প্রচন্ড ঠান্ডায় পরিবার নিয়ে বাইরে খাওয়া-দাওয়ার অভিজ্ঞতা।

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago (edited)

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন আমি একজন ভোজন রসিক মানুষ। আমি খেতে বেশ পছন্দ করি। আর খাবারটা যদি হয় রেস্টুরেন্টের খাবার তাহলে তো কোন কথাই নেই। আমার পরিবারের সদস্যরাও একই রকম। তারাও রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করতে খুব পছন্দ করে। সেজন্য আমি প্রতি মাসেই চেষ্টা করি পরিবার নিয়ে বাইরে খাওয়া দাওয়া করতে। তবে এই মাসে এখন পর্যন্ত একদিনও রেস্টুরেন্টে যাওয়া হয়নি খাওয়া দাওয়া করার জন্য। তাই গতকালকে আমি আর আমার স্ত্রী ঠিক করেছিলাম গতকাল আমরা বাইরে খেতে যাবো। কিন্তু পরে চিন্তা ভাবনা করে দেখলাম পরদিন শুক্রবার। শুক্রবার দুপুরের খাবারটা আবার ভালো না হলে আমার কাছে ভালো লাগে না। সেই কারণে পরে চিন্তা ভাবনা করে ঠিক করলাম আমরা শুক্রবারে দুপুরের খাওয়াটা বাইরে খাবো। তাই গতকালকে থেকেই মনে মনে চিন্তা করে রেখেছিলাম আজকের দুপুরের খাওয়াটা বাইরে খাওয়ার জন্য।

IMG_20240112_185434.jpg

কিন্তু গতকাল সন্ধ্যার একটু আগ থেকে হঠাৎ করে আমার শরীরটা বেশ খারাপ হয়ে পড়ে। বুকের ডান পাশে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করতে থাকি। প্রথমে কিছুটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমার এক ফুফাতো ভাই আছে যে পেশায় একজন ডাক্তার। তার সাথে ফোনে কথা বলে কিছুটা আশ্বস্ত হই। যদিও গতকাল সারারাত ধরে বেশ ব্যথা ছিলো। প্রচণ্ড ব্যথা থাকার কারণে গতকালকের হ্যাংআউটেও অংশ নিতে পারিনি। তবে আজকে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরই লক্ষ্য করে দেখলাম ব্যথাটা বেশ কমে গিয়েছে। যদিও একটু নাড়াচাড়া করলেই কিছুটা ব্যথা টের পাচ্ছিলাম। আপনারা জানেন শরীর ভালো না থাকলে মানুষের কাছে কোন কিছুই ভালো লাগেনা। সে কারণে চিন্তা করেছিলাম আজকে আর বাইরে খেতে যাবো না। কিন্তু মেয়েকে গতকালকেই বলে রেখেছিলাম আজকে দুপুরে বাইরে খাওয়ার কথা। তাই যখনই তাকে বললাম যে আজকে বাইরে খেতে যাওয়ার দরকার নেই। তখনই সে জিদ ধরলো আজকে সে বাইরে খেতে যাবেই।


IMG_20240112_185455.jpg

আমার শরীরটা ভালো না থাকার কারণে আমার একেবারেই যেতে ইচ্ছা করছিল না। তাই আমি আমার স্ত্রীকে বলেছিলাম মেয়েকে নিয়ে কোন একটা রেস্টুরেন্ট থেকে খেয়ে আসতে। কিন্তু সে আমাকে ছাড়া যেতে রাজি হচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত মেয়ের জিদের কাছে পরাজিত হয়ে ঠিক করলাম যত কষ্টই হোক দুপুরে বাইরে থেকে খেয়ে আসবো। অবশ্য দুপুর নাগাদ শরীর কিছুটা ভালো হয়েছিলো। যাই হোক আমি তাদেরকে আগেই বলে রেখেছিলাম আমি যখন জুম্মার নামাজ পড়তে যাবো তখন আমি ফেরার আগেই তোমরা রেডি হয়ে থাকবে। আমি বাসায় পৌঁছে কাপড়চোপড় পাল্টে তোমাদেরকে নিয়ে রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দেবো। আমি এসে দেখি তারা রেডি হয়ে বসে রয়েছে। কোথায় এবং কি খাবো সেটা আগে থেকেই আমরা ঠিক করে রেখেছিলাম। তাই বাসা থেকে বের হয়ে আমরা সরাসরি আমাদের কাঙ্খিত রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।


IMG_20240112_185507.jpg

বাইরে বের হয়ে যখন রিক্সায় উঠেছি তখন দেখি প্রচন্ড ঠান্ডায় হাত-পা জমে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে লোকজন প্রায় নেই বললেই চলে। আমরা যখন রেস্টুরেন্টে পৌঁছলাম সেখানে প্রবেশ করে দেখিআমরা ছাড়া আর মাত্র তিনজন কাস্টমার সেখানে রয়েছে। যাই হোক আমরা একটি টেবিলে বসে পূর্ব নির্ধারিত খাবার অর্ডার করলাম। আমরা অর্ডার করেছিলাম একটি সেট ম্যেনু। ম্যেনুতে ছিলো থাই সুপ সাথে অন্থন। আর ছিলো ফ্রাইড রাইস চিকেন কারি আর ফ্রাইড চিকেন। আমার এমনিতেই অভ্যাস হচ্ছে দুপুরে নামাজ পড়ে এসেই খেতে বসা। কিন্তু রেস্টুরেন্টে বসে খাবার অর্ডার দিয়ে চিন্তা করছিলাম খাবার পরিবেশন করতে কত সময় লাগাবে? কারণ ততক্ষণে আমার বেশ ক্ষুধা লেগে গিয়েছিলো। আমরা বসে আলোচনা করছিলাম অন্তত থাই স্যুপটা যদি আগে দিয়ে যেতো তাহলে আমরা সুপ খেতে খেতে কিছুটা সময় কাটাতে পারতাম। এ কথা আলোচনা করতে করতেই ওয়েটার আমাদের সামনে থাই সুপ আর অন্থন দিয়ে গেলো। প্রচন্ড এই শীতের ভেতরে গরম গরম সুপে চুমু দিতেই ভেতরটা বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠলো। সেই সাথে ক্রিসপি অন্থনটাও বেশ মজা লাগছিলো।


IMG_20240112_185531.jpg

সেটা খাওয়ার পরে আমরা চিন্তা করতে লাগলাম এখন খাবার কিছুটা পরে পরিবেশন করলেও সমস্যা হবে না। যদিও সুপ শেষ করার কিছুক্ষণের ভেতরে আমাদের সামনে বাকি খাবার গুলো দিয়ে গেলো। খাবার দেখে আমার কাছে মনে হল পূর্ণ বয়স্ক একজন মানুষের জন্য খাবার কিছুটা কম। যাই হোক তারপরেও খাবারটা খাওয়া শুরু করলাম। তবে খাবারটা খেয়ে আমাদের খুব একটা বেশি ভালো লাগেনি। আমরা তখন আলোচনা করছিলাম এর থেকে স্টার কাবাব এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টের খাবার গুলো অনেক মজার। সেই রেস্টুরেন্টে বসেই আমরা পরিকল্পনা করলাম পরবর্তীতে আমরা সেই স্টার কাবাব এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে আবার খেতে যাবো। যাই হোক খাওয়া দাওয়া শেষ হলে বিল মিটিয়ে আমরা তাড়াতাড়ি বাড়ির পথে রওনা দিলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 7 months ago 

ভাই আপনি আজ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন প্রচন্ড ঠান্ডায় পরিবার নিয়ে বাইরে খাওয়া-দাওয়ার অভিজ্ঞতা। আসলে পরিবার নিয়ে সবাই মিলে একসাথে বাইরে কোন রেস্টুরেন্টে খাওয়ার মজাই আলাদা। কিন্তু যদিও আজকে অনেক ঠান্ডা ছিল তারপরেও মনে হচ্ছে বাইরে খাবার খেয়ে খুব দারুণ একটা সময় উপভোগ করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

ভাই আপনার মতো আমারও শুক্রবার দুপুরে ভালো খাবার না খেলে ভালো লাগে না। আসলে শরীর খারাপ থাকলে কিছুই ভালো লাগে না করতে। তবে আপনার যেহেতু বুকের ডান পাশে ব্যথা, আমার মনে হচ্ছে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা। কারণ আপনি এমনিতেই বাহিরের খাবার একটু বেশি খেয়ে থাকেন। তারপর বেশ কয়েকদিন বিকেলের দিকে ভাজাপোড়াও খেয়েছেন অনেক। বাচ্চারা জেদ করলে সেটা মানতেই হয়। যাইহোক এই প্রচন্ড শীতে রেস্টুরেন্টে মানুষের সংখ্যা কম হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক। যদিও সেই রেস্টুরেন্টের খাবার ততটা ভালো লাগেনি আপনাদের কাছে, তবুও সব মিলিয়ে মোটামুটি বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছেন। পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো ভাই। যাইহোক এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন ভাই শরীর যদি অসুস্থ থাকে তাহলে কোন কাজই ভালো লাগে না যত সময় পর্যন্ত নিজেকে সুস্থ ভাবে ফিরে পাওয়া যায় তত সময় একটা অসস্তিবোধ কাজ করে। যাই হোক এখন মোটামুটি সুস্থ আছেন জেনে ভালো লাগলো। তাছাড়া রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার আগে মেয়ের জিদের কাছে পরাজিত হয়েছেন আর রেস্টুরেন্টে যেতে হয়েছে সেটা নিয়ে আজকের পোস্ট শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

হাত-পা জমে যাওয়ার মতোই ঠান্ডা পড়েছে দাদা। এই শীতে গরম গরম স্যুপ সত্যিই চাঙ্গা করে দিতে পারে সবাইকে । আপনারা রেস্টুরেন্ট গিয়ে অনেক খাবারই খাওয়া দাওয়া করলেন তবে খাবারে টেস্ট খুব বেশি ভালো ছিল যা জানতে পারলাম । যাইহোক, কি আর করার, পরের বার আপনাদের প্রিয় সেই স্টার কাবাব এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে গিয়ে আপনাদের পছন্দের খাবারগুলো খেয়ে নেবেন দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 61038.67
ETH 2626.98
USDT 1.00
SBD 2.62