নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পিংয়ের প্রোগ্রাম সফল করা (প্রথম পর্ব)।
সেরকম পরিকল্পনাই সবাই করেছিলাম। আর বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে ঠিক করেছিলাম শীত থাকতে থাকতে ক্যাম্পিংটা করতে হবে। কারণ গরমের দিনে ক্যাম্পিংটা হয়তো ততটা ভালো লাগবে না। তাছাড়া গরমের সময় এই সমস্ত চরাঞ্চলে সাপের উপদ্রব বেড়ে যায় অনেক বেশি। বিশেষ করে রাতের বেলা চরে থাকাটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। কারণ আমাদের এই অঞ্চলে গরমের দিনে এখন রাসেলস ভাইপার দেখা যাচ্ছে প্রায়ই। এটা ছাড়াও ক্যাম্পিং করার জন্য আমার কাছে মনে হয় শীতকালটাই আদর্শ সময়। সে হিসাবেই বেশ কিছুদিন থেকে আমরা কয়েক বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করছিলাম। শেষ পর্যন্ত কথাবার্তা বলে ঠিক হলো আমরা ফেব্রুয়ারি মাসে ক্যাম্পিংটা করে ফেলি। কারণ ফেব্রুয়ারি মাসের পরে আর হয়তো শীত থাকবে না। পরে বহু চিন্তাভাবনা করে ঠিক করলাম ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখ শুক্রবারে আমরা ক্যাম্পিং করবো। সেই হিসাবে বন্ধু রাসেল এবং ফেরদৌসকে ডেট জানিয়ে দিয়েছিলাম।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এখানে ফরিদপুরে ছিলাম শুধু আমি আর বন্ধু রাফসান। আর আফসান বেশ অলস টাইপের একজন মানুষ। সে সাধারণত কোন আয়োজনের ভেতরে যেতে চায়না। আর গেলেও সেটা তে নানারকম গড়িমসি করে। আর এই ধরনের প্রোগ্রাম করতে হলে বেশ ভালো উদ্যোগী একজন মানুষ দরকার হয়। একটা সময় আমাদের পিজন নামে এক বন্ধু ছিলো। এই সমস্ত প্রোগ্রাম করলেই তার কথা মনে পড়ে যায়। কারণ এই সমস্ত প্রোগ্রামের যাবতীয় আয়োজনে তার উপর নিশ্চিন্তে নির্ভর করা যেতো। যদিও সে এখন কর্মজীবনের ব্যস্ততার কারণে আর ফরিদপুরে সহজে আসে না। তারপরেও এই ক্যাম্পিং প্রোগ্রামটা ঠিক করার পরে আমি তার সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু সে জানিয়েছিলো তার ছুটি মাত্র একদিন হওয়ায় তার পক্ষে আসা সম্ভব হবে না। কারণ তার ওখান থেকে ফরিদপুর আসতে প্রায় ছয় সাত ঘন্টা সময় লাগবে। যাইহোক তার সমস্যাটা বুঝতে পেরেছি। সেই জন্য তাকে আর জোরাজুরি করিনি।
এই ক্যাম্পিংয়ের প্রোগ্রামটা নিয়ে যেহেতু আমি আর ফেরদৌস বেশি আগ্রহী ছিলাম। তাই আমার ভেতরে টেনশনটাও বেশি কাজ করছিলো। কারণ আমি কোন কাজ একা একা করতে পারি না। সাথে একজন থাকলে সুবিধা হয়। আবার রাফসানের উপর ভরসা ও করতে পারছিলাম না। তার পরেও আগের দিন গিয়ে রাফসানকে কি কি করতে হবে সেটা বলে দিয়েছিলাম। এমনকি পরদিন সকালেও আমি রাফসানকে ফোন দিয়ে যাবতীয় ইনস্ট্রাকশন দিয়েছিলাম। সমস্ত কথাবার্তা হওয়ার পরও সময় মতো রাফসানের শোরুমে পৌঁছে দেখি সে কোন কিছুই করেনি। এমনকি যাদের যাওয়ার কথা ছিলো আমাদের সাথে ক্যাম্পিংয়ের জন্য তাদেরকেও ভালোমতো বলেনি। তার ভিতরে দু-একজনের সাথে অবশ্য রাফসান কথা বলেছিলো। তারা তাদের সমস্যার জন্য অপারগতা প্রকাশ করেছিলো। এই বিষয়টাও আমাদেরকে জানায়নি রাফসান।
সেই জন্য রাফসানের শোরুমে গিয়ে ওকে রীতিমতো ঝাড়ি দিলাম। তারপর ওকে সাথে নিয়ে সেই সময়েই ক্যাম্পিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। রাফসানের ওখানকার সুবিধা হচ্ছে ওর দোকানটা একটা বাজারের একেবারে মাঝামাঝি অবস্থানে। যার ফলে প্রয়োজনীয় সবকিছুই ওর দোকানের চারপাশেই পাওয়া যায়। এই জন্য ওকে বলেছিলাম সবকিছু কিনে রাখার জন্য। কেনাকাটার জন্য আমি আর রাসেল ওকে আগে থেকে কিছু টাকাও দিয়ে দিয়েছিলাম। ওর কাছে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম ও শুধু বারবিকিউ করার জন্য মুরগিটা কিনে জুবায়ের নামে এক ছোট ভাইয়ের কাছে দিয়েছে। যাকে বারবিকিউ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। আমাদের পরিকল্পনা ছিলো আমরা বেলা চারটা থেকে সাড়ে চারটার ভেতর ক্যাম্পিং করার সাইটে চলে যাবো। তারপর সেখানে গিয়ে পছন্দমত একটা জায়গা দেখে সেখানে আমাদের তাবু সেট করবো। যেহেতু জায়গাটা হবে নদীর ওপারে তাই আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম ওখানকারই কোন স্থানীয় একটি বাড়িতে সবকিছু বাজার করে দিয়ে দেবো। তারা আমাদেরকে রান্না করে দেবে বিনিময়ে তাদের কিছু টাকা দিয়ে দেবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন কিছুই আর পরিকল্পনা মত এগোয়নি। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | গজারিয়া |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ক্যাম্পিং শীতের দিনে করতেই ভালো লাগে। রাসেল ভাইপার সাপ তো খুবই ভয়ংকর। তাছাড়া গরমের দিনে মেঘ বৃষ্টি, ঝড় তুফানও হয়ে থাকে। সেই হিসেবে শীতের দিন একেবারে পারফেক্ট ক্যাম্পিং করার জন্য। যাইহোক রাফসান ভাই তো বেশ অলস টাইপের। আমিও রাফসান ভাইয়ের মতো কিছুটা অলস টাইপের। কারণ বন্ধু বান্ধবরা মিলে যখন কোনো কিছুর আয়োজন করি,তখন আমি কোনো হেল্প ই করি না। তবে আমাদের বন্ধু শাকিল বেশ এক্টিভ। সে এসব কাজে বেশ এক্সপার্ট। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।