ভয়ঙ্কর দুর্সাহস-৩ || ১০% প্রিয় লাজুক-খ্যাকের🦊 জন্য থাকলো
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
৪ঠা জুন,শনিবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি। আজ অনেকদিন পর মনের অজান্তে একটি বাস্তব ঘটনাকে আমি আমার কাল্পনিক জগতের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে চাই। পূর্বে আমি এর কয়েকটি পার্ট নিয়ে এসেছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের নতুন আরেকটি পর্ব। আশা করি সকলের ভাল লাগবে।
ভয়ঙ্কর দুর্সাহস|| ১০% প্রিয় লাজুক-খ্যাকের🦊 জন্য থাকলো
ভয়ঙ্কর দুর্সাহস-২ || ১০% প্রিয় লাজুক-খ্যাকের🦊 জন্য থাকলো
পরেরদিন অর্ণব আবার মিনুর বাসায় আসে তাকে পড়ানোর জন্য, মিনু একদম ভয়ে শেষ গতদিনের সেই কারণে, সে ভয় পাচ্ছে ভালোবাসার মানুষটাকে পাওয়ার আগেই যদি হারিয়ে যায়। তবে অর্ণবের কাছে বিষয়টা অন্য, সুদর্শন ভার্সিটি পড়ুয়া অর্ণব এর কাছে এটি নতুন কোন ঘটনা নয়, কলেজ ভার্সিটির অনেক সুন্দরী রমনী তার প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছে, কেউ যদি সুন্দরের খাতায় তার নাম লিস্ট থাকে সেই রমণী অর্নবের বন্ধু হতে পারে।
অর্ণব বিষয়টিকে হেসেই উড়িয়ে দিয়েছে, সকালবেলায় ব্যাপারটা সে ভুলে গেছে, অথচ ভয়ের কারণে মিনু কাল রাতে একটুও পড়তে পারেনি, আজ অর্ণব ভাইয়ের কাছে এসে কোন হোমওয়ার্ক সাবমিট করতে পারলো না।
মিনুর আজকে অতিরিক্ত চুপচাপ দেখে এবং ভীত অবস্থায় দেখে গত দিনের কথা মনে পড়ে গেল। সে বুঝতে পেরেছে আজকে মিনু কোন বাড়ির কাজ করেনি, মিনুর চোখে মুখে যেন ভালোবাসা, অভিমান, ভয় মিশ্র অনুভূতি ছিল।
সে মিনুকে একটি অংক করতে বলল, গতদিনের যে অংশটি সে বুঝিয়ে দিয়েছিল, সেটি আবার করতে দেয়া হল। মিনুকে অংক করতে দিয়ে , অর্ণব ভাই ফিজিক্স বইটা হাতে নিল দ্বাদশ অধ্যায় তড়িতের চৌম্বক ক্রিয়া , স্পষ্ট করে সেখানে তার নামটা দেখতে পাচ্ছে, মেয়েটার হাতের লেখা খুব সুন্দর। সে তার নামের পাশে দুটো বিন্দু …. দিয়ে কি বোঝাতে চেয়েছেন সেটা সে নিজেও জানে না, অর্ণব সেখানে আরো দুটো বিন্দু বসিয়ে দিল, এটুকু সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে গেল মিনুর সেই অংক। দুজন দুজনের চোখের দিকে তাকাতে পারছে না।
পড়ানো শেষ করে অর্ণব চলে গেল, মিনু ভয় এবং লজ্জার কারনে অনেকক্ষণ চেয়ারে বসে ছিল, তার হাত-পা কাপছিল কারণ অর্ণব ভাইয়া যদি তার মাকে বলে দেয়, তাহলে মিনুর মা অবশ্যই আর অর্নবের কাছে পড়তে দেবেনা।
এর পরেরদিন অর্ণব ভাইয়ের কাছে তার ফিজিক্স বই পড়ার কথা নয়, তারও পরের দিন যখন আগামী দিনের হোম ওয়ার্ক করার জন্য বই টা খুল্লো হঠাৎ করে তার চোখে পড়ল বিন্দু দুটো বেশি হয়ে গেছে, মনের মধ্যে তার যেন কালবৈশাখী ঝড়।
এই দুটো বিন্দু জানো হাজার বছরের জমানো প্রেমপত্র, কতটা খুশি হয়েছে সেটা শুধুমাত্র একজন কিশোরী মেয়ে তার প্রথম প্রেমকে অনুভব করলে বুঝতে পারবে।
এভাবে বেশ কয়েকটা দিন চলে গেল, মিনু নতুন করে তার বান্ধবীর কথা মত কোন পাগলামি করছে না। সেদিন স্কুলে গিয়ে খুব করে তার বেস্ট ফ্রেন্ড কে অনেক কথা শোনালো। শ্রাবণী শুধু হেসেছে রাগ করেনি একটুও, কারণ সে ওর চোখেমুখে অর্নবের জন্য দেখছে এক আকাশ ভালোবাসা।
এইভাবে দেখতে দেখতে তাদের টেস্ট পরীক্ষা এবং এসএসসি পরীক্ষা কাছে চলে আসলো। অর্ণব তাদের বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করছে এবং মিনু খুব মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করছে, পড়াশোনা চাপে মিনু তোর ভালোবাসার পাগলামিটা কিছুটা কমে গেছে, এখন দিনে দুবার অর্ণব ভাইয়ের সাথে তার দেখা হয়, যেদিন পরীক্ষা থাকে না সেদিন সকালে কিছু সময় এবং বিকেলে নিয়ম করে পড়াতে আসে।
তার ভালোবাসার মানুষটিকে তার নিজের জন্য এত কষ্ট করতে দেখে সেও ভালোমতো পড়াশোনা করছে ভালো রেজাল্টের জন্য, তাকে ও কলেজ শেষ করে অর্ণব ভাইয়ের মতো ভার্সিটিতে আসতে হবে তবেই না ওনার মন পাওয়া যাবে।
মিনু মনে মনে ভাবছে কলেজ শেষ করে ভার্সিটি তে আসতে আসতে অর্ণব ভাইয়া ভার্সিটি থেকে পাস করে বের হয়ে যাবে, তবুও তার ভালোবাসা তো প্রকাশ করতে পারবে। সেই আশায় মেয়েটির দিনরাত এক করে পরীক্ষার প্রিপারেশন নিচ্ছে।
তার পরীক্ষার যত শেষের দিকে আসছে তার মনে আরও ভয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, আগে দিনে একবার দেখা হতো, এখন দিনে দুবার দেখা হয়, কিন্তু পরীক্ষা শেষ হল তো অর্ণব ভাইয়া তাকে আর পড়াতে আসবে না। এই চিন্তায় তার শেষ পরীক্ষার রাত গুলো ভালো করে পড়তে পারেনি, তবে পরীক্ষা সে ভালো দিয়েছে।
আজ শেষ পরীক্ষা, পরীক্ষার হল থেকে বের হয়েই তার মনটা খারাপ, পরীক্ষার এই দিনগুলো তার অনেক ভালো কেটেছে। বাবা-মার অতিরিক্ত আদর, অর্ণব ভাইয়ার এত টেক-কেয়ার, সবটা যেন আজ শেষ হয়ে যাবে। হয়তো অর্ণব ভাইয়ের সাথে আর দেখা হবে না।
হল থেকে বের হয়ে এসে তার বান্ধবীর সাথে কথা বলল, তার মন খারাপের এই বিষয়টি তার বান্ধবীকে জানালো। এখনতো আর মায়ের মোবাইল দিয়ে ফোন করে এটা জিজ্ঞাসা করা যাবে না ভাইয়া আজকে কি পড়াতে আসবেন না? তার বান্ধবী শ্রাবণী তাকে একটা বুদ্ধি দিলো।
শ্রাবনীর কথা শুনে মিনু খুব খুশি হলো। সে শ্রাবণী কে লাভ ইউ বেবি বলে জড়িয়ে ধরল। এখন শুধু বিকল হওয়ার পালা অর্ণব ভাইয়া প্রতিদিনই পড়ানোর আগে তার প্রশ্নপত্র দেখতেন এবং উত্তর গুলো জানার চেষ্টা করতেন।
আজ শেষ পরীক্ষা তার মনে এতোটুকু বিশ্বাস ছিল অর্ণব ভাইয়া আসবে তার প্রশ্নপত্র দেখার জন্য, সত্যিই বিকেলবেলা অর্ণব ভাইয়া তাদের বাসায় আসলো কিন্তু আজ তার রুমে এসে বসল না, ডাইনিং রুমে বসে আন্টির সাথে কথা বলছে, মিনু তাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছিলাম। হঠাৎ আন্টি কর্কশ গলায় মিনুকে ডাক দিয়ে বলল তোমার প্রশ্নপত্রটা অর্ণবকে দাও, মিনু ভয়ে ভয়ে তার প্রশ্নপত্রটা নিয়ে এসে অর্ণব ভাইয়ের সামনে দিল এবং সে তার মায়ের পাশে বসলো। অর্ণব ভাই অনেকক্ষণ ধরে তার প্রশ্নপত্রটি দেখছিল, মাঝে মাঝে আন্টির দু একটা কথার উত্তর দিচ্ছিল। প্রশ্নপত্র দেখা শেষ এবং মিনু ভালো করেছে আশ্বাস দিল আন্টিকে।
আন্টি খুশি হয়ে বলল বাবা তুমি একটু বসো আমি তোমার জন্য নাস্তা পাঠাচ্ছি আর আজকে তোমার বেতন টা নিয়ে যেও, অর্ণব মনে মনে খুশি কারণ আজকে তার বেতন হবে, অন্যদিকে মিনুর মন খারাপ, সে বারবার সাহস করে তার বান্ধবীর বলা আইডিয়াটা প্রকাশ করতে চাচ্ছে কিন্তু সাহস হচ্ছে না, মিনুর মায়ের নাস্তা তৈরি করতে দেরি হওয়াতে সাহস করে মিনু অর্ণব ভাইকে বলে ফেলল অর্ণব ভাইয়া তুমি কি ফেসবুক ব্যবহার করো? তুমি কি তোমার ফেসবুক আইডির নামটা আমাকে লিখে দিবে?
অর্ণব প্রশ্নপত্রের নিচে তার ফেসবুক আইডি নামটা লিখে দিলো, লেখা শেষ করে অর্ণব মিনুকে জিজ্ঞাসা করলো তুমি আমার ফেসবুক আইডি দিয়ে কি করবে? মিনু প্রশ্নপত্রটা হাতে নিল লজ্জায় তার মুখ লাল হয়ে গেছে, কোন উত্তর না দিয়ে তার রুমের দিকে ছুটে চলে গেল……………
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
যতই পড়তেছিলাম গল্পের ভিতরে প্রবেশ করতেছিলাম। ভাবছিলাম হয়তো গল্পটা আজ শেষ হয়ে যাবে। মিনুর ভালোলাগা থেকেই অর্ণব ভাইয়াকে ভালোবেসে ফেলে। অণর্ব ভাইয়াও দেখতে সুদর্শন। কিন্তু মিনুর পাগলামী কি আর কমে। শেষে ফেইসবুক আইডিই চেয়ে বসলো। সামনে হয়তো ফেইসবুক এর মাধ্যমেই ভাবের আদানপ্রদান হবে। ভালো লিখেছেন ভাই ❤️
আপনি যদি গল্পের টাইটেলটা ফলো করেন তাহলে কিছুটা হলেও বুঝতে পারবেন গল্পটা আরো বেশ কয়েকটা ধাপ আসবে, ধন্যবাদ আপনাকে কমেন্ট এর মাধ্যমে সাপোর্ট করার জন্য।
হুমম ভাই বুঝতে পেরেছি।