অদ্ভুত শিক্ষা ব্যবস্থা
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
২৮শে মে, মঙ্গলবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি, আজকে নিজের কিছু মনের কথায় লিখে দেয়ার চেষ্টা করব, নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করব।
শিল্প ও সাংস্কৃতি
আজকের এই পোস্ট একটা আর্ট পোস্ট হতে পারতো, বহু বছর পর আমি ডিজিটাল আর্ট ছাড়া খাতা-কলমে আর্ট করেছি। আর্ট করতে আমার বরাবরই বেশ ভালো লাগে তবে যেহেতু অনেক দিন খাতা-কলম ব্যবহার করিনি এজন্য প্রথম কয়েক মিনিট বেশ বিরক্তই লেগেছে। আরো বিরক্ত লেগেছে যখন আমি জানতে পারলাম নতুন একটা সাবজেক্ট সম্পর্কে, সাবজেক্টের নাম শিল্প ও সংস্কৃতি।
কিছুদিন আগেও সপ্তম শ্রেণীর একটা গল্প নিয়ে দেশে বেশ আলোচনা সম্মুখীন হতে হয়েছে, এই সাবজেক্টের সম্পর্কে যখন আমি জানতে পারলাম তখন আমি নিজেও বেশ বিরক্ত হলাম। বর্তমানে সকল হাইস্কুলে অদ্ভুত একটা নিয়ম বা অদ্ভুত সাবজেক্ট তৈরি করা হয়েছে যেটা আমাকে বিভ্রান্ত করেছে।
শিক্ষা ব্যবস্থা চেঞ্জ হবে এটা স্বাভাবিক এবং এটা আমরাও চাই, তবে সেটা যেনো একজন শিক্ষার্থীর জন্য ভোগান্তি না হয়। বর্তমানের পরিস্থিতি এরকম হয়ে দাঁড়িয়েছে শুধু শিক্ষার্থী নয় গার্জিয়ানদেরও বেশি ভোগান্তি ভুগতে হচ্ছে। আমার এক কাজিন সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে প্রায় সময়ই দেখতাম কিছু লেখা লিখছে কিংবা কিছু আর্ট করছেন, অনেকটা আমাদের কলেজ ইউনিভার্সিটি লাইফ এর অ্যাসাইনমেন্ট এর মত, এই জিনিসগুলোতে আমার অন্য এক কাজিন হেল্প করত।
কোন এক কারণবশত যখন আমার কাছে হেল্প চাইতে আসলো তখন আমি বিষয়টা হতে বুঝতে পারলাম বর্তমানে শিক্ষার্থীদের উপর এবং গার্জিয়ানদের উপর একটা অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছে এ শিক্ষা ব্যবস্থার নাম করে। উপরে যে বইটার কথা বললাম এখানে খুব একটা পড়াশোনার বিষয় রয়েছে বলে আমার ধারণা নেই হয়তো বা থাকতেও পারে। ভোগান্তির বিষয় হচ্ছে প্রতি সপ্তাহে দুটো করে ড্রয়িং তাদেরকে করতে হয়, আমি এরো বিপক্ষ নয়।
আমার কাছে অদ্ভুত লেগেছে এর ড্রইং করার নামে প্রতি সপ্তাহে তাদের আর্ট পেপার কিনতে হয়, বড় বড় পেপার গুলো সেগুলো কিনতে হয়, প্রতি মাসেই তাদের রং পেন্সিল শেষ হয়ে যাচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের কলম, গ্লিটার ইত্যাদি বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মার্ক দেয়ার নাম করে তাদের প্রতি সপ্তাহে এমন এমন ড্রয়িং করতে দেয়া হচ্ছে যেটা কোন ভাবেই তাদের দ্বারা সম্ভব নয়, অবশ্যই তারা বাবা-মার সাহায্য নিচ্ছে কিংবা বড় ভাইয়া আপুদের সাহায্য নিচ্ছে।
আমার বলার বিষয় হচ্ছে একজনের গার্জিয়ান ভালো ড্রয়িং করতে নাই পারে, এত অল্প বয়সে বাচ্চারা ভালো ড্রয়িং করবে এটা সবার দ্বারা সম্ভব নয়। তাহলে ওইসব শিক্ষার্থী কি করবে অবশ্যই মার্ক কম পাবেন এবং যার ড্রইং করছে তারা অবশ্যই বড়দের সাহায্য নিচ্ছে একজন গার্জিয়ান প্রতি সপ্তাহে সপ্তম শ্রেণীর এক বাচ্চার জন্য এতগুলো ড্রইং তৈরি করে দেবে এটাও অনেক ধৈর্য সাপেক্ষের বিষয়।
অনেক গার্ডিয়ান আছে যারা ঠিকমত স্কুলের বেতন দিতে পারে না, তাদের দ্বারা শুধুমাত্র ড্রইংয়ের জন্য এতগুলো সরঞ্জাম কেনা প্রতি মাসে অনেকটাই জুলুম, যাই হোক আমাকে যখন প্রথমে রিকুয়েস্ট করা হয় আমি ব্যস্ত ছিলাম কিন্তু রিকোয়েস্টের কারণে করতে হয়েছে। ছোট্ট একটা ড্রইং এই ড্রইং টা কে বেশ বড় একটা আর্ট পেপারে তৈরি করতে হবে যেটা গ্রুপ আকারে প্রেজেন্ট করা হবে, কাটাখানেক লাগিয়ে ড্রইং টা কমপ্লিট করলাম।
সে ড্রইংটা সারারাত জেগে রং করল আমার কাজিন, ঘুম ঘুম চোখে যখন পরে দিন সকালে স্কুলে গেল আরো একটা ড্রইং তাকে ধরিয়ে দেয়া হলো, অবশ্যই সে ড্রইংটা রিকোয়েস্ট আমার কাছেই এসেছে, পরবর্তীতে প্রথম দিন যে ড্রয়িং করেছি সেইটাই আবার ছোট ড্রয়িং খাতায় ড্রয়িং করতে দেয়া হয়েছে রেকর্ড হিসেবে থাকবে তাই।
একই ড্রয়িং পুনরায় করতে দেয়া হয়েছে
একজন শিক্ষার্থী তার গুরুত্বপূর্ণ সময় পড়াশুনা করবে নাকি গ্রুপ ওয়ার্ক ইত্যাদি ড্রইং করেই সারারাত পার করবে এটাই আমার বুঝে খাটে না, তাও যদি শিক্ষার্থীরা নিজেরা ড্রইং করত। একই ড্রয়িং যখন দ্বিতীয় বার করতে হয়েছে আমি অনেকটাই বিরক্ত হয়েছে।
এমনও শুনেছি শিক্ষার্থীদেরকে নাকি বলা হয় বাসা থেকে রান্না করে নিয়ে আসবে, এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ষষ্ঠ শ্রেণীর সপ্তম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী কিভাবে ভালো ভালো রান্না করে নিয়ে যাবে স্যার ম্যাডামদের কে খাওয়ানোর জন্য, এবং রান্নার উপর তাদেরকে মার্ক দেয়া হবে। আমরা যে ড্রইং করিনি কিংবা আমাদের যে রান্নার সাবজেক্ট ছিল না এমনটা নয়, আমরা দশম শ্রেণীতে ছেলেরা কৃষি শিক্ষার জন্য অনেক ড্রইং করেছি এবং মেয়েরা গার্হস্থ্য বিজ্ঞান এর জন্য হয়তোবা শখ করে রান্না করত।
তবে এই পুরো বিষয়টা আমরা খুব বেশি এনজয় করতাম, আর বর্তমান সময়ে আমার কাছে কেন যেন মনে হচ্ছে বিষয়টা খুবই বিরক্তকর। কারণ আমাদের সময় সেটা এককালীন সময়ের জন্য ছিল, কিন্তু এখন নতুন শিক্ষা ব্যবস্থার নামে এই জিনিসগুলো একটু বেশি ভোগান্তির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মূল্যবান এই সময় অতিরিক্ত সাংস্কৃতি কিংবা শিল্পকলার দিকে নিয়ে গিয়ে নষ্ট করা হচ্ছে বলে মনে হয়। এখন যেন শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার থেকে বিলাসিতাই বেশি, কারণ সবার ক্ষেত্রে সম্ভব হলেও সকলের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে না সেই সকল শিক্ষার্থীরা যাদের বাবারা দিন এনে দিন খায়।
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপনি শুনছেন ভাইয়া আর আমি দেখেছি বাড়ি থেকে রান্নাবান্না শিখে আসতে হয় এমনকি স্কুলেও রান্নাবান্না করা হয়। সত্যিই এখনকার শিক্ষা ব্যবস্থা বড়ই অদ্ভুত। পড়াশোনার বদলে সবকিছু ড্রইং করা রান্না করা ইত্যাদি কাজ শেখানো হয়। শিক্ষার বদলে ঘরের কাজ বেশি শেখানো হয় শিক্ষার্থীদের। আপনার সম্পূর্ণ পোস্ট করে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া ।ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
শুধু শুনেছি না রীতিমত এর ড্রয়িং গুলো আমার করতে হয়েছে, সবচেয়ে বিরক্ত লেগেছে তখন যখন একই ড্রয়িং বিভিন্ন সাইজে বিভিন্ন খাতায় ড্রইং করতে হয়েছে, সে বিরক্ত তা থেকেই এই পোস্ট করা হয়েছিল, যাইহোক এরকম অভিজ্ঞতা সম্মুখীন আপনিও হয়েছেন, আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
দিনে দিনে শিক্ষাব্যবস্থা এতটাই অধ্যপতনে চলে যাচ্ছে। শুধু সাবজেক্ট গুলো দেখলেই খারাপ লাগে। কলেজ ভার্সিটিতে যেটা করতে হয়েছে বর্তমান ইস্কুল শিক্ষার্থীদের তাই করতে হচ্ছে। এটা সত্যিই কোনোভাবে কাম্য নয়। বিরক্তির একটি বিষয় কিছুই করার নেই শুধু দেখা ছাড়া । এটাই বাস্তবতা যেটা বর্তমান ভবিষ্যৎকে অন্ধ করে দিচ্ছে।
বাচ্চাদেরকে এগুলো শেখানো হোক তাতে সমস্যা নেই, বিষয়টা এমন হয়ে গেছে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কে পড়াশোনা না শিখিয়ে, ড্রয়িং রান্না এগুলো করে নিয়ে আসো এটা বলেই তাদের দায়িত্ব শেষ করে দিচ্ছে। বাসা থেকেই যদি শিখতে হয় তাহলে কেন স্কুলে আসবো?
আমার ছোট বোন ক্লাস সেভেনে পড়ে। আমিও দেখি মাঝে মাঝে এই শিল্প সংস্কৃতির জন্য বেশ কিছু জিনিস তৈরি করতে হয় আর্ট ও করতে হয়। আরও একটা সাবজেক্ট রয়েছে জীবন ও জীবিকা। এই সাবজেক্ট টায় খুব সম্ভবত রান্নাও করতে হয়। এই শিক্ষা ব্যবস্থাটা হয়তো ভালোই হচ্ছে ওদের জন্য। আমিও এর বিপক্ষে নয়। তবে আপনি যা বললেন কয়েকদিন পর বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম কিনতে হয়। তবে একদিকে ভালই হয়েছে ওরা হাতের বিভিন্ন কাজ শিখতে পারছে। তবে কয়েকটা স্কুলে পড়াশোনা না করলে এসব আদার একটিভিটি গুলো বেশি করা হয়। এটা মোটেই কাম্য নয়। তবে আমার ছোট বোন যেখানে পড়ে সেখানে এসবের পাশাপাশি পড়াশোনা পরীক্ষা সবকিছুই হয়।
পরীক্ষা পড়াশোনা তা তো অবশ্যই হবে, অনেকের পক্ষেই বাসা থেকে রান্না করে নিয়ে যাওয়া সপ্তাহে সপ্তাহে, কিংবা ড্রইংয়ের জন্য এতসব সরঞ্জাম জোগাড় করতে পারে না। তার থেকে বড় জিনিস হচ্ছে বাচ্চাদের এগুলো করে দিতে হচ্ছে গার্জিয়ানদেরকে। এই জিনিসগুলো বাচ্চাদেরকে শেখানো এক জিনিস সম্পূর্ণ গার্জিয়ান তাদেরকে হেল্প করে দেওয়া এক জিনিস, বাচ্চারা বড় হলে এমনিতেই শিখতে পারবেন এখন এই জিনিসগুলো গার্জিয়ানদেরকেই করে দিতে হচ্ছে।