দীর্ঘদিন পর ভোরের নির্মল পরিবেশে হাঁটাহাঁটি করা।
স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে ডাক্তার আমাকে বলেছিলো প্রতিদিন অন্তত ৪০ থেকে ৫০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করতে। ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক আমি হাঁটাহাঁটি শুরুও করেছিলাম। কিন্তু সমস্যা হল আমি কখনোই এই হাঁটাহাঁটি রেগুলার করতে পারিনা। দেখা গেলো কিছুদিন রেগুলার হাঁটাহাঁটি করলাম। তারপর আবার কিছুদিন ঘরেই বসে রইলাম। কিন্তু হাঁটাহাঁটির সুফল পেতে হলে আপনাকে রেগুলার হাঁটাহাঁটি করতে হবে। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন না হলে এটার সুফল আপনি পাবেন না। গত মাসের শেষের দিকে চিন্তা করছিলাম হাটাহাটি শুরু করতে হবে। তবে এই মাসের ১ তারিখে এসে হোলো আমার জ্বর। সেই জ্বর একদিনে সেরে গেলেও জ্বরের কারণে দুর্বলতা রইলো বেশ কয়েকদিন। যখন দুর্বলতা কিছুটা কাটিয়ে উঠলাম তখন শুরু হোলো বৃষ্টি।
প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হতে লাগলো। এই কারণে আমার হাঁটার পরিকল্পনা পেছাতে থাকলো। তবে গত বেশ কিছুদিন ধরেই হাঁটাহাঁটি শুরু করার পরিকল্পনা করছিলাম। কিন্তু একা একা হাঁটতেও খুব একটা ভালো লাগে না। যদি সাথে একজন সঙ্গী পেতাম হাঁটার জন্য তাহলে আমার জন্য অনেক সুবিধা হোতো। গতকাল বিকালের দিকে যখন নামাজ পড়ে বাসায় ফিরছি। তখন বন্ধু রুবেলের সাথে দেখা হোলো। ও বললো ও হাটাহাটি শুরু করবে। আমি হেসে বললাম তোর এরকম পরিকল্পনা আমি অনেকবার শুনেছি। কিন্তু তোকে কখনো হাটতে বের হতে দেখিনি। তখন সে আমাকে বললো পরদিন সকালে আমরা দুজন হাঁটতে বের হবো। ও সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাকে ফোন দেবে। তারপর আমরা দুজন একসাথে হাঁটতে বের হবো। আমি বললাম এরকম কথা তো এর আগেও অনেকবার বলেছিস। ঠিক আছে দেখা যাক কাল সকালে কি হয়?
আমি সকালে ফজরের নামাজ পড়ে বাসায় এসে ওর ফোনের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। এদিকে প্রায় ছয়টা বেজে যায় কিন্তুু ওর তরফ থেকে কোন সারা শব্দ নেই। ঠিক ছটার সময় আমি ওকে ফোন দিলাম। কিন্তু যথারীতি ফোনে ওকে পেলাম না। বুঝতে পারলাম ও ঘুম থেকে উঠতে পারবে না। তাই তৈরি হয়ে আমি নিজেই হাঁটতে বের হয়ে গেলাম। অনেকদিন পর হাঁটতে বের হয়ে বেশ ভালোই লাগছিলো। বাসা থেকে বের হয়ে পরিকল্পনা করলাম যেহেতু অনেকদিন পর আজ হাঁটতে বের হয়েছি। তাই আজ আধাঘন্টা হাটাহাটি করবো। আমি সোজা রেলস্টেশনের দিকে হাঁটতে লাগলাম। কারণ গতকাল শুনেছিলাম ফরিদপুরের উপর দিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় একটা ট্রেন গিয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে। ঘটনা কতটুকু সত্য সেটা যাচাই করার জন্যই রেলস্টেশনে গিয়েছিলাম। কারণ ট্রেন জার্নি করতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। ট্রেনে করে ফরিদপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার স্বপ্ন আমাদের অনেকদিনের। সেই স্বপ্ন এখন প্রায় পূরণের পথে। সেই কারণেই আজ সকালে হাঁটতে হাঁটতে রেল স্টেশনে গিয়েছিলাম।
সেখানে গিয়ে কাউন্টারে কাউকে না পেয়ে পাশের এক দোকানদারকে কথাটা জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন তিনিও শুনেছেন কিন্তু নিজের চোখে দেখেননি। তারপর আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম আগামী মাস থেকে নাকি ফরিদপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত ট্রেনে যাওয়া যাবে? তিনি বললেন এটা তো অনেকদিন থেকে শুনছি। এখন দেখা যাক সত্যি হয় কিনা। আমি আর তার সাথে কথা না বাড়িয়ে চলে এলাম রেলস্টেশনের পাশের একটি বাজারে। সেখানে আমি ঘুরে ফিরে দেখতে লাগলাম কি কি উঠেছে। তবে আমি যখন সেই বাজারে পৌঁছেছি তখনও সেখানকার বিক্রেতারা এসে উপস্থিত হয়নি। তাই তেমন কিছু সেখানে দেখতে পেলাম না। যাইহোক ঘুরেফিরে যখন বাজার থেকে চলে আসছি তখন দেখলাম এক লোক কিছু দেশি ফল নিয়ে বসে আছে। আমি তার কাছ থেকে দুটো জাম্বুরা কিনে বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলাম।
হাঁটতে হাঁটতে প্রায় বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছি এমন সময় হঠাৎ করে সামনে তাকিয়ে দেখি রাস্তার পাশ দিয়ে একটি হনুমান হেঁটে যাচ্ছে। হনুমানকে সাধারণত রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করতে কম দেখা যায়।এরা সাধারণত গাছে বা বাড়ির ছাদে থাকতে পছন্দ করে। কিন্তু এই হনুমানটিকে দেখলাম সে চুপচাপ রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। হঠাৎ করে ভোর বেলায় হনুমান দেখতে পেয়ে সেটার ঝটপট কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। ঘটনাটা দেখে আমার বেশ ভালই লাগলো। তারপর ছবি তোলা শেষ হলে আমি বাসায় ঢুকে পড়লাম। বাসায় ঢুকে দেখি আমার মেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠেছে। তার কাছে হনুমানের গল্প করতে সে খুব মজা পেলো। এভাবেই আজকের সকালের হাঁটাহাঁটি পর্ব শেষ হোলো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সকালে হাঁটাহাঁটি করা খুব ভালো। এতে উপকার হয় দুটো, এক সারাটাদিন আপনার ভালো কাটবে আর ওজন অনেকটা ই কমে যাবে। আমি সপ্তাহে পাঁচদিনই নিয়মিত হাঁটি।বাকি দুদিন ছেলের স্কুল বন্ধ। তাই আর বের হওয়া হয় না।আপনার মতো আমারও ট্রেনের জার্নি ভীষণ পছন্দ। আপনি কাউকে না পেয়ে একাই হাঁটলেন এটা ভালো ই হলো।আসলে একা হাঁটাই ভালো। কেউ পাশে থাকলে গল্প করতে করতে হাঁটা ঠিক হয় না।আস্তে আস্তে হাঁটার স্প্রিড বাড়াতে হয়।যাক বাসার সামনে এসে হনুমানকে দেখে ফটোগ্রাফি করে নিয়েছেন।মেয়ে দেখে নিশ্চয়ই খুব খুশি হয়েছে।অনেক ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
রোজ সকালে হাঁটাহাঁটি করা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমিও বেশ কয়েকদিন ধরে ভাবছি সকালে হাঁটতে বের হবো। আমারও বেশ কয়েকজন বন্ধু আছে, যারা ঠিকই বলে হাঁটতে যাবে। তবে সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারে না। কারো আশা না করে একা একা হাঁটতে যাওয়া ই ভালো। হনুমানের ফটোগ্রাফি দেখে খুব ভালো লাগলো ভাই। নির্মল পরিবেশে হাঁটাহাঁটি করে দারুণ সময় কাটিয়েছেন ভাই। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাই কিছু মনে করবেন না আপনার প্রথমের দিকের কথাটা শুনে বেশ হাসি পেয়েছিল। আর সেটা হলো, ডাক্তার আপনাকে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট হাটাহাটি করতে বলেছে কিন্তু আপনি সেটা নিয়মিত করতে পারছেন না। তবে এই হাঁটাহাঁটি করার জন্য মানসিক মনোবল দরকার হয়। আপনার ইচ্ছা থাকলেও বেশ কয়েকটি বাধা আপনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। যেমন মাসের প্রথম দিকে আপনার জ্বর এসেছে, আবার প্রতিনিয়ত বৃষ্টি হচ্ছে সব মিলিয়ে ভালো রকম বাধাই পেয়েছেন। যাইহোক সুযোগ পেয়ে আজকে অনেকদিন পরে হাটাহাটি করেছেন এবং ফরিদপুরের পদ্মা সেতুর উপরে পরীক্ষামূলক ট্রেন গেছে সেটা দেখার উদ্দেশ্যে আপনি গিয়েছিলেন। বাড়িতে ফেরার পথে হনুমান দেখছিলেন এবং সেটার ফটোগ্রাফি করেছেন। সবমিলিয়ে আজকে জার্নিটা বেশ ভালই হয়েছে আপনার।
স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকলে প্রতিনিয়ত সকালে হাঁটাহাঁটি করলে শরীর ভালো থাকবে। অনেকদিন পর হাঁটতে বেরিয়েছেন এই অনুভূতিটাই অন্যরকম। সকালের আবহাওয়াটা সত্যিই শরীরের জন্য অনেক উপযোগী পারফেক্ট। এরকম আমাদের অনেক বন্ধু আছে সকালে হাটাহাটির কথা দিয়ে দেখা গেছে সকালে ঘুম থেকে উঠে না। হনুমান এখন সভ্য হয়ে গিয়েছে তারা এভাবেই এখন চলাচল করে সবকিছুই চেঞ্জ।
ভাইয়া ডাক্তার বলেছে আপনাকে সকালে হাটতে। কিন্তু এর আগেও একটি পোস্টে দেখলাম আপনি হাটতে গেলেই যতসব বাধা বিপত্তি। শুনে কেমন যেন রাগ উঠে গেল। আমি তো মনে করি ডাক্তার যখন হাটতে বলেছে তখন হাটতেই হবে। কোন ভাবেই থেমে থাকলে হবে না। দেহ ভালো তো সব ভালো। আর সকাল বেলা হাটিহাটি করলে সারাটিক্ষন যেমন মনটা ভালো থাকে তেমন দেহটাও ভালো থাকে।
দুজন হাঁটতে যাবার কথা থাকলেও যখন আপনি একা একাই যেতে বাধ্য হলেন তারপরও বিষয়টা আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। কারণ সকালে হাঁটার এই অভ্যাসটা আমাদের সকলের করা উচিত। এখন দেখছি সব এলাকাতেই রাস্তায় রাস্তায় হনুমান বেড়াতে শুরু করে দিয়েছে। এইতো কিছুক্ষণ আগে আমিও আমাদের গ্রামের রাস্তায় একটা হনুমান দেখতে পেলাম।