পচা মিয়ার স্পেশাল চা || লন্ডন বাজার
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
০৫ নভেম্বর, ২০২২ , শনিবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।আপনারা জানেন বেশ কয়েকদিন আগে আমি আমার বন্ধুর এলাকায় ঘুরতে গিয়েছিলাম ব্যস্ততার কারণে সেই অভিজ্ঞতাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়নি, আজকে তার একটি পার্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করব আশা করি ভালো লাগবে।
কিছুদিন আগে আমি শেয়ার করেছিলাম আপনাদের সাথে আমি আমার বন্ধুর বাসায় ঘুরতে গিয়েছিলাম, পূর্বে আমি আমার ট্রেন যাত্রা এবং সেখানে পৌঁছে রাতের বেলা বারবিকিউ পার্টি , অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলাম।
বেশ লম্বা একটা ব্রেকের পর আমি আমার সেই পূর্বের গাজীপুর ভ্রমণ এর কিছু স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি, ব্যস্ততার কারণে বেশ লম্বা একটি বিরতি পড়ে যায় আমার ভ্রমণ এই ঘটনার মধ্যে। এর মধ্যে বিভিন্ন জিনিস পোস্ট করলেও আমার ভ্রমণের পোস্টগুলো করা হয় নি। আমার ভ্রমণকাহিনীর সেই পোস্টগুলোর ধারাবাহিকতায় আজকের এই পোস্ট করা হচ্ছে।
আমার এই ঘটনাটা বেশ কয়েকদিন আগের, তখন ফেসবুকে একটা অদ্ভুত ধরনের নিউজ বেশ ভাইরাল হচ্ছিল, লন্ডন বাজার কিংবা পচা মিয়ার চা এই নামটা অনেকেই শুনেছেন সেই সময়।
নামগুলো মনে না থাকলেও হয়তো আপনাদের মনে থাকতে পারে সেই নিউজটির কথা, সেখানে বলা হয়েছিল এক অদ্ভুত ধরনের চা বিক্রেতার কথা, সে চা বিক্রেতা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চায়ের দোকান খোলা রাখে, একজন মানুষকে কেবলমাত্র এক কাপ চা দেয়া হয়, সে লাখ টাকা দিলেও তাকে দ্বিতীয় কাপ চা আর দেয়া হয় না।
বিশেষ দ্রষ্টব্য দিয়ে সেই কথাটাই লেখা আছে সেখানে, একজন মানুষ কেবল একবারই চা পাবেন দ্বিতীয় বার তাকে চা দেয়া হবে না।
আমরা সেই চাচার কাছে জানতে চেয়েছিলাম এই ঘটনার কারণ কি, সে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হচ্ছিল না, আমরা তার নাতির সাথে কথা বললাম, তার কাছেও রহস্য তার দাদা কেন এমনটা করে আসছেন বহুকাল থেকে, তার নাতি শুধু এতোটুকু বলতে পারলো তার দাদার একজন গুরু ছিল এবং সে বলেছিল এরকম অদ্ভুত শর্তের কথা।
মজার বিষয় হলো পোস্টে লোকেশন শেয়ার করার জন্য সার্চ করলাম শুধুমাত্র লন্ডন বাজার লেখার সাথে সাথেই সে চায়ের দোকানের লোকেশন টাই চলে আসলো, লন্ডন বাজার এই জায়গাটা চায়ের দোকানের জন্য বিখ্যাত হয়ে যায় আরো তিন চার মাস আগে, অনেক মানুষ এখানে এসেছিল শুধুমাত্র তার চা খাওয়ার জন্য। আমরা যেহেতু সেই এলাকায় গিয়েছিলাম তাই তার দোকানের চা খেতে চলে আসলাম।
অনেক মানুষ ভেবেছে আমরা গাজীপুরের অনেক দূর দূরান্ত থেকে এসেছি এখানে, তারপর যখন জানতে পারল আমরা ঢাকা থেকে এরকম প্রত্যন্ত এলাকায় এসেছি এই চাচার চা খেতে, অনেকেই খুশি হলো এবং চাচা কে বলল তাদেরকে ফ্রি চা খাওয়ান তারা অনেক দূর থেকে এসেছে, সে এলাকার মানুষেরা বেশ মিশুক আমাদের সাথে বেশ অনেকক্ষণ গল্প করল।
এখানে যে পরিমাণ দুধ রয়েছে এটাই হচ্ছে তার চায়ের একদিনের বিক্রি করার মতো পরিমাণ, দুধের এই পাত্রটি যখন খালি হয়ে যাবে সেই দিনের জন্য তার চা বিক্রি করা বন্ধ, কোনোভাবেই সে দ্বিতীয়বার চুলায় আগুন ধরাবে না।
দোকানদার চাচার নাতি আমাদের কাছে চা নিয়ে আসলো, যেহেতু আমাদের বয়সী তিনি আমরা তার সাথে একটু মজা করলাম, তাকে আমরা বললাম আমরা যদি ঘণ্টাখানেক পর আবার এখানে আসি আমাদেরকে কি চা দেয়া হবে।
তিনি বলল না দেয়া হবে না, শুধুমাত্র চা খাবার সময় যদি চায়ের পাত্র মাটিতে পড়ে যায় কিংবা সেই মানুষটি খেতে না পারে তাহলে তাকে আর এক কাপ চা দেয়া যেতে পারে। তাকে আমরা বললাম যদি ঘণ্টাখানেক পর আবার আসি তাহলে আপনারা চিনবেন কিভাবে? আমরা মজা করলেও দেখলাম সে বিষয়টি নিয়ে খুবই সিরিয়াস তাই আমরা আর কথা বাড়ালাম না।
আমি যদি চায়ের গুণের কথা বলি আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে এখানে দুধের পরিমাণ টা একটু বেশি। অন্যসব দোকানে যেখানে চা তৈরি করা হয় এবং দুধ পরবর্তীতে দেয়া হয়, আমার মনে হয় এ দোকানে দুধের মধ্যে অল্প একটু চা দেয়া হয়, অর্থাৎ পরবর্তীতে চা যোগ করা হয় দুধের পরিমাণটা বেশি।
অন্য দোকানের চা থেকে এই দোকানের চা শুধু এতোটুকুই পার্থক্য বলে আমার মনে হয়েছে। যেহেতু আমি দুধ চা খুব একটা পছন্দ করি না আমি সবসময় রং চা খাই তাই আমার কাছে স্বাভাবিক লেগেছে শুধুমাত্র দুধের পরিমাণ টা ছাড়া।
আমরা খুব একটা সময় সেখানে নষ্ট করলাম না প্রচন্ড গরম ছিল, দোকানের পাশেই একটি টিউবয়েল ছিল, আমরা হাত মুখ ধুয়ে একটু হাঁটতেই দেখলাম সেই দোকানটি থেকে খানিকটা দূরেই এরকম নদী দেখা যায়। যেহেতু আমাদের সময় কম ছিল আমরা সেখান থেকে আবার রিকশায় করে আমাদের গন্তব্য স্থানে যাওয়ার জন্য রওনা করলাম।
আজকে এ পর্যন্তই আবার দেখা হবে আপনাদের সাথে নতুন আরেকটি পোস্টে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন।
ফটোগ্রাফার | @sajjadsohan |
---|---|
লোকেশন | https://w3w.co/homemaking.shredder.sandwiches |
ডিভাইস | Xiaomi Redmi Note 10 Pro Max |
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
বাহ্ পঁচা মিয়ার চা দেখি বেশ বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। আবার বেশ টাইম শিডিউল করা এবং এক কাপ চায়ের উপর আবার দেয় না। তবে বলছিলেন চায়ে দুধের পরিমাণ বেশি দিয়েছে। আমার মনে হয় ঐ দুধের স্বাদের জন্য মানুষ মনে হয় বেশি যায়। ধন্যবাদ ভাই চমৎকার ভ্রমণ কাহিনী এবং চায়ের বিষয়টি উপস্থাপন করার জন্য।
হঠাৎ করেই তার চা ফেসবুকে ইউটিউবে ভাইরাল হয়ে যায়, আমরা যেহেতু সেই এলাকায় ভ্রমণ করতে গিয়েছিলাম হঠাৎ করেই তার দোকান টা দেখে মনে পড়ল এটাই তো সেই ভাইরাল চায়ের দোকান। তারপর আমরা চা খেলাম ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
প্রথমেই টাইটেলটা দেখে এক অদ্ভুত মনে হল।লন্ডনে আবার পচা মিয়ার চা এটা কোন ধরনের কথা! তাই বিতলের বডিতে গেলাম।পড়ে যা বুঝতে পারলাম এক মজার ঘটনা।বাঁচা গেল এটা তো আবার লন্ডনে নয় বাংলাদেশের লন্ডন বাজার।তবে পচা মিয়ার চা দেখে বোঝা যাচ্ছে চা খেতে অনেক সুস্বাদু হবে।অনেক মজার একটি গল্প শেয়ার করেছেন।ধন্যবাদ অসংখ্য।
আপনার মন্তব্য পড়ে আমি বেশ মজা পেলাম, এটি মূলত একটি এলাকার নাম লন্ডন বাজার, সেখানে যে চা বিক্রেতার নাম পচা মিয়।
সত্যি অসাধারণ এক চা বিক্রেতা যা কেনা বেচার শর্ত সাপেক্ষ বিষয়টি আমার কাছে আসলে জটিল মনে হচ্ছে ৷ আসলে দিনে একবার চা খেলে আবার দ্বিতীয় বার চা খেতে পারবে না ৷ চার বিক্রেতার গুরুর আদেশ সবই বুঝলাম ৷ কিন্তু সে তো একটা ব্যবসা করে সেখানে মানুষ আসবে খাবে এটাই স্বাভাবিক ৷ কিন্তু যাই হোক এক নতুন নিয়ম দেখলাম৷ কিন্তু কেন সেটা জানতে পারেন নি তাহলে ৷
যা হোক অনেক ভালো লাগলো ব্লগটি পড়ে ৷
হয়তোবা তার এরকম বিভিন্ন রকমের শর্তের জন্যই এত বিখ্যাত হয়েছেন তিনি, তার এই ব্যবহারের কারণেই এত এত মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে চলে আসা তার চা খাওয়ার জন্য।
ফেসবুক এবং টিভি নিউজ এ দেখেছিলাম পচা মিয়াকে নিয়ে। নিয়মটা অদ্ভুদ। একজন একদিনে এক কাপ চা খেতে পারবে। এর বেশিনা। তবে আমি যদি একবার মাস্ক পরে আরেকবার মাস্ক ছাড়া যাই তাহলে চিনবে কি করে। হেহেহে। চায়ের দাম কত ছিলো বন্ধু?
ইউটিউবে দেখেছিলাম এর মূল্য ছিল ২০ টাকা তবে আমরা যখন চা খেয়েছিলাম মূল্য রেখেছিল ৩০ টাকা। একটুও দাম কম করিনি।