রাতের নির্জনতায় গঙ্গা ভ্রমণ ||~~

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম/আদাব

রাতের নির্জনতায় গঙ্গা ভ্রমণ:


1000008982.jpg



সকল কে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভালোই আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।

রাতের নির্জনতায় গঙ্গা ভ্রমণ:


1000008997.jpg

রাতের গঙ্গা ভ্রমণ এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা । রাতের শান্ত পরিবেশে গঙ্গার উপর ভ্রমণ করা যেন এক অন্য জগতের স্বাদ এনে দেয়। রাতে গঙ্গা ভ্রমণের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য, গঙ্গার জলে চাঁদের আলো এবং আশেপাশের লাইটগুলির প্রতিফলন এক জাদুকরী দৃশ্য তৈরি করে। নদীর ধারে শহরের আলোকিত দৃশ্য এবং নদীতে ছোট ছোট নৌকা চলাচল এক অনন্য পরিবেশ তৈরি করে।

রাতের গঙ্গা ভ্রমণে দিনের ব্যস্ততা থেকে দূরে সরে গিয়ে প্রকৃতির নিস্তব্ধতা উপভোগ করা যায় । গঙ্গার ধীরে ধীরে বয়ে যাওয়া স্রোতের শব্দ, হালকা বাতাস, এবং প্রকৃতির ঘ্রাণ এক ধরনের প্রশান্তি এনে দেয়।

গঙ্গার ধারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। রাতের ভ্রমণে আপনি এই সব স্থানগুলির লাইটিং এবং পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন যা দিনের আলোতে দেখা যায় না। বিশেষ করে, কাশীর গঙ্গার ঘাট এবং মন্দিরগুলির আলোকসজ্জা রাতে এক অন্যরকম সৌন্দর্য এনে দেয়।

রাতে গঙ্গার ধারে স্থানীয় মানুষের জীবনের নানা দিক দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয় বাজার, খাবারের দোকান, এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ দেখে রাত কাটানো যায়।গঙ্গার উপর বিভিন্ন ব্রিজের আলোকসজ্জা রাতের আকাশকে এক নতুন রূপে উপস্থাপন করে। প্রিন্সেপ ঘাট এবং হাওড়া ব্রিজের লাইটিং একটি অসাধারণ দৃশ্য তৈরি করে।

গঙ্গার তীরে একান্তে কিছু সময় কাটানো, প্রিয়জনের সাথে কথোপকথন, এবং রাতে নদীর ধারে হাঁটা এক অনন্য অভিজ্ঞতা।রাতের গঙ্গা ভ্রমণ ফটোগ্রাফারদের জন্য এক দারুণ সুযোগ। রাতের আলো এবং নদীর প্রতিফলন একটি মোহময় দৃশ্য তৈরি করে যা ফ্রেমবন্দি করতে দারুণ লাগে।



রাতের নির্জনতায় গঙ্গা ভ্রমণ:


1000008975.jpg


রাতের গঙ্গা ভ্রমণ যেন এক অসীম মুগ্ধতার সমুদ্র। রাতের নিস্তব্ধতা, জলের মৃদু গুঞ্জন এবং দূরের আলো-ছায়ার খেলা এই অভিজ্ঞতাকে করে তোলে অপার্থিব। সেই অভিজ্ঞতার স্মৃতি রোমন্থন করতে গঙ্গার তীরে এক রাত কাটানোর কথা আজ লিখতে বসেছি

শুরুটা: দিনের ব্যস্ততা কাটিয়ে যখন রাতের অন্ধকার গঙ্গার ওপর বিস্তার লাভ করে, তখন চারদিকে যেন এক নীরবতার মোড়ক ছড়িয়ে পড়ে। গঙ্গার তীরে এসে প্রথমে মনে হয়েছিল, এ এক স্বর্গীয় শান্তির আভাস। শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে, এ যেন প্রকৃতির একান্ত নিবিড় কোলে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ।

1000008989.jpg

গঙ্গার তীরে:গঙ্গার শান্ত জলে চাঁদের আলো আর আশেপাশের বিভিন্ন আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। নদীর তীর থেকে তাকালে দেখেছি, জলের ওপর চাঁদের প্রতিবিম্ব কেমন অপার্থিব এক মায়া সৃষ্টি করেছে। নদীর বুকে ছলকে ওঠা তরঙ্গ আর সেই তরঙ্গে চাঁদের আলো যেন এক মায়াবী দৃশ্য সৃষ্টি করেছিল। মনে হচ্ছিল, এই দৃশ্যের মাঝে হারিয়ে যাওয়াই শ্রেয়।

নৌকায় ভ্রমণ:রাতের গঙ্গার অভিজ্ঞতা আরও রোমাঞ্চকর হয়ে ওঠে যখন নৌকায় চড়ে নদীর মাঝখানে পৌঁছাই। জলের মৃদু গুঞ্জন, বাতাসের শীতল স্পর্শ আর নৌকার মৃদু দুলুনি সব মিলিয়ে মনে হচ্ছিল আমি যেন সময়ের স্রোতে ভেসে চলেছি। নৌকা থেকে দূরের আলোকমালা, নদীর ধারের গাছগাছালির ছায়া আর আকাশের তারাগুলো এক অপার্থিব দৃশ্য সৃষ্টি করেছিল।

নীরবতা এবং নির্জনতা:রাতের গঙ্গার আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে এর নির্জনতার মাঝে। নৌকা থেমে গেলে চারদিকে শুধুই নীরবতা। সেই নীরবতার মাঝে নিজের মনের ভেতরে ডুব দেওয়া যায়। মনে হয়েছিল, এই নির্জনতা যেন আমার সমস্ত ক্লান্তি দূর করে দিচ্ছে। এক অপার্থিব শান্তি অনুভব করছিলাম, যা দিনেদুপুরে কখনো পাওয়া সম্ভব নয়।

1000008974.jpg

শেষের কথা:রাতের নির্জনতায় গঙ্গা ভ্রমণ এক অনন্য অভিজ্ঞতা, যা শব্দ দিয়ে সম্পূর্ণভাবে বোঝানো সম্ভব নয়। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য অবশ্যই একবার এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়া উচিত। শহরের কোলাহল থেকে দূরে, গঙ্গার তীরে এই রাতের ভ্রমণ আমাদের মনে শান্তি এনে দেয়, যা আমাদের জীবনের প্রতিদিনের উদ্বেগ ও ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়।

রাতের গঙ্গা ভ্রমণ কেবলমাত্র এক রাতের অভিজ্ঞতা নয়, বরং এটি একটি স্মৃতি যা আজীবন হৃদয়ে অমলিন হয়ে থাকবে। নির্জনতা, নীরবতা আর প্রকৃতির একান্ত ছোঁয়া আমাদের মনকে এক নতুন দিগন্তে পৌঁছে দেয়, যেখানে আমরা নিজেদের আরও ভালোভাবে চিনতে পারি। তাই রাতের নির্জনতায় গঙ্গা ভ্রমণ একবার হলেও উপভোগ করা উচিত।

1000016635.jpg


photo_2023-07-07_17-27-00.jpg

আমি ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা।আমার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করি। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই- সাথীর শত কবিতা,অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি' অবরিত নীল সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। আমি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনয়ন পেয়েছি। এছাড়াও ,ওপার বাংলা বঙ্গবন্ধু রিসার্চ এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন ভারত বাংলাদেশ। কবিগুরু স্মারক সম্মান ২০২৪ অর্জন করেছি।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



বিষয়: ভ্রমণ
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

রাতে নির্জনতাই গঙ্গা ভ্রমণ করেছেন দেখে আমার অনেক ভালো লাগলো। সত্যি কথা বলতে রাতে ঘোরাঘুরি আমার অনেক অনেক ভালো লাগে। রাতে গঙ্গার পাড়ে গঙ্গার ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে অসাধারণ লাগছে। আসলে এসব স্মৃতিগুলো আজীবন হৃদয়ে অমলিন হয়ে থাকে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া। এসব স্মৃতি হৃদয়ের পাতায় অমলিন হয়ে রবে আজীবন। তবে আমি নিজেও অনেক ভ্রমণ পিয়াসু। ভ্রমণে খুব চমৎকার চমৎকার অভিজ্ঞতা হয়। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

অসাধারণ লিখেছো। সত্যই রাতের বেলা গঙ্গা ভ্রমণের এক আলাদা মাধুর্য আছে। কিন্তু তুমি এটি কোন জায়গার গঙ্গা ভ্রমণের কথা লিখেছ? বাংলাদেশে তো গঙ্গা নাই। তুমি কি ভারতে এসে গঙ্গা ভ্রমণের বৃত্তান্ত লিখেছো? যদিও পদ্মা গঙ্গারই একটি শাখা, কিন্তু তা তো গঙ্গা বলে অভিহিত হয় না। তবে ছবিগুলি অসাধারণ। সত্যিই গঙ্গার সৌন্দর্য ভাষায় ব্যাখ্যা করবার মতো নয়।

 2 months ago 

ওই যে তোমাদের ওখানে যখন গিয়েছিলাম তখন আমরা গঙ্গার ধারেও গিয়েছিলাম। চুঁচুড়া থেকে গঙ্গা দেখতে নিয়ে গিয়েছিল আমাদের এক দিদি এবং তার মেয়ে। আর সেই অনুভূতি থেকে লেখা। এটা তোমাদের গঙ্গা। ছবিগুলো আমার মুঠোফোনে তোলা।

ভালো থেকো দাদা। আমি এখনো খুব স্বাভাবিক হতে পারছি না। আমাদের দেশের অবস্থার জন্য। চোখে মুখে শুধু আতংক নিয়ে আছি বাসায়। কারো সাথে কথাও বলতে ইচ্ছে করে না। শুধু রক্ত দেখি আর বাচ্চাদের চিৎকারে যেন কারন ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে উপলব্ধি করছি, হয়তো আমি মানসিক রোগী হতে যাচ্ছি। কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না। আমি যেন এক অন্য আমি তে পরিণত হচ্ছি। দোয়া কর আমার জন্য। আর নিলাম দিদিকেও বলে দিও। অনেক অনেক শুভকামনা তোমাদের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 57912.63
ETH 2348.79
USDT 1.00
SBD 2.37