আমার ছেলেবেলা -- 🥰 " ছেলেবেলার রমজান মাসের ফেলে আসা কিছু স্মৃতি "
আমার বাংলা ব্লগে সবাইকে স্বাগতম
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয় "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।আর প্রতিনিয়ত ভালো থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশাকরি আপনারা ও এমনটাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন ভালো থাকার।
আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে।প্রতিদিনের মত আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি আজ ছেলেবেলার রমজান মাসের কিছু স্মৃতি রোমন্থন করতে আপনাদের মাঝে চলে এসেছি।আশাকরি আমার এই স্মৃতি বিজড়িত লেখাগুলো পড়ে আপনারা ও কিছুটা সময় ছেলেবেলার সেই মধুর শৈশবে হারিয়ে যাবেন।
ছেলেবেলার রমজান মাসের ফেলে আসা কিছু স্মৃতিঃ
প্রতিটি মানুষের জীবনে শৈশব হচ্ছে সোনালী অতীত।সেই অতীত কখনও সুখের।কখনও বা কষ্টের।সেই দিন গুলো ছিল খুবই সুন্দর ও আনন্দমুখর।সেই ছেলেবেলার স্মৃতিগুলো আজ মনে হলে খুবই ভালো লাগা কাজ করে।কখনও বা হেসে গড়িয়ে পরি।আমার ছেলেবেলার রমজান মাসের কিছু অনুভূতি আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।আশাকরি আমার মতো আপনাদের ও রমজানের সুন্দর কিছু স্মৃতি আছে।
রমজান মাস মুসলিম উম্মাহর বহু আকাংক্ষিত মাস।এই মাস কে পাওয়া সত্যিই খুব ভাগ্যের ব্যাপার।তবে ছেলেবেলার রমজান মানেই আমার মনে হতো বাহারি সব মুখরোচক খাবার।তবে রোজা রাখার জন্য ছোটবেলা থেকেই খুব ব্যাকুল হতাম।আম্মুকে বলতাম রোজা রাখব।আম্মু সাহারিতে ডেকে তুলতো।কারন আম্মু বলতো রোজা না রাখতে পারলেও সাহারী খাওয়ার মাঝে ও সওয়াব হয়।যদিও ছেলেবেলা ঘুম থেকে উঠতে চাইতাম না।কারন শীতের সময় সাহারী খেতে বড় মানুষরাই উঠতে চায় না।আমি ছোট হয়ে কিভাবে উঠতে চাইবো বলেন তো??কিন্তু এই আমিই আবার সকালে উঠে কান্নাকাটি করতাম না উঠতে পারার জন্য।তখন অবশ্য আম্মু বলতো,বেলা ১২ টা পর্যন্ত দুইদিন রোজা রাখলে একটা রোজা হয়।এটা বাচ্চাদের জন্য আল্লাহ কবুল করে নেন।এই কথা শুনে মনে ভালো লাগা কাজ করতো।আর সাহারীতে উঠতে যেদিন না পারতাম এভাবেই রোজা রাখতাম।
আমার ছেলেবেলা কেটেছে যৌথ পরিবারে।আমরা ভাই-বোনরা সব সেইম বয়সেরই ছিলাম।সাহারিতে আমার একমাত্র খাবার ছিল দুধ ভাত খাওয়া।সেই সময় থেকেই এখনও পর্যন্ত সাগর কলা আমার পছন্দের এক নাম্বারেই আছে।এইতো সেদিন আব্বু এসেছিল।আমার জন্য খুব ভালো কিছু সাগর কলা এনেছিল। আর আব্বুকে খুশী করতে হাতের কাজ রেখে আমি একটি সাগর কলা আব্বুর সামনে বসে খেয়ে দেখাই।আমি সেদিন সেই সময় আব্বুর সামনে বসে কলাটি খাওয়াতে আব্বু অনেক খুশি হয়েছিল।সাহারিতে সবাই যখন সাহারি খেতে উঠে তখন এতো মানুষের সমাগমে মনেই হতো না তখন রাত।যেদিন উঠতে পারতাম সেদিনের ঘরের পরিবেশ অনেক বেশি ভালো লাগতো আমার।
এরপর ইফতারের আগেই আমরা আর কাজিনরা পাশের রুমে পড়তে বসে যেতাম।পাশের রুমে খাটের উপর গোল রাউন্ড করে বসে যেতাম সবাই।অন্যদিকে আম্মু,আমার বড় আম্মা (চাচী) সবকিছু গুছিয়ে ইফতার রেডি করতেন।আমাদের বলা হতো আমাদের জন্য ইফতার রেডি করে দিয়ে যাবে পাশের রুমে।আমরা যাতে কোন হৈ চৈ না করি এমনটা বলা হতো।আমরা সুবোধ বালক-বালিকার মতো পড়াশুনায় মন দিতাম।এক রুমে সবার বসা সম্ভব ছিল না।কারন আমরা এতো জন ছিলাম বাচ্চা এক রুমে বসা সম্ভব হবে নাএজন্য রোজাদার সবাই আমাদের পাশের রুমে আর আমরা এই রুমেই বসতাম।।আর আমরা তো সব হাফ বেলার রোজাদার।সেদিন গুলো কতোই না মধুর ছিল।
আমাদের রুমে বড় প্লেটে করে সব খাবার সাজিয়ে দেয়া হতো।আর শরবত জগে আর গ্লাস দিয়ে দেয়া হতো।আমাদের মধ্যে যে বড় সেই ই সবাইকে পরিবেশন করতো।আমার বড় চাচার বড় মেয়ে সেই আপুই সব কিছু ম্যানেজ করতো।এরপর আসছে মুড়ি বানানো।যখন মুড়ি বোলের মধ্যে দিয়ে যেতো,আমি আর আমার এক কাজিন মুড়ি থেকে ছোলা বেছে বেছে হাতে নিয়ে জোড়-বেজোড় খেলতাম।সেদিন গুলি আর ফিরে আসবে না।সুখকর এই অনুভূতি গুলো আজ ও আমার মনের মধ্যে লালন করে চলেছি।রমজান মাস এলেই সেই স্মৃতিগুলো মনিকোঠায় ভেসে উঠে।একই শহরে আছি অথচ কাজিনদের সাথে দেখা খুব একটা হয়না।সবার সাথে সময়ের সাথে মিলে না।তাইতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদেরকে দেখে থাকি।তারাও আমাকে দেখে থাকেন।একটা ব্যাপার আমি খুব ফিল করি তা হচ্ছে -আমরা আর কাজিনরা মিলে আমরা মেট ৭ জন।অথচ আমরা বসে একসাথে ইফতার করতাম।কারো সাথে কারো কোন ঝগড়া বা খাবার নিয়ে টানাটানি এমনটা কখনও হয়নি।এখনকার বাচ্চারা ২ জনই একসাথে বেশী সময় মিল থেকে কিছু করতে পারে না।আর আমরা ছেলেবেলা থেকেই একতাবদ্ধ হয়েই থেকেছি।পারিবারিক এই শিক্ষা আমরা যেমন শিখেছি তেমন পালন ও করেছি।আর এখনকার সময়ের বাচ্চারা খুব অস্থির।
ভাই-বোনের সেই মধুর সম্পর্ক আর রমজান মাসের স্মৃতি তা মনের ক্যানভাসে বড্ড বেশী ভালো লাগা নিয়ে আজ ও আছে।আশাকরি আমার এই ব্লগটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।আপনাদের ভালো লাগার মাঝে আমার এই স্মৃতি রোমন্থন ব্লগটির সার্থকতা।
পোস্ট বিবরন
শ্রেণী | আমার ছেলেবেলা |
---|---|
ক্যামেরা | SamsungA20 |
পোস্ট তৈরি | @shimulakter |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।আমার ছেলেবেলার অনুভূতি গুলো পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমার পরিচয়
আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি এম এস সি ( জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। ভালোবাসি বই পড়তে, নানা রকমের রান্না করতে,আর সবাইকে নতুন নতুন রান্না করে খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসি।ফটোগ্রাফি করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
রমজান মাসে ফেলে আসা কিছু স্মৃতি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন। রমজান মাস আসলেও আমরা সাহারিতে খেতে উঠতে চাইতাম না ।আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম সাহারিতে আপনার একমাত্র খাবার ছিল দুধ ভাত খাওয়া। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
মতামত প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।
অতীতে ফেলে আসা রমজান মাসের দারুণ স্মৃতি স্মরণ করে আমাদের মাঝে দারুন একটা ব্লগ শেয়ার করেছেন আপু। আপনার আজকের এই পোস্ট পড়ার মধ্য দিয়ে কিন্তু আমারও সেই ফেলে আসা দিনগুলোর স্মৃতি মনে পড়ে গেল। কতইনা মধুর ছিল আমাদের অতীত।
আমি তো জানি সবারই ছেলেবেলার চমৎকার সব গল্প আছে।আমার স্মৃতি গুলো পড়ে সবাই স্মৃতির অতলে ডুব দেবে।
আপু আপনার মত আমিও ভাবতাম দুপুর বারটা পর্যন্ত রোজা রাখলে একটি আর সারা বেলা রাখলে দুটো। আমিও কদিন যাবৎ ভাবছি আমার ছেলেবেলার রোজা নিয়ে আপনাদের সাথে পোস্ট শেয়ার করবো। খুব সুন্দর করে আপনি আপনার পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ সুন্দর এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
মন্তব্য শেয়ার করে পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
আসলে রমজানে শৈশবে বেশ চমৎকার মুহূর্ত কাটিয়েছি আমরা সকলে। এই মুহূর্ত গুলো মনে পড়লে এখনো হৃদয় শিউলির হয়ে উঠে। আপনার ছেলেবেলার রমজান মাসে ফেলে আসা কিছু স্মৃতি পড়ে খুব ভালো লাগলো। আম আর দুধ দিয়ে ভাত খাওয়ার অনুভূতি বেশি দারুন। আপনার চমৎকার কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
ধন্যবাদ ভাইয়া মতামত প্রকাশ করার জন্য। আমি দুধ আর সাগর কলা দিয়ে ভাত খেতে এখনও পছন্দ করি।ছেলেবেলার অভ্যাস বলে কথা।
Twitter link
ছোটবেলায় আমিও রোজা রাখার জন্য বেশ ঝামেলা করতাম বাসায়। সেহেরির সময় শব্দ পেলে হঠাৎ উঠে বসে থাকতাম আর বলতাম সেহেরি খাবো, রোজা রাখবো। রাতে ঠিক খেতাম কিন্তু পরদিন সকাল থেকেই মা বিভিন্ন ফন্দি করে দুপুরের মধ্যে খাবার খাইয়ে দিতো। আরো একটা মজার ব্যাপার ছিলো, যতবার খাওয়া যাবে ততগুলো রোজা হবে 😄 আমার তো একদিনে দুইটা তিনটা রোজা হয়ে যেতো। যাইহোক আপনার পোস্ট পড়ে সেই মধুর স্মৃতিগুলো মনে পরে গেছে।
ছেলেবেলার মধুর স্মৃতি মনে করাতেই ছেলেবেলার ব্লগ শেয়ার করেছি।ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতিটুকু শেয়ার করার জন্য।
রমজান মাসকে নিয়ে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেই ছোটবেলার অনেক মধুর স্মৃতি রয়েছে। যেগুলোর কথা মনে পড়লে এখনো খুব ভালো লাগে। আর ছোটবেলাটা যদি কাটে যৌথ পরিবারে তাহলে তো কোন কথাই নেই। মজার মজার স্মৃতি তো অবশ্যই থাকবে। আর আপনারা যেহেতু সব ভাইবোনেরা সেম বয়সের ছিলেন তাই বেশি মজা করেছিলেন। আপনি রমজান মাসের এই স্মৃতিগুলো অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে আজকে শেয়ার করেছেন। বেশ ভালোই উপভোগ করলাম। আর আমার নিজেরও ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গিয়েছে আপনার স্মৃতিচারণ পোস্টটা পড়ে।
ধন্যবাদ আপু, পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
স্মৃতি বিজড়িত লেখাগুলো পড়লেই তো ছোটবেলার কথাগুলো অনেক বেশি মনে পড়ে যায়। ঠিক তেমনি আপনার লেখাগুলো পড়ে আমার নিজেরই ছোটবেলার কথা খুবই মনে পড়ে গিয়েছে। রমজান মাসটা ছিল অনেক বেশি সুন্দর। বিশেষ করে ছোটবেলায়। সবাই যখন একসাথে বসে মজা করে ইফতার করতাম, সেই মুহূর্তটা ছিল অনেক বেশি অন্যরকম। স্কুলে থাকাকালীন পুরো রমজান মাসের মধ্যে একদিন ইফতারের আয়োজন করা হতো। যে দিনটা আরো বেশি সুন্দর ছিল। অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে আপনার লেখা পুরো পোস্ট।
মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ছোট বেলায় রমজান মাস নিয়ে আমোদের সবার জীবনে অনেক স্বৃতি জড়িয়ে আছে। আসলে সেই সুন্দর মুহূর্ত গুলো মনে পড়লে। আবারও ছোট বেলায় ফিরে যেতে মন চায়। তবে আমিও ছোট বেলায় সেহেরি খেতাম ঠিক কিন্তু রোজা রাখতাম না। যাইহোক আপনার পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
আমি ছেলেবেলা থেকে ই রোজা রাখার জন্য খুব অস্থির থাকতাম।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।