বন্ধু ফেরদৌসের সাথে সামরিক বাহিনী জাদুঘর দর্শন (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত মাস দুই ধরে আমার ঢাকা যাওয়া আসা লেগেই রয়েছে। আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন ঢাকা শহর আমি খুব একটা পছন্দ করি না। অপছন্দ করার জন্য হাজারটা কারণও রয়েছে। তবে তার পরেও ঢাকার কিছু কিছু জিনিস আমার কাছে ভালো লাগে। তার ভেতর সবচাইতে প্রথম হচ্ছে ঢাকার বৈচিত্র্যময় খাদ্য সম্ভার। আর দ্বিতীয়ত হচ্ছে ঢাকায় বিনোদনের জন্য কিছু জায়গা রয়েছে। বাংলাদেশের ঢাকার বাইরে হাতে গোনা দু চারটি জায়গা বাদে আর তেমন কোথাও বিনোদনের কোন ব্যবস্থা নেই। যাইহোক ঢাকায় বেশ কয়েকটি মিউজিয়াম রয়েছে। তবে তার ভিতরে আমার কাছে সবচাইতে বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়েছে সামরিক বাহিনীর জাদুঘরকে।

IMG_20231202_121133.jpg

IMG_20231202_121118.jpg

আমার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিলো কখনো সময় সুযোগ পেলে সেখান থেকে ঘুরে আসবো। এর আগে একবার গিয়েছিলাম সেখানে ঘুরতে। কিন্তু যেদিন গিয়েছিলাম সেদিন সামরিক জাদুঘর বন্ধ ছিলো। যার ফলে হতাশ হয়ে সেখান থেকে ফিরে আসতে হয়েছিলো। কিন্তু মাসখানেক আগে যখন ঢাকায় গিয়েছিলাম তখন আবার সেখানে গিয়েছিলাম বন্ধুর ফেরদৌস কে সাথে নিয়ে। এবার অবশ্য যাওয়ার আগে খোঁজখবর নিয়েই গিয়েছিলাম সামরিক জাদুঘর বন্ধ না খোলা রয়েছে। যাই হোক দুই বন্ধু মিলে সেদিন প্রথমে আইডিবি ভবন ঘুরে ছিলাম। সেখান থেকে বের হয়ে দুই বন্ধু চলে গিয়েছিলাম সরাসরি সামরিক বাহিনীর জাদুঘরে। প্রথমেই সেখানে গিয়ে কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে গিয়ে হোলো বিপত্তি। আমি যখন টিকিট কাটতে গিয়ে ৫০০ টাকার নোট দিলাম তারা জানালো তাদের কাছে টাকা ভাঙতি নেই। দুজনের টিকিটের দাম ছিলো ২০০ টাকা। ৫০০ টাকা তাদের কাছে ভাংতি নেই একথা শুনে আমার বেশ মেজাজ খারাপ হোলো। তারপর অবশ্য ফেরদৌস টিকিটের টাকা পরিশোধ করেছিলো।


IMG_20231202_121409.jpg

IMG_20231202_121316_1.jpg

IMG_20231202_121655.jpg

IMG_20231202_121555.jpg

টিকেট কেটে সামরিক জাদুঘরে ঢুকতেই আমার ভেতরে দারুণ এক ভালোলাগার অনুভূতি তৈরি হোলো। কারণ ছোটবেলা থেকেই আমার সামরিক বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ ছিলো। সামরিক জাদুঘরে ঢুকেই প্রথমে দেখতে পেলাম মেটাল দিয়ে কিছু ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। সেগুলো দেখতে একেবারে জীবন্ত লাগছিলো। মনে হচ্ছিলো সামরিক বাহিনীর কমান্ডোরা আমাদের দিকে বন্দুক তাক করে রয়েছে। যাই হোক সেটার ছবি তুলে আমরা মিউজিয়ামের গেটের দিকে এগিয়ে গেলাম। সেখানে মেটাল ডিটেক্টর এর ভেতর দিয়ে সবাইকে মিউজিয়ামে প্রবেশ করতে হচ্ছিলো। আমার ভেতরে প্রবেশ করেই প্রথমেই হাতের ডানে দেখতে পেলাম একটি প্রাচীন যুদ্ধে ব্যবহৃত একটি কামান। কামানটা সাইজে বেশ বড় ছিলো। সেখানে পাশে লেখা ছিল টুয়েলভ পাউন্ডার গান। সম্ভবত এই কামানটি ১২ পাউন্ড ওজনের গোলা নিক্ষেপ করতে পারতো। কামানটি রাখা ছিল একটি মুভিং স্ট্যান্ড এর উপরে। যার ফলে কামানটি ঘড়ির কাটার মত ঘুরছিলো। দেখতে বেশ ভালো লাগছিলো। কামানের পাশেই একটি জায়গায় বাংলায় কামানের ব্যবহারের ইতিহাস সম্বন্ধে লেখা ছিলো।


IMG_20231202_121924.jpg

IMG_20231202_121940.jpg

IMG_20231202_121723.jpg

IMG_20231202_121745.jpg

বড় কামানটি দেখা শেষ হলে আরো একটু সামনে এগিয়ে দেখলাম সেখানেও আরো একটি কামান রয়েছে। তবে কামানের সাথে সেখানে কিছু মানুষের প্রতিকৃতিও তৈরি করা হয়েছে। কামান কিভাবে ব্যবহার করা হতো সেটা সেই প্রতিকৃতি গুলোর মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। সেই কামানের পাশেও কামান গুলোর ইতিহাস সম্বন্ধে কিছু লেখা ছিলো। আমার কাছে মিউজিয়ামের বিষয়গুলোর যেভাবে সাজানো হয়েছিল সেটা দেখে বেশ ভালো লাগছিলো। আপনি মিউজিয়ামে ঢুকেই প্রথমে চলে যাবেন কয়েক শতাব্দী পেছনে। তারপর আস্তে আস্তে ধারাবাহিকভাবে দেখতে থাকলে আপনি বর্তমানের দিকে আগাতে থাকবেন। সেভাবেই মিউজিয়ামে সবকিছু সাজিয়ে রাখা হয়েছিলো। দ্বিতীয় কামানটি দেখা শেষ হলে হঠাৎ করে একটি অদ্ভুত অবয়বের দিকে নজর গেলো। সেটার কাছে গিয়ে দেখতে চেষ্টা করলাম আসলে বিষয়টা কি? দেখলাম শিল্পী মনের ছোঁয়ায় এক ধরনের ত্রিমাত্রিক অস্ত্রের মডেল গড়ে তোলা হয়েছে। জিনিসটা দেখতে ফিউচার ওয়েপনের মতো লাগছিলো। প্রথমে আমি মনে করেছিলাম সেটা মনে হয় কোন এনটি এয়ারক্রাফ্ট গান হবে। পরে কাছে গিয়ে সেই জিনিসটার পাশে যেখানে সেই কাল্পনিক অস্ত্র নিয়ে কিছু লেখা ছিল সেটা পড়ে বিষয়টা বুঝতে পারলাম। তার একটু পাশেই দেখতে পেলাম প্রাচীন সময়ের একটি নৌকার মডেল তৈরি করে রাখা হয়েছে। (চলবে)


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানঢাকা, আগারগাঁও

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 6 months ago 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। সামরিক তিনটি বাহিনী সেনা নৌ ও বিমান বাহিনী। আপনি সাময়িক বাহিনী যাদুকর পরিদর্শন করেছেন এবং সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন এবং সেগুলো আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এবং খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা দিয়েছেন।। খুবই ভালো লাগলো আপনার পোস্ট দেখে এবং পড়ে ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

আপনার পোস্ট নিয়মিত পড়া হয় বিধায়, এটা ভালোভাবে জানি যে আপনি ঢাকা শহর খুব একটা পছন্দ করেন না। যাইহোক ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে সামরিক বাহিনীর জাদুঘর ভ্রমণ করতে গিয়েছিলেন, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। সামরিক বাহিনীর জাদুঘরের সামনে দিয়ে অসংখ্যবার আসা যাওয়া হয়েছে, তবে কখনো প্রবেশ করা হয়নি ভিতরে। আপনি ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার ভাবে ক্যাপচার করেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। (ভাই দ্বিতীয় ট্যাগ অর্থাৎ মিউজিয়াম ট্যাগে স্পেলিং ভুল রয়েছে। আশা করি ঠিক করে নিবেন।)

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

ভাইয়া ঢাকা আপনার পছন্দের জায়গা নয় তা আগেও জেনেছি।তবে নানা রকমের খাবার আর বিনোদনের জায়গা থাকায় ঢাকা আপনার ভালো লাগে। আপনি ফেরদৌস ভাইয়া কে নিয়ে সামরিক জাদুঘরে গিয়েছিলেন। আপনার ছোটবেলা থেকেই সামরিক বিভিন্ন জিনিসের প্রতি ভীষণ আগ্রহ ছিল।তাইতো এই জাদুঘরে যেতে আপনার এতোটা আনন্দ লাগছিলো।আপনার চমৎকার চমৎকার ক্যাপচার করা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57839.82
ETH 3132.70
USDT 1.00
SBD 2.43