মাংসের স্বাদে এঁচোড় রেসিপি❤️

in আমার বাংলা ব্লগlast month

হ্যালো

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের সব বন্ধুরা।আশা করছি ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার কৃপায় ও আপনাদের আশির্বাদে ভালো আছি।
আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো মজাদার এঁচোড় রেসিপি।
রেসিপিটি এতোটাই সুন্দর হয়েছিলো দেখতে যে হঠাৎ করে দেখে সবাই ভেবেই নিয়েছে মাংস রান্না করেছি।আমার মেয়ে তো পাতে দেখে বলেই ফেলেছে মা এগুলো কি মাংস।দেখতে যেমন মাংসের মতো হয়েছিলো ঘ্রাণ ও বেরিয়েছিলো মাংসের মতো।আর খেতেও মাংসের স্বাদ অনুভব হয়েছে।

InShot_20240428_131904754.jpg

তো চলুন দেখা যাক রেসিপিটি কেমন।
আশা করছি আপনাদেরকে ভালো লাগবে।
এঁচোড় ভীষণ জনপ্রিয়। আমি তো এক বছর অপেক্ষা করে থাকি কবে কাঁঠাল আসবে আর কবে এই এঁচোড় রান্না করে খাবো।কাঁঠালে অনেক পুষ্টিগুণ থাকলেও আমার একদমই পছন্দ নয়।আমি পাকা কাঁঠাল খাই না।আমি তরকারি করে খাই।কাঁচা কাঁঠালের তরকারি ভীষণ সুস্বাদু হয়ে থাকে।আমি গত বছর পোক্ত কাঁঠালের তরকারি খেয়েছিলাম আর এবার একদমই ছোট এঁচোড় রান্না করেছি। মাংসের মতো হয়েছে খেতে।
তো চলুন দেখা যাক রেসিপিটি কেমন।

IMG_20240428_114531.png

এঁচোড়দুইটি
আলুচার পাঁচটি
রসুন বাটাপরিমাণ মতো
পেঁয়াজ কুচিছয়টি
পেঁয়াজ বাটাপরিমাণ মতো
আদা বাটাপরিমাণ মতো
গোটা জিরাপরিমাণ মতো
তেঁজপাতাদুইটি
শুকনা মরিচতিন টি
মরিচের গুড়াপরিমাণ মতো
লবন,স্বাদ মতো
হলুদ,পরিমাণ মতো
গরম মসলাপরিমাণ মতো

PhotoCollage_1714283753649.jpg

IMG_20240428_114540.png

প্রথম ধাপ

প্রথমে আমি একটি গামলায় এক গামলা জল নিয়েছি এবং তাতে সরিষার তেল মিশিয়ে নিয়েছি। এরপর একটা বাটিতে সরিষার তেল নিয়েছি ও হাতে মেখে নিয়েছি। হাতে সরিষার তেল মেখে নিলে কাঠালার আঠা হাতে লাগে না লাগলেও খুব তারাতারি উঠে যায়।এঁচোড় দুটা কেটে জলে দিয়েছি আঠা গুলো বের হওয়ার জন্য।

PhotoCollage_1714286056305.jpg

দ্বিতীয় ধাপ

এখন এঁচোড় দুটো ছিলে নিয়েছি ও ভিতরের যে শক্ত অংশটি আছে তা ফেলে দিয়েছি এবং টুকরো টুকরো করে কেটে নিয়েছি। আগেই এঁচোড় টি কেটে জলে দেয়ার কারনে খুব সহজেই আঠা গুলো বের হয়ে গেছে ও সহজেই কাটা গেছে। আলু গুলো ছিলে টুকরো করে কেটে নিয়েছি।

PhotoCollage_1714286355927.jpg

তৃতীয় ধাপ

এখন চুলায় কড়াই বসিয়েছি ও পরিমান মতো জল দিয়েছি ও তাতে কেটে রাখা এঁচোড় গুলো দিয়েছি, আলু গুলো দিয়েছি ও তাতে লবন, হলুদ দিয়েছি ও সিদ্ধ করে নেয়ার জন্য ঢাকা দিয়েছি ও হাই হিটে জ্বাল করে নিয়েছি।

PhotoCollage_1714286741011.jpg

চতুর্থ ধাপ

খুব ভালো করে এঁচোড় আলু গুলো সিদ্ধ হয়ে গেছে তাই নামিয়ে নিয়েছি একটি ঝাকায় এবং জল ঝড়িয়ে নেয়ার জন্য রেখেছি।

PhotoCollage_1714286925168.jpg

পঞ্চম ধাপ

এখন চুলায় কড়াই বসিয়েছি ও তাতে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে গরম করে নিয়েছি। গরম তেলে গোটা জিরা,তেঁজপাতা,শুকনা মরিচ ফোঁড়ন দিয়েছি। পেঁয়াজ কুচি দিয়েছি ও বাদামী করে ভেজে নিয়েছি।

PhotoCollage_1714287167555.jpg

ষষ্ঠ ধাপ

বাদামী করে ভেঁজে নেয়া পেঁয়াজে বেটে রাখা সব উপকরণ দিয়েছি,লবন হলুদ দিয়েছি ও ভেঁজে নিয়েছি।ততক্ষণ ভেঁজেছি যতোক্ষণ না মসলার উপরে তেল উঠে আসে।

PhotoCollage_1714287407934.jpg

সপ্তম ধাপ

এখন ভাজা মসলায় অল্প পরিমানে জল দিয়েছি ও খুব ভালো করে কষিয়ে নিয়েছি ততক্ষণ কষিয়েছি যতোক্ষণ না তেল মসলায় উপরে চলে আসে।এরপর সিদ্ধ করে রাখা এঁচোড়, আলু গুলো কষানো মসলায় দিয়েছি ও কষিয়ে নিয়েছি।

PhotoCollage_1714287712713.jpg

অষ্টম ধাপ

এখন কষানো এঁচোড়ে পরিমাণ মতো জল দিয়েছি। যেহেতু আগে থেকে সিদ্ধ করা আলু ও এঁচোড় তাই আর বেশি জল দেয়ার দরকার নাই।এখন ঢেকে দিয়েছি ও ফুটিয়ে নিয়েছি এঁচোড়ের তরকারি গুলো।

PhotoCollage_1714287965439.jpg

নবম ধাপ

খুব ভালো মতো তরকারি গুলো ফোঁটানো হয়ে গেছে তাই গরম মসলা দিয়েছি ও নারাচারা করে একটু পর নামিয়ে নিয়েছি পরিবেশের জন্য।

PhotoCollage_1714288141183.jpg

IMG_20240427_190012.jpg

পরিবেশন

InShot_20240428_131722123.jpg

InShot_20240428_131904754.jpg

InShot_20240428_132706377.jpg
এই ছিলো আমার মজাদার রেসিপি মাংসের স্বাদে এঁচোড়। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।আমার রেসিপিটি অনুসরণ করে চাইলে তৈরি করে খেতে পারেন মজাদার রেসিপিটি। কেমন লাগলো আমার রেসিপি টি তা অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আমারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে সে অবদি সবাই ভালো থাকুন, নিরাপদ থাকুন।

টাটা

পোস্টবিবরণ
পোস্ট তৈরি@shapladatta
শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসOppoA95
লোকেশনগাইবান্ধা, বাংলাদেশ

IMG_20230826_182241.jpg

আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



IMG_20240428_114549.jpg

Sort:  
 last month (edited)

মাংসের স্বাদে এঁচোড় রেসিপি এটা বেশ দারুণ লাগতেছে। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর করে উপস্থাপনা করেছেন। প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো সঠিক মাত্রায় তুলে ধরেছেন। আপনার রেসিপিটি দেখে আমি শিখতে পারলাম। দেখতে ও ভীষণ দারুন লাগতেছে। দারুন ছিল আপনার রেসিপিটি।

 last month 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last month 

এঁচোড় আমারও খুব পছন্দের। আর আপনি এত সুন্দর ভাবে রেসিপিটি তৈরি করেছেন যা দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে। এত সুন্দর ভাবে রেসিপিটি আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last month 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর কমেন্ট করে উৎস দেয়ার জন্য।

 last month 

আপনি আজকে মাংসের স্বাদে এঁচোড় রেসিপি তৈরির দারুন একটি পদ্ধতি শেয়ার করেছেন। তবে এর আগে এই রেসিপিটা আমার তৈরি করে খাওয়া হয়নি। রেসিপিটি আমার কাছে ভীষণ ইউনিক মনে হয়েছে। খেতে নিশ্চয় অনেক সুস্বাদু হয়েছিলো। ধন্যবাদ এতো মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 last month 

কখনো খাননি তাতে কি একদিন বানিয়ে খেয়ে দেখবেন ভীষণ ভালো লাগবে।

 last month 

আহা!! কি লোভনীয় রেসিপি শেয়ার করেছেন দিদি, আমার তো মনে হচ্ছে গরম গরম ভাতের সাথে আপনার তৈরি এঁচোড়ের রেসিপি দিয়ে পুরো এক প্লেট ভাত সাবার করে ফেলি। খুব খেতে ইচ্ছে করলো আপনার লোভনীয় রেসিপিটি। আর আপনি যেভাবে রিসিপির ঘ্রাণের কথা বললেন, আমি তো আমার বাসা থেকে সেই সুঘ্রান পেয়ে যাচ্ছি হাহাহা। যাইহোক দিদি ভাই, খুবই মজার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 last month 

হ্যাঁ বাসা থেকে সুঘ্রাণ পাওয়ারি কথা। সত্যি গরম ভাতের সাথে ভীষণ ভালো লাগে এই রেসিপিটি।

 last month 

মাংসের স্বাদে দারুন একটি এঁচোড়ের রেসিপি তৈরি করেছেন আপু। প্রথমে দেখে সত্যি বুঝতে পারিনি এটা মাংস নাকি এঁচোড়।কাঁচা কাঁঠাল এভাবে রান্না করে খেতে ভীষণ মজা লাগে। আমিও এভাবে রান্না করে খেতে পছন্দ করি। আপনার রেসিপিটির কালার টা বেশ দুর্দান্ত লাগছে। খুবই আকর্ষণীয় একটি রেসিপি তৈরি করেছেন আপু। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last month 

সত্যি আপু রেসিপিটি দেখলে মনে হচ্ছে মাংস না বলা অবদি বুঝতে পারছিলো না বাড়ির সদস্যরাই।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last month 

এঁচোড় রান্না কখনো খাওয়া হয়নি। তবে সব সময় শুনি এটা খেতে নাকি অনেক সুস্বাদু হয়। আপনি মাংসের মত করেই এঁচোড় রান্না করেছেন। রেসিপিটা বেশ ইউনিক লেগেছে আমার কাছে। দেখে মনে হচ্ছে যেন মাংস রান্না করেছেন। খেতে নিশ্চয়ই অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপু লোভনীয় একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 last month 

এঁচোড় এভাবে রান্না করে খেতে ভীষণ সুস্বাদু লাগে আপু।খেয়ে দেখবেন একদিন রান্না করে ভালো লাগবে অনেক।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last month 

বাহ আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন মাংসের স্বাদে এঁচোড় রেসিপি তৈরি করে। আসলে এর আগে কখনো এমন ভাবে রেসিপি তৈরি করে খাওয়া হয়নি। আসলে এঁচোড়ের সাথে মাংস রান্না করে খেলে কেমন লাগবে তা কখনো জানা নেই। তবে আপনার তৈরি রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ সুস্বাদু হয়েছিল আপু। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last month 

খেয়ে দেখবেন কখনো বানিয়ে ভালো লাগবে।ধন্যবাদ

 last month 

মূলত কাঁচা কাঠাল কেই এঁচোড় বলা হয়। সত্যি বলতে এঁচোড় আমি খুব একটা খাইনি। তবে শুনেছি ঠিক মতো রান্না করলে নাকী এটা মাংসের মতোই সুস্বাদু লাগে। আপনার পোস্টের মধ‍্যেও সেরকমই পড়লাম। এঁচোড় এর রেসিপি টা দারুণ তৈরি করেছেন আপু। দেখেই জিভে পানি চলে আসছে। রেসিপি টার প্রতিটা ধাপ সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করে নিয়েছেন। সবমিলিয়ে দারুণ ছিল।

 last month 

হ্যাঁ ভাইয়া কাঁচাকাঠালকেই এঁচোড় বলা হয় তবে আমি একদমই ছোট কচি কাঠাল ব্যাবহার করেছি রেসিপিতে। সত্যি মাংসের মতোই স্বাদ এই রেসিপির।

 last month 

সত্যি কথা বলতে দিদি, এঁচোড় ভালো করে রান্না করতে পারলে অনেকটা মাংসের মতই খেতে লাগে। তাছাড়া, আপনার মত আমারও কিন্তু পাকা কাঁঠাল খুব বেশি একটা ভালো লাগে না। যাইহোক, আপনার এঁচোড়ের রেসিপিটা কিন্তু আমার কাছে অনেক বেশি সুন্দর লাগলো দিদি। কিন্তু একটা বিষয় দেখে একটু অবাক হলাম যে, আপনি এঁচোড়ে আলু ব্যবহার করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ নাকি এঁচোড়ে আলু খায় না!🤔 আমাদের বাড়ি বেশ কিছুদিন আগে বাংলাদেশ থেকে একজন বেড়াতে এসেছিল, উনি তো আমাদের রান্নার সময় এঁচোড়ে আলু দেওয়া দেখে অনেক বেশি অবাক হয়েছিল।

 last month 

ঠিক বলেছেন এঁচোর ভালো করে রান্না করলে মাংসের মতোই লাগে খেতে। আমরা তো আলু ব্যাবহার করি দাদা। আলু তরকারির স্বাদ বাড়িয়ে দেয় বলে আমি মনে করি।

 last month 

আলু তরকারিতে দিলে যে তরকারির স্বাদ বেড়ে যায়, এটা আমিও জানি দিদি। আমরা কলকাতার লোকজন তো এইজন্য সবকিছুতেই আলু খেয়ে থাকি। 🤭

 last month 

দিদি আপনি দেখছি পাকা কাঁঠাল পছন্দ করেন না। তবে আমি কিন্তু কাঁচা এবং পাকা উভয় অবস্থাতেই কাঁঠাল পছন্দ করি। আপনার বাড়ির সদস্যদের মত আমিও এটিকে প্রথমে দেখে মাংসই ভেবেছিলাম। এভাবে এঁচোড় রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। দেখেই বোঝা যাচ্ছে,অত্যন্ত সুস্বাদু হয়েছে খেতে রেসিপিটি। সবমিলিয়ে দারুন একটি উপস্থাপনা ছিল আপনার।

 last month 

আপনি কাঁচা,পাঁকা উভয় কঁঠালেই পছন্দ করেন জেনে ভালো লাগলো।

 last month 

হ্যাঁ আপু, কাঁচা,পাকা সব অবস্থাতে কাঁঠাল অনেক পছন্দ করি। তবে কাঁচা অবস্থায় চিংড়ি মাছ দিয়ে এঁচোড় রান্না করে খেতে আরও বেশি ভালোবাসি ।

Coin Marketplace

STEEM 0.25
TRX 0.12
JST 0.030
BTC 69611.55
ETH 3706.33
USDT 1.00
SBD 3.30