বন্ধু ফেরদৌসের সাথে নদীতে গোসল করার অভিজ্ঞতা।

in আমার বাংলা ব্লগ24 days ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কিছুদিন আগে বন্ধু ফেরদৌসের সাথে ঘোরাফেরার ব্যাপারে পোস্ট করেছিলাম। তবে গরমের সময় ফেরদৌস যখন ফরিদপুরে থাকে। তখন আমরা দুই বন্ধু চেষ্টা করি মাঝে মাঝে নদীতে গোসল করতে। তবে এবার প্রচন্ড গরমের সময়ও ফেরদৌস ফরিদপুরে না থাকায় আমার আর সেভাবে নদীতে গোসল করা হয়নি। এলাকার যে সমস্ত বন্ধু-বান্ধব রয়েছে তারা নদীতে গোসল করার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী না। আর একা একা আমি কখনো গোসল করতে যাই না। যে কারণে এবার আমার খুব একটা বেশি নদীতে গোসল করা হয়নি। যাই হোক ফেরদৌস কিছুদিন আগে ফরিদপুর এসেছিলো। তখন ফেরদৌসের সাথে পরিকল্পনা করেছিলাম নদীতে গোসল করতে যাওয়ার জন্য। নদীতে গোসল করতে আমাদের দুজনেরই অনেক ভালো লাগে। তবে আমরা চেষ্টা করি যখন প্রচন্ড গরম পরে তখনই নদীতে গোসল করতে। কারণ তখনই নদীতে গোসল করে সবচাইতে বেশি মজা পাওয়া যায়।

IMG_20240518_141104.jpg

আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলে বা আকাশে মেঘ থাকলে তখন বেশিক্ষণ গোসল করা যায় না। কিছুক্ষণ গোসল করার পরে তখন ঠান্ডা লাগতে শুরু করে। যাই যাইহোক এবারও দুই বন্ধু নদীতে গোসল করতে গিয়েছিলাম। আজকে সেই গল্পই আপনাদের কাছে করবো। যথারীতি নির্ধারিত সময়ে আমি নির্ধারিত জায়গায় পৌঁছেছিলাম। ফেরদৌসের সাথে দেখা করার জন্য। অবশ্য আমি বাসা থেকে বের হওয়ার আগে ফেরদৌসকে ফোন দিয়ে নিশ্চিত হয়েছিলাম। কারণ ফেরদৌস মাঝে মাঝে শেষ মুহূর্তে এসে প্রোগ্রাম ক্যানসেল করে দেয়। সময় মতো আমি সেখানে পৌঁছে দেখি ফেরদৌস আমার আগেই সেখানে এসে বসে রয়েছে। এই ধরনের ঘটনা আমি খুব কমই ঘটতে দেখেছি। বেশিরভাগ সময় ফেরদৌস আসতে লেট করে। সেখানে গিয়ে আমরা প্রথমে টুকটাক কিছু কেনাকাটা করলাম। আমরা যখনই গোসল করতে যাই তখনই সাথে করে কিছু খাবার নিয়ে যায়। কারণ আমরা দীর্ঘক্ষণ ধরে নদীতে গোসল করি। আর দীর্ঘক্ষণ ধরে আপনি গোসল করলে তখন আপনার ক্ষুধা লাগবে। গোসল করার ভেতর টুকিটাকি বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র খেতে বেশ ভালো লাগে।


IMG_20240518_141059.jpg

এই প্র্যাকটিসটা আমাদের অনেক আগেকার। একটা সময় ছিলো যখন আমরা সব বন্ধুরা মিলে গোসল করতে যেতাম। তখন আমরা যাওয়ার সময় নানা রকমের ফল, কেক, বিস্কুট এগুলো কিনে নিয়ে যেতাম। সেই সাথে কোল্ড ড্রিঙ্কস নিয়ে যেতাম খাওয়ার জন্য। গোসল করার ফাঁকে ফাঁকে আমরা সেগুলো খেতে থাকতাম। সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে বুকের ভেতরটা এখনো হু হু করে ওঠে। যাই হোক এখনকার গল্পে ফিরে আসি। কেনাকাটা শেষ করে দুই বন্ধু রওনা দিলাম নদীর পাড়ের উদ্দেশ্যে। সেখানে পৌঁছতে আমাদের খুব একটা বেশি সময় লাগে নাই। যেহেতু মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়েছিলাম তাই অল্প সময়েই আমরা নদীর পাড়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম। নদীর পাড়ে পৌঁছে মোটরসাইকেল থেকে নেমে আমরা আর বেশি দেরি করিনি। দ্রুত কাপড়চোপড় পাল্টে আমরা নদীতে নেমে গেলাম। তবে নদীতে নামার সময় বুঝতে পারছিলাম আজকে খুব একটা বেশি সময় ধরে গোসল করতে পারবো না। কারণ ততক্ষণে আকাশে হালকা মেঘ দেখতে পাচ্ছিলাম। সেই সাথে নদীর পাড়ে হালকা বাতাসের ছোঁয়াও পাচ্ছিলাম।


IMG_20240518_141111.jpg

আমি অবাক হয়ে একটা জিনিস খেয়াল করলাম। আমি যখন বাসা থেকে রওনা দিলাম তখন শহরের ভেতরটা বেশ গরম দেখেছি। কিন্তু নদীর পাড়ে গিয়ে সেখানে মৃদু বাতাসে আমার কাছে কিছুটা ঠান্ডা লাগছিলো। যাইহোক তারপরও দুই বন্ধু নদীতে নেমে গোসল করতে লাগলাম। আশেপাশে দেখতে পেলাম আমাদের মত আরও অনেকেই গোসল করছে। কম বয়সি অনেক ছেলেপেলেরা বন্ধু বান্ধবের দল নিয়ে এসেছে। যেমনটা আমরা অতীতে করতাম। তারা রীতিমতো লাফালাফি ঝাপাঝাপি হই হুল্লোড় করছিলো। এগুলো দেখতে দেখতে দুই বন্ধু গল্প করছিলাম। আর মাঝে মাঝে একটু সাঁতার কাটছিলাম। আপনারা জানেন সাঁতার কাটা হচ্ছে সবচাইতে ভালো ব্যায়াম। যদিও সাঁতার কাটা বেশ কষ্টের কাজ।


IMG_20240518_141121_1.jpg

যাই হোক এইভাবে গোসল করতে করতে দীর্ঘক্ষণ পার হয়ে গেলো। একটা সময় রীতিমতো শীত লাগতে লাগলো। তখন আমি ফেরদৌসকে বললাম চলো এখন ওঠা যাক। এই কথা বলার সাথেই দুই বন্ধু মিলে সেদিনের মতো গোসল শেষ করলাম। তারপর ফেরদৌসের কাছ থেকে এ সপ্তাহের মতো বিদায় নিয়ে আমি বাসার দিকে ফিরতে লাগলাম। বিদায় নেয়ার কারণ হচ্ছে পরদিন সকালেই ফেরদৌসের ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে যাওয়ার কথা। তাই আর আপাতত ফেরদৌসের সাথে দেখা হবে না। আর এভাবেই আমাদের এবারের পদ্মা নদীতে গোসল করা শেষ হোলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসHONOR 90
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 24 days ago 

এর আগেও দেখেছি আপনারা বন্ধুরা মিলে নদীতে গোসল করেন তখন নানা রকমের খাবার ও সাথে করে নিয়ে যান।আসলে সাঁতার কাটা হচ্ছে একটি ব্যায়ামের মতো।তাই ক্ষুধা লেগে যাওয়ারই কথা।দুই বন্ধু মিলে খুব তাড়াতাড়িই পদ্মা নদীর পাড়ে চলে গেলেন।আপনাদের মতো আরো অনেকেই এসেছিল গোসল করতে।বেশী রোদ থাকলেই নদীতে গোসল করে আরাম।মেঘলা আকাশ বা বৃষ্টি হলে বেশী সময় আসলে গোসল করা যায় না।তাতে ঠান্ডা লাগে।আপনারা নদীতে গোসল শেষ করে বাড়ির দিকে রওনা দিলেন।ফেরদৌস ভাইয়া পরের দিনই চলে যাবেন।যাক সময়টা ভালো ই কেটেছে আপনাদের।অনুভুতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 24 days ago 

সময় সুযোগ পেলে কখনো পরিবার নিয়ে নদীতে গোসল করে দেখবেন। দারুন লাগবে আপু।

 24 days ago (edited)

নদীতে গোসল করতে সত্যিই অনেক ভালো লাগে। তবে এবার যে ফেরদৌস ভাইয়া আপনার আগে এসেছে এটা ভেবে সত্যি অবাক লেগেছে। কারণ আপনি সবসময় ভাইয়ার জন্য অপেক্ষা করেন। যাই হোক ভাইয়া খাবার কিনে নিয়ে যাওয়ার আইডি এটা বেশ ভালো ছিল। কারণ বেশিক্ষণ সময় নদীতে গোসল করলে অনেক সময় ক্ষুধা লেগে যায়। দল বেঁধে ছেলেদের ছুটাছুটি করার দৃশ্য দেখে ভালো লাগলো।

 24 days ago 

আসলে পানির ভেতরে হাত-পা নাড়াচাড়া করলে প্রচুর এনার্জি খরচ হয়। এই জন্যই মনে হয় অনেক ক্ষুধা লাগে। সেই জন্যই সাথে করে খাবার নিয়ে যাই। ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য।

 24 days ago 

গরমের তীব্রতা দিনদিন যেভাবে বাড়ছে,আমারও মাঝেমধ্যে ইচ্ছে করে নদীর পানিতে নেমে ইচ্ছেমতো গোসল করতে। যদিও সাঁতার কাটতে পারি না বলে সেটা সম্ভব হয় না। তাছাড়া আমাদের এখানকার শীতলক্ষ্যা নদীর পানি থেকে প্রচুর দুর্গন্ধ বের হয়। যাইহোক ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে পদ্মা নদীতে গোসল করে দারুণ সময় কাটিয়েছেন ভাই। পদ্মা নদীর পানি তো একেবারে স্বচ্ছ এবং পরিষ্কার। তাই গোসল করে অনেক শান্তি পান আপনারা। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 23 days ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া যদি কেউ সাথে না থাকে তাহলে নদীতে গোসল করতে ভালো লাগেনা। একা একা নদীতে গোসল করতে খুবই খারাপ লাগে আর কোন মজা হয় না। নদীতে বা পুকুরে গোসল করার সময় কিছুটা ক্ষুধা অনুভব হয়। এই সময় হালকা-পাতলা খাবার হলে বেশ ভালোই লাগে। সাথে কোল্ড ড্রিঙ্কস হলে ব্যাপারটা আরো কমে যায়।আপনি ও আপনার বন্ধু মিলে ভীষণ সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়ে ছিলেন। আপনার পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 23 days ago 

আপনি এবং আপনার বন্ধু ফেরদাউস দুজনে মিলে নদীতে গোসল করতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো। আমাদের এদিকে নদী নেই তবে পুকুরে গোসল করেছি অনেক। কিন্তু অনেকক্ষণ গোসল করার পরেও আপনার মত গোসল করতে করতে কখনই কিছু খেতে মন চায় না আমার। বেশ মজাই করতাম ছোটবেলায় পুকুরে গোসল করার সময়। যাইহোক দুজনে মিলে নদীতে গোসল করার অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 19 days ago 

শুধু আপনার বন্ধু না দাদা, এরকম আমারও কিছু বন্ধু আছে, যারা মাঝপথে এসে প্রোগ্রাম ক্যান্সেল করে দেয়। তবে দাদা, স্নান করতে করতে খাবার খায়, এরকম লোক আসলে আমি কোনদিন দেখিনি। হা হা হা...🤭🤭 যাইহোক, আপনার এবং আপনার বন্ধুর নদীতে স্নান করার অভিজ্ঞতা জেনে সত্যিই বেশ খুশি হলাম। যদিও নদীতে স্নান করার কোনো অভিজ্ঞতা আমার নেই, তবে কোনদিন আপনাদের মত করে স্নান করার সুযোগ পেলে অবশ্যই করবো।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66342.41
ETH 3548.63
USDT 1.00
SBD 3.09