সিজনাল দেশীয় বিভিন্ন ফলের ফটোগ্রাফি।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন? সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন,আশাকরি। সকলে ভালো থাকেন এই প্রত্যাশা করি। আজ ১৯ই চৈত্র, বসন্তকাল, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ০২ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রীস্টাব্দ।
প্রকৃতি তার রুপ বদলাচ্ছে। গত দু-তিন দিন ধরে গরম পড়ছে। দিন কয়েক দেরি হলেও চৈত্র মাস তার আসল রুপ ধারণ করছে। এই গরমে যাতে শরীরের পানিশূন্যতা না হয়, বিশেষ করে রোজাদারদের সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। রোজাও প্রায় শেষ হতে চললো, ঈদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।ঈদের কেনা কাটা নিয়ে অনেকেই ব্যস্ত। গতকাল মার্কেটে গিয়েছিলাম।প্রচন্ড ভীর। দেরী না করে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে চলে এসেছি। তখন বিকেল বেলা, চলে আসার সময় লক্ষ্য করলাম,দেশীয় ফলমূলের সমাহার। ফুটপাতে ও ভ্যানে ভ্রাম্যমান সব দোকানে দেশী ফলমূল বিক্রি হচ্ছে। দেরি না করে মোবাইলে ক্যামেরাবন্ধী করলাম।
প্রিয় বন্ধুরা, আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে আজ গতকালের সেই ধারণ করা দেশীয় ফলের ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আপনারা জানেন সিজনাল দেশীয় ফলমূল শরীরের জন্য বেশ উপকারি।শরীর সুস্থ্য রাখতে, রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে প্রচুর দেশীয় ফলমূল খাওয়া দরকার। প্রকৃতিগত ভাবেই , সময়ের প্রয়োজনে মানুষের শরীরের উপযোগি সিজনাল ফলমূল উৎপাদন হয়। যেমন এখন গরমকাল,তরমুজ,বাঙ্গি, বেল ও আনারসে ভরভুর মার্কেট। যা এই সময়ে শরীরের জন্য খুবেই কার্যকর। প্রকৃতির কি অসীম দয়া। আজকের ফটোগ্রাফি গুলো ধারণ করেছি মিরপুরের শেওরাপাড়া এলাকা থেকে। আশাকরি, সিজনাল দেশীয় বিভিন্ন ফলের ফটোগ্রাফি গুলো ভালো লাগবে আপনাদের।
প্রথম ফটোগ্রাফি
সুমিষ্ট ফল আনারস।। ফ্রুটস কিনতে গিয়ে করা হয় এই ফটোগ্রাফিটি। আমার খুব পছন্দ আনারস। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন যা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকর।হজম জনিত যে কোন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন আনারস খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই ফল।
দ্বিতীয় ফটোগ্রাফি
বাঙ্গী। গ্রীষ্মকালীন ফল।দেশের সর্বত্র পাওয়া যাচ্ছে এখন। বেশ রসালো ফল এটি, দেহের পানি শূন্যতা পূরণে বেশ কার্যকর।বাঙ্গিতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি যা দেহের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে রয়েছে ফলিক এসিড যা রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। এবং প্রচুর পরিমাণে আশ রয়েছে, যা কোষ্টকাঠিন্য দূর করে। বাঙ্গি অনেকেই খেতে পছন্দ করে না। কিন্তু সে ক্ষেত্রে শরবত করে খেতে পারেন। এই রোজায় এক গ্লাস বাঙ্গির শরবত শরীর মন দু'টোই ঠান্ডা করে। সেই সাথে সারাদিনের রোজার পানি শূণ্যতা পূরনেও যথেষ্ট কার্যকর। তাই এই গরমে আমাদের প্রায় প্রতিদিন বাঙ্গি খাওয়া দরকার।
তৃতীয় ফটোগ্রাফি
বেল।গ্রীষ্মকালীন ফল। বাংলাদেশের সুর্বত্র বেল গাছ দেখতে পাওয়া যায়। তবে পাহাড়ি ও টিলা এলাকায় বেল গাছ ভালো জন্মায়। বেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। পেটের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে বেল বেশ কার্যকর। সাধারনত বেল শরবত করে খাওয়া হয়। এই গরমে এক গ্লাস বেলের শরবত সহজেই শরীর ঠান্ডা করে দেয়।
চতুর্থ ফটোগ্রাফি
তরমুজ। রোজার শুরুতেই প্রচুর দাম ছিল তরমুজের। তা নিয়ে বেশ হইচই হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বয়কট তরমুজ ক্যাম্পেইন পর্যন্ত হয়েছে। দাম এখন সহনীয়। কেজির পরিবর্তে পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।গরমকালীন এই ফল তরমুজ,দেশের সব জায়গায় কমবেশি পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি তরমুজ উৎপাদন হয় বরিশাল অঞ্চলে। তরমুজে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও লাইকোপেন যা ক্যানাসারের প্রবনতা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় শরীরের পানির শূণ্যতা রোধেও বড় ভূমিকা পালন করে।
পঞ্চম ফটোগ্রাফি
গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে পেয়ারা অন্যতম।প্রচুর পুষ্টিগুন সম্পন্ন পেয়ারায় রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট,ভিটামিন সি,ভিটামিন এ,ম্যাগনেসিয়াম যা শরীরের জন্য বেশ উপকারী। নানা ধরণের শারীরিক সমস্যা খুব সহজেই দূর করে পেয়ারা। প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় ১টি করে পেয়ারা রাখা দরকার। ডায়াবেটিক রোগীদের শরীরের ইন্সুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পেয়ার বেশ কার্যকর। পেয়ারার বিভিন্ন গুনাগুনের জন্য পেয়ারাকে সুপার ফ্রুট বলা হয়।
ষষ্ঠ ফটোগ্রাফি
স্ট্রবেরি। ফলটি দেশী না হলেও এখন প্রচুর চাষ হচ্ছে বাংলাদেশে। অত্যন্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ একটি ফল। আছে ভিটামিন এ, সি, ই, ফলিক এসিড, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম, পলিফেনল, এলাজিক এসিড, ফেরালিক এসিড, কুমারিক এসিড, কুয়েরসিটিন, জ্যান্থোমাইসিন ও ফাইটোস্টেরল।যা শরীরের বিভিন্ন রোগ সারাতে সাহায্য করে। টক মিষ্টি স্বাদের এই ফল আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ সারাতে বেশ কার্যকর। তাই স্ট্রবেরির মৌসুমে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় এই ফল রাখলে শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা পালন করবে।
আশাকরি,সিজনাল দেশীয় বিভিন্ন ফলের ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজ আমার ফটোগ্রাফি ব্লগ এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে । সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন।
পোস্ট বিবরণ
পোস্ট | ফটোগ্রাফি |
---|---|
পোস্ট তৈরি | selina 75 |
ডিভাইস | Redmi Note A5 |
তারিখ | ০২ এপ্রিল,২০২৪ইং |
লোকেশন | ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
ঠিক বলেছেন আপু গত দুইদিন ধরে বুঝা যাচ্ছে চৈএ মাস যে চলছে।এই গরমে আসলেই পানিশূন্যতা বেড়ে যাচ্ছে। যাই হোক প্রতিটি ফুলের ফটোগ্রাফি বেশ ভালো ছিলো।মৌসুমি ফল বলে কথা।তরমুজ পানিশূন্যতা দূর করবে।ধন্যবাদ
হঠাৎ করেই যেন গরমটা চলে এলো। জি আপু তরমুজ পানি শূন্যতা রোধে বেশ কার্যকর। ধন্যবাদ আপু।
https://twitter.com/selina_akh/status/1775077698454663512
আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য দেশীয় ফল খাওয়ার খুবই দরকার। এখন রমজান মাস চলছে সেই সঙ্গে গরমটা অতিরিক্ত পড়েছে। এখন আমাদেরকে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা উচিত। আজকের পোস্টে আপনি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছেন। দেশীয় ফলের প্রতিটি ফটোগ্রাফির পরিষ্কার এবং স্বচ্ছ ধারনা দিয়েছেন এবং খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
যে সময় যে ফল পাওয়া যায় সেই সময় সেই ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ওয়াও সুন্দর তো! দেশীয় ফলের ফটোগ্রাফি গুলো দারুন ছিল বিশেষ করে আনারস এর ফটোগ্রাফিটা আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে। এই গরমে আনারস খেতে বেশ মজা লাগে। যাইহোক বেশ সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন আপনি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি আবার সব ফল খেতে পছন্দ করি।তবে আনারস আমার বেশ পছন্দ। ধন্যবাদ ভাইয়া।
খুব সুন্দর সুন্দর ফলের ফটোগ্রাফি করেছেন, সিজনাল ফুল গুলো দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। বিশেষ করে স্ট্রবেরি ফলের ফটোগ্রাফি আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে।
আমার করা ফটোগ্রাফিগুলো আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আজকে অসম্ভব সুন্দর কিছু ফলের ফটোগ্রাফি করেছেন। প্রথমটি আনারসের ফটোগ্রাফি আমার ভীষণ ভালো লাগলো। অনেকদিন পর দেখলাম। তৃতীয় ফটোগ্রাফিটা অনেক সুন্দর ছিল। প্রতিটি ফটোগ্রাফি ও সুন্দর বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তরমুজের যে দাম হাত দেওয়া অনেক কষ্টকর 😅
তরমুজ এর দাম এখন কিছুটা কমেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাজারে অনেক সিজনাল ফল রয়েছে মআর আপনি এই সিজনাল ফলের ফটোগ্রাফি করলেন। দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। তরমুজের ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে। প্রত্যেকটা সিজনাল ফল আমাদের খাওয়া উচিত। এই ফলে অনেক পুষ্টি গুণে ভরপুর থাকে।
বাজারে অনেক সিজনাল ফল রয়েছে মআর আপনি এই সিজনাল ফলের ফটোগ্রাফি করলেন। দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। তরমুজের ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে। প্রত্যেকটা সিজনাল ফল আমাদের খাওয়া উচিত। এই ফলে অনেক পুষ্টি গুণে ভরপুর থাকে।
ঠিক তাই ভাইয়া সিজনাল ফল আমাদের প্রত্যেকের খাওয়া উচিৎ । ধন্যবাদ ভাইয়া।