়ে আমাদেরকে নিজের এলাকায় পৌঁছে দেয়। অন্য দিকে বাসার লোকজন আমাদের অনেক খোঁজাখুঁজি করেছে। বাসায় ফেরার পর আমার এবং আমার চাচাতো ভাইয়ের পিঠে ভালোই নাস্তা পড়েছিল।সেই স্মৃতিগুলো এখনো মনে পড়ে। এখন আর দল বেঁধে মাছ শিকার করা লোকগুলোকে দেখি না। হয়তো এখন আর এই লোকগুলো মাছ শিকার করতে আসে না। তবে শৈশবের সেই স্মৃতি এখনো মনে পড়ে। আশা করছি আমার শৈশবের মাছ শিকার করার স্মৃতি আপনাদের সবার ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ সকলকে।
আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। ব্যক্তিজীবনে আমি আইন পেশার সাথে জড়িত। এছাড়াও ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং ও ব্লগিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/shopon799/status/1802264557961859337
আপনার এই শৈশবের গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আসলে ছোটবেলায় অনেক কিছুই বোঝার ঘাটতি থাকে যার কারণে এমনটা হয়। আপনারা প্রায় ৮ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত চলে গিয়েছিলেন জেনে অবাক হলাম। তখন যদি ওনারা আপনাদেরকে না চিনতে পারতো তাহলে তো বেশ বিপদ হতে পারত। যাই হোক শেষ পর্যন্ত সুন্দর মত বাসায় পৌঁছাতে পেরেছিলেন জেনে ভালো লাগলো। আর ছোটবেলায় কোনো দুষ্টামি করে বাসায় ফিরলে ফ্রিতেই এরকম নাস্তা পাওয়া যায়। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া ছোটবেলায় বোঝার ঘাটটির কারণে আমরা অনেক কিছু করে ফেলি। যাইহোক আমার শৈশব স্মৃতি পড়ে আপনার অনেক ভালো লেগেছে জেনে খুশি হয়েছি। সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি তো বাড়ি থেকে প্রায় অনেক দূরে চলে গিয়েছিলেন মাছ ধরতে এত কম বয়সে গিয়েছিলেন যেটা অনেক সাহসিকতার একটা পরিচয় দিলেন শেষ পর্যন্ত কান্না কান্না ভাব হয়ে গেছিল আপনার। আর আপনার এলাকা থেকে দেড়শ থেকে ২০০ লোক ওখানে মাছ ধরতে গিয়েছিল। আমি মাছ ধরতে গিয়েছিলাম বন্ধুদের সঙ্গে তবে আপনার গল্পের সঙ্গে আমার গল্পের একটু একটু মিল পেয়েছি যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে গল্পটি শেয়ার করার জন্য।
আমার এই শৈশব স্মৃতির সাথে আপনার গল্পের কিছুটা মিল রয়েছে জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। এত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।
হাহাহাহা আপনাদের পিঠে তো নাস্তা পাড়ার কথা।নাস্তা খাওয়ার মতোই কাজ করেছিলেন তবে না বুঝে আনন্দে মাছ ধরার জন্য চলে গিয়েছিল বুঝতে পারছি।ভাগ্যিস আপনাদেকে চিনেছিলেন আর এলাকায় দিয়ে গেছে নইলে বেশ ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পরতে হতো।ধব্যবাদ ভাইয়া পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
আমাদের দুজনকে চিনতে না পারলে খুব মুশকিলে পড়ে যেতাম আপু। নাস্তা খাওয়ার মতই কাজ করেছিলাম এজন্যই তো নাস্তা পিঠের মধ্যে দিয়েছিল 😆। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।
খুব সুন্দর স্মৃতিজাগানিয়া একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া।খবরের কাগজে বা টিভিতে দেখেছি দলবেধে মাছ ধরতে যাওয়ার দৃশ্য। বাস্তবে দেখিনি। আপনি ও আপনার চাচাতো ভাই সেই ছোটবেলায় মনের আনন্দে সেই মাছধরা দলের পিছু নিয়ে ৮ কিলোমিটার দূরে চলে গিয়েছিলেন!! এটা অবশ্য স্বাভাবিক। কারণ আপনারা তখন অন্য এক শিহোরণে ছিলেন, তাই বুঝতে পারেননি। যাক শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে বাসায় ফিরেছেন। যদিও ফেরার পরে পিঠে বেশ নাস্তা পড়েছে!!! আপনার পোস্টটি ভালো লেগেছে। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
কিছু লোক আমাদেরকে চিনতে না পারলে বাসায় ফেরা খুবই মুশকিল হয়ে যেত। হ্যাঁ আপু নাস্তা পিঠের উপর ভালই পড়েছিল। সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।
মাছ ধরতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আপনার মাছ ধরার দারুন কিছু স্মৃতি পড়ে আমারও ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। ছোটবেলায় আমি এভাবে মাছ ধরতাম। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনিও ছোটবেলায় মাছ ধরতেন জেনে ভালো লাগলো। সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।