নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পিংয়ের প্রোগ্রাম সফল করা (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ8 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


বেশ কিছুদিন আগে আমি দারাজ থেকে ছোট্ট একটা তাবু কিনেছিলাম। উদ্দেশ্য ছিলো বন্ধুদের নিয়ে ক্যাম্পিং করার। কিন্তু তাবু হাতে পাওয়ার পরে বুঝতে পারলাম তাবুটা এতোটাই ছোট যে এটার ভেতরে একজনের বেশি থাকা সম্ভব না। খুব বেশি হলে চাপাচাপি করে দুজন থাকা যায়। তবে সেটা ক্যাম্পিংয়ের জন্য একেবারেই আদর্শ ছিলো না। যার ফলে সেটা নিয়ে ক্যাম্পিং করতে গিয়ে প্রথমে বেশ বাজে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলাম। সেই সাথে ছিলো বন্ধুর রাফসানের নানা রকম টালবাহানা। যাইহোক তারপরই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা বন্ধুবান্ধব মিলে একটা বড়ো তাবু কিনবো। তাবু পছন্দ করার এবং কেনার দায়িত্ব পড়েছিলো আমার ঘাড়ে। শেষ পর্যন্ত আমি অনেক দেখে শুনে দারাজ থেকে একটা তাবু পছন্দ করলাম। তারপর সেই তাবুর ছবি আমাদের বন্ধুদের মেসেঞ্জার গ্রুপে পাঠালাম। সবাই যখন তাবুটা পছন্দ করলো তখন সেই তাবুটা দারাজ থেকে নিয়ে নিলাম। সেই তাবু কেনার পর থেকেই আমরা পরিকল্পনা করছিলাম একটা ক্যাম্পিং করার। ইচ্ছা ছিলো লোকালয় থেকে বেশ কিছুটা দূরে গিয়ে পদ্মা নদীর কোন চরে ক্যাম্পিং করার।

IMG_20240211_110325.jpg

সেরকম পরিকল্পনাই সবাই করেছিলাম। আর বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে ঠিক করেছিলাম শীত থাকতে থাকতে ক্যাম্পিংটা করতে হবে। কারণ গরমের দিনে ক্যাম্পিংটা হয়তো ততটা ভালো লাগবে না। তাছাড়া গরমের সময় এই সমস্ত চরাঞ্চলে সাপের উপদ্রব বেড়ে যায় অনেক বেশি। বিশেষ করে রাতের বেলা চরে থাকাটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। কারণ আমাদের এই অঞ্চলে গরমের দিনে এখন রাসেলস ভাইপার দেখা যাচ্ছে প্রায়ই। এটা ছাড়াও ক্যাম্পিং করার জন্য আমার কাছে মনে হয় শীতকালটাই আদর্শ সময়। সে হিসাবেই বেশ কিছুদিন থেকে আমরা কয়েক বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করছিলাম। শেষ পর্যন্ত কথাবার্তা বলে ঠিক হলো আমরা ফেব্রুয়ারি মাসে ক্যাম্পিংটা করে ফেলি। কারণ ফেব্রুয়ারি মাসের পরে আর হয়তো শীত থাকবে না। পরে বহু চিন্তাভাবনা করে ঠিক করলাম ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখ শুক্রবারে আমরা ক্যাম্পিং করবো। সেই হিসাবে বন্ধু রাসেল এবং ফেরদৌসকে ডেট জানিয়ে দিয়েছিলাম।


IMG_20240209_171434.jpg

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এখানে ফরিদপুরে ছিলাম শুধু আমি আর বন্ধু রাফসান। আর আফসান বেশ অলস টাইপের একজন মানুষ। সে সাধারণত কোন আয়োজনের ভেতরে যেতে চায়না। আর গেলেও সেটা তে নানারকম গড়িমসি করে। আর এই ধরনের প্রোগ্রাম করতে হলে বেশ ভালো উদ্যোগী একজন মানুষ দরকার হয়। একটা সময় আমাদের পিজন নামে এক বন্ধু ছিলো। এই সমস্ত প্রোগ্রাম করলেই তার কথা মনে পড়ে যায়। কারণ এই সমস্ত প্রোগ্রামের যাবতীয় আয়োজনে তার উপর নিশ্চিন্তে নির্ভর করা যেতো। যদিও সে এখন কর্মজীবনের ব্যস্ততার কারণে আর ফরিদপুরে সহজে আসে না। তারপরেও এই ক্যাম্পিং প্রোগ্রামটা ঠিক করার পরে আমি তার সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু সে জানিয়েছিলো তার ছুটি মাত্র একদিন হওয়ায় তার পক্ষে আসা সম্ভব হবে না। কারণ তার ওখান থেকে ফরিদপুর আসতে প্রায় ছয় সাত ঘন্টা সময় লাগবে। যাইহোক তার সমস্যাটা বুঝতে পেরেছি। সেই জন্য তাকে আর জোরাজুরি করিনি।


IMG_20240209_171441.jpg

এই ক্যাম্পিংয়ের প্রোগ্রামটা নিয়ে যেহেতু আমি আর ফেরদৌস বেশি আগ্রহী ছিলাম। তাই আমার ভেতরে টেনশনটাও বেশি কাজ করছিলো। কারণ আমি কোন কাজ একা একা করতে পারি না। সাথে একজন থাকলে সুবিধা হয়। আবার রাফসানের উপর ভরসা ও করতে পারছিলাম না। তার পরেও আগের দিন গিয়ে রাফসানকে কি কি করতে হবে সেটা বলে দিয়েছিলাম। এমনকি পরদিন সকালেও আমি রাফসানকে ফোন দিয়ে যাবতীয় ইনস্ট্রাকশন দিয়েছিলাম। সমস্ত কথাবার্তা হওয়ার পরও সময় মতো রাফসানের শোরুমে পৌঁছে দেখি সে কোন কিছুই করেনি। এমনকি যাদের যাওয়ার কথা ছিলো আমাদের সাথে ক্যাম্পিংয়ের জন্য তাদেরকেও ভালোমতো বলেনি। তার ভিতরে দু-একজনের সাথে অবশ্য রাফসান কথা বলেছিলো। তারা তাদের সমস্যার জন্য অপারগতা প্রকাশ করেছিলো। এই বিষয়টাও আমাদেরকে জানায়নি রাফসান।


IMG_20240210_063129.jpg

সেই জন্য রাফসানের শোরুমে গিয়ে ওকে রীতিমতো ঝাড়ি দিলাম। তারপর ওকে সাথে নিয়ে সেই সময়েই ক্যাম্পিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। রাফসানের ওখানকার সুবিধা হচ্ছে ওর দোকানটা একটা বাজারের একেবারে মাঝামাঝি অবস্থানে। যার ফলে প্রয়োজনীয় সবকিছুই ওর দোকানের চারপাশেই পাওয়া যায়। এই জন্য ওকে বলেছিলাম সবকিছু কিনে রাখার জন্য। কেনাকাটার জন্য আমি আর রাসেল ওকে আগে থেকে কিছু টাকাও দিয়ে দিয়েছিলাম। ওর কাছে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম ও শুধু বারবিকিউ করার জন্য মুরগিটা কিনে জুবায়ের নামে এক ছোট ভাইয়ের কাছে দিয়েছে। যাকে বারবিকিউ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। আমাদের পরিকল্পনা ছিলো আমরা বেলা চারটা থেকে সাড়ে চারটার ভেতর ক্যাম্পিং করার সাইটে চলে যাবো। তারপর সেখানে গিয়ে পছন্দমত একটা জায়গা দেখে সেখানে আমাদের তাবু সেট করবো। যেহেতু জায়গাটা হবে নদীর ওপারে তাই আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম ওখানকারই কোন স্থানীয় একটি বাড়িতে সবকিছু বাজার করে দিয়ে দেবো। তারা আমাদেরকে রান্না করে দেবে বিনিময়ে তাদের কিছু টাকা দিয়ে দেবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন কিছুই আর পরিকল্পনা মত এগোয়নি। (চলবে)


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানগজারিয়া

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 8 months ago 

ক্যাম্পিং শীতের দিনে করতেই ভালো লাগে। রাসেল ভাইপার সাপ তো খুবই ভয়ংকর। তাছাড়া গরমের দিনে মেঘ বৃষ্টি, ঝড় তুফানও হয়ে থাকে। সেই হিসেবে শীতের দিন একেবারে পারফেক্ট ক্যাম্পিং করার জন্য। যাইহোক রাফসান ভাই তো বেশ অলস টাইপের। আমিও রাফসান ভাইয়ের মতো কিছুটা অলস টাইপের। কারণ বন্ধু বান্ধবরা মিলে যখন কোনো কিছুর আয়োজন করি,তখন আমি কোনো হেল্প ই করি না। তবে আমাদের বন্ধু শাকিল বেশ এক্টিভ। সে এসব কাজে বেশ এক্সপার্ট। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 65670.18
ETH 2575.33
USDT 1.00
SBD 2.65