পরিবার নিয়ে বাইরে খেতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত বেশ কিছুদিন ধরে ভয়াবহ তাপদাহ বয়ে চলছে সারা দেশ জুড়ে। ভয়ংকর গরমের কারণে মানুষের জীবন প্রায় ওষ্ঠাগত। আমি এবং আমার পরিবার সারাদিন প্রায় বাড়িতেই থাকি। বাড়ি থেকে সাধারণত বের হই না। প্রচন্ড গরমের ভেতরে বলতে গেলে প্রায় সারাদিন এসি রুমের ভেতর বসে থাকি। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবত কারেন্ট না থাকার কারণে সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। তবে এই গরমের ভেতর সবচাইতে বেশি কষ্ট পাচ্ছে যে সমস্ত মানুষজন বাইরে কাজ করে তারা। অবশ্য ঘরে থেকেও এক শ্রেণীর মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। তারা হচ্ছে আমাদের ঘরের রান্নাবান্নার দায়িত্বে যারা আছেন তারা। কারণ যতক্ষণ তারা ঘরের ভেতর বসে আছে তখন তেমন কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এই প্রচন্ড গরমের ভিতর চুলার পাড়ে গিয়ে রান্না করা আসলে খুবই কষ্টসাধ্য কাজ।

IMG_20230605_151053.jpg

আমার স্ত্রীকে দেখছি গত কয়েকদিন ধরে রান্না করতে গেলে গরমে অস্থির হয়ে পড়ছে। তাই আমরা গত কয়েকদিন ধরে আলোচনা করছিলাম যে রান্নাবান্না না করে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে খায়। আবার পরক্ষণে এটাও চিন্তা হচ্ছিল যে এই প্রচন্ড গরমের ভেতরে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে খেলে যদি আবার শরীর খারাপ হয়। সে কারণেই শেষ পর্যন্ত আর ওটা করা হয়নি। গত বেশ কয়েকদিন হল আমরা বাইরে যাচ্ছি না। যার ফলে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করাও হচ্ছে না। আমরা পরিবারের সকলেই রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেতে পছন্দ করি। বিশেষ করে আমার মেয়ে। সে তো বাইরে গিয়ে খাওয়ার জন্য পাগল। গত কয়েকদিন যাবত সে প্রতিদিন বায়না ধরছিলো বাইরে খেতে যাওয়ার। কিন্তু প্রচন্ড এই গরমে আর বাইরে যাওয়ার সাহস হয়নি। তবে গতকালকে তার আবদারের কাছে হার মেনে শেষ পর্যন্ত বাইরে যেতে হয়েছিল খাওয়ার জন্য।

IMG_20230605_144707.jpg

যদিও এই প্রচন্ড গরমে আমার একেবারেই ইচ্ছা ছিল না বাইরে যাওয়ার। কিন্তু কি আর করা মেয়ের আবদার বলে কথা। তাছাড়া বাইরে খেতে গেলে আমার স্ত্রীর জন্য কিছুটা আরাম হবে এই চিন্তাটাও ছিল মাথায়। যাইহোক যখন বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করলাম তখন চিন্তা করতে লাগলাম কোন রেস্টুরেন্টে খেতে যাবো। পরে আমি আর আমার স্ত্রী মিলে একটি রেস্টুরেন্ট সিলেক্ট করলাম। তারপর আমি আমার স্ত্রীকে বললাম আমি জোহরের নামাজ শেষ করে এসে রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দেবো। তোমরা তার আগেই তৈরি হয়ে থেকো। কিন্তু আমি নামাজ পড়ে বাসায় ফিরে দেখি তারা তখন রেডি হয়নি। আমি তৈরি হতে হতে অবশ্য তারা তৈরি হয়ে গিয়েছিলো। রেডি হয়ে নিচে নেমে দেখি প্রচন্ড রৌদ্রে বাইরে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। বেশ কিছুক্ষণ রিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে থেকে তারপর রিকশা পেলাম।

IMG_20230605_143626.jpg

যে রেস্টুরেন্টে যাওয়ার জন্য পরিকল্পনা করেছিলাম সেই রেস্টুরেন্টটি আমাদের বাসা থেকে খুব একটা দূরে নয়। যারফলে সেখানে যেতে আমাদের খুব একটা সময় লাগলো না। তবে সেখানে গিয়ে পড়লাম বিপদে। গিয়ে দেখি যে রেস্টুরেন্টে খাওয়ার উদ্দেশ্যে গিয়েছি সেই রেস্টুরেন্টটি বন্ধ। এই গরমের ভেতরে বাসা থেকে বের হওয়ার পর যখন দেখলাম রেস্টুরেন্টটি বন্ধ তখন মেজাজ খুবই খারাপ হল। আশেপাশের দোকানের একজন লোককে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম এই রেস্টুরেন্টটি বন্ধ কেন? তিনি জানালেন রেস্টুরেন্টের মূল শেফ অসুস্থ তাই আজকে রেস্টুরেন্টেই তারা বন্ধ রেখেছে। এই ঘটনা জানার পর আমরা চিন্তা করতে লাগলাম এখন কি করা যায়? অবশ্য ওই রেস্টুরেন্টের ঠিক সামনেই আরো একটি রেস্টুরেন্ট ছিলো। যদিও অনেকদিন হলো সেই রেস্টুরেন্টে যাওয়া হয়নি। তাই কিছুক্ষণ ইতস্তত করে পড়ে রোদের ভেতর দাঁড়িয়ে না থেকে সেই রেস্টুরেন্টে চলে গেলাম।

প্রচন্ড রোদের ভিতর থেকে সেখানে গিয়ে প্রথমে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম। তারপর হাতের ইশারায় ওয়েটারকে মেনু কার্ড নিয়ে আসতে বললাম। ওয়েটার মেনু নিয়ে আসলে আমরা সেখান থেকে পছন্দ করে চার জনের জন্য চারটি সেট মেন্যু অর্ডার দিলাম। ও হ্যাঁ আপনাদেরকে তো বলা হয়নি সাথে আমার খালাতো ভাই ও ছিলো। অর্ডার দিয়ে আমরা বসে নিজেদের ভেতর গল্প করতে লাগলাম। এর ভেতর আমার মেয়ে বারবার আমাকে জিজ্ঞেস করছিলো খাবার দিতে কতক্ষণ সময় লাগবে। কারণ তার নাকি ক্ষুধা লেগে গিয়েছে। অবশ্য সে একা না আমাদের সবারই অনেক ক্ষুধা লেগেছিল। যাইহোক তারপর খুব বেশিক্ষণ বসে থাকতে হয়নি।

অল্প কিছুক্ষণ পরেই ওয়েটার আমাদের টেবিলে খাবার পরিবেশন করলো। খাবার পরিবেশন করা হয়ে গেলে আমরা ধীরেসুস্থে খেতে লাগলাম। খাবারের স্বাদ মোটামুটি ভালোই ছিল। তবে খাবারের যে দাম তারা রেখেছিল সেই হিসাবে খাবারটা আমাদের খুব একটা পছন্দ হয়নি। যেহেতু আমাদের সকলের অনেক ক্ষুধা লেগেছিল তাই আমরা খাবার নিয়ে কোন কথা না বলে চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছিলাম। মোটামুটি দ্রুত আমরা সকলে খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম। সাথে অবশ্য ড্রিংকস ও দিতে বলেছিলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ড্রিংকসের বোতলে সবাই চুমু দিচ্ছিলাম। এর কিছুক্ষণ পর আমি ওয়েটারকে ইশারায় বিল দিয়ে যেতে বললাম। ওইটার টেবিলে বিল দিয়ে গেলে আমরা বিল মিটিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানখাবাসপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

এই গরমে রান্নাঘরে থাকা সত্যিই খুব কষ্টের।আপনি মেয়ের আবদার রাখতে রেস্টুরেন্টে খেতে গেলেন।যে রেস্টুরেন্টে খাবেন সেটা গিয়ে বন্ধ পেয়ে তার পাশে একটা ছিল সেখানে গেলেন।তবে এই রেস্টুরেন্টে খাবার অনুসারে দামটা বেশী লাগছিল।তারপরেও কি করার আপনারা সবাই ক্ষুধার্ত ছিলেন।যাক খুব ভালো লাগলো ভাইয়া অনুভূতি গুলো পড়ে। ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতিগুলো শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আসলে যে পরিমান গরম তাতে জনজীবন অতিষ্ঠ ৷ আবার রান্না করে যে কতটা কষ্ট ৷ ভালো করেছেন পুরো পরিবার নিয়ে বাইরে খেতে গিয়েছেন ৷

 last year 

পরিবার নিয়ে বাইরে খেতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা পড়ে ভালো লাগলো। ঠিক বলেছেন ভাইয়া যে গরম আর গরমে রান্না করা খুব কষ্টের। খুব ভালো কাজ করেছেন। পরিবার নিয়ে বাইরে অনেক সুন্দর ভাবে খাওয়া দাওয়া করেছেন। দেখেই বোঝা যাচ্ছে খাবার গুলো ভীষণ স্বাদের ছিলো। আপনার পুরো পরিবারের জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।

 last year 

ভাইয়া, বর্তমানে আবার বৈরী আচরণের কারণে রান্না করে খাওয়াটা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে গৃহিনীদের জন্য। আসলে ভাইয়া এখন রেস্টুরেন্টের কর্মকর্তারা সুযোগ বুঝে খাবারের মানে তুলনায় দামটা বেশি নিয়ে নিচ্ছে। যাহোক পরিবারসহ রেস্টুরেন্টে খাবার খাওয়ার মুহূর্তটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.18
JST 0.032
BTC 87062.66
ETH 3289.09
USDT 1.00
SBD 2.95