বন্ধুদের সাথে অপ্রত্যাশিত আড্ডায় কিছুক্ষণ।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


সেদিন দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে কেবল ঘুম দিয়েছি। এর ভেতরে হঠাৎ করে অপরিচিত নাম্বার থেকে একটি কল এলো। বেশ বিরক্ত হয়ে কলটি রিসিভ করে হ্যালো বলতেই ওপার থেকে বন্ধু হেদায়েতের কণ্ঠ শুনতে পেলাম। ওর গলা শুনে আমি জিজ্ঞেস করলাম তুই এই নাম্বার কবে নিলি? ও তখন বলে এই নাম্বারটা আমি অনেকদিন থেকেই ব্যবহার করছি। তারপর আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম তুই এখন কোথায় আছিস? ও বলল গতকাল রাতে বাড়িতে এসেছি। এজন্যই তোকে ফোন দিলাম। বিকালে এলাকার দিকে আয় একসাথে সবাই আড্ডা দেয়া যাবে। ওর কন্ঠ শুনে বিরক্তি ভাবটা এমনিই কেটে গিয়েছিলো। ওর প্রস্তাবের সাথে সাথে আমি রাজি হয়ে গেলাম।

IMG_20230728_181139.jpg

আমার ঘনিষ্ঠ যে কয়েকজন বন্ধু বান্ধব রয়েছে তার ভেতর এই হেদায়েত হচ্ছে অন্যতম। যদিও ও পেশাগত এবং সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে এখন আমাদের প্রায় একেবারেই সময় দিতে পারে না। অথচ একটা সময় যখন আমরা অনেক বন্ধু-বান্ধব একসাথে থাকতাম তখন আমাদের যে কোন আয়োজন করার দায়িত্ব থাকতো হেদায়েতের উপর। যে কোন রকম আয়োজন করতে সে সিদ্ধহস্ত ছিলো। ও পেশাগত জীবনে প্রবেশের পরে আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের ভেতরে আর বড় কোনো আয়োজন করা হয়নি। যাই হোক ওর সাথে কথা বলে ঠিক হলো আসরের নামাজটা আমরা একসাথে ওদের এলাকাতেই পরবো। তারপর কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব মিলে একসাথে আড্ডা দেয়া যাবে। যাই হোক এই পরিকল্পনা করে আমি ফোন রাখলাম। তারপর যথারীতি ঘুম থেকে উঠে তৈরি হয়ে রওনা দিলাম ওদের এলাকার উদ্দেশ্যে। সেখানে গিয়ে আমি মসজিদে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ততক্ষণে নামাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।

IMG_20230728_181112.jpg

নামাজে শেষ করে আমি বন্ধু হেদায়েতকে খুঁজতে লাগলাম। হঠাৎ করে তাকিয়ে দেখি ও আমার কিছুটা পেছনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তারপর সেখান থেকে দুই বন্ধু গল্প করতে করতে আস্তে আস্তে ওদের এলাকার দিকে যেতে লাগলাম। এর ভেতরে ও দুজন বন্ধুকে ফোন দিলো। তাদের ভিতর একজন জানালো তার বাড়িতে মেহমান এসেছে মেহমান গেলে তারপর সে বের হবে। আর আমি ফেরদৌসকে দিলে ও জানালো একটি জরুরী কাজে সে বাজারে যাচ্ছে। সেখান থেকে ফিরে সময় পেলে আমাদের সাথে যোগ দেবে। এর ভেতরে বন্ধু প্রদীপ ও কৃষ্ণ আমাদের সাথে যোগ দিলো। তারপর আমরা চারজনে আমাদের আড্ডার প্রিয় স্থান গুচ্ছগ্রামের দিকে আগাতে লাগলাম। আসলে গুচ্ছগ্রামটা আমাদের আড্ডার স্থান হয়েছে একমাত্র হেদায়েতের কারণে।

IMG_20230728_181045.jpg

আমরা বন্ধু-বান্ধবরা যখন আড্ডা দিই। তখন সেটা হয় ইউসুফ ভাইয়ের চায়ের দোকানে। কিন্তু আড্ডায় যদি বন্ধু হেদায়েতযোগ দেয় তাহলে তখন আমাদের আড্ডার স্থান হয়ে যায় গুচ্ছগ্রাম। গুচ্ছগ্রাম এলাকাটা হচ্ছে পদ্মা নদীর একেবারেই কাছের একটা এলাকা। যাইহোক আমরা চার বন্ধু গল্প করতে করতে গুচ্ছগ্রামের দিকে হাঁটতে লাগলাম। গুচ্ছগ্রামে পৌঁছে আমরা একটি প্রাইমারি স্কুলের বারান্দায় বসে আড্ডা দিই। কিন্তু সেদিন সেখানে পৌঁছে দেখি স্কুলের সামনের মাঠে ফুটবল খেলা হচ্ছে। যার ফলে সেখানে প্রচুর লোকসমাগম হয়েছে। ছোট্ট একটা এলাকাভিত্তিক খেলার ভিতরে এত লোকজন দেখে আমি খুব অবাক হলাম। আসলে এই ধরনের লোকসমাগম দেখলেই বোঝা যায় বাংলাদেশে এখনো ফুটবলের জনপ্রিয়তা কতটা বেশি। কারণ আমি কখনো স্থানীয় ক্রিকেট খেলায় এত দর্শক দেখি নাই।

IMG_20230728_180304.jpg

আমরা চার বন্ধু সেখানে পৌঁছে চায়ের অর্ডার দিয়ে গল্প করছিলাম আর খেলা দেখছিলাম। খেয়াল করে দেখলাম খেলাটা বেশ জমে উঠেছে। রীতিমতো টানটান উত্তেজনা চলছিলো। অবশ্য খেলাটা নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্যভাবে শেষ হলো। কিন্তু খেলাটি ছিল সম্ভবত ফাইনাল খেলা। যার ফলে খেলাটি গড়ালো টাইব্রেকারে। যে দল কিছুটা দুর্বল ছিল টাইব্রেকারে শেষ পর্যন্ত তারাই জিতে গেলো। ততক্ষণ অবশ্য বেলা প্রায় শেষ হয় হয় অবস্থা। খেলা শেষ হওয়ার পরে জায়গাটা একেবারে ফাঁকা হয়ে গেলো। তখন আমরা প্রাইমারি স্কুলের বারান্দায় গিয়ে বসে কিছুক্ষণ আড্ডা দিতে লাগলাম। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দেয়ার পরে আমরা হেদায়েতের এলাকার দিকে আবার ফিরতে লাগলাম। এভাবেই অপ্রত্যাশিত আড্ডার ইতি হোলো। আসলে বন্ধুবান্ধব সবাই কর্মব্যস্ত হয়ে যাওয়ার কারণে এখন আর একাধিক বন্ধু-বান্ধব নিয়ে খুব একটা বেশি আড্ডা দেয়া হয় না। আর এই কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও বন্ধু-বান্ধব যখন এলাকাতে আসে তখন তারা নানা রকম পারিবারিক কাজে ব্যস্ত থাকে। বন্ধুদের জন্য একেবারে সময় বের করতে পারেনা। এই কারণেই ধীরে ধীরে আমাদের আড্ডার পরিমাণ একেবারেই কমে যাচ্ছে। যাইহোক দীর্ঘদিন পর এই অপ্রত্যাশিত আড্ডা বেশ ভালো লেগেছিলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ভাইয়া আপনার পোস্ট গুলো পড়লেই বোঝা যায় যে আপনি বেশ বন্ধু প্রিয় একজন মানুষ। বন্ধুদের সঙ্গ আপনার বেশ ভালো লাগে। আপনার মুখে উনাদের নাম শুনে শুনে আমার তো প্রায় মুখস্থ হয়ে গেল। প্রদীপ দাদা,ফেরদৌস ভাইয়া হেদায়েত ভাইয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে এখনও কিন্তু এ দেশের গ্রাম গঞ্জে ফুটবল খেলা হয়। আর ফুটবল খেলা কিন্তু বেশ উত্তেজনাও তৈরি হয়। যখন গোল দিতে গিয়ে আর দিতে পারে না। হি হি হি

 last year 

আপনি আর আপনার বন্ধুরা মিলে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। বন্ধু হেদায়েত ভাইয়ার মতো এমন দায়িত্ববান বন্ধু সব বন্ধু মহলেই একজন থাকে।যে মানুষটি যেকোনো অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নিয়ে থাকে।আপনারা চারজন বন্ধু গুচ্ছগ্রামের দিকে চলে গেলেন।আর গিয়ে দেখলেন স্কুলের মাঠে ফুটবল খেলা হচ্ছে।যদিও শেষে ট্রাইবেকারে দুর্বল দলটিই জয়ী হলো।খুব সুন্দর একটি বিকেল কাটিয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপনি ঘুরাঘুরি করতে এবং আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করেন, এটা খুব ভালোভাবে জানি ভাই। আপনার মতো আমিও এমন। তবে এখন ব্যস্ততার জন্য আগের মতো ঘুরাঘুরি করা এবং আড্ডা দেওয়া হয় না। যাইহোক ৪ বন্ধু মিলে আড্ডা দেওয়ার পাশাপাশি ফুটবল খেলা উপভোগ করলেন। ফুটবল খেলার জনপ্রিয়তা অনেক, এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। সবমিলিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছেন ভাই। পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.026
BTC 56989.27
ETH 2425.90
USDT 1.00
SBD 2.39