বিকেলে ঘোরাফেরা ও হালকা খাওয়া-দাওয়া করা।
ফেরদৌস ফরিদপুর থেকে যাওয়ার পর থেকে আমি মোটামুটি ঘরেই বসে ছিলাম। যদিও এর ভিতরে একদিন ফরিদপুরের একটি নার্সারিতে গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল ঘোরাফেরা করা। তবে একা একা ঘোরাফেরা করে খুব একটা ভালো লাগেনি। যার ফলে তারপর থেকে বিশেষ কোনো কাজ ছাড়া আর বাইরে যাওয়া হয়নি। শুধু বাজারে যাওয়া আর বাড়িতে বসে কাজ করা এভাবেই জীবন চলে যাচ্ছিল। গতকাল বিকেলে হঠাৎ করে মনে হল একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি। অনেকদিন হল শহরে আমার প্রিয় কিছু স্ট্রিটফুড খাওয়া হয় না। তাই চিন্তা করছিলাম বাইরে থেকে হাঁটাহাঁটি করে আসি সাথে হালকা কিছু খাওয়া দাওয়া করি।
এই উদ্দেশ্যেই গতকাল বিকেলে বাইরে বের হয়েছিলাম। তবে বর্তমানের আবহাওয়াটা যেন কেমন। ঘর থেকে বের হওয়ার সাথেই শরীর ঘামতে শুরু করে। শরীর ঘামলে আমার কাছে খুবই বিরক্ত লাগে। এই কারণে আরো এখন ঘর থেকে খুব একটা বের হওয়া হয় না। যাইহোক শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যার কিছুটা আগে আমি রওনা দিলাম মার্কেটের উদ্দেশ্যে। আমাদের শহরটা একেবারেই ছোট্ট একটা শহর। তিন থেকে চার কিলোমিটার এর ভেতরে শহরের এরিয়া সমাপ্ত। আর আমাদের শহরের প্রাণকেন্দ্রটি আমার বাসা থেকে একেবারেই কাছে। সেখানে হেঁটে যেতে বড়জোর আট-দশ মিনিট লাগে। আর রিকশা করে গেলে তিন থেকে চার মিনিট সময় লাগে। গরমের কারণে আমি হাঁটাহাঁটির ঝামেলায় না গিয়ে একটি রিকশায় উঠে বসলাম। রিক্সা করে দ্রুত শহরের জনতা ব্যাংক মোড় নামক স্থানে পৌঁছে গেলাম।
এই স্থানটিকে আমাদের শহরের প্রাণকেন্দ্র বলা হয়। যাই হোক সেখানে পৌঁছে চিন্তা করতে লাগলাম কি করা যায়। প্রথমে ঘুরে ফিরে দেখতে লাগলাম কোন ধরনের স্ট্রীটফুড খাওয়া যেতে পারে। একেকবার একেক ধরনের খাবার খাওয়ার কথা মনে আসছিল। তবে হাঁটতে হাঁটতে কিছু সামনে আগানোর পর হঠাৎ করে দেখতে পেলাম সেই ভাইরাল চটপটিওয়ালার দোকান। খেয়াল করে দেখি তার দোকানে এখন খুব একটা ভিড় নেই। তখন চিন্তা করলাম যেহেতু আজকে তার দোকানে খুব একটা ভিড় নেই তাই তার চটপটিটা ট্রাই করে দেখি। মাথায় এই চিন্তা আসতেই আমি সরাসরি সেই চটপটির দোকানের সামনে পৌঁছে গেলাম। সেখানে পৌঁছে চটপটি ওয়ালাকে এক বাটি চটপটির অর্ডার দিলাম।
তবে আমার ভাগ্য ভালো বলতে হবে কারণ অর্ডার দেয়ার সাথেই আমি এক বাটি চটপটি পেয়ে গেলাম। খেয়াল করে দেখলাম সেই লোকটি একসাথে অনেকগুলো বাটিতে চটপটি তৈরি করেছে। যার ফলে যারা আগে অর্ডার দিয়েছিল তাদেরকে চটপটি দেয়ার পরও আরো দু চার বাটি বেঁচে গিয়েছিল। সেখান থেকে একবাটি আমি ভাগে পেলাম। চটপটি হাতে পেতেই আমি আস্তে আস্তে খাওয়া শুরু করলাম। তবে এই গরমের ভিতরে চটপটি খেয়ে খুব একটা মজা পাচ্ছিলাম না। এমনিতে চটপটি আমার অত্যন্ত পছন্দের একটি খাবার। যদিও এসিডিটির কারণে এখন খুব একটা খেতে পারি না। চটপটি খাওয়ার মাঝে হঠাৎ করে এলাকার এক পরিচিত ছোট ভাই এসে ডাক দিলো। আমি তাকে দেখেই বুঝতে পেরেছি এখন সে আমার কাছে কিছু টাকা চাইবে। এই সমস্ত ছেলে পেলে টাকা পেলেই নেশা করে। এইজন্য আমি সব সময় চেষ্টা করি এই ধরনের ছেলেগুলোকে এড়িয়ে চলতে।
যা মনে করেছিলাম ঠিক তাই হলো। ছেলেটি আমার কাছে এসে বলল ভাই খুব জরুরী দরকার আমাকে ১০০টা টাকা দেয়া যায়? আমি তো জানি তার দরকার টা কি। তাই আমি তাকে বললাম এখন টাকা দেয়া যাবে না। তারপরও সে নাছোড়বান্দার মত আমার কাছে অনুরোধ বিনয় করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে তাকে কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করে দিলাম। তারপর আমি চটপটি খাওয়ায় মনোযোগ দিলাম। তবে সত্যি কথা বলতে কি চটপটিটা আমার কাছে একেবারেই ভালো লাগেনি। মানে চটপটিটা খেয়ে আমার কাছে চটপটির স্বাদ মনে হয়নি। মনে হয়েছে আমি অন্য কিছু খাচ্ছি। যাই হোক আমি কোন রকমে চটপটি খাওয়া শেষ করে বিল মিটিয়ে সেখান থেকে অন্যদিকে যেতে লাগলাম। তবে বিল দেয়ার সময় খেয়াল করলাম চটপটির দাম আগে থেকে আরও দশ টাকা বেড়েছে। এখন প্রতি বাটি চটপটি হয়েছে ৮০ টাকা। রাস্তার পাশের একটি ভ্যান হিসেবে চটপটির দামটা আমার কাছে অনেকটা বেশি মনে হলো। অবশ্য বেশি মনে হলেও কিছু করার নেই। কারণ এই দামেই অনেকে চটপটি খাচ্ছে।
আমি সেখান থেকে এগোতে লাগলাম থানার মোড়ের দিকে। নির্দিষ্ট কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই সেদিকে যাচ্ছিলাম। সেদিকে কিছু দূর আগানোর পর হঠাৎ করে দেখতে পেলাম রাস্তার পাশের একটি দোকানে পাকোড়া ভাজা হচ্ছে। এই দোকানের পাকোড়া শহরের মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয়। তাই আমি চিন্তা করলাম যেহেতু এদিকে এসেই পড়েছি তাই এখান থেকে পাকোড়া খেয়ে যাই। আমি সেই দোকানের বেঞ্চে বসে গরম গরম দুটো পাকোড়া খেলাম। তারপর বাসার জন্য কিছু প্যাক করে দিতে বললাম। পাকোড়া খাওয়া হলে আমি বিল দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে চিন্তা করতে লাগলাম এখন কি করবো? গরমের কারণে বাইরে থাকতে খুব একটা ভালো লাগছিল না। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম এখন বাসায় চলে যায়। পরে একদিন আবহাওয়া ভালো থাকলে আবার এদিকে আসা যাবে। সাথে সাথে একটি রিক্সায় উঠে আমি বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে ঘোরাঘুরি করতে বেশ ভালই লেগেছিলো। যদিও গরমে কিছুটা ক্লান্তি অনুভব করছিলাম। কিন্তু সবকিছু মিলিয়ে অনুভূতিটা বেশ ভালই ছিলো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | জনতা ব্যাংকের মোড় |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কিছু কিছু ছেলে আছে যারা অল্প বয়সেই নেশার জগতে ডুবে যায়। তাই তারা পরিচিত কাউকে দেখলেই অনুরোধ করে টাকার জন্য। আসলে এমন জায়গায় তারা অনুরোধ করে যে অনেকটা বাধ্য হতে হয় টাকা দিতে। এই গরমে বাহিরে বের হওয়া সত্যিই মুশকিল। সত্যি কথা বলতে মাঝে মাঝে জনপ্রিয় দোকানগুলো থেকেও কোন খাবার খেলে সবার কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। তাইতো আপনার কাছে ভালো লাগেনি। শেষে গরম গরম পাকোড়া খেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া।
সবচেয়ে বড় কথা হলো সবসময় কি আর ঘরে বসে থাকা যায়? তবে এ ও কথা ফেরদৌস ভাই কে ছাড়াতো আপনার একা একা ঘুরতে অনেক খারাপ লাগবে। তাও তো আপনি বের হলেন। আর প্রিয় চটপটির দোকান হতে চিটপুটিও নিলেন। কিন্তু এলাকার পরিচিত একজন আপনার কাছে টাকা চাইলো।সে ও নাকি নেশা খোর। আসলে এসব মানুষকে একদম টাকা পয়সা দিয়ে হেল্প করা উচিত নয়। যাক সব মিলিয়ে বেশ ভালোই সময় পার করলেন।
আসলে ভাইয়া গরম আভার কারণে যেখানে যায় না কেন শরীর এমনিতেই ঘামতে শুরু করে। যাহোক আপনার ঘোরাঘুরি করার মুহূর্তটুকু জানতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে আমার। আর অর্ডার দেওয়ার সাথে সাথে খাবার চলে আসলে এমনিতে খুবই ভালো লাগে। ঘোরাঘুরি করার এবং খাবার খাওয়ার খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।