ভয়ঙ্কর দুর্সাহস|| ১০% প্রিয় লাজুক-খ্যাকের🦊 জন্য থাকলো

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.

৯রা বৈশাখ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।

২২ই- এপ্রিল,শুক্রবার।



মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।অনেকদিন হলো জেনারেল রাইটিং লেখা হয়না, আজ অনেকদিন পর মনের অজান্তে একটি বাস্তব ঘটনাকে আমি আমার কাল্পনিক জগতের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে চাই। আশা করি সকলের ভাল লাগবে।


ভয়ঙ্কর দুর্সাহস

pay-phone-1489568_1920.jpg

Image by mjtrimble from Pixabay


মিনু সবেমাত্র নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়া একটি কিশোরী মেয়ে। করোনার কারণে পড়াশোনা দু'বছর নষ্ট হয়ে যায়, না হলে এবার এসএসসি পাস করে তার কলেজ জীবনটা শুরু করতে পারত।

বাবা-মার আদরের একটি মেয়ে, তার বড় তিন ভাইয়ের মধ্যে দুজন কানাডাতে এবং একজন আমেরিকার নাগরিকত্ব পেয়ে সেখানে স্থায়ী ঠিকানা তৈরি করেছে। মিনু পড়াশোনাতে খুবই ভালো, বাবা মায়ের স্বপ্ন তাদের মেয়ে ও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবার জন্য বিদেশে যাবে। মেধা আছে বটে সকল শ্রেণীতে খুব ভালো রেজাল্ট করেই উত্তীর্ণ হয়ে আসছিল। বাবার রয়েছে অডেল টাকা পয়সা, কিন্তু মেয়ের ভালো পড়াশোনার জন্য কখনো কোথাও যেতে দেয় না, বন্ধুদের সাথে মিশতে ও দেয়না, অনেক শখ করে বাবা কে বলেছিল তার সব বান্ধবীদের ভালো এন্ড্রয়েড ফোনে রয়েছে।

আমি যদি দশম শ্রেণী ভালো রেজাল্ট করি, বাবা আমাকে একটা মোবাইল কিনে দিবে? উত্তরে বাবা বলেছিলেন আমি তোমাকে ফোন দিয়ে নষ্ট করতে চাই না, আজকাল ফোনের কারণে ছেলে মেয়েরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

মিনু যখন খুবই ছোট তখনই তার ভাইগুলো বিদেশযাত্রা করে। সে কখনো ভাইয়ের আদর উপলব্ধি করতে পারেনি, মোবাইলের স্ক্রিন গুলোতেই তাদের ভাইয়ের সাথে ভিডিও কলে কথা হয়েছে। মিনু কে সবসময় চোখে চোখে রাখে তার মা, মেয়ে যেন কোন ছেলের সাথে মিশতে না পারে কিংবা কোন ছেলের সাথে যেন কথা বলতে না পারে। এমনিতেই মিনু খুব শান্তশিষ্ট একটি মেয়ে। কখনো চোখ তুলে কোন ছেলের দিকে তাকায় নি, এতটুকু বাচ্চা মেয়ে এগুলো কি বোঝে?

সবেমাত্র কৈশোর জীবন শেষ করে যৌবনে পা দেবে , বাড়িতে বাবা এবং স্কুলের টিচার ছাড়া সে কখনো কোনো পুরুষ মানুষ দেখেনি, কিংবা তার সমবয়সী কাউকে সে বন্ধু হিসেবে পায়নি।

সবে মাত্র চার মাস হল তাকে প্রাইভেট পড়াতে আসে তারই মেজ ভাইয়ের বন্ধুর ছোট ভাই অর্ণব। অর্ণব এবার ভার্সিটির অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র, যেমন তার কণ্ঠস্বর ঠিক তেমনি সে স্মার্ট এবং সুদর্শন একটি ছেলে।


laptop-4248869_1920.jpg

Image by Gracini Studios from Pixabay


মিনুকে এতদিন প্রাইভেট পড়াতে আসতেন মহিলা টিচার, কিন্তু এখন তার একজন ভালো টিচার প্রয়োজন, তাই মেজ ভাইয়ের পরামর্শে পরিচিত একটি ছেলের কাছেই তার বোনকে পড়ানোর জন্য পরামর্শ দেয়,

বাবা-মা ও নিশ্চিন্তে সেই ছেলেটির কাছে তার মেয়েটিকে পড়ানোর জন্য রাজি হয়। অর্ণব সুদর্শন তাই ভার্সিটিতে তার অনেক সুনাম, স্কুল কলেজ কিংবা ভার্সিটি জীবনে তার প্রিয়সির সংখ্যা কম ছিলনা।

এতদিন পর মিনু প্রথমবার তাদের বাড়িতে অন্য কোন পুরুষ মানুষের অস্তিত্ব দেখে কিছুটা ইতস্ত বোধ করছে। তবে মাসখানেক পরানোর পর মিনুর মনে ইতস্ত বোধ কেটে যায় সে স্বাভাবিকভাবে অর্ণবকে গ্রহণ করতে পারে।

অর্ণব তাকে নিজের ছোট বোনের মত করেই পড়াশোনায় সাহায্য করতে থাকে। কয়েক মাস পরানোর পর মিনুর কেন যেন অর্ণবকে ভালোলাগা শুরু হয়, মিনু সব সময় অপেক্ষা করে কখন বিকেল চারটা বাজবে কখন ভাইয়া তাকে পড়াতে আসবে, এটি ভালোবাসা নাকি আকর্ষণ মিনু তা জানেনা, মিনু শুধু এতোটুকু জানে অর্ণব ভাইয়া তাকে পড়াতে আসলে বিকেলের ওই দেড় ঘন্টা তার অসম্ভব ভালো লাগে। অর্ণব কিছুটা আন্দাজ করতে পারলো কিন্তু পাত্তা দিল না, এই বয়সে মেয়েদের এরকম হয়েই থাকে, আর এরকম কত মেয়েই অর্নবের মেসেঞ্জার লিস্টে থাকে এগুলো দেখার সময় নেই।

এদিকে মিনু কিছুটা ভয়ে ভয়ে তার বাবার কাছে একটি মোবাইল কিনে দেয়ার আবদার করে, সেদিন বাবা তাকে খুব করে বকে ছিল, মেয়েটা কান্না করতে করতে সারারাত চোখের পানিতে বালিশ ভিজিয়ে ফেলেছিল। পরের দিন যখন ওর অর্ণব ভাইয়া পড়াতে আসলো, দেখলো তার ছাত্রী কান্না করে চোখ লাল করে ফেলেছে, অর্ণব ভাবল মেয়েটিই তার জন্য কষ্ট পাচ্ছে, তাই মিনুর সাথে সে কিছুটা বন্ধুসুলভ আচরণ শুরু করলো।

হঠাৎ করেই অর্ণব যখন তার সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ শুরু করলো, মিনু তার রাতের দুঃখের কথা ভুলে যায়, সে মুগ্ধ হয়ে অর্ণব ভাইয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।

মিনুর বেস্ট ফ্রেন্ড বলতে তার রুমের একটি টেডি বিয়ার ছিল, সব সময় সেই টেডি বিয়ারের সাথে খেলা করতো এবং মনের কথা বলতো, মিনু তার খেলার সাথী টেডি বিয়ার কে জিজ্ঞাসা করল, এই তুমি কি অর্ণবকে ভালোবাসো?

টেডি বিয়ার বলল হ্যাঁ আমি অর্ণব কে ভালবাসি। মিনু তখন বলল তুমি কেন ভালবাসবে অর্ণবকে ভালোবাসি তো আমি, তুমি সাধারন একটি পুতুল তোমার মধ্যে ভালোবাসা থাকতে পারে না, মিনুর মনের অজান্তেই এত দিনের খেলার সাথী পুতুলের সাথে তার ঝগড়া হয়ে যায়।


model-2333326_1920.jpg

Image by Engin Akyurt from Pixabay


মেয়েটা সত্যিই অবুঝ না হলে খেলনা পুতুলের সাথে কেউ রাগ করে? এদিকে মিনুর পরীক্ষা চলছে অর্ণব তাক অতিরিক্ত ৩০ মিনিট করে পড়াচ্ছে, এতে অর্ণব কিছুটা বিরক্ত হলেও মিনুর খুবই ভালো লাগছে, সে বারবার টেডি বিয়ারের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে, সে ভাবছে টেডি বিয়ার টি তাদের দুজনকে দেখে হিংসে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। মিনুর মনে জন্ম নিচ্ছে নতুন এক অনুভূতি। মিনু তার অজান্তেই তার কল্পনার জগতে স্বপ্ন সাজিয়ে ফেলছে অনেক বড় করে, সেই কল্পনার জগতে সম্পূর্ণটাই অর্ণব কে ঘিরে কিন্তু অর্ণব এ সকল বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানেনা। এদিকে মিনুর পরীক্ষা শেষ হল, অর্ণব তাকে এক সপ্তাহের ছুটি দিলো,

অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মিনু এক সপ্তাহের ছুটি পেল, প্রতিদিন ঘড়িতে যখন বিকেল চারটে তখন মিনুর মনটা খারাপ হয়ে যায়, অর্ণব ভাইয়াকে দেখার জন্য তাকে প্রতিদিন ২২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হতো, এখন তার ১৬৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে অর্ণব ভাইয়ার জন্য এই অপেক্ষার পর্ব মিনুর একদম সহ্য হচ্ছে না, এদিকে মিনু যে পরিমাণ কষ্ট পাচ্ছে ঘরে থাকা সেই টেডি বিয়ার টি ততোই খুশি হচ্ছে, টেডি বিয়ার ও মিনুর এতদিনের সম্পর্ক যেন এক নিমিষেই শেষ হয়ে যায়, মিনু এখন আর তার টেডি বিয়ার কে সহ্য করতে পারে না। দেখতে দেখতে সপ্তাহের দিনগুলো শেষ হয়ে গেল, আজ বিকেলে অর্ণব ভাইয়া আসবে মিনুর চোখে-মুখে আনন্দের সীমা নেই ………………………


আজ এ পর্যন্তই, আবার ফিরে আসবো নতুন আরেকটি পর্ব নিয়ে, সেই পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।




image.png



আমি কে?

আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।


@sajjadsohan (1).gif


image.png



logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


image.png

𝕋𝕙𝕒𝕟𝕜 𝕪𝕠𝕦 𝕖𝕧𝕖𝕣𝕪𝕠𝕟𝕖

115.png

Sort:  
 2 years ago 

যে মেয়ে কোনো ছেলের দিকে তাকাতে পারে না। সে এখন অর্নবের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনে। আসলে ভাই টেডিবিয়ার তো কথা বলতে পারে না। এখন আর টেডিবিয়ার কে সহ্য না হওয়ারই কথা। মিনু আগে মহিলা শিক্ষকের কাছে পড়তো তখন ছোট ছিলো এখন তো বড় হচ্ছে। 🤘 প্রাইভেই পড়ানোর মাধ্যমে রিলেশন হওয়ার গল্প ভালো লাগে। বেশি অপেক্ষা করতে পারবো না তারাতারি দ্বিতীয় পার্ট পোস্ট করবেন। গল্পতো কেবল শুরু হচ্ছে। ❣️❣️👌👌

 2 years ago 

খুব ভালো লাগলো মাত্র একজন পাঠক পেলাম, আমার ড্রইং গুলোতে কমেন্ট এর অভাব হয় না। কেন যেন আমার জেনারেল রাইটিং গুলো পড়তে চায় না । তবে গল্পটা চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য, ইনশাল্লাহ একজন পাঠক হলেও আমি এর পরবর্তী পার্ট গুলো নিয়ে আসবো।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 61680.81
ETH 3443.96
USDT 1.00
SBD 2.51