শৈশব স্মৃতি-লুকিয়ে সার্কাস দেখতে যাওয়া||
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। শৈশবের সোনালী দিনগুলো হারিয়ে গেছে। তবে স্মৃতিগুলো এখনো মনের কোণে রয়ে গেছে। আর শৈশব স্মৃতি নিয়ে লিখতে ভালো লাগে। তাই আজকে আমি লুকিয়ে সার্কাস দেখতে যাওয়ার একটি শৈশব স্মৃতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। তো বন্ধুরা চলুন আজকের এই পোস্ট পড়ে নেয়া যাক।
![circus-366142_1280.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZMzz5fMYnMn2STZg1v9RzdqiJ6LxqtKj11S4PCNLrNDD/circus-366142_1280.jpg)
ছোটবেলায় যেহেতু যৌথ পরিবারে বড় হয়েছি তাই মাঝে মাঝে অনেক দুষ্টুমি করতাম। যেহেতু আমার চাচাতো ভাইরা মিলে একসাথে থাকতাম তাই অনেক বেশি দুষ্টুমি করতাম। তেমনি একদিন লুকিয়ে লুকিয়ে সার্কাস দেখতে যাওয়ার একটি স্মৃতি আজকে শেয়ার করবো। খুব সম্ভবত আমি তখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি। তখন ছিল শীতের দিন। শীতের দিনে বিভিন্ন অঞ্চলে সার্কাস খেলার আয়োজন করা হতো। শীতের সময় সার্কাসে খড় বিছিয়ে মাটিতে আসন পাতা হতো। আর বড়দের জন্য কিছু চেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হতো। সেখানে রাতভর চলতো বিভিন্ন রকমের সার্কাস। যেহেতু শীতের রাত ছিল তাই বাড়ি থেকে সার্কাস দেখতে যাওয়ার কোন পারমিশন ছিল না। আমরাও ছিলাম নাছোড়বান্দা। যেভাবেই হোক সার্কাস দেখতে যেতেই হবে।
আমাদের থেকে বয়সে একটু বড় আমার এক চাচা ছিল যিনি সব সময় আমাদের বায়না গুলো পূরণ করতো। এবার আমি এবং আমার কয়েকজন চাচাতো ভাই মিলে সেই ছোট চাচাকে গিয়ে ধরলাম যে আমাদেরকে সার্কাস দেখতে নিয়ে যেতেই হবে। প্রথমে তো চাচা রাজি হচ্ছিল না। কারণ সেই সময় গ্রামের দিকে রাতের বেলায় অনেক শীত পড়তো। সেই শীতের মধ্যে সবাইকে নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার। আর এত রাতে সবাইকে নিয়ে বাহিরে যাওয়াও মুশকিল। অবশেষে আমাদের জেদের কাছে চাচা হার মেনে গেল। চাচাও রাজি হয়ে গেল। তখন আমরাতো অনেক খুশি। যেহেতু রাত নয়টা থেকে শো শুরু হতো তাই বলতে গেলে আমাদের জন্য রাত নয়টা অনেক রাত ছিল।
চাচা আমাদেরকে বলল তাড়াতাড়ি পড়াশোনা শেষ করে সবাই যেন তৈরি থাকি। আমরাও আটটার মধ্যেই নিজের স্কুলের পড়াগুলো শেষ করে ফেললাম। যেহেতু সন্ধ্যার দিকেই তখন খাওয়া হতো তাই খাওয়াটা আগেই শেষ করে নিয়েছিলাম। সেই সময় গ্রামের দিকে সন্ধ্যার দিকেই মোটামুটি সবাই ঘুমিয়ে যেতো। রাত আটটা বা নয়টার মধ্যেই পুরো গ্রাম নিস্তব্ধ হয়ে যেতো। সবাই মোটামুটি ঘুমিয়ে যেতো। যেহেতু আমরা সাড়ে আটটার দিকে বের হবো তাই সবারই মোটামুটি ভয় লাগছিল। এরপর চাচাও সাহস করতে পারছিল না। অবশেষে আমরা বের হতে হতে নয়টা পার করে ফেললাম। ইতোমধ্যেই শো শুরু হয়ে গিয়েছিল। একজন একজন করে জানালা দিয়ে বের হয়েছি। সেই স্মৃতিটা এখনো মনে পরে।
আমরা যখন সার্কাস দেখার জন্য বেরিয়ে পড়েছিলাম তখন অনেকটা দেরি হয়েছিল। সেখানে গিয়ে দেখতে পেয়েছিলাম সার্কাস শুরু হয়েছে। আর প্রবেশ মূল্য খুবই কম ছিল। আমরা সবাই নিজেদের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে রেখেছিলাম সার্কাস দেখতে যাবো বলে। সবাই ভিতরে ঢুকে গেলাম দ্রুতই। তখন সার্কাস চলছিল। রশির উপর উঠে ছোট দুটি ছেলে সার্কাস দেখাচ্ছিল। সেই স্মৃতি এখনো মনে আছে। আর ছিল অনেক বড় একটি হাতি। হাতি বল খেলছিল এটা দেখে খুবই ভালো লেগেছিল। অবশেষে সার্কাস শেষ হতে হতে অনেকটা রাত হয়ে যায়। এরপর বাড়ি ফিরতে ফিরতে সবার অবস্থা খুবই খারাপ হয়েছিল। বাড়ি ফিরেই একেবারে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আর বাড়ির কেউ জানতেও পারেনি আমরা রাতে সার্কাস দেখতে গিয়েছিলাম। তবে সকালে যখন আমরা সবাই দেরি করে ঘুম থেকে উঠেছিলাম তখন বাড়ির অনেকেই সন্দেহ করেছিল।এই ছিল আমার শৈশবের সার্কাস দেখতে যাওয়ার মজার একটি স্মৃতি।
🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹
আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। ব্যক্তিজীবনে আমি আইন পেশার সাথে জড়িত। এছাড়াও ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং ও ব্লগিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/shopon799/status/1804491233710018938
শৈশবের স্মৃতি নিয়ে আপনার লেখা অত্যন্ত জীবন্ত এবং মনোমুগ্ধকর। সার্কাস দেখতে যাওয়ার সেই অভিজ্ঞতা এবং সেই সময়ের আনন্দঘন মুহূর্তগুলো আপনি যেভাবে বর্ণনা করেছেন, তা পাঠককে সেই সময়ে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
আমার শৈশব স্মৃতি পড়ে আপনি শৈশবে ফিরে গিয়েছিলেন জেনে অনেক ভাল লাগলো ভাইয়া। সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।
টিফিনের টাকা বাচিয়ে সমবয়সী এক চাচাকে পটিয়ে বাড়িতে লুকিয়ে সার্কাস দেখার অনুভূতি বেশ ভালো লাগলো ভাইয়া।দেরিতে সার্কাস দেখতে গেলেও ইনজয় করেছেন বেশ তা বুঝতে পারছি।বাড়িতে এসে ঘুমিয়ে পড়েছে আর বাড়ির কেউ জানতেও পারেনি ব্যাপারটা বেশ মজার। ধন্যবাদ স্মৃতিচারন পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য আমাদের সাথে।
জ্বী আপু সেই সময় সার্কাস দেখতে গিয়ে অনেক ইনজয় করেছিলাম। সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।
ছোটবেলার লুকিয়ে লুকিয়ে সার্কাস দেখার মজাটাই আলাদা ছিল। যখনই মেলা হতো আমাদের আশেপাশে তখনই আমরা সেখানে চলে যেতাম কাউকে না বলেই। ছোটবেলা অনেক মজা করতাম বন্ধুরা সহ। আপনি সম্ভবত ষষ্ঠ শ্রেণীতে থাকতে এরকম একটা স্মৃতিময় মুহূর্ত কাটিয়েছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি স্মৃতিময় মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ছোটবেলায় আপনিও লুকিয়ে লুকিয়ে সার্কাস এবং মেলা দেখতেন জেনে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।