রেসিপিঃ-ঝাল ঝাল ডিম কারি রেসিপি।
সবাইকে শুভরাত্রি,
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির @amarbanglablog সকল ব্লগার ভাই ও বোনেরা আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আজকে আমি আবার উপস্থিত হয়েছি নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আমার আজকের নতুন ব্লগিংয়ে আপনারা সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি। বন্ধুরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন ব্লগ শেয়ার করতে। যদিও প্রতি সপ্তাহে একটি করে রেসিপি পোস্ট শেয়ার করতে চেষ্টা করি। কিন্তু এত গরমের মধ্যে রেসিপি তৈরি করতে বেশ ঝামেলা হয়ে যায়। সত্যি কোন রকম দৌড় দিয়ে কোন কিছু রান্না করে খেয়ে ফেলি। কারণ এতক্ষন রান্না ঘরে সময় দিতে ইচ্ছে করে না যেহেতু গরম অনেক বেশি। যখন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রান্না ঘর ছাড়া ফ্যানের নিচে বসে গরম সহ্য করতে পারি না তখন রান্না ঘরের গরমের মাত্রা কেমন হবে আপনারা অবশ্যই বুঝতে পারছেন? তাই যত শর্টকাট কোন কিছু তৈরি করে খাওয়া যায় চেষ্টা করতেছি এই গরমের দিনে।
তাছাড়াও আরেকটি বিষয় হচ্ছে এই গরমের মধ্যে কিছুই খাওয়া যাচ্ছে না। কারণ গরমের মধ্যে সবার রুচি অনেক বেশি কমে গেছে। এছাড়াও সহজে কোন কিছু খেলে হজম হচ্ছে না। তাই আমরা চেষ্টা করি হজম হয় এবং এই গরমের মধ্যে শরীরের জন্য সহনীয় এমন কিছু খাবার আমরা তৈরি করে খাওয়ার চেষ্টা করতেছি। যেহেতু মাংস জাতীয় খাবার অনেক বেশি ভারি খাবার তাই এই গরমের মধ্যে মাংস না খাওয়াই ভালো। চেষ্টা করতেছি শাক সবজি কিংবা অন্যান্য আইটেমস বেশি রাখার খাবারের তালিকায়। আজকে হঠাৎ করে দুপুরে মনে হলো যে ডিম কারি রেসিপি করবো। যদিও বাচ্চারা খেতে চাচ্ছেনা কোন কিছু এবং আমারও একদম রুচি নেই বললেই চলে। যে খাবার খাচ্ছি না কেন কোন খাবারের স্বাদ পাচ্ছি না।
হঠাৎ করে মনে হলো ঝটপ্ট একটি রেসিপি তৈরি করে নিবো যে রেসিপিটি তৈরি করতে সহজ হবে এবং খেতেও সুস্বাদু হবে। যেহেতু গরমের মধ্যে রান্না ঘরে বেশিক্ষণ থাকা সম্ভব না তাই এই রেসিপিটি তৈরি করতে অন্যান্য রেসিপি তুলনায় একটু ইজি হয়। তাছাড়াও খেতে খুবই সুস্বাদু এবং একটি স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার এই রেসিপিটি। তাই আমি আর দেরি না করে ডিম কারি রেসিপিটি তৈরি করে নিয়েছি। গরম গরম রান্না এবং গরম গরম পরিবেশনায় খেতে খুবই সুস্বাদু ছিল। যেহেতু দুপুরে রান্না করেছি দুপুর বেলায় যে কোন খাবার খেতে খুব ভালো লাগে। পেটে খুবই ক্ষিধা ছিল এবং তৃপ্তি সহকারে খেয়ে নিলাম। সেই রেসিপিটি নিয়ে আমি উপস্থিত হয়েছি। আশা করি বন্ধুরা আপনাদের কাছে ডিম কারি রেসিপিটি বেশ ভালোই লাগবে। ধাপ গুলো আমি আপনাদের সাথে উপস্থাপন করে নিচ্ছি—-
উপকরণ | পরিমাণ |
---|
ডিম সিদ্ধ- ৩ টি।
আলু ছোট সাইজের- ৪/৫ টি।
পেঁয়াজ কুচি - ১ টি।
কাঁচা মরিচ - ৩/৪ টি।
এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, তেজপাতা।
আদা কুচি- রসুন কুচি- অল্প পরিমাণ।
ঘি- ১ চামচ।
দুধ - ১ বাটি।
লাল মরিচের গুঁড়া- ১ চামচ।
হলুদ গুঁড়া, জিরে গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, গরম মসলা- হাফ চামচ করে।
লবণ- স্বাদমত।
সরিষার তেল- পরিমাণ মত।
ঝাল ঝাল ডিম কারি রেসিপি তৈরির ধাপ সমূহঃ
রন্ধন প্রক্রিয়া-১
প্রথমত আপনাদেরকে সব উপকরণ সমূহ নিয়ে দেখিয়েছি। এখন আমি সরাসরি রান্নার ধাপে চলে যাব। রান্না করার জন্য একটি পাত্র চুলায় বসায় দিয়েছি। পাত্রটিতে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে গরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তেল গরম হয়ে আসলে ডিম গুলোতে হলুদ মেখে নিয়েছি হালকা এবং তেলের মধ্যে ভেজে নিব।
রন্ধন প্রক্রিয়া-২
আপনারা দেখতে পাচ্ছেন ডিমগুলোকে আমি নেড়েচেড়ে ভেজে নিচ্ছি। এভাবে হালকা ভেজে নেওয়ার পরে যখন ব্রাউন কালার চলে আসে তখন একটি প্লেটের মধ্যে তুলে নিলাম।
রন্ধন প্রক্রিয়া-৩
ডিম গুলো তুলে নিয়ে সেখানে গরম মসলা গুলো দিয়ে দিলাম। ভেজে নিতে হবে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে। যখন ফ্লেভার চলে আসে তখন কুচি করে রাখা পেঁয়াজ, আদা, রসুন এবং মরিচ কুচি দিয়ে দিছি। সব উপকরণ সমূহ ভালোভাবে নেড়েচেড়ে ভেজে নিতে হবে।
রন্ধন প্রক্রিয়া-৪
মসলাগুলো ভেজে নেওয়ার পরে প্রথমে দিয়ে দেবো শুকনা উপরণ গুলো। যা আমি পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিয়েছি আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। রান্নার পাত্রের মধ্যে ঢেলে দিলাম। কিছুক্ষণ নড়েচড়ে ভেজে নেওয়ার পরে আবারো এক বাটি দুধ ঢেলে দিয়েছি। সবগুলো উপকরণ দেওয়ার পরে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
রন্ধন প্রক্রিয়া-৫
সিদ্ধ করে নেওয়ার পরে দিয়ে দিলাম সিদ্ধ করে রাখা আলু। এরপরে দিয়ে দিয়েছি আগে থেকে ভেজে নেওয়া ডিম গুলো। ডিম গুলো আমি মাঝখান থেকে কেটে দুই টুকরো করে নিয়েছি। যাতে ডিমের কুসুম বের হয়ে না যায় সেজন্য খুব সাবধানে দিতে হবে। ডিম দেওয়ার পরেই ঢাকনা দিয়ে সিদ্ধ করে নিলাম।
রন্ধন প্রক্রিয়া-৬
যখন তরকারি গুলো প্রায় সিদ্ধ হয়ে আসে তখন এক চামচ ঘি দিয়েছি। ঘি দেওয়ার পরে আরো দুই এক মিনিট সিদ্ধ করে নিলাম। সিদ্ধ করে নেওয়ার পরেই যখন তরকারি পারফেক্ট হয়ে আসে তখন চুলা বন্ধ করে দিয়েছি। এখন পরিবেশনের পর্ব।
রেসিপির পরিবেশনা
বন্ধুরা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন রেসিপির কালার কত সুন্দর এসেছে। সত্যিই খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। আমার তো বেশ ভালোই লাগলো ডিম কারি রেসিপি। এভাবে তৈরি করে দিলে বাচ্চারাও খেতে বেশ পছন্দ করে। যেহেতু বারবার একই জিনিস খেতে ভালো লাগে না। তাই বিভিন্ন আঙ্গিকে যখন কোন রেসিপি তৈরি করা হয় খাবারের স্বাদ ভিন্ন ধরনের পাওয়া যায়। দেখতে যেমন ভিন্ন দেখায় তেমনি খেতেও ভিন্ন ধরনের স্বাদ পাওয়া যায়। যেহেতু গরমের দিনে কিছু খেতে ইচ্ছে করতে ছিল না। তাই এভাবেই ডিম কারি করার কারণে আমার খেতে খুব ভালো লাগলো। আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের তৈরি করা রেসিপি আপনাদের কাছে ভালোই লাগবে। আপনাদের ভালো লাগলে এভাবেই তৈরি করে নিতে পারেন। আমার আজকের রেসিপিটি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো মতামত দিয়ে জানালে ভালো লাগবে। ধন্যবাদ সবাইকে আমার রেসিপি ব্লগ ভিজিট করার জন্য।
ডিভাইসের নাম | Wiko,T3 |
---|---|
মডেল | W-V770 |
ফটোগ্রাফার | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | রেসিপি |
আজ এখানে আমার লেখা সমাপ্তি করছি। আবার উপস্থিত হব নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সবাই সুস্থ থাকবেন আর ভাল থাকবেন।
💘ধন্যবাদ সবাইকে💘
আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। আমি সব ধরনের ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি গান গাইতে এবং কবিতা আবৃত্তি করতে ভীষণ ভালবাসি। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
আপনাদের ধৈর্যের তারিফ করতে হয় আপু। এতো গরমের মাঝেও আপনারা কিভাবে চুলাতে রান্না করেন। যাইহোক, দুপুরের মেন্যুতে তাহলে ডিমের কারি ছিল। গরম গরম রেসিপি খেতে কিন্তু ভাল লাগে আপু।
নিশ্চয় প্রশংসা করতে হবে যেহেতু আমরা অনেক কষ্ট করে রান্না গুলো তৈরি করি হি হি হি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গরমের কারনেই সবার নাজেহাল অবস্থা এখন।খাওয়ার রুচিত নাই বললেই চলে।তবে আপনি একটা ভালই কথা বলেছেন আপু,এই গরমে আমাদের উচিত ভারী জাতীয় খাবার গুলো পরিহার করা।সাকসবজিকেই এখন খাদ্য তালিকায় বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।ডিম কারি রেসিপিটি কিন্তু আপনি খুবই লোভনীয় ভাবে তৈরি করেছেন আপু।রেসিপিতে ঘি দেওয়াতে মনে হচ্ছে টেস্ট দ্বিগুণ হয়েছিল।সুস্বাদু রেসিপিটি তৈরি করার পদ্ধতি শিখিয়ে দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার খুব সুন্দর মতামত আমাকে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করেছে। ধন্যবাদ সহযোগিতা করলেন সুন্দর মতামত দিয়ে।
ঝাল ঝাল ডিমের মিষ্টি কারি রেসিপি আমার কাছে একদম ইউনিক লেগেছে, এধরণের রেসিপি কখনো তৈরি করা হয়নি। তবে অন্যভাবে তৈরি করা হয়েছিল, রেসিপিটা দেখে খুবই মজাদার এবং খেতে ইচ্ছা করছে।
এভাবে তৈরি করে খেয়ে দেখবেন ভাইয়া অনেক ভালো লাগবে।
অত্যন্ত মজাদার একটি রেসিপি তৈরি করে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে এরকম রেসিপি খেতে বেশ ভালো লাগে আমার। অত্যন্ত সুন্দর ভাবে রেসিপি তৈরি বর্ণনাগুলো উপস্থাপন করেছেন আপনি। আপনার এই রেসিপি তৈরিতে কাঁচা মরিচের ব্যবহারটা আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। দারুন একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কাঁচা মরিচ দেওয়ার কারণে ভিন্ন ধরনের একটি ফ্লেভার চলে আসে খেতেও খুবই সুস্বাদু হয়।
ঝাল ঝাল ডিম কারি খুব চমৎকার একটা রেসিপি যদিও এই গরমে ডিম থেকে দূরে থাকাই ভাল। হাহাহা খুব চমৎকার একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন আপু। ধাপ গুলো দারুন উপস্থাপন করেছেন শুভ কামনা রইলো।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
https://twitter.com/nahar_hera/status/1785703175221313970?t=p-aHqmygrmy9mKwqTFt3DQ&s=19
চলমান এই গরমে সবারি কম বেশি কষ্ট হচ্ছে। তবে এটা ঠিক মা-বোনেদের কষ্টটা একটু বেশি হচ্ছে। অন্য সময় যেমন হোক না কেন রান্নার সময় তাদের কষ্টটা বেশি হচ্ছে। যাই হোক আপনি ঝাল ঝাল ডিম করি রেসিপি তৈরি করেছেন। রেসিপি তৈরি করার প্রতিটা ধাপ সুন্দর করে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
রান্না ঘরে গেলেই আর উপায় থাকে না রান্না করা শেষ করে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে যেতে হয়। এত বেশি গরম যে রান্নাঘর থেকে ঘেমে একেবারে গোসল করে চলে আসি।
সত্যি গরমে খাওয়ার রুচি একদমই কমে গেছে। আর মাছ, মাংস ভারি জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো।আপনি চমৎকার সুন্দর করে ডিম কারি রেসিপি করেছেন এবং ধাপে ধাপে রন্ধন প্রনালী চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ও সুস্বাদু রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
এই গরমে সিম্পল কিছু খাবার ছাড়া আর কিছু খেতে ইচ্ছা করতেছে না।
আপনি ঠিক বলেছেন গরমের জন্য কোনো কিছু খেতে একদমই ভালো লাগে না। শুধু ঠাণ্ডা জাতীয় খাবার একটু ভালো লাগ। যাই হোক ঝাল ঝাল ডিম কারি রেসিপি দারুন হয়েছে। আলু দিয়ে এভাবে ডিম রান্না করলে খেতে দারুন মজা লাগে। এই রেসিপি আমি বার খেয়েছি এটা খেতে দারুন সুস্বাদু লাগে। ধন্যবাদ তৈরির প্রতিটি ধাপ সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য।
আমার তো বেশ পছন্দের একটি রেসিপি এই খাবার ধন্যবাদ আপনাকে।