দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল মধ্যবিত্ত সমাজ।
যাই হোক আজকে মাসের ১ তারিখ। সকালে উঠতেই স্ত্রী বলল বাজারে যেতে হবে। আমিও আগের রাত থেকেই পরিকল্পনা করেছিলাম সকালে ঘুম থেকে উঠে বাজারে যাবো। তবে বাজারের যে খবর গত দু তিন দিন ধরে পাচ্ছিলাম তাতে বাজারে যাওয়ার আগেই মেজাজটা খারাপ হয়েছিলো। যখন বাজারে পৌঁছে বিভিন্ন জিনিসের দাম করতে লাগলাম তখন মেজাজটা আরো বেশি খারাপ হয়ে গেলো। একটা জিনিসের দাম বাড়ার সাথে সাথে বাজারে সমস্ত কিছুর দাম আর এক দফা করে বেড়ে যায়। বাংলাদেশে যারা আছেন আপনারা সবাই জানেন বর্তমানে বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে চলছে। সরকারের ন্যূনতম নিয়ন্ত্রণ বাজারের উপরে নেই। সেই সুযোগে অধিক মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। প্রতিনিয়তই কোনো না কোনো পণ্যের দাম তারা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার নাগালের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। আর সরকার চুপচাপ সবকিছু দেখে যাচ্ছে। এখন এগুলো কি সরকার ইচ্ছা করে হতে দিচ্ছে নাকি সেটা আমার জানা নাই। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের যে তেমন কোনো আগ্রহ নাই সেটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।
আমরা বেশ কিছু পণ্যের জন্য ইন্ডিয়ার উপর নির্ভরশীল। ইন্ডিয়া হঠাৎ করে বাংলাদেশে কোন পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিলে বা পণ্যের দাম বেড়ে গেলে সেটার প্রভাব আমাদের দেশে অন্যে পন্যের উপরেও পড়ে। আর এদিক থেকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও আগে থেকেই খোঁজ রাখা উচিত ছিলো যে কোন কোন পণ্যের দাম বাড়তে পারে। কারণ সরকারি কিছু সংস্থা থাকে যারা এই কাজগুলি করে থাকে। সরকারি সংস্থাগুলো যদি আগে থেকেই ইনফরমেশন দিতে পারতো যে ইন্ডিয়ায় পেঁয়াজের দাম বেড়ে দেবে তাহলে ব্যবসায়ীরা বিকল্প জায়গা থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে পারতো। এখন সমস্যা হচ্ছে অন্য জায়গা থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে গেলে তাতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যাবে। সেই সময়ের ভেতরে আমাদের দেশের অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম অনেক বাড়িয়ে দেবে। যে আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিলো। এমনকি বিদেশে রপ্তানিও করতো। সেই আলু এখন ৭০ টাকা কেজি কিনে খেতে হচ্ছে। বাজারে গিয়ে এখন মেজাজ ঠিক রাখা খুব মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। মাছ মাংস থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়তির দিকে। আর একবার বাংলাদেশে কোন জিনিসের দাম বাড়লে আর সেটা কমে না।
শুধু যে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে তা নয়। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই মানুষের খরচ বেড়ে গিয়েছে। বাজারে গিয়ে দেখলাম আজকে ৬০ টাকার নিচে বাজারে কোন সবজি নেই। বেশিরভাগ সবজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। চারপাশে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে কিন্তু এগুলো দেখার কোন মানুষ নেই। বর্তমান সরকার শুধু চিন্তা করছে কিভাবে আরো পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা যায়। এদিকে জনগণের যে তিন বেলা খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করার সময় তাদের নেই। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের তেমন কোন পথ দেখতে পাচ্ছি না। তবে আমরা প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে যদি কিছু পণ্য নিজেরাই উৎপাদন করতে পারি তাহলে এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়ে যায়। যেমন যাদের বাসার ছাদ রয়েছে বা বাড়ির আশেপাশে খালি জায়গা পড়ে রয়েছে। তারা যদি সে সমস্ত জায়গায় সবজি চাষ করে তাহলে বাজারে এমনিতেই শাকসবজির দাম কমে যাবে। কিন্তু আমরা সেটা না করে অলস হয়ে বসে রয়েছি। এই সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা আমাদেরকে আরো নানাভাবে বিপদে ফেলে যাচ্ছে। একটা সময়ে গ্রামের প্রতিটা বাড়িতে হাঁস মুরগি পালন করতো। গ্রামের বাড়িগুলোতে কখনো হাঁস মুরগি এগুলোর ডিম কিনে খেতে দেখিনি। তারা তাদের নিজেদের উৎপাদিত পণ্যের উপরে নির্ভরশীল ছিলো। কিন্তু এখন খেয়াল করে দেখবেন গ্রামে গেলেও খুব অল্প কয়েকটা বাড়িতে দেখতে পাবেন যেখানে হাঁস মুরগি পালন করা হয়। বাকি সবাই এসব পণ্য কিনে খেতে শুরু করেছে। আর এই সুযোগেব্যবসায়ীরা সমস্ত পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। অতএব ব্যবসায়ীদের এই অসাধু চক্রের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে নিজেদেরই উপায় বের করতে হবে। না হলে এভাবেই তাদের হাতে আমাদেরকে নির্যাতিত হতে হবে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
জানি না কিভাবে চলবো । সবকিছুর এত দাম
আর কইয়েন না ভাই। বাজারে যে হারে দ্রব্য মূল্য বাড়ছে তাতে তো নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা। আলুর দাম তো আজ কেজি প্রতি ৭০/- টাকা। যা মনে হয় আর দুদিন পর সেঞ্চরী করবে। সাধারন মানুষের যে কি হবে? কে দেখবে এগুলো? সবাই তো আছে গদি নিয়ে মারামারির ধান্দায়। যত ভোগান্তি গরিব মানুষ গুলোর।
৭০ টাকা কেজি দরে আলু কেনাটা মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য অনেকটা বিলাসিতার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুবেলা যে ডাল আলু ভর্তা ভাত খাবে মানুষ এটাতেও যেন আজ বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্যের এই উর্ধ্বগতি নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা যেমন ব্যবসা করছে তেমনি সরকারের কোন সচেতনতা নেই। তাইতো যে যার মত দ্রব্যমূল্য বাড়িয়েই চলছে। আর ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ জনগণ। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
মাসের বাজার মাসের প্রথমেই করে নেয়া ভালো। আর আপনি করেন ও তা।মাছ,মাংস, সবজি অল্প সল্প করে কিনলেই হয়।কিন্তু বাজারে গিয়ে যা কিছুতে হাত দিবেন তাতেই হাত পুড়ে যাবে ভাইয়া।সবকিছুর দাম এতো বাড়ানোর মানেটা কি, বুঝিনা।ব্যবসায়ীরা সুযোগ সন্ধানী।তারা সবকিছুর দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ফায়দা লুটছে।এদেশে কোন কিছুরই কিছু হয় না।
আমিও আপনার মতো সবজি এবং ফলমূল ছাড়া সারা মাসের বাজার একসাথে করে ফেলি। একদম ঠিক বলেছেন ভাই, বাজারে গেলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। এমনিতেই দ্রব্য মূল্যের দাম অনেক বেড়েছে, এরমধ্যে হরতাল অবরোধের কারণে জিনিসপত্রের দাম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজ ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। জনসাধারণের দুর্ভোগ দেখার সময় কারো নেই। মানুষ না খেয়ে মরে গেলেও সরকারের কিছু যায় আসে না। যাইহোক সময়োপযোগী একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
দ্রব্যমূল্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে তাতে মধ্যবিত্তদের অবস্থা খুবই নাজেহাল। কোন কিছু কেনার যেন উপায় নেই এখন বাজার থেকে। এভাবে চলতে থাকলে মধ্যবিত্ত রা না খেতে পেয়ে মারা যাবে।
বর্তমানে পরিস্থিতিতে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের খুবই কষ্টে জীবন যাপন করতে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সকলে দিশেহারা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অতিরিক্ত দাম বেড়ে গেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনসাধারণের দুর্ভোগের শেষ নেই।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতি সবচেয়ে প্রভাব ফেলেছে মধ্যবিত্ত পরিবারের উপর।এই পরিস্থিতি যে কবে স্বাভাবিক হবে সেটা সৃষ্টিকর্তা একমাত্র জানেন।ভালো লেগেছে আপনার পোস্টটি ।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের যে কি অবস্থা হয়েছে। একমাত্র যারা এই সিচুয়েশনে পড়েছে তারাই বুঝতে পারে। ৭০ টাকা কেজি আলু কেনা সবার জন্য কঠিন হয়ে গেছে। আর অন্যান্য সবজির কথা
কি বলবো ভাই। এই অবস্থা থেকে আমরা কবে যে মুক্তি পাব সেটাই একমাত্র চিন্তার বিষয়। আল্লাহ আমাদের এই কঠিন অবস্থা থেকে কবে মাফ করবেন একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন।ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য ।