ঝামেলার শেষ নেই।
তবে কোন ডাক্তারের কাছে প্রথমে যাবো সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। ভেবেচিন্তে ঠিক করলাম আগে চোখের ডাক্তার দেখায়। তারপরে দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাওয়া যাবে। যেহেতু দিনের বেশিরভাগ সময় কোন না কোন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকি তাই চোখের সমস্যাটা হওয়া স্বাভাবিক। চিন্তা ভাবনা করে ঠিক করলাম আমাদের শহরে একটি চক্ষু হাসপাতাল আছে প্রথমে সেখানে গিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে আসি। দেখি ডাক্তার কি বলে? এরপর যথারীতি চলে গেলাম ডাক্তারের কাছে। যাওয়ার আগে অবশ্য টেনশন হচ্ছিল যে সেখানে কেমন ভিড় থাকবে। তবে গিয়ে দেখলাম তখনও খুব বেশি রোগী আসেনি। আমি টিকিট কেটে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণের ভেতরেই আমার ডাক এলো।
ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরে তিনি কিছু কথা জিজ্ঞেস করে চোখ পরীক্ষা করলেন। তারপর আমাকে বললেন কাউন্টারে গিয়ে একটি টিকিট কেটে কম্পিউটারে টেস্ট করিয়ে আসতে। আমি কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কেটে কম্পিউটারে টেস্ট করানোর লাইনে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সেখান থেকেও আমার টেস্ট সম্পন্ন হোলো। তারপর তারা আমাকে একটি কাগজ দিয়ে বললেন ডাক্তারের সাথে গিয়ে কথা বলতে। আমি আবার ফিরে চললাম ডাক্তারের চেম্বারে। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ডাক্তারের চেম্বারের ভেতরে ডাক পড়লো। সেখানে গেলে ডাক্তার আমাকে জানালো এখনো খুব বেশি সমস্যা হয়নি। তার পরেও যেহেতু আমার দূরের জিনিস দেখতে একটু সমস্যা হচ্ছে তাই অল্প পাওয়ারের একটা চশমা নিতে হবে। আর সেই সাথে একটা আই ড্রপ লিখে দিলেন। যেটা পরবর্তীতে তিন মাস নিতে হবে। চোখের যে খুব একটা সমস্যা হয়নি এটা জানতে পেরে বেশ ভালো লাগছিলো।
চক্ষু হাসপাতালে গিয়ে দেখা হয়েছিল এলাকার এক ছোট ভাইয়ের সাথে। সেও তার সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে এসেছিলো। সে আমাকে বলল তার চোখের ভেতরে নাকি কি একটা ময়লা গিয়েছিলো। তারপর থেকে তার চোখে বেশ সমস্যা হচ্ছে। আমার পরপরই সেও ডাক্তারের দেখালো। ডাক্তার তাকে একটা চোখের মলম দিয়েছিলো আর বলেছিল তেমন কোন সমস্যা হয়নি। যাই হোক আমি চক্ষু হাসপাতাল থেকে বের হয়ে পাশের একটি চশমার দোকানে গেলাম। এই চক্ষু হাসপাতালের ঠিক সামনেই বেশ কয়েকটি চশমার দোকান গড়ে উঠেছে। হাসপাতালে গেট থেকে বের হওয়ার সাথেই সব দোকান থেকে দেখলাম ডাকাডাকি করছে। তবে আমি দূরে না গিয়ে গেটের সাথেই লাগানো একটি দোকানের ভিতর ঢুকে পড়লাম। পরে দোকানদারকে কাগজ দেখিয়ে আমি চশমার ফ্রেমের ব্যাপারে কিছু খোঁজ খবর নিলাম। তারপর সে দোকানদারের সাথে কথাবার্তা বলে আমি বাড়ির পথে রওনা দিলাম।
চিন্তা করলাম বিকালের দিকে বা তার পরের দিন চশমাটা কিনে নেবো। কিন্তু বিকালে যখন আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে একটি চশমার দোকানে গেলাম চশমা নিতে। তখন তারা আমার কাছে একটি কাগজ দেখতে চাইলো যেখানে কত পাওয়ার এবং কি ধরনের গ্লাস লাগবে সেটা লেখা রয়েছে। কিন্তু আমি খুঁজে আর সেই কাগজটা পেলাম না। আসলে ডাক্তার যেই কাগজটাতে চশমার পাওয়ার এবং কি ধরনের চশমা লাগবে সেটা লিখে দিয়েছিল সেই কাগজটা আমি হারিয়ে ফেলেছিলাম। কিভাবে হারিয়েছে বা কোথাও পড়ে গিয়েছে কিনা সেটা আমার একেবারেই মনে নেই। তবে আমার মনে হতে লাগলো প্রথম যে দোকানে চশমার ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে গিয়েছিলাম সেখানে বোধহয় রেখে এসেছি। পরবর্তীতে সেখানে গিয়ে খুঁজে কাগজটি আর পেলাম না। তারপরে যেই ওষুধের দোকান থেকে চোখের ড্রপ কিনেছিলাম সেখানে গিয়েও খুঁজেছি কিন্তু সেখানেও কাগজটি পেলাম না।
কাগজটি হারানোর জন্য নিজের উপরই মেজাজ খারাপ হচ্ছিলো। কারণ আমাকে হয়তো আবার এখন ডাক্তার দেখিয়ে টেস্ট করিয়ে তারপর সেই কাগজটি বের করতে হবে। অবশ্য ঠিক করেছি আগামী শনিবার বা রবিবার চক্ষু হাসপাতালে গিয়ে একবার কথা বলে দেখবো যে আমার কি ধরনের চশমা লাগবে সেটা কোনভাবেই বোঝা যায় কিনা? যদি তারা কোন সাজেশন দিতে পারে তাহলে হয়তো এ যাত্রায় বেঁচে যাবো। না হলে আবার আমাকে সেই চোখের ডাক্তারের কাছে যাওয়ার ঝামেলায় পড়তে হবে। এমনিতেই শরীরটা খারাপ তার উপর আবার এই উটকো ঝামেলার কারণে মেজাজটা খুবই খারাপ হয়ে আছে। এখন মনে মনে দোয়া করছি পরবর্তী দিন গিয়ে যেনো সহজেই আমার কি ধরনের চশমা লাগবে সেই প্রেসক্রিপশনটা পেয়ে যায়।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
অনেক ঝামেলার মধ্যে আছেন বেশ বুঝতে পেরেছি।আসলে সমস্যার যেনো কোন শেষ নেই।আপনি দাঁত আর চোখের সমস্যায় পরলেন।এতো কিছুর পর যাও ও বা ডাক্তার দেখালেন। কিন্তু প্রেসক্রিপশন ফেললেন হারিয়ে।তবে পেশেন্টের চোখ কম্পিউটারে দেখলে ওটা অনেকে আবার সিরিয়াল নাম্বার দিয়ে সেভ করে রাখে।নাম আর সিরিয়াল নাম্বার দিয়ে দেখতে পারেন।ইনশা আল্লাহ পেয়ে যাবেন আশাকরি।অনুভূতি গুলো প্রকাশ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বেশ ভালই ঝামেলায় পরেছেন ভাইয়া। তাও অনেক দিন পর যদিও বা ডাক্তারের কাছে গেলেন, আর ডাক্তারের কাগজটিই হারি ফেললেন! ঝামেলা থেকে যাও উদ্ধার পেতে যাচ্ছিলেন ,পুনরায় আবার ডাক্তার দেখানোর ঝামেলায় পরে গেলেন। কামনা করি যেন চশমার কাগজটি পেয়ে যান।
আসলেই আমাদের জীবনে ঝামেলার কোনো শেষ নেই। একের পর এক ঝামেলা লেগেই থাকে। আপনি তো দাঁত এবং চোখ নিয়ে অনেক ঝামেলায় পরেছেন দেখা যাচ্ছে। যাইহোক আমরা যেহেতু প্রতিদিনই স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকি অনেকক্ষণ, সেহেতু চোখের সমস্যা হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। তবে ডক্টরের প্রেসক্রিপশন এর ছবি যদি তুলে রাখতেন, তাহলে ছবি দেখিয়েই চশমা নিতে পারতেন। আমি দরকারী কাগজপত্রের সবসময়ই ছবি তুলে রাখি,কারণ কাগজ হারিয়ে গেলেও ছবি দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে পারি। আশা করি আপনি খুব ভালো সাজেশন পাবেন চক্ষু হাসপাতাল থেকে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাই।
আল্লাহ কি বলেন এসব ? এত কষ্ট করে ডাক্তার দেখিয়ে শেষ অবদি চোখের জন্য চশমার কাগজটিই হারিয়ে নিলেন। একটু সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার ছিল। এখন যদি কাগজ কোন ভাবে যোগার করা না যায় তাহলে তো আবার নতুন করে ডাক্তার দেখাও। আবার টিকেট কাটো, আর আবার টাকা দাও। সব মিলিয়ে দারুন সমস্যায় পড়েছেন দেখছি।
আসলে বর্তমানে এমন একটা যুগ চলছে যে স্কিনের দিকে না তাকালেই হয় না। দিনের অনেকটা সময় আমাদের যেকোনো স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা লাগে। হতে পারে সেটা কারণে আবার হতে পারে সেটা অকারনে। আমারও কিছুদিন আগে চোখে একটা ছোটখাটো ঝামেলা ফেস করছিলাম তবে দু একদিন পরেই আলহামদুলিল্লাহ ভালো হয়ে গিয়েছে। তাই এখন থেকে চেষ্টা করি মোটামুটি সাবধানে থাকার জন্য। যাইহোক আপনি তো দেখি প্রেসক্রিপশন হারিয়ে বেশ ভালই ঝামেলায় পড়ে গেছে। আসলে প্রেসক্রিপশন হারিয়ে গেলে তো আর কিছু করার নাই আবার সেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। তারপরেও দেখেন চক্ষু হাসপাতালে গিয়ে কিছু করতে পারেন কিনা। দোয়া রইল আপনার জন্য ধন্যবাদ।