অনু গল্প-আমি সেই অপর্ণা||
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। এই কমিউনিটির যারা পুরনো মেম্বার আছেন তারা হয়তো অনেকেই জানেন আমি অনুগল্প লিখতে অনেক পছন্দ করি। তবে বেশ কিছুদিন কাজের বিরতির জন্য আর গল্প লেখা হয়নি। এখন আবারও নিজের কাজে ফিরে এসেছি। আর অনুগল্প লেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করছি আমার লেখা আজকের অনুগল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। তো বন্ধুরা এবার চলুন আমার লেখা অনু গল্প "আমি সেই অপর্ণা" পড়ে নেয়া যাক।
আমি সেই অপর্ণা:
![dark-1869803_1280.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRyRcR3Xk9hPdHDdCgRpFBkDuUFmgCWYr4tNWnTMPwzWz/dark-1869803_1280.jpg)
মেয়েটির নাম অপর্ণা। ডাক নাম তার অপু। বাবা-মা ভালোবেসে মেয়েটিকে অপু বলেই ডাকতো। ছোট্ট কুঁড়েঘরেও অপর্ণা রাজকন্যার মত মানুষ হয়েছে। বাবা মায়ের ভালোবাসার কোন কমতি ছিল না। অপুর সংসার যেন কানায় কানায় পরিপূর্ণতা পেয়েছিল। বাবা মায়ের ভালোবাসা, আদর স্নেহ অপুকে ঘিরে রেখেছিল। কেটে যাচ্ছিল অপুর দিনগুলো। দেখতে দেখতে অপু বড় হয়ে গেল। বড় হওয়ার সাথে সাথে অপুর বাবা-মায়ের চিন্তা বেড়ে গেল। অপুকে নিয়ে তারা অনেক স্বপ্ন দেখে। কিন্তু মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া এসে স্বপ্নগুলো উড়িয়ে নিয়ে যায়। তবুও তারা স্বপ্ন দেখে যায়। দেখতে দেখতে অপু পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করে। মেয়েটার স্বপ্ন অনেক বড় ছিলো। কিন্তু দরিদ্র বাবা মায়ের সামর্থ্য খুবই কম। অপু তার বাবা মাকে বলে আমি ভালো কলেজে ভর্তি হবো। নিজের পড়াশুনার টাকা নিজেই জোগাড় করবো। শুধু তোমরা আমার পাশে থেকো।
অপর্ণা ভর্তি হয়ে গেল শহরের একটি কলেজে। পাশাপাশি দু-চারটে টিউশনি করাতে হয় তাকে। টিউশনির টাকা দিয়েই তার পড়াশোনার খরচ চলে। দেখতে দেখতে কেটে গেল কয়েক মাস। সামনে অপুর পরীক্ষা। তাই নিজের পড়াশোনা আর টিউশনি দুটো সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে অপুকে। একদিন টিউশনি করতে করতে রাত হয়ে গেল। অপু ভেবে পাচ্ছিল না কি করে ঘরে ফিরবে। এরপর বুকে সাহস নিয়ে বেরিয়ে গেলো রাস্তায়। কিছুদূর যাওয়ার পর রাস্তার পাশের বখাটে ছেলেগুলো অপুকে ঘিরে ধরলো। অপু নিজেকে বাঁচাতে চিৎকার করেছিল। কিন্তু ওড়না দিয়ে অপুর মুখ বেঁধে দেওয়া হলো। অপুর চিৎকারের শব্দ আর বের হতে পারল না। অপু হারিয়ে ফেলল তার সম্মান। রাস্তার পাশে পরেছিল অপুর ক্ষতবিক্ষত দেহটা। অপুর বাবা-মা অপুকে খুঁজতে খুঁজতে যখন রাস্তার পাশে তাকে পায় তখন পুলিশের কাছে যায়। পুলিশ সেই বখাটে গুলোকে এরেস্ট করে। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। টাকার কাছে সবাই বিক্রি হয়ে যায়। আর ছাড়া পেয়ে যায় সেই বখাটেগুলো।
সেদিন অপু চিৎকার করে কেঁদেছিল। ন্যায়বিচার না পেয়ে অপু শপথ করেছিল সে ন্যায়ের পথে নিজেকে উৎসর্গ করবে। ন্যায় ছিনিয়ে আনবে। সে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে। তাই সে নিজেকে প্রস্তুত করে। ঘুরে দাঁড়ায় আবারও। অসহায় মানুষকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্য লড়াই করে অপু। এরপর কেটে যায় অনেক বছর। একজন সফল আইনজীবী হয় সে। অপুর সফলতার পেছনের গল্পটা হয়তো অনেকের কাছেই অজানা। কিন্তু অপু নিজের ন্যায় বিচার না পাওয়ার আক্ষেপ থেকেই আজ আইনজীবী হয়েছে। আজকে অপু সেই বখাটে গুলোকে যখন কাঠগড়ায় দেখলো তখন কাছে গিয়ে বললো আমি সেই অপর্না। যাকে তোরা রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলি। সেদিন আমি ন্যায় বিচার পাইনি। কিন্তু আজকে তোরা কেউ ছাড়া পাবি না। সেদিন আমার পাশে কেউ ছিলনা। কিন্তু আজকের সেই অসহায় মেয়েটির পাশে আমি আছি। অপর্ণা কেস জিতে যায়। আর সেই ছেলেগুলোর জেল হয়ে যায়। অপর্না সফল হয়েছে। নিজের সাথে হওয়া অন্যায়ের বিচার না পেলেও অন্য একজন মেয়ের সাথে হওয়া অন্যায়ের ন্যায় বিচার পেয়েছে।
আমার লেখা অনু গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে জানাতে ভুলবেন না বন্ধুরা। মাঝে মাঝে অনু গল্প শেয়ার করি। আর আজকেও একটি অনু গল্প শেয়ার করলাম।
🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹
আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। ব্যক্তিজীবনে আমি আইন পেশার সাথে জড়িত। এছাড়াও ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং ও ব্লগিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।
https://x.com/shopon799/status/1796128794459206066
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অপর্ণার গল্পটা পড়ে সত্যিই ভালো লেগেছে। আসলে একজন মেয়ের সম্মান টা অনেক বেশি। কিন্তু সেই সম্মানে যদি আঘাত আনে তাহলে কিন্তু এই মেয়েটার আর কিছুই থাকে না। তবে অপর্ণা যে সাহস করে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে এটাই ভালো লেগেছে। এইটা কতজন পারে। শেষ পর্যন্ত তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে হওয়া লোকদেরকে শাস্তি দিয়েছে এটা দেখে ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন আপু যখন কেউ সম্মানে আঘাত পায় তখন অনেক কষ্ট পায়। আর অনেক সময় প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত সে অন্যায়ের সাথে লড়াই করে সফল হয়েছে।
আমি সেই অপর্ণা শিরোনামে গল্পটি অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া। অপর্ণা আইজীবি হয়ে অসহায় নারীর পাশে দাঁড়িয়ে নিজে বিচার না পাওয়ার প্রতিশোধ নিয়েছে, দায়িদের শাস্তির ব্যবস্থা করে। অপর্ণার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পটি ভালো লেগেছে। গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
অপর্ণা ঘুরে দাঁড়িয়েছে আর প্রতিশোধ নিতে পেরেছে। অন্য একজনের পাশে দাঁড়িয়ে হলেও নিজের সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নিয়েছে আপু।
অপর্ণার গল্পটি পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আপনি আমাদের মাঝে আবারো অনু গল্প নিয়ে এসেছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। সত্যি আমাদের সবার এমন করায় উচিত নিজের সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায় যেন অন্যের সাথে না হতে পারে। সত্যি অপর্ণার মতো প্রতিটি মেয়ের হওয়া উচিত। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর লিখেছেন।
আমার লেখা গল্প আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু। অনেকদিন লেখালেখি করা হয়নি। আবারো নতুনভাবে লেখালেখি শুরু করেছি আপু।
আপনার সেই অপর্ণা গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আসলে অপর্না এত কিছুর পরেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে এটা কজন করতে পারে। তবে গল্পটি পড়ে আরো ভালো লাগলো সে একজন আইনজীবী হয়ে বখাটেদের শাস্তি দিয়েছে । এই গল্পে অপর্না একজন সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু অপর্ণা এত কিছুর পরেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর সেই অমানুষগুলোকে শাস্তি দিয়েছে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।