দৃষ্টিনন্দন রেস্টুরেন্টে পরিবার নিয়ে কিছুটা সময় কাটানো ও খাওয়া দাওয়া করা।
তখন আমি স্ত্রীর সাথে আলোচনা করতে লাগলাম কোথায় যাওয়া যায় খাওয়ার জন্য? আমাদের শহরে ইদানিং বেশ কিছু নতুন রেস্টুরেন্ট হয়েছে। তার ভিতরে একটা রেস্টুরেন্টে আমরা কিছুদিন আগে একবার গিয়েছিলাম। সেবার গিয়ে সেখান থেকে নানা রকমের কাবাব আইটেম খেয়েছিলাম। এবার চিন্তা করলাম যেহেতু সেখানে গিয়ে শুধু ইন্ডিয়ান রেসিপি এবং কাবাব আইটেমগুলো খাওয়া হয়েছিলো তাই এবার সেখানে গিয়ে তাদের সেট মেনু গুলো ট্রাই করি। সেট মেনু ট্রাই করার পেছনের আরো একটা কারণ হচ্ছে কিছুদিন আগে এই রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশের বড় বড় কয়েকজন ফুড ব্লগার এসেছিলো। তারা এসে এই রেস্টুরেন্টের সেট মেনু গুলোর বেশ প্রশংসা করেছিলো। তখনই আমি মনে মনে চিন্তা করেছিলাম এরপরে এই রেস্টুরেন্টে গেলে সেখানকার চাইনিজ সেট মেনু গুলো ট্রাই করতে হবে। আমার স্ত্রীকে সেই রেস্টুরেন্টে যাওয়ার প্রস্তাব দিতেই সে রাজি হয়ে গেলো। সেই রেস্টুরেন্টের আরো একটা সুবিধা হচ্ছে সেখানকার সুন্দর ডেকোরেশন।
রেস্টুরেন্টটা মূলত জমে উঠে সন্ধ্যার পর থেকে। যাইহোক আমার স্ত্রীর সাথে কথাবার্তা বলে আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম এশার নামাজ পড়ে আমরা সেই রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দেবো। কারণ সন্ধ্যার দিকে ভারী খাবার খেতে ভালো লাগবে না। পরিকল্পনা মোতাবেক আমি এশার নামাজ পড়ে এসে তৈরি হয়ে সবাইকে নিয়ে রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আমি আগেই বলেছি আমাদের শহরটা ছোট হওয়ায় আমার বাসা থেকে কোন জায়গায় যেতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না। যার ফলে মাত্র ১০ মিনিটের ভিতরে বাসা থেকে সেই রেস্টুরেন্টে পৌঁছে গেলাম। সেই রেস্টুরেন্টে গেলেই মন ভালো হয়ে যায়। কারণ সেখানকার ডেকোরেশনটা এত চমৎকার। অন্য আর দশটা রেস্টুরেন্টের মত সেখানে শুধু ভেতরেই যে বসার ব্যবস্থা রয়েছে তা নয়। বরং ভেতরে থেকে বাইরে বেশি গেস্ট বসার ব্যবস্থা রয়েছে। রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে আমি আর আমার স্ত্রী আলোচনা করতে লাগলাম কোন কোন সেট মেনু অর্ডার করবো। শেষ পর্যন্ত চিন্তা ভাবনা করে তিন ধরনের সেট মেনু অর্ডার করেছিলাম। তিন ধরনের ইচ্ছা করেই অর্ডার করেছিলাম। কারণ পরিকল্পনা করেছিলাম তিনটা সেট মেনু থেকে টেস্ট করবো।
যাই হোক অর্ডার করে খাবারের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। হঠাৎ করে কানে এলো আরবি ভাষার কথাবার্তা বলার কিছু আওয়াজ। খেয়াল করে দেখি সেখানে বেশ কয়েকটা বিদেশি ছেলে একটা টেবিলে বসে রয়েছে। কিছুদিন থেকে আমাদের শহরে এই জিনিসটা খেয়াল করছি। কিছুদিন আগে বাইরে গিয়ে দেখেছিলাম ইন্ডিয়ার কয়েকজন স্টুডেন্ট। আবার সেদিন রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখতে পেলাম মিডিল ইস্ট এর কিছু ছেলে। আমাদের এই ছোট্ট মফস্বল শহরে যে বাইরের লোকজন আসতে পারে পড়ালেখার জন্য এটা কখনো চিন্তা করিনি। যাই হোক খাবারের জন্য অপেক্ষা করতে করতে বেশ বিরক্ত লাগছিলো। কারণ প্রথমে বলেছিল ১৫ মিনিটে খাবার পরিবেশন করবে। কিন্তু ১৫ মিনিট পার হয়ে যাওয়ার পর যখন দেখি খাবার দেয়ার কোন নাম নেই। তখন ওয়েটারকে ডেকে কারণটা জিজ্ঞেস করলাম। তখন ওয়েটার বললো অনাকাঙ্ক্ষিত একটি কারণের জন্য খাবার পরিবেশন করতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। আর অল্প কয়েক মিনিট এর ভেতরে আমি টেবিলে খাবার পরিবেশন করছি। এই কথা বলার কয়েক মিনিটের ভেতরে ওয়েটার টেবিলে খাবার দিয়ে গেলো। খাবার গুলো দেখেই মনে হচ্ছিল খেতে বেশ ভালো হবে। আমি নিয়েছিলাম চিকেন উইথ লেমন বাটার সস। সাথে সাইডস হিসাবে ছিলো ফ্রাইড রাইস, সতে ভেজিটেবল আর ম্যাশড পটেটো। আমার স্ত্রী নিয়েছিল মেক্সিকান চিকেন উইথ রাইস। সেটার সাথেও সাইডস হিসাবে একই জিনিসপত্র ছিলো। আর মেয়ের জন্য অর্ডার করেছিলাম বারবিকিউ চিকেন সেট মেনু। সবগুলিতে চিকেনের সাথে একই রকমের খাবার ছিলো।
খাবার গুলো দেখে যেমন মজাদার মনে হচ্ছিলো খেতেও তেমনি লেগেছিলো। তবে আমার মেয়ে আর স্ত্রীর সাইডস হিসেবে সতে ভেজিটেবল আর ম্যাশড পটেটো পছন্দ হয়নি। আমার কাছে অবশ্য মোটামুটি লেগেছিলো। তবে আমার চিকেন উইথ লেমন বাটার সস থেকে স্ত্রী আর মেয়ের চিকেনের আইটেম দুটো বেশি মজা লেগেছিলো। সব জায়গা থেকেই আমরা একটু একটু করে খেয়ে টেস্ট করে দেখছিলাম। সবকিছু মিলিয়ে খাওয়া-দাওয়ার অভিজ্ঞতাটা বেশ ভালই ছিল। যাইহোক আমরা ধীরে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বিলমিটিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে এলাম। বেরিয়ে অবশ্য একটা মেলায় গিয়েছিলাম। সেই গল্প অন্য আরেকদিন করবো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | oppo reno 8t |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ছবি দেখে মনে হচ্ছে রেস্টুরেন্টটি আসলেই দৃষ্টিনন্দন। মফস্বল শহর গুলোতেও এখন ভালো মানের রেস্টূরেন্ট গড়ে উঠছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সুফল এই সব রেস্টুরেন্ট। দেশ- বিদেশের কাস্টমারের ভীর। আপনি বউ-বাচ্চাসহ বেশে উপভোগ করেছেন খাওয়া আর রেস্টুরেন্টের নান্দনিকতা। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
বাহ ভাই মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে তাহলে বাহিরে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া ভালোই হয়েছে। সত্যি বলতে রেস্টুরেন্টটি আসলেই অনেক দারুন ছিল। আর এটি ভালো বলেছেন যে সন্ধ্যার পরে ভারি নাস্তা তেমন একটা ভালো হবে না। তাই আপনারা এশার নামাজের পরেই সিলেক্ট করেছেন,আর এটা বেশ ভালো একটা সময়। তবে খাবারটা অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে দিতে লেট হলেও, দেখে বোঝা যাচ্ছে খাবারের মান ভালো ছিল। যাইহোক ভাই মেলায় যাওয়ার অনুভূতি অবশ্যই শেয়ার করবেন।
ভাইয়া আপনি যে জন্মদিন পালন করতে অনিচ্ছুক এটা শুনে ভালোই লাগলো। আমার জন্মদিন উপলক্ষে মেয়েকে গিফট কিনে দেওয়া এবং বাইরে খাওয়ার বিষয়টি আরো ভালো লাগলো। আমিও মনে করি এ জন্মদিন মূলত ঐরকম ভাবে পালন না করাই উচিত। আসলেই আমাদের দেশটি ছোট হলেও অনেক দিক থেকে আমরা উন্নত কিন্তু সেটা আমরা বুঝতে পারি না। আর এই রেস্টুরেন্টে যেহেতু বেস্ট ব্লগাররা এসে খাবারের প্রশংসা করেছে তাহলে তো অবশ্যই এই রেস্টুরেন্টের খাবার ভালোই হওয়ার কথা। পরিবারসহ খাওয়া-দাওয়া দেখছি আপনি ভালই করেছেন এবং সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন সাথে আমাদেরও দেখা শুরু করে দিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ। মেলায় ঘুরতে যাওয়ার গল্পটির অপেক্ষায় থাকলাম।
ভাই আপনার মতো আমিও জন্মদিন পালন করা পছন্দ করি না। তবে এই খুশির দিনকে কেন্দ্র করে, বাহিরে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করতে ভীষণ ভালো লাগে। যাইহোক রেস্টুরেন্টের ডেকোরেশন তো দেখছি জাস্ট অসাধারণ। এমন জায়গায় বসে সময় কাটাতে দারুণ লাগে। খাবারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে খুবই ইয়াম্মি লেগেছিল। ভিন্ন ধরনের সেট মেনু অর্ডার করাতে খুব ভালো হয়েছে। সবগুলো টেস্ট করতে পেরেছেন। সবমিলিয়ে পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। যাইহোক এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
মফস্বল এরিয়ায় এই ধরনের রেস্টুরেন্ট গুলো কিন্তু বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। যাইহোক, আপনাদের যাওয়া এই রেস্টুরেন্টের ডেকোরেশন দেখে আমার কাছে কিন্তু অনেক ভালো লাগলো দাদা। আপনার মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে পরিবার নিয়ে বেশ সুন্দর একটা রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করেছেন, যা বেশ দারুন ব্যাপার। সেখানে গিয়ে যে আপনার খাওয়া-দাওয়ার অভিজ্ঞতাটা বেশ ভালই ছিল, এটা জেনে ভালো লাগলো।