নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পিংয়ের প্রোগ্রাম সফল করা (চতুর্থ পর্ব)।
আমরা যখন বারবিকিউ করছিলাম তখন কার্ড খেলা গ্রুপের লোকজনকে বারবার ডাকছিলাম আসার জন্য। কিন্তু তারা আমাদের কথায় কর্ণপাত করছিলো না। এই কারণে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম বারবিকিউ আমরা খাওয়ার পর যতটুকু বাঁচবে সেটাই ওদের কপালে জুটবে। তাই আমি আমার সাথে যারা ছিলো তাদেরকে বললাম আগে আমরা খাওয়া-দাওয়া শেষ করবো। তারপর যদি কিছু বাঁচে সেটা ওদেরকে দেবো। এই পরিকল্পনা মোতাবেক এক একবার কয়েক পিস করে বারবিকিউ করা হচ্ছিলো। আর আমরা নিজেদের ভেতর সেগুলো ভাগাভাগি করে খেয়ে ফেলছিলাম। তবে সেদিনের বারবিকিউ খেয়ে আমি আসলে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলামো। কারণ বারবিকিউটা খেতে হয়েছিলো দারুন। জোবায়েরের প্রতি আমার আস্থা বহু করে বেরেগিয়েছিলো সেদিনের বারবিকিউটা খাওয়ার পরে। শুধু আমি নয় যারা বারবিকিউ খেয়েছিলো তারা সবাই জুবাইরের ভুয়সি প্রশংসা করেছিলো।
যখন খেতে খেতে আমাদের পুরোপুরি পেট ভরে গিয়েছিলো। তারপরে যারা কার্ড খেলছিল ওদের জন্য কয়েক পিস বারবিকিউ জোবায়র দিয়ে এসেছিলো। ওরা খেয়ে তো হতবাক। ওরা চিন্তা করতে পারেনি জোবায়ের এত মজাদার বারবিকিউট তৈরি করতে পারবে। যে কয় পিস বারবিকিউ ভেতরে পাঠানো হয়েছিল সেটা নিমিষেই শেষ হয়ে গিয়েছিলো। পরবর্তীতে ওরা যখন আবার চাইল তখন আর মাত্র কয়েক পিস ছিলো। সেগুলো ওদেরকে দেয়ার পর ওরা বলল মাত্র এই কয় পিস আছে? তখন আমরা বললাম এটা হচ্ছে তোদের জন্য শাস্তি। আমি বললাম আমরা এখানে এসেছি সময়টা ভালোভাবে উপভোগ করার জন্য। শুধু কার্ড খেলার জন্য নয়। হ্যাঁ যখন আমাদের কিছু করার থাকবে না তখন অবশ্যই কার্ড খেলা যাবে। কিন্তু পুরো সময়টা যদি আমরা কার্ড খেলায় কাটিয়ে দেই তাহলে এখানে এসে লাভ কি হোলো? কিন্তু কোন কথাই ওদের কানে ঢুকছিলো না। বারবিকিউ খাওয়া শেষ হলে দেখলাম তখনও ওদের কার্ড খেলা থেকে ওঠার কোন নাম নেই। তখন আমি ওদেরকে তাবুর ভিতরের অংশ থেকে বাইরের অংশে পাঠিয়ে দিলাম রীতিমতো জোর করে। আমি বললাম এখন আমরা ঘুমাবো তোরা বাইরে গিয়ে কার্ড খেল।
অবশ্য এর ভেতরে একটা অদ্ভুত কান্ড ঘটলো। আমরা সবাই তখন তাঁবুর ভেতরে বসে ছিলাম। হঠাৎ করে বাইরে কিছু নড়াচড়ার আওয়াজ পাচ্ছিলাম। আমাদের সাথে থাকা রাজু নামের ছেলেটা বলল ভাই মনে হয় শিয়াল এসেছে। নড়াচড়া শব্দ শুনে তাই মনে হচ্ছে। তাবুর ভিতরে থাকা সবাই হেসে ব্যাপারটা উড়িয়ে দিলো। অবশ্য তখন হেসে উড়িয়ে দিলেও একটু পরে সবাই বুঝতে পারল আসলেই ওটা শেয়াল ছিলো। কারণ আমাদের তাবু থেকে কিছুটা দূরেই আমরা শেয়ালের ডাক শুনতে পেলাম। তারপর আমি তাবুর ভিতরের অংশে শুয়ে পড়লাম। তাবুর ভেতরের অংশটা বাইরের অংশটা থেকে বেশ গরম। কারণ সেখানে দুস্তরের কাপড় দেয়া ছিলো। আমি ব্যাগে করে একটা কম্বল নিয়ে এসেছিলাম। আমি জ্যাকেট খুলে আমার ব্যাগের ভিতর দিয়ে ব্যাগটা মাথার নিচে বালিশ হিসাবে ব্যবহার করলাম। আর কম্বলটা খুলে গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়লাম। অবশ্য শোয়ার পর মনে হচ্ছিল তাঁবুর নিচে কিছু খড় বিছিয়ে দিতে পারলে আরো আরাম করে ঘুমানো যেতো। যদিও তাবুর নিচে এক ধরনের আগাছা টাইপের গাছ কেটে বিছিয়ে দেয়া হয়েছিলো। তবে সেটা খুব একটা আরামদায় ছিলো না। যাই হোক শোয়ার কিছুক্ষণের ভেতরেই আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | গজারিয়া |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলেই ভাই এভাবে বারবিকিউ করা বেশ ঝামেলার কাজ। অনেক সময় মাংস বেশি পুড়ে যায়, নয়তো কিছুটা কাঁচা থেকে যায়। যাইহোক জোবায়ের অবশেষে এতো চমৎকার বারবিকিউ করার জন্য, সবার কাছে বেশ প্রশংসিত হয়েছিল তাহলে। পরবর্তীতে আপনারা পার্টি করলে জোবায়ের অনেক হেল্প করতে পারবে। তবে যারা কার্ড খেলেছে তাদের শাস্তিটা দারুণ ছিলো। সব মিলিয়ে পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
বারবিকিউ আমি কখনো অবশ্য করিনি ভাইয়া কিন্তু আসলে এটা অনেক কষ্টসাধ্য কাজ এটা শুনেছি। তবে জুবায়ের ভাইয়া যে প্রচেষ্টার মাধ্যমে বারবিকিউ তৈরি করেছে আর আপনি যেভাবে তার স্বাদ উপস্থাপন করেছেন তাতে মনে হচ্ছে আসলে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। আর কার্ড খেলা লোকদের জন্য আমার মতে এটাই ঠিক ছিল বা তাদেরকে কোন বারবিকিউ না দেওয়াই উচিত ছিল। যেমন কর্ম তেমন ফল। আর শিয়াল তো আমার অনেক ভয় লাগে ভাইয়া। যাইহোক ভাইয়া আজকে পোস্টটি অনেক মজাদার ছিল ।পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষায় থাকলাম।