তিন বন্ধুর ঘোরাফেরা ও আড্ডাবাজি (শেষ পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আমি রাসেলকে আশ্বস্ত করলাম এই বলে যে আমরা তাড়াতাড়ি আসছি খুব বেশি সময় লাগবে না। রাসেলকে বলেছিলাম বাড়ি থেকে বের হয়ে কিছুটা সামনে আগাতে। কিন্তু আমরা যখন রাসেলের এলাকায় পৌঁছলাম তখন রাসেলকে ফোন দিয়ে জানতে পারলাম ও বাড়িতেই বসে রয়েছে। যার ফলে আমি আর ফেরদৌস মোটরসাইকেল নিয়ে সরাসরি রাসেলের বাড়িতে চলে গেলাম। রাসেলরা যখন প্রথম এই জায়গায় জমি কিনেছিলো তখন দু একবার এসেছিলাম। তারপরে দীর্ঘদিন হলো আর রাসেলদের বাড়িতে আসা হয়নি। এখন দেখি ওরা মোটামুটি ঘর বাড়ি বেশ গুছিয়ে এনেছে।

IMG_20230912_174904.jpg

রাসেলের বাড়ি পৌঁছে ওর মার সাথে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বললাম। আন্টির সাথে কথাবার্তা বলে তারপর তিনজন একসাথে বের হলাম ঘুরতে। উদ্দেশ্য ছিলো বন্ধু রাফসানের এলাকার দিকে যাওয়া। প্রথমে আমরা ঠিক করলাম রাফ্সানের শোরুমে যাবো। তারপর ওকে নিয়ে সেখান থেকে ওদের বাড়ির কিছুটা দূরে একটি জায়গায় একটা ব্রিজ আছে সেখানে গিয়ে চার বন্ধু মিলে আড্ডা দেবো। কিন্তু ওর শোরুমের সামনে পৌঁছে দেখি শোরুমে বেশ কয়েকজন কাস্টমার রয়েছে। তাই আর ওকে বিরক্ত না করে আমরা তিন বন্ধু সেই ব্রিজের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।


IMG_20230912_174907.jpg

কিছু দূর আগানোর পরে আমাদের মনে হোলো রাফসানকে একবার জানানো দরকার। পরে বন্ধু রাসেল রাফসানকে ফোন দিয়ে বলল তুই ফ্রি হলে ব্রিজের ওপরে চলে আসিস। আমরা সেখানে বসে কিছুক্ষণ আড্ডা দেবো। তারপর আমরা সেই ব্রিজের উদ্দেশ্যে আগাতে লাগলাম। অবশ্য সেই ব্রিজের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার আগে বন্ধু রাসেল সিঙ্গারা পিয়াজু এগুলো কিনে নিয়েছিলো আড্ডার সময় খাওয়ার জন্য। আড্ডার সময় কিছু ভাজাপোড়া হলে আড্ডাটা আরো ভালো জমে যায়। যাই হোক আমরা ১০ মিনিটের ভেতরে সেই ব্রিজের কাছাকাছি পৌঁছে গেলাম। তবে সেখানে পৌঁছতেই খেয়াল করলাম আকাশে আগে থেকেই কিছুটা মেঘ ছিলো এখন হালকা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।


IMG_20230912_174501.jpg

যাইহোক আমরা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ব্রিজের রেলিং এর উপর বসে আড্ডা দিতে লাগলাম। তবে কিছুক্ষণ পরে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়তে লাগলো। তখন আমরা চিন্তা করতে থাকলাম হঠাৎ করে যদি বৃষ্টি আরো বেড়ে যায় তখন আমরা বিপদে পড়বো। কারণ এই ব্রিজের আশেপাশে কোন বাড়িঘর নেই। যার ফলে হঠাৎ করে বেশি বৃষ্টি হলে তখন ভেজা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। চিন্তাভাবনা করে আমরা তিন বন্ধু আবার রাফসানের দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। চিন্তা করছিলাম রাফসানের দোকানে বসে আড্ডা দেয়া যাবে। তবে আমরা যখন রাফসানের দোকানের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি। তখন দেখি বন্ধুরা আফসান আমাদের সাথে আড্ডা দেয়ার জন্য ব্রিজের দিকে যাচ্ছে। তখন আমরা হাতের ইশারায় ওকে ফিরতে বললাম। ও আমাদের কাছাকাছি এলে আমরা বললাম বৃষ্টির ভয়ে আমরা চলে এসেছি।


IMG_20230912_174854.jpg

তারপর আমরা সবাই মিলে রাফসানের শোরুমের দিকে যেতে লাগলাম। সেখানে পৌঁছে আমরা রাফসানের শোরুমে বসে আড্ডা দিতে লাগলাম। আড্ডার সাথে সাথে ভাজাপোড়া খাওয়াও চলছিলো। এবারের আড্ডার মূল আলোচনার বিষয় ছিল এশিয়া কাপ ক্রিকেট। যাই হোক বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দেয়ার পর মাগরিবের আজান দিয়ে দিলো। তারপর আমি ওদেরকে রাফসানের শোরুমে বসতে বলে চলে গেলাম নামাজ পড়তে। নামাজ আদায় করে এসে আরও কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম। তারপর আমরা তিন বন্ধু বাড়ির উদ্দেশ্যে ফিরতে লাগলাম। এভাবেই আমাদের এবারের আড্ডাবাজি শেষ হোলো। আবার কবে এমনভাবে তিন বন্ধু মিলে ঘুরে ফিরে বেড়াতে পারবো সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ ফেরদৌস পরদিন সকালে চলে যাবে তার নতুন চাকরির উদ্দেশ্যে। আর রাসেল দীর্ঘদিন পরপর ফরিদপুর আসে। যার ফলে আবার কবে এভাবে তিন বন্ধু একসাথে ঘুরে বেড়াতে পারবো সেটা আসলেই জানি না।



আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা ২আই
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

@rupok

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 11 months ago 

কর্মব্যস্ত জীবনে সবাই একত্রিত হওয়া সত্যিই অনেক মুশকিল। হয়তো আবারো কোন একদিন সবাই একত্রিত হবেন। যাইহোক ভাইয়া আপনাদের বন্ধুত্ব দেখে সত্যিই অনেক ভালো লাগে। সময় পেলেই সবাই একসাথে ঘুরাঘুরি করার চেষ্টা করেন যেটা সত্যিই অনেক ভালো লাগে। এখন তো সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করে। আড্ডা দেওয়ার সময় সিঙ্গারা, পিয়াজু কিংবা অন্যান্য তেলে ভাজা খাবারগুলো খেতে সত্যিই ভালো লাগে। যেহেতু বৃষ্টির কারণে ব্রিজের ওখানে আড্ডা দিতে পারেননি তাই সবাই মিলে বন্ধুর শোরুমে চলে গিয়েছেন এবং আড্ডা দিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনাদের বন্ধুত্ব যেন সারা জীবন এরকমই থাকে এই দোয়া করি।

 11 months ago 

আসলে ভাইয়া বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া খুবই আনন্দের একটি ব্যাপার। আসলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে অনেক মজা উপভোগ করা যায়। আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই দারুন লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 11 months ago 

বন্ধুরা মিলে ঘুরাঘুরি, গল্প, খাওয়া-দাওয়া সবই ভীষণ ভালো লাগে। আর এখন গল্পের মূল বিষয় হচ্ছে ক্রিকেট।রাফসান ভাইয়ার শোরুমে লোকজন থাকায় আপনারা তিনজন ব্রিজে পৌঁছে গেলেন। কিন্তু বৃষ্টি হওয়ার ভয়ে আবার ভাইয়ার শোরুমে এসে গল্প,খাওয়া-দাওয়া করলেন।এরপর আজান হলে নামাজ পড়ে বাসায় ফিরে এসেছিলেন। আসলে বন্ধুদের সাথে সময় কাটালে মনটা বেশ ভালো লাগে। আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59596.75
ETH 2659.83
USDT 1.00
SBD 2.45