পাস্তা ক্লাবে খাওয়া-দাওয়ার অভিজ্ঞতা।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন আমি খেতে অনেক ভালোবাসি। আপনারা জানেন ঢাকা শহর আমার একেবারেই পছন্দ না। তারপরেও এই শহরের যে কয়েকটি জিনিস আমার কাছে ভালো লাগে তার ভেতর অন্যতম হচ্ছে এই শহরের বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্য সম্ভার। বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবারের জন্য ঢাকা শহরের কোন তুলনা নেই। তবে আমি যখনই ঢাকা আসি বেশিরভাগ সময়ই বিরিয়ানি কাবাব এই ধরনের খাবার বেশি খাওয়া হয়। সেই সাথে বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড। তবে এবার ঢাকা আসার পরে চিন্তা করছিলাম একদিন এখানকার চাইনিজ রেস্টুরেন্ট কিছু খাবার খেয়ে দেখতে হবে।

IMG_20230314_200334.jpg

আমি ঢাকায় গিয়ে বনশ্রী থাকি। এই এলাকাটি আমার কাছে বেশ পছন্দের। কারণ এখানকার রাস্তাঘাট বেশ ভালো। ঢাকার পুরাতন এলাকাগুলোর মত ঘিঞ্জি নয়। তাছাড়া এই এলাকাতে মানুষের জন্য সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। স্কুল, মসজিদ, কলেজ, শপিং করার জায়গা, রেস্টুরেন্ট, বাজার সবই রয়েছে বনশ্রীর ভেতরে। যার ফলে কোন কিছু খাওয়ার ইচ্ছা হলে আমার বনশ্রী থেকে বাইরে যাওয়া লাগে না। কয়েকদিন আগে আমি সন্ধ্যার পরে বনশ্রীর বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে হাটাহাটি করছিলাম। এর ভেতরে পাস্তা ক্লাব নামে একটি রেস্টুরেন্ট আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করলো। নাম থেকে বোঝা যাচ্ছিল এই রেস্টুরেন্টটি তাদের পাস্তার জন্য বিখ্যাত। তবে সেই রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন রকম চাইনিজ সেট মেনুর ব্যবস্থাও ছিল।

IMG_20230314_194355.jpg

IMG_20230314_194242.jpg

আমি কয়েকদিন থেকেই চিন্তা করছিলাম এই রেস্টুরেন্ট থেকে খেতে পারলে খারাপ হোতো না। আসার আগের দিন সন্ধ্যার সময় হালকা ক্ষুধা লেগেছিল। তখন চিন্তা করলাম বাইরে থেকে একটু হাঁটাহাঁটি করে আসি। সাথে কিছু হালকা খাওয়া-দাওয়া করা যাবে। যাই হোক সেই পরিকল্পনা মোতাবেক বাসা থেকে বের হলাম। বের হয়ে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটির পর ক্ষুধা আরো বেড়ে গেলো। তখন সোজা রওনা দিলাম পাস্তা ক্লাবের উদ্দেশ্যে। রেস্টুরেন্টের অবস্থান একটি বিল্ডিং এর দোতালায়। সিঁড়ি দিয়ে সোজা রেস্টুরেন্টে উঠে গেলাম। উঠে একদম সামনে পড়লো রেস্টুরেন্টটির কাউন্টার। সিঁড়িতে ওঠার পরে ডানে বামে দুই পাশেই গেস্টদের বসার ব্যবস্থা রয়েছে।

IMG_20230314_194250.jpg

IMG_20230314_194232.jpg

সুবিধা মতো একটি জায়গা দেখে বসে পড়লাম আমি। যেখানে বসেছিলাম সেখান থেকে রাস্তাটা একদম পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিলো। রেস্টুরেন্টের ইন্টেরিয়র দেখলাম বেশ সুন্দর করে সাজানো গোছানো। সেখানে বাচ্চাদের জন্য আলাদা খেলার ব্যবস্থাও আছে। রেস্টুরেন্টটি যদিও খুব একটা বড় না। তারপরেও একেবারে ছোটও বলা যায় না। আমি বসার পরে ইশারায় একজন ওয়েটারকে ডাকলাম। ওয়েটার আমার কাছে এলে আমি তার কাছে মেনু কার্ড চাইলাম। বেশ কিছুক্ষণ মেনু কার্ড দেখার পরে আমি একটি সেট মেনু বাছাই করলাম। সেই সেট মেনুতে ছিল চিকেন স্টেক, ফ্রাইড রাইস, চাইনিজ ভেজিটেবল, থাই চিকেন কারি আর সাথে ব্লু লেমন মকটেল। আমি খাবার অর্ডার করার পরে ওয়েটারের কাছে জানতে চাইলাম খাবার পরিবেশন করতে কতটা সময় লাগবে। ওয়েটার আমাকে জানালো সর্বোচ্চ ১০ মিনিট সময় লাগবে। শুনে কিছুটা স্বস্তি পেলাম। কারন এই ধরনের খাবার পরিবেশন করতে বেশিরভাগ রেস্টুরেন্টেই ২০-২৫ মিনিট সময় লাগায়।

IMG_20230314_195011.jpg

যাই হোক আমি অর্ডার দেয়ার পর বসে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আর আমার বসার জায়গা থেকে রাস্তাঘাটের দিকে দেখছিলাম। যাই হোক এভাবে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তারা আমার টেবিলে খাবার পরিবেশন করলো। তবে আমি খেয়াল করে দেখলাম খাবার পরিবেশন করলেও সাথে ড্রিঙ্কসটা তারা তখনও দেয়নি। তখন আমি ওয়েটারকে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম ড্রিঙ্কসটা কোথায়? তখন রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার এসে আমাকে জানালো ওয়েটার একটি ভুল করে ফেলেছে। এই ড্রিঙ্কসটা এখন তাদের কাছে এভেলেবেল নাই। এর বিনিময়ে আমি অন্য কোন ড্রিঙ্কস নিতে পারি। তারা আমাকে সেভেন আপ,কোক এগুলি অফার করলো। কথাটা শুনে আমার মেজাজ কিছুটা খারাপ হলো। কারণ এই সেট মেনুর সাথে যে ব্লু লেমোনেড ছিল সেটা আমি আলাদা করে অর্ডার করতে গেলে দাম পড়বে ১০০ টাকার ওপরে। এখন সেটা তারা আমাকে না দিয়ে তার বিনিময়ে ২০ টাকার কোল্ড্রিংস অফার করছে।

IMG_20230314_194235.jpg

আমি তখন তাদের কাছে জানতে চাইলাম আপনাদের কাছে ভার্জিন মোহিতো আছে কিনা? তখন তারা জানালো আছে। আমি তখন বললাম তাহলে সেটাই দিন। দু মিনিট পরে আমার টেবিলে ছোট্ট একটি গ্লাসে করে একটু সেভেনআপ নিয়ে এলো। যার ভেতর দু তিন স্লাইস লেবু আর একটু ধনিয়া পাতা দেয়া ছিল। ড্রিঙ্কস টি দেখে আমার খুবই হতাশ হলাম। কারণ আমি এর আগে যতবারই ভার্জিন মোহিতো খেয়েছি ততবারই আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। কিন্তু আজকে এরা আমার সাথে রীতিমতো প্রতারণা করল। এই ব্যাপারটি আমার কাছে বেশ খারাপ লাগলো। যাইহোক বুঝতে পারলাম এ নিয়ে কথা বাড়িয়ে লাভ হবে না। আমি খাবার খাওয়ার দিকে মনোযোগ দিলাম। অবশ্য তাদের খাবারের টেস্ট ছিল যথেষ্ট ভালো। বিশেষ করে চিকেন স্টেকটা অত্যন্ত মজাদার ছিল। আমি মোটামুটি তাড়াতাড়ি করে খাওয়া দাওয়া শেষ করে বিলমিটিয়ে বেরিয়ে এলাম। এসব রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়ার পরে আমি সাধারণত টিপস দিয়ে থাকি। তবে এদের ব্যবহারে মেজাজ এতটাই খারাপ ছিল যে আমি কোন টিপস না দিয়ে চলে এসেছিলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানবনশ্রী, ঢাকা

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

প্রথমে ভেবেছিলাম তাদের রেস্টুরেন্টের সার্ভিস অনেক ভালো। অল্প সময়ের মধ্যে খাবার সার্ভ করেছে। কিন্তু শেষে এসে প্রতারণা করে ফেলল। আসলে তারা হয়তো ইচ্ছে করেই সেট মেনুর সাথে ব্লু লেমোনেড দিয়েছিল। কিন্তু যখন কেউ অর্ডার করে ফেলে তখন ২০ টাকার সেভেন আপ ধরিয়ে দেয়। আসলে তারা সব জায়গাতে ব্যবসার চিন্তা করে। ভিন্ন ধরনের একটি অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পারলাম ভাইয়া।

 last year 

আসলেই ভাইয়া বনশ্রীর পরিবেশটা ঢাকার অন্যান্য জায়গা থেকে বেশ সুন্দর। কয়েকদিন আগে আমিও বনশ্রীতে গিয়ে অনেকটা সময় কাটিয়েছিলাম। যাইহোক রেস্টুরেন্টের ডেকোরেশন বেশ ভালোই মনে হচ্ছে। ছবি দেখে বুঝা যাচ্ছে তাদের খাবারের মানও বেশ ভালো। তবে অনেক রেস্টুরেন্টে এরকম করে এক ড্রিংকসের বদলে অন্য ড্রিংকস দিতে চায়, যা মোটেই কাম্য নয়। অর্ডার নেওয়ার আগে এই বিষয়টি পরিষ্কার করা উচিত ছিল। যাক ভাইয়া বেশ ভালোই খাওয়া দাওয়া করলেন। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন সব সময়।

Coin Marketplace

STEEM 0.29
TRX 0.12
JST 0.034
BTC 63094.38
ETH 3148.11
USDT 1.00
SBD 3.88