জৈষ্ঠ্যমাসে বৈশাখী মেলা দর্শন।
দুদিন আগে যখন আমি আর আমার মেয়ে ফুচকা খেয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। তখন হঠাৎ করে দেখি ফরিদপুর কোর্ট পাড়ে একটি জায়গায় গেট তৈরি করা হয়েছে। রিক্সা দ্রুত চলে আসার কারনে ভালোমতো দেখতে পারলাম না সেখানে কি হচ্ছে। পরবর্তীতে রিক্সাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম সেখানে বৈশাখী মেলা হচ্ছে। কথাটা শুনে আমি খুবই অবাক হলাম। কারণ ইতিমধ্যে বৈশাখ মাস চলে গিয়েছে। আমাদের শহরে প্রতিবছর বৈশাখ মাসে বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হতো। মেলাটা পহেলা বৈশাখ শুরু হয়ে পরবর্তী সাতদিন থাকতো। কিন্তু এবছর সেই সময়ে মেলাটা হয়নি।
রিক্সাওয়ালার কাছে শোনার পর জানতে পারলাম সেদিনই মেলাটা শুরু হয়েছে। তবে শহরে একটা মেলা হচ্ছে কিন্তু আমরা শহরের লোক হয়েও কিছু জানতে পারলাম না বিষয়টা মনে করে বেশ খারাপ লাগলো। অন্যান্য সময় মেলা শুরু হওয়ার আগে থেকে মাইকিং করে সবাইকে জানানো হয়। যাইহোক মেলার কথা শোনার পর মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম একদিন সময় করে মেলা থেকে ঘুরে আসতে হবে। আজকে দুপুরে একটি ব্যক্তিগত কাজে পরিবার নিয়ে বাইরে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফেরার সময় আমি আমার মেয়ে আর স্ত্রীকে বললাম তোমরা বাসায় চলে যাও। আমি একটু ঘুরে আসি।
আমি চিন্তা করছিলাম আগামীকাল আমি ঢাকা চলে যাবো। এসে হয়তো আর মেলাটা দেখতে পাবো না। তাই আজকেই মেলাটা দেখে যাই। তাছাড়া শহরের কোন মেলা হলে আমি কখনো সেটা মিস করতে চাই না। যাই হোক আমি যখন মেলায় পৌঁছলাম তখন বেলা বাজে চারটা। তখনো মেলায় দর্শনার্থীদের আগমন শুরু হয়নি। যার ফলে আমি মেলার স্থানটা ফাঁকা পেয়ে গেলাম। তবে মেলার স্থানটা আমার কাছে একেবারেই পছন্দ হয়নি। কোর্ট চত্বরে সোজা একটি রাস্তার দু'ধারে কিছু স্টল নিয়ে মেলা সাজানো হয়েছে। অথচ শহরে থেকে মেলা করার জন্য আরো অনেক ভালো জায়গা রয়েছে।
যাই হোক তারপরেও আমি ঘুরে ফিরে মেলাটা দেখতে লাগলাম। অবশ্য আজকালকার মেলাগুলিতে দেখার মত তেমন বিশেষ কিছু থাকে না। কারণ এখন সবমেলায় একই ধরনের জিনিসপত্র দেখতে পাওয়া যায়। এইজন্য ধীরে ধীরে এ ধরনের মেলাগুলো লোকপ্রিয়তা হারাচ্ছে। তারপরও চিন্তা করলাম যেহেতু এসেই পড়েছি পুরো মেলাটা একটা চক্কর দিয়ে যায়। অবশ্য পুরো মেলা বলতে হয়তো ১০০ গজ রাস্তা হবে। এর ভেতরেই সব দোকানপাট। যদিও মেলার স্থানটি প্রায় ফাঁকা ছিলো। তারপরেও অল্প কিছু লোকজনকে দেখতে পেলাম বিভিন্ন স্টলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেদিন আমি যখন চলতি পথে মেলার স্থানটা দেখেছিলাম তখন সেখানে প্রচুর লোকসমাগম দেখেছিলাম সময়টা ছিল সন্ধ্যা। আজও হয়তো সন্ধ্যার দিকে প্রচুর লোকসমাগম হবে।
অবশ্য অনেকে আছে যারা ভিড় এড়িয়ে এসব স্থানে ঘুরতে পছন্দ করে। তাদের জন্য এই সময়টাই সবচাইতে সেরা। সময় কারণ দুপুরের পরে মেলায় গেলে তখন মেলার স্থানটা ফাঁকা থাকে। যার ফলে মেলার স্টল গুলি শান্তি মতো ঘুরে ফিরে দেখা যায়। লোকজন খুব বেশি হলে তখন মেলায় ঘোরাফেরা বেশ মুশকিল হয়ে যায়। দেখার মত বিশেষ কিছু না থাকা সত্ত্বেও আমি ধীরে সবগুলো স্টল ঘুরেফিরে দেখতে লাগলাম। আর ফাঁকে ফাঁকে কিছু ছবি তুলছিলাম। তবে এই মেলায় একটা জিনিস খেয়াল করে দেখলাম এখানে খাবারের স্টল খুব বেশি হয়নি। অন্যান্য মেলাতে দেখা যায় প্রচুর খাবারের স্টল বসে। পুরো মেলা ঘোরার পরে আমার কাছে একটি দোকান সবচাইতে বেশি ভালো লেগেছিল। সেই দোকানে হাতের তৈরি বেশ কিছু জিনিসপত্র ছিল যেগুলি সাধারণত আমাদের রান্না ঘরের কাজে ব্যবহৃত হয়। শহুরে মেলায় এ ধরনের জিনিস আজকাল কম দেখা যায়। যাইহোক বেশ কিছুক্ষণ সেখানে ঘোরাফেরা করে তারপর আমি বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | কোর্ট চত্বর, ফরিদপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপুকে বাসায় পাঠিয়ে আপনি মেলায় গেলেন। আপুকে নিয়ে যেতেন, আপনার আরো ভালো লাগতো 😁।
আসলে এই খাবারের দোকান কম দেখলাম। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আমিও মেলায় ঘুরে আসলাম।