জেনারেল রাইটিংঃ বায়ু দূষণ।

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

শুভেচ্ছা সবাইকে।

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,কেমন আছেন? আশাকরি সবাই ভালো আছেন? আমিও ভালো আছি । প্রত্যাশা করি সব সময় ভালো থাকেন। আজ ২৫শে পৌষ, শীতকাল,১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ০৯ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রীস্টাব্দ।

a1.jpg

source

শীতকাল চলছে। ঢাকা শহরেও গত কয়েকদিন ধরে অনুভূত হচ্ছে শীত। দেশের সব জায়গায় কমবেশি শীত পড়েছে। বরাবরের মত দেশের উত্তরের জেলা গুলোতে শীত বেশী পড়েছে। শীতে নিম্ন আয়ের মানুষদের বেশী দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আশাকরি দেশের মানুষ এইসব মানুষের পাশে দাঁড়াবে। আমাদের সবার উচিত সাধ্যমত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। শীতকাল বরাবরেই কাঁচা বাজার ঠান্ডা থাকে। কিন্তু এবার কাঁচা বাজারের উত্তাপ কোন ভাবেই কমছে না! নিত্যপণ্যের দাম অনেকের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে দিন দিন। নতুন সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়টি দেখবেন বলে আশাকরি। বন্ধুরা, আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিং এ আজ একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো। শিরোনাম দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন, আমার আজকের আলোচ্য বিষয়। হ্যা বন্ধুরা, ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ে আমার আজকের লেখা। আশাকরি ভাল লাগবে আপনাদের।

নির্মল বায়ু - সুস্বাস্থ্যের নিয়ামক। সুস্বাস্থ্যের জন্য নির্মল বায়ুর বিকল্প নেই। দিন যত যাচ্ছে বায়ু দূষণের পরিমান তত বাড়ছে।বায়ু দূষণের ফলে যে সমস্ত রোগ বালাই হয়, সেগুলো বাড়ছে দিন দিন। বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট , চোখের সমস্যা, ক্যান্সার, মানষিক সমস্যা,এলার্জি, হৃদরোগের মত জটিল রোগ। বায়ু দূষণ আর রোগের মাত্রা সমান ভাবে বাড়ছে দিন দিন।হাসপাতাল গুলোর দিকে তাকালে বা আমাদের চারপাশের মানুষদের খোঁজ খবর নিলেই চিত্রটি পরিস্কার বোঝা যায়। সঠিক চিকিৎসা ও আর্থিক সঙ্গতির কারণে অকালে ঝরে পড়ছে অনেক প্রাণ। এখন প্রায়ই খবরের শিরোনাম হচ্ছে ঢাকার আজকের বায়ু দূষণ বিশ্বে এক ,দুই বা তৃতীয় স্থানে। শুধু ঢাকা নয় সারা দেশেই এখন বায়ু দূষণের স্বর্গভূমি আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। বায়ু দূষণ বেশী হয় শীতকালে। বর্ষাকালে কম হয়ে থাকে।

কেন বায়ূ দূষণ হচ্ছে? আমরা কমবেশী সবাই জানি। রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ্য মদদে আমরা মানুষেরাই বায়ূ দূষণ করছি। পবিবেশের প্রতি ন্যুনতম মমতা বোধ বা দায়িত্ববোধের অভাবেই আজকের বায়ূ দূষণ। আমাদের আরাম আয়েশের জন্য, মেগা মেগা অপরিকল্পিত প্রকল্পের জন্য বায়ূ দূষণ সবচেয়ে বেশী হচ্ছে। নির্মাণ কাজ, ইটভাটা,কলকারখানা, যান বাহনের ধোঁয়া, বিভিন্ন শব্দ, জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, গাছ-পালা, বন জঙ্গল, খাল বিলের বিনাশ প্রভৃতি। আর এ সবেই ব্যবহার হচ্ছে মানুষের আরাম আয়েশের জন্য। পরিবেশ নিয়ে, বায়ু দূষণ নিয়ে আইন আছে। কিন্তু আইনের বাস্তবায়ণ না থাকায় মানুষ তাদের ইচ্ছে মত বায়ূ দূষণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। আবার ক্ষতি কিন্তু মানুষেরই হচ্ছে।

নির্মল বায়ুর জন্য কোথায় যাবে মানুষ! কিভাবে বাঁচবে বায়ূ দূষণের হাত থেকে। এর প্রতিকারের উপায় কি? মানুষেই একমাত্র পারে এর প্রতিকার করতে। পরিবেশের প্রতি ভালোবাসা ও সচেতনতাই একমাত্র সমাধান। ঢাকায় যত গাছ থাকার কথা তার চার ভাগের একভাগ গাছও নেই। যা নির্মল করবে বায়ুকে। বরং দিন দিন বিনাশ চলছে গাছের। বিনাশ না করে নতুন নতুন গাছ লাগাতে হবে। পরিকল্পিত ভাবে গাড়ী,কলকারখান,ইটভাটাসহ বিভিন্ন কাজে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসতে হবে। নতুন প্রকল্পে প্রচুর গাছ ও জলা ধারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। বিভিন্ন নির্মাণ কাজের শব্দ ও ধুলাবালু নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এছাড়া এসির ব্যবহার কমিয়ে দিতে হবে। তাহলেই আস্তে আস্তে বায়ূ দূষণ কমিয়ে আসবে। ঢাকাসহ সারাদেশ নির্মল বায়ুতে ভরে যাবে।

বর্তমান ঢাকা বসবাসের জন্য স্বাস্থ্যকর জায়গা নয়। এই ঢাকাকে স্বাস্থ্যকর করে গড়ে তুলতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরী। সরকার, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্টান ও নাগরিকের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ,সচেতনতা ও আইনের কঠোর প্রয়োগ খুব জরুরি। তাহলেই বাঁচবে মানুষ, বাঁচবে ঢাকা, সারাদেশ।

আসুন বায়ূ দূষণ রোধে আমরা আমাদের জায়গা থেকে আওয়াজ তুলি। নিজে সচেতন হই অপরকে সচেতন করি।

পোস্ট বিবরণ

পোস্টজেনারেল রাইটিং
পোস্ট তৈরিselina75
তারিখ৯ জানুয়ারী, ২০২৪

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পাড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ

Sort:  

সত্যি বলতে আপু ঢাকা গেলে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে একদম। ঢাকা কখনোই কোন সুস্থ মানুষের নগরী হতে পারেনা। আমার কাছে মনে হয় আমাদের শরীরে যে সমস্ত রোগ বাসা বেধেছে এর অর্ধেকই নির্মূল করা সম্ভব একটা সুস্থ বাঁচার মত পরিবেশ পেলে। বায়ু দূষণের মাত্রা এখন এতটাই তীব্র যে খালি চোখেও বোধ হয় এই দূষণটা দেখা যায়। তবে আমরা মানুষরাই এই সমস্যার পেছনে দায়ী। আবার আমরাই পারি এই সমস্যা থেকে মুক্তির পথে এগিয়ে যেতে। শুধু প্রয়োজন আমাদের সৎ ইচ্ছার এবং সঠিক দিকনির্দেশনার।

 7 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া আমরা বয়ু দুষনের জন্য দায়ী।আবার আমরাই পারি এই সমস্যার সমাধান করতে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 7 months ago 

আজ সারা দেশে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বায়ু দূষণ হয়ে চলেছে কিন্তু কারণে অকারণে বায়ু দূষণ গুলো আমরা কিছুতেই যেন বন্ধ করতে পারছিনা। আর এর প্রভাব কিন্তু আমাদের জনসমাজের উপরেই হুমকি সৃষ্টি করছে যা আমরা বুঝতে পারছি না। সুন্দর একটি বিষয় কিন্তু আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এই বিষয়ে আমাদের সকলের কিন্তু সজাগ হওয়া একান্ত প্রয়োজন। এ জাতীয় পোস্টগুলো জন সচেতন মূলক পোস্ট, বেশ ভালো লাগলো।

 7 months ago 

এই দুষণ রোধে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 7 months ago 

আমি গতকাল ই এক বন্ধুর সাথে গল্প করছিলাম এজ নিয়ে আপু। ডিসেম্বর গেলো, জানুয়ারি চলে এলো অথচ ঢাকায় তেমন শীত নেই! তাহলেই বুঝেন এবার গরম কালে আরো কী অবস্থা হবে! আর যে পরিমাণে গাছ কাটা হয়!! সচেতন কেউ কেউ বারানদায় বা বিল্ডিংয়ে গাছ লাগালেও সেটা তো রাস্তার পাশের বড় গাছগুলোর তুলনায় কিছুই নয়! আমাদের নিনেদেরজ অনেক পরিমানে এমন গাছ লাগানো প্রয়োজন যেগুলো বারুর ক্ষতিকারক উপাদান টেনে নেয়। যেমন-স্নেক প্যান্ট, জিজি প্ল্যানট এগুলো..

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

ঠিক তাই আমাদের প্রচুর পরিমানে গাছ লাগানো দরকার। ধন্যবাদ আপু।

 7 months ago 

সুস্বাস্থ্যের জন্য নির্মল বায়ুর কোন বিকল্প নেই ,এটা একদম সত্যি কথা আপু। তবে এই নির্মল বায়ু এখন আর পাওয়া যায় না শহরে। চারিদিকে শুধু বায়ু দূষণ দেখা যায়। আমরা সবাই জানি এবং দেখতে পাই কিভাবে বায়ু দূষণ হচ্ছে, তবে এটা রোধ করা অনেকটা মুশকিল কাজ। এক্ষেত্রে সরকার ,জনগণ সবাইকেই প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনাদের ঢাকা শহরে বায়ু দূষণ অনেক বেশি। এত বেশি বায়ু দূষণ থাকলে সেখানে বসবাস করা সত্যি অস্বাস্থ্যকর ব্যাপার। শতশত রোগের সৃষ্টি হয় এই বায়ু দূষণ এর কারণে।

 7 months ago 

আজকাল বিভিন্ন রোগ বৃদ্ধির প্রধান কারন এই বায়ো দুষণ। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 7 months ago 

আজকাল বিভিন্ন রোগ বৃদ্ধির প্রধান কারন এই বায়ো দুষণ।

ঠিক কথা বলেছেন আপু।

 7 months ago 

আমাদেরকে শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার জন্য নিরাপদ বায়ু আমাদের দরকার। চারপাশের পরিবেশ এবং বায়ু যদি সুস্থ না থাকে তাহলে কখনো একজন মানুষের পক্ষে সুস্থ থাকা সম্ভব না। কিন্তু আজকের পৃথিবী আমাদের জন্য মোটেও সুখকর নয়। চারদিকে বিভিন্ন ধরনের কল কারখানার দূষিত ধোঁয়া আমাদের পরিবেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাছাড়া ও গাছপালা ধ্বংসের কারণে আমাদের বায়ু এখন নিরাপদ নয়। লিখা গুলো পড়ে অনেক বেশি ভালো লাগলো।

 7 months ago 

পরিবেশ রক্ষা ও বায়ো দূষণ রোধে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। ধন্যবাদ আপু।

 7 months ago 

এখনকার সময় যেভাবে বায়ু দূষিত হচ্ছে তা আমাদের সকলের জন্য অনেকটা ক্ষতিকর৷ প্রতিনিয়ই বায়ু দূষণ বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে৷ যেভাবে প্রতিনিয়ত কলকারখানা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর বর্জ্য পদার্থ গুলো আকাশে মিশছে ততই বায়ু দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া এই কলকারখানা গুলো তৈরি করার সময় যে সকল গাছ-গাছালি গুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হয় তার ফলে বায়ু আরো বেশি দূষিত হয়ে যাচ্ছে৷ আমাদের সকলের উচিত বায়ু দূষণ রোধে এগিয়ে আসা৷ অনেক ভালো লাগলো আপনার এই পোস্ট পড়ে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ।

 7 months ago 

আমরা যদি সচেতন হই তবে আই বায়ু দুষণ রোধ করা সম্ভব। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 61110.96
ETH 2649.39
USDT 1.00
SBD 2.58