|| ডুয়ার্স সফর | পর্ব-০৫ | ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্যে ||
আজকে আমি আপনাদের বলব আমার ডুয়ার্স সফরের পরবর্তী কাহিনী। এর আগে আমি প্রথম পর্ব,দ্বিতীয় পর্ব,তৃতীয় পর্ব ও চতুর্থ পর্বে আমি বিভিন্ন অংশের কথা বর্ণনা করেছিলাম। তো আজকে শুরু করব তারপর থেকে।
এইটুর এর চতুর্থ দিনে আমাদের গন্তব্য ছিল শিটং,অহল্লাধারা এবং দার্জিলিং ও কার্শিয়াং এর পার্শ্ববর্তী কিছু অঞ্চল।প্রতিদিনের মতো চতুর্থতম দিনে সকালবেলা আমরা স্নান করে রেডি হয়ে ব্রেকফাস্ট করে নিয়ে সকাল আটটার দিকে বেরিয়ে পড়লাম । আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল শিটং। এই শিটং হলো আসলে একটি গ্রাম, যেটি দার্জিলিংয়ের কাছাকাছি অবস্থিত। সেখানে যাওয়ার পথে প্রায় দেড় ঘন্টা জার্নির পর গাড়ি একটি জায়গায় দাড়ালো। সেখানে নামার মূল উদ্দেশ্য ছিল পাহাড়ি অঞ্চলের একটি বিশেষ শোভা উপভোগ করা। সেখানকার মূল আকর্ষণ ছিল রাস্তার বাঁদিকে বড় পাহাড় এবং ডান দিকে নিচে খাদ এবং তার মধ্যে দিয়েই তিস্তা নদী বয়ে চলেছে।
সে এক অপূর্ব দৃশ্য। সেখানে আমরা সবাই কিছু ছবি তুললাম। তারপর ১০-১৫ মিনিট থেকে সেখান আমরা বেরিয়ে গেলাম।
এরপর আরো ৪৫ মিনিট জার্নির পরে আমরা শিটং-এ ঢুকে গেলাম। শিটং-এ ঢোকার সময় আমরা বেশ ঠান্ডা ওয়েদার অনুভব করছিলাম। এভাবে প্রায়ই ৩০ মিনিট মতো চলার পর আমরা একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে চা খেলাম। কারণ একটানা অনেকক্ষণে জার্নিতে সবার একঘেয়ে লাগছিল, তাই ছোটখাটো একটি বিরতি আর কি। সেখানে নেমে আমরা অল্প কিছু ছবি তুললাম।
মোটামুটি ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর সেখান থেকে আমরা আবার বেরিয়ে আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আরো ৩০ মিনিট জার্নি করার পর আমরা অহল্যাধারায় পৌঁছে গেলাম। সেখানকার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সেই জায়গাটি বেশ খানিকটা উঁচু এবং সেখান থেকে প্রায় ৩৬০° দৃশ্য দেখা যায়। সেখানকার পরিবেশ এক কথায় অতুলনীয়। আকাশে হালকা মেঘ করে এবং কুয়াশা ভর্তি। ঠিক যেন আমাদের এখানকার শীতকালের মতন।
এ অঞ্চলটির চারিপাশেই বলতে গেলে খাদ ছিল। আমরা প্রায় দেড় ঘন্টার কাছাকাছি সময় সেখানে ছিলাম এবং বেশ কিছু ছবি তুললাম। সেখানকার খাদে সিঙ্কোনা গাছ ভর্তি ছিল, বলতে গেলে জায়গাটি পুরোই সিঙ্কোনা গাছের জঙ্গল।
আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন এই সিঙ্কোনা গাছ কত উপকারী, কারণ একমাত্র এই গাছ থেকেই ম্যালেরিয়া রোগের প্রতিষেধক তৈরি হয়।
অহল্লাধারায় আমরা প্রায় দু'ঘণ্টার মতো সময় কাটালাম। তারপরে সেখান থেকে বেরিয়ে আমরা আমাদের পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আরে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের দুপুরের খাওয়ার সময় হয়ে গেছিল। তোর প্রতিদিনকার মতন আমরা একটি রাস্তার হোটেল খুঁজে, তাদের চেয়ার টেবিলে বসে আমাদের নিয়ে যাওয়া রান্না করা খাওয়ার খেলাম। সেখানে বসার জায়গা কম ছিল,মাত্র তিনটে টেবিল ছিল সাথে বারোটা চেয়ার। যেহেতু একবারে সবাই বসতে পারবে না তাই মোট তিন বারে খাওয়া দাওয়া করা হলো। প্রথমবারে বাচ্চারা এবং বয়স্করা খেতে বসেছিল। তাই সেই সময়টা আমার কাছে ফাঁকা ছিল। সেই সুযোগে আমি আশপাশটা ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ দেখলাম সেখানে একটি মন্দির মতন কিছু একটা রয়েছে।
তার সামনে অল্প কিছু লোকও দেখতে পেলাম। কৌতুহল নিয়ে আমিও সেদিকেই এগিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখলাম সেটিকে আদতে মন্দিরেই বলা চলে, ভেতরে কিছু দেবদেবীও ছিল । সেই জায়গাটা ছিল অত্যন্ত শান্ত একটি জায়গা। সেখানে ভেতরে ঢুকে দেখলাম বসার জায়গা রয়েছে এবং সেখানে দু-চারজন বসে প্রার্থনা করছে। আমিও সেখানে বেশ কিছু সময় কাটালাম। অদ্ভুতভাবে সেখান থেকে বেরোনোর পরে কেন জানি না মনটা বেশ হালকা হয়ে গেল, ভেতরে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল যা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। যাই হোক হয়তো সেখানে এমন কিছু ছিল যা আমার মনকে শান্ত করতে সক্ষম হয়।
সেখানে আমি দশ মিনিট মত বসে তারপর আবার বাইরে চলে গেলাম। বেশ দুপুর হয়ে গেছিল ফলে খিদেও পেয়েছিল। তারপর আমি বাইরে গিয়ে চটপট দুপুরের খাওয়া সেরে নিলাম। সেখান থেকে তারপরে খাওয়া দাওয়া করে আমরা আমাদের রিসোর্ট এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
তো বন্ধুরা এই ছিল আমার আজকের গল্প। বাকি অংশটা আগামী দিনে আলোচনা করব।
Camera device | Location | Date |
---|---|---|
POCO M3 | শিটং ,অহল্লাধারা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল | 3rd June, 2022 |
ট্রাভেলিং পোস্ট বরাবরই আমার ভালো লাগে। জাস্ট একটি সাজেশন দিবো।তা হলো, লোকেশন এইভাবে দিবেন না। কিভাবে দিতে হয় তা আরিফ ভাইয়ের পিন করা একটি পোস্টে পেয়ে যাবেন, পোস্টটি হলো টিউটোরিয়াল পোস্ট।
আচ্ছা দিদি।ধন্যবাদ।আপনার কথাটি আমি মনে রাখবো।
আর এবার থেকে আমি অনুসরণ করে চলবো।